গৌরকিশোর ঘোষ | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৫ ডিসেম্বর ২০০০ কলকাতা | (বয়স ৭৭)
মাতৃশিক্ষায়তন | নবদ্বীপ বকুলতলা উচ্চ বিদ্যালয় |
পেশা | সাহিত্যিক ও সাংবাদিক |
দাম্পত্য সঙ্গী | শীলা ঘোষ |
পিতা-মাতা | গিরিজাভূষণ ঘোষ (পিতা) সাধনা দেবী (মাতা) |
পুরস্কার | রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার (১৯৮১) বঙ্কিম পুরস্কার (১৯৮২) |
গৌরকিশোর ঘোষ (২০ জুন, ১৯২৩ — ১৫ ডিসেম্বর, ২০০০) একজন প্রথিতযশা বাঙালি সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। তিনি রূপদর্শী ছদ্মনামে গল্প ও উপন্যাস রচনা করেছেন।
তিনি বাংলাদেশের যশোর জেলায় হাট গোপালপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। প্রাথমিক পড়াশোনা করেন শ্রীহট্ট জেলার এক চা-বাগানে। স্কুলের পাঠ নদিয়া জেলার নবদ্বীপ বকুলতলা উচ্চ বিদ্যালয়ে। ১৯৪৫ সালে আইএস-সি পাশ করেন। ১৯৪১ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত গৌরকিশোর ক্রমাগত পেশা বদলে গেছেন। প্রাইভেট টিউটর, ইলেকট্রিক মিস্ত্রী, খালাসি, রেস্তরাঁয় বয়, ট্রেড ইউনিয়ন অর্গানাইজার, ইস্কুল মাস্টার থেকে ভ্রাম্যমাণ নৃত্য-সম্প্রদায়ের ম্যানেজার, ল্যান্ডকাস্টমস ক্লিয়ারিং কেরানি, প্রুফ রিডার ইত্যাদি অসংখ্য কাজ করেছেন সাংবাদিক জীবনে প্রবেশের আগে পর্যন্ত।[১]
স্বাধীনচেতা সাংবাদিক গৌরকিশোরকে ১৯৭৫ সালের 'মিসা' (MISA) অর্থাৎ অভ্যন্তরীণ জন-নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রেসিডেন্সি জেলে তাকে বন্দী রাখা হয়।[২] সাংবাদিকদের অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য বহু নির্যাতন সহ্য করেও নিরন্তর সংগ্রামের ব্রতী ছিলেন। মুক্তচিন্তা ও গণতান্ত্রিক চেতনার জন্যে বুদ্ধিজীবী মহলে জনপ্রিয় ছিলেন। তার সাহিত্য বাঙলার বিদগ্ধ পাঠকদের মধ্যে সাড়া ফেলে। আনন্দবাজার পত্রিকায় চাকরি করতেন তিনি। দেশ পত্রিকায় কলাম লিখেছেন। আশির দশকে আজকাল পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। দেশ-মাটি-মানুষ ট্রিলজির দ্বিতীয় খন্ড 'প্রেম নেই' গ্রামীণ মুসলিম জীবন নিয়ে সুবিশাল রচনা। দেশ পত্রিকায় এই উপন্যাস ধারাবাহিকভাবে বের হয়। এছাড়া সাগিনা মাহাতো, জল পড়ে পাতা নড়ে, আনাকে বলতে দাও, আমরা যেখানে, লোকটা, রূপদর্শীর সংবাদভাষ্য ইত্যাদি তার অন্যান্য গ্রন্থ। সাগিনা মাহাতো, তপন সিংহর পরিচালনায় চলচ্চিত্রায়িতও হয়েছে। নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন দিলীপ কুমার। গৌরকিশোর সৃষ্ট মজলিশি চরিত্রের নাম ব্রজদা।[১]
সাংবাদিকতার জন্যে তিনি ১৯৭৬ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার 'কো জয় উক' স্মৃতি পুরস্কার এবং ১৯৮১ সালে ম্যাগসাসে পুরস্কারে সম্মানিত হন। একই বছর মহারাষ্ট্র সরকারের পুরস্কার, ১৯৯৩ সালে হরদয়াল হারমোনি পুরস্কার, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ পুরস্কার পান। তিনি ১৯৭০ খৃষ্টাব্দে আনন্দ পুরস্কার ও ১৯৮২ তে বঙ্কিম পুরস্কার পান। কলকাতা মেট্রো রেলের নতুন প্রস্তাবিত চিংড়িহাটা স্টেশনটি গৌরকিশোর ঘোষের স্মৃতিতে রাখা হয়েছে।[১][৩]
১৫ ডিসেম্বর, ২০০০ সালে মারা যান গৌরকিশোর ঘোষ।