গ্যাব্রিয়েল পেরী (ইংরেজি: Gabriel Peŕi) (৯ ফেব্রুয়ারি, ১৯০২ - ১৫ ডিসেম্বর, ১৯৪১) একজন ফরাসী সাম্যবাদী সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ ও বিপ্লবী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফরাসী প্রতিরোধ বাহিনীতে যোগ দেন ও নাজী বাহিনীর হাতে শহীদ হন।[১]
পেরী ফ্রান্স দেশের তুঁলোন শহরে একটি করসিয়ান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। আর্থিক কারণে অল্পবয়সে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ত্যাগ করতে বাধ্য হন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ এবং ১৯১৭ সালের রুশ বিপ্লব তার মনের ওপর ছাপ ফেলেছিল গভীরভাবে। তিনি সাম্যবাদী রাজনীতিতে যোগ দেন এবং সাংবাদিকতা করতে থাকেন। আইক্স-এন-প্রভিন্স ও মার্শেইলে পত্রিকায় লিখতেন।[২]
২২ বছর বয়েসে পেরী ফ্রান্সের সাম্যবাদী দৈনিক পত্রিকা লাইমানাইটের বৈদেশিক রাজনীতি বিভাগের দাপ্তরিক ম্যানেজার হন। এরপরে আর্জেন্টেউল কমিউনের ডেপুটি নির্বাচিত হন ১৯৩২ সালে। ১৯৩৬ সালে তিনি এই পদে পূননির্বাচিত হয়েছিলেন। ফ্রান্সের জাতীয় এসেম্বলিতে পেরি একজন দক্ষ কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠেন। তিনি ফরাসী কমিউনিস্ট পার্টি ও ফ্যাসিবিরোধী সংগ্রামের নেতা হিসেবেও প্রতিষ্ঠা পান। ইতালির ফ্যাসিস্ট নেতা বেনিতো মুসোলিনির সমালোচনার পাশাপাশি স্পেনের গৃহযুদ্ধে ফ্রান্সের নীরব থাকার নিন্দা করেন। নাৎসি জার্মানিতে ফ্যাসিস্ট শাসনের তিনি ছিলেন কঠোর সমালোচক।
১৯৪০ সালে নাৎসি পার্টি ফ্রান্স দখল করে। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ মে প্রতিরোধ বাহিনীর অন্যতম নেতা গ্যাব্রিয়েল পেরী গ্রেপ্তার হন। সেই বছরের ১৫ ডিসেম্বর মন্ট ভেলেরিয়েন দুর্গে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। একই সাথে আরো ৯১ জন বিপ্লবীকেও হত্যা করে নাৎসীরা। সাহিত্যিক আলবেয়ার কামু লিয়ন শহরে থাকাকালীন এই হত্যার খবর পান সংবাদপত্র মারফত। কামু তার 'ফ্রম দ্য এবসার্ড রিভোল্ট' গ্রন্থে এই ঘটনার কথা উল্লেখ করেছেন।[৩]
প্যারিস ও লিওন শহরের মেট্রো স্টেশন থেকে শুরু করে ফ্রান্সের একাধিক বিদ্যালয় ও রাস্তার নামকরণ করা হয় বিপ্লবী পেরীর স্মৃতিতে। কবি লুই আরাগঁ ও পল এলুয়ার পেরীর স্মরনে কবিতা লিখেছেন।[২]