গোবিন্দ | |
---|---|
রাজত্ব | ৭৯৩ - ৮১৪ খৃষ্টাব্দ |
রাষ্ট্রকূট সম্রাটগণ (৭৫৩-৯৮২) | |
দন্তিদূর্গ | (৭৩৫ - ৭৫৬) |
প্রথম কৃষ্ণ | (৭৫৬ - ৭৭৪) |
দ্বিতীয় গোবিন্দ | (৭৭৪ - ৭৮০) |
ধ্রুব ধারাবর্ষ | (৭৮০ - ৭৯৩) |
তৃতীয় গোবিন্দ | (৭৯৩ - ৮১৪) |
প্রথম অমোঘবর্ষ | (৮১৪ - ৮৭৮) |
দ্বিতীয় কৃষ্ণ | (৮৭৮ - ৯১৪) |
তৃতীয় ইন্দ্র | (৯১৪ -৯২৯) |
দ্বিতীয় অমোঘবর্ষ | (৯২৯ - ৯৩০) |
চতুর্থ গোবিন্দ | (৯৩০ – ৯৩৬) |
তৃতীয় অমোঘবর্ষ | (৯৩৬ – ৯৩৯) |
তৃতীয় কৃষ্ণ | (৯৩৯ – ৯৬৭) |
কোট্টিগ অমোঘবর্ষ | (৯৬৭ – ৯৭২) |
দ্বিতীয় কর্ক | (৯৭২ – ৯৭৩) |
চতুর্থ ইন্দ্র | (৯৭৩ – ৯৮২) |
দ্বিতীয় তৈলপ (পশ্চিম চালুক্য) |
(৯৭৩-৯৯৭) |
গোবিন্দ (তৃতীয়) (৭৯৩-৮১৪ খৃষ্টাব্দ) ছিলেন রাষ্ট্রকূট রাজবংশের প্রখ্যাত রাজা, যিনি এই রাজবংশের প্রসিদ্ধ রাজা ধ্রুব ধারাবর্ষের পুত্র ছিলেন। তিনি এই রাজবংশের সর্বাপেক্ষা সামরিক ভাবে সফল সম্রাট ছিলেন যাঁর সাম্রাজ্য দক্ষিণে কন্যাকুমারী থেকে উত্তরে কনৌজ পর্যন্ত, পূর্বে বারাণসী থেকে পশ্চিমে (ভারুচ) পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। তিনি প্রভুতাবর্ষ, জগত্তুঙ্গ, অনুপম, কীর্তি রাবণ, পৃথিবীবল্লভ, শ্রীবল্লভ, বিমলাদিত্য, অতিশয়ধাবল এবংত্রিভূবনধাবল ইত্যাদি উপাধি ধারণ করেছিলেন। ৮০৪ খৃষ্টাব্দে লিখিত সোমেশ্বর লিপি থেকে জানা যায় তাঁর প্রধানা মহিষীর নাম ছিল গামুনদেবী।
আভ্যন্তরীণ পারিবারিক বিরোধের পরই তৃতীয় গোবিন্দ সম্রাট হতে পেরেছিলেন। "নবসারি" দলিল অনুযায়ী, তাঁর জ্যেষ্ঠভ্রাতা কামবর্ষ যিনি স্তম্ভ নামেও পরিচিত, রাজত্ব লাভের আশায় বার জন দলপতির সাথে জোটবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।[১] সিসভায়ী ও সাঞ্জনের মতো কিছু দলিল অনুযায়ী গোবিন্দ(তৃতীয়) তাঁর এক ভাই ইন্দ্রর সমর্থন পেয়েছিলেন এবং কামবর্ষের জোটের বিরুদ্ধে জয়লাভ করেছিলেন। [২] তালাকাদের গঙ্গ রাজবংশের রাজা দ্বিতীয় শিবমারা কামবর্ষের অনুগামী ছিলেন কিন্তু যুদ্ধে পরাজয়ের পর দ্বিতীয় বার বন্দী হন আর কামবর্ষ ক্ষমা লাভ করেন এবং গঙ্গাবাদি থেকে শাসন চালাবার অনুমতি পান।
৮০০ খৃষ্টাব্দে গোবিন্দ (তৃতীয়), অধুনা বিদার জেলায় তাঁর রাজধানী ময়ূখান্ডি থেকে উত্তর অভিযান শুরু করেন। তিনি সাফল্যের সঙ্গে গুর্জর-প্রতিহার রাজ নাগভট্ট ২য়, পাল সাম্রাজ্যের রাজা ধর্মপালের এবং কনৌজের অলস নামমাত্র রাজা চক্রায়ুধ প্রমূখের বশ্যতা লাভ করেন। শোনা যায় যে নাগভট্ট ২য়, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। গোবিন্দ (তৃতীয়)র সঞ্জন লিপি থেকে জানা যায় যে, তাঁর ঘোড়া হিমালয় পর্বতমালা থেকে নির্গত ধারার বরফ ঠান্ডা জল পান করে এবং তাঁর সেনাবাহিনীর হাতিরা পবিত্র গঙ্গার জল পান করে।[২] মগধ এবং বঙ্গের বিজিত শাসকদের তাঁর সামনে পেশ করা হয়। ৮১৩ খৃষ্টাব্দের একটি লিপি অনুযায়ী লতা (গুজরাটের মধ্য ও দক্ষিণ অঞ্চল) জয় করেন ও তাঁর ভাই ইন্দ্রকে ওই অঞ্চলের শাসক করেন। এটি রাষ্ট্রকূট সাম্রাজ্যেরই একটি শাখা হয়ে যায়। [৩] যাই হোক, অন্য একটি মত অনুযায়ী, উত্তরে বিন্ধ্য পর্বতমালা এবংমালবের মধ্যবর্তী অঞ্চল থেকে দক্ষিণে কাঞ্চীপুরম পর্যন্ত গোবিন্দ(তৃতীয়)র আধিপত্য বিস্তৃত ছিল, যদিও তাঁর সাম্রাজ্যের প্রাণকেন্দ্র ছিল নর্মদা থেকে তুঙ্গভদ্রার মধ্যবর্তী অঞ্চল।[৩] ৮০০ খৃষ্টাব্দে মালবে জয়ের পর পারামার রাজবংশ রাষ্ট্রকূট রাজবংশের জায়গীরগুলি শাসন করবে, গোবিন্দ (তৃতীয়) সেটি নিশ্চিত করেন। [৪]
পূর্ব চালুক্যরা, যারা রাষ্ট্রকূট রাজের বিরোধী ছিল, পুনরায় গোবিন্দ (তৃতীয়)র কোপে পড়ে এবং চালুক্যরাজ বিজয়াদিত্য (দ্বিতীয়) পরাজিত হন ও ভীম সাল্কি সেখানকার শাসক নিয়োজিত হন। এরপর তিনি কৌশল (কোসালা) রাজকে পরাজিত করে অন্ধ্রের কিছু অঞ্চল অধিকার করেন, পল্লবরাজ দান্তিবর্মণকেও ৮০৩ খৃষ্টাব্দে কাঞ্চীতে পরাজিত করেন। এমনকি নিজে যুদ্ধক্ষেত্রে না গিয়েও শ্রীলঙ্কার রাজার বশ্যতা লাভ করেন। শোনা যায় শ্রীলঙ্কার রাজা তাঁর কাছে বশ্যতার চিহ্ন স্বরূপ দুটি মূর্তি পাঠান, একটি তাঁর নিজের ও অন্যটি তাঁর মন্ত্রীর।[৫] নাসারি দলিল থেকে জানা যায়, অন্যান্য তামিল সাম্রাজ্য যেমন চোল সাম্রাজ্য, পান্ড্য রাজবংশ এবং কেরালার রাজত্বগুলি গোবিন্দ (তৃতীয়)কে কর দিত।[৫]
তাঁর আগে রাষ্ট্রকূট সাম্রাজ্য সামরিক সাফল্যে এবং গৌরবে এত উচ্চতায় ওঠেনি।[৬] ৮১৪ খৃষ্টাব্দে গোবিন্দ (তৃতীয়)র মৃত্যু হয়। [৭] এই সময়ের মধ্যে তাঁর ভাই ইন্দ্র গুজরাটে(লতা) এই বংশের শাখা প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর পুত্র অমোঘবর্ষ (প্রথম) তাঁর উত্তরাধিকারী হন।
পূর্বসূরী ধ্রুব ধারাবর্ষ |
রাষ্ট্রকূট রাজবংশরাষ্ট্রকূট সম্রাট ৭৯৩-৮১৪ |
উত্তরসূরী অমোঘবর্ষ |