গ্রামীণ ব্যাংক

গ্রামীণ ব্যাংক
ধরনএকটি সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠান[]
শিল্পব্যাংকিং
প্রতিষ্ঠাকাল২ অক্টোবর ১৯৮৩; ৪১ বছর আগে (1983-10-02)
প্রতিষ্ঠাতামুহাম্মদ ইউনূস
সদরদপ্তরঢাকা, বাংলাদেশ
অবস্থানের সংখ্যা
২,৫৬৮ []
বাণিজ্য অঞ্চল
বাংলাদেশ
প্রধান ব্যক্তি
অধ্যাপক ড. আবদুল হান্নান চৌধুরী (চেয়ারম্যান, পরিচালনা পর্ষদ), নূর মোহাম্মদ (ব্যবস্থাপনা পরিচালক)
পণ্যসমূহক্ষুদ্র অর্থায়ন
ব্যাংকিং সার্ভিস
কনজ্যুমার ব্যাংকিং
বিনিয়োগ ব্যাংকিং
আয়বৃদ্ধি ২৩০৩৮.২৮ millionTaka (২৩৩.০৬ million USD)[]
বৃদ্ধি ৪২১২.০৯ million Taka (৪২.৬১ million USD) []
বৃদ্ধি ২৩৬০.৪৯ million Taka (২৩.৮৭ million USD)[]
মোট সম্পদ৩০১.০৫ বিলিয়ন Taka[]
কর্মীসংখ্যা
১৮,২০৩ (ডিসেম্বর ৩১, ২০২২)[]
ওয়েবসাইটgrameenbank.org.bd
গ্রামীণ ব্যাংক ভবন

গ্রামীণ ব্যাংক একটি সংবিধিবদ্ধ সরকারি প্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশ এর ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী বিশেষায়িত সামাজিক উন্নয়ন ব্যাংক[][] এটি দারিদ্র্য পীড়িত মানুষের কাছে জামানত ছাড়াই ক্ষুদ্রঋণ (যা মাইক্রোক্রেডিট বা "গ্রামীণক্রেডিট" নামে পরিচিত) প্রদান করে।[]

গ্রামীণ ব্যাংক একটি আইন দ্বারা পরিচালিত পাবলিক অথরিটি। এর সূচনা ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এর একটি গবেষণা প্রকল্পের মাধ্যমে, যা গ্রামের গরিবদের ব্যাংকিং সেবা প্রদানের জন্য একটি ঋণ সরবরাহ ব্যবস্থা পরিকল্পনা করার জন্য পরিচালিত হয়। ১৯৮৩ সালের অক্টোবরে জাতীয় আইন দ্বারা গ্রামীণ ব্যাংককে একটি স্বাধীন ব্যাংক হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়।

২০০৩ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে ব্যাংকটি উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নতি করে। জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত ব্যাংকটির মোট ঋণগ্রহীতার সংখ্যা প্রায় লক্ষ, যার ৯৬.৮১% নারী।[] ১৯৯৮ সালে ব্যাংকের "নিম্ন ব্যয়ের আবাসন কর্মসূচি" 'ওয়ার্ল্ড হ্যাবিটেট অ্যাওয়ার্ড' লাভ করে। ২০০৬ সালে ব্যাংক এবং এর প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ ইউনূস যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।[]

ব্যাংকের সাফল্য বিশ্বব্যাপী ৬৪টিরও বেশি দেশে অনুরূপ প্রকল্পের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে, যার মধ্যে বিশ্বব্যাংকের গ্রামীণ ধরনের ঋণ ব্যবস্থা অর্থায়নের উদ্যোগও রয়েছে।[১০]

ইতিহাস

[সম্পাদনা]

মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৭৪ সালের বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষ চলাকালীন ৪২টি পরিবারের একটি দলকে ২৭ মার্কিন ডলার ব্যক্তিগত ঋণ দেওয়ার মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। এই ঋণটি তাদেরকে বিক্রয়ের জন্য পণ্য তৈরি করতে সহায়তা করেছিল, যাতে তারা শোষণমূলক ঋণের উচ্চ সুদের বোঝা থেকে মুক্ত থাকে।[১১] ইউনূস বিশ্বাস করতেন যে এই ধরনের ঋণ বৃহত্তর জনগণের জন্য উপলব্ধ হলে ব্যবসাকে উৎসাহিত করতে পারে এবং বাংলাদেশের ব্যাপক গ্রামীণ দারিদ্র্য হ্রাস করতে পারে।

মুহাম্মদ ইউনূস, ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ও নোবেল পুরস্কার বিজয়ী

ইউনূস তার গবেষণা ও অভিজ্ঞতা থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের নীতি তৈরি করেছিলেন।[১২] তিনি একটি গবেষণা প্রকল্প শুরু করেছিলেন, যা একটি জাতীয় বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর সাথে মিলিত হয়ে গ্রামীণ দরিদ্রদের জন্য ক্রেডিট এবং ব্যাংকিং সেবা প্রদান পদ্ধতি পরীক্ষা করার জন্য মাইক্রোক্রেডিট বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করে। ১৯৭৬ সালে জোবরা গ্রাম প্রথম এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেবা পায়। পরবর্তী দুই বছরে প্রকল্পটি এলাকার অন্যান্য গ্রামে বিস্তৃত হয়।[১৩] এই প্রকল্পটি, বাংলাদেশ ব্যাংক এর সহায়তায়, ১৯৭৯ সালে টাঙ্গাইল জেলা তে (রাজধানী ঢাকা থেকে উত্তরে) বিস্তৃত হয়। পরবর্তী কয়েক বছরে, প্রকল্পের সেবা বাংলাদেশের অন্যান্য জেলায় বিস্তৃত হয়।[১৩]

পরিচালনা পদ্ধতি

[সম্পাদনা]

এটি বাংলাদেশ ব্যাংক এর তালিকাভুক্ত নয়। এটি বাংলাদেশের ৫টি অ-তালিকাভুক্ত ব্যাংকের একটি।

অর্জন ও পুরস্কার

[সম্পাদনা]

২০০৬ সালে দারিদ্র বিমোচনে অবদান রাখায় গ্রামীণ ব্যাংক এবং মুহাম্মদ ইউনুস যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।

  1. আগাখান স্থাপত্য পুরস্কার: ১৯৮৯ (সুইজারল্যান্ড)
  2. কাজী মাহবুবউল্লাহ পুরস্কার: ১৯৯২ (বাংলাদেশ)
  3. রাজা বোঁদওয়া আন্তর্জাতিক উন্নয়ন পুরস্কার : ১৯৯৩ (বেলজিয়াম)
  4. তুন আবদুল রাজাক পুরস্কার: ১৯৯৪ (মালয়েশিয়া)
  5. স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার: ১৯৯৪ (বাংলাদেশ)
  6. বিশ্ব বসতি পুরস্কার: ১৯৯৭ (যুক্তরাজ্য)
  7. গান্ধী শান্তি পুরস্কার: ২০০০ (ভারত)
  8. পিটার্সবার্গ পুরস্কার: ২০০৪ (যুক্তরাষ্ট্র)
  9. নোবেল শান্তি পুরস্কার: ২০০৬ (নরওয়ে)
  10. এম সি সি আই ঢাকা এর শতবর্ষ পদক পুরস্কার:২০১৪ (বাংলাদেশ)
  11. ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স ম্যাগাজিন এর "বেস্ট কর্পোরেট সোস্যাল রেসপন্সেবল ব্যাংক পুরস্কার :২০১৪ (যুক্তরাজ্য)
  12. আই সি এম এ বি'র বেস্ট কর্পোরেট অ্যাওয়ার্ড পুরস্কার :২০১৪ (বাংলাদেশ)

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Grameen Bank Act 2013"। ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২ 
  2. "Grameen Bank At a Glance"Grameen Bank। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৪ 
  3. "Profit and Loss Account"Grameen Bank 
  4. https://grameenbank.org.bd/archives/annual-report
  5. Cosic, Miriam (২৯ মার্চ ২০১৭)। "'We are all entrepreneurs': Muhammad Yunus on changing the world, one microloan at a time"The Guardian। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৭ 
  6. "About us"Grameen Bank। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০১৭ 
  7. "What is Microcredit ?"। Grameen Bank। সংগ্রহের তারিখ ১১ মার্চ ২০১১ 
  8. "Annual Report 2021" (পিডিএফ)। ৫ জুন ২০২৩ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০২৪ 
  9. "The Nobel Peace Prize for 2006"। The Nobel Peace Prize for 2006। ১৩ অক্টোবর ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ১৩ অক্টোবর ২০০৬ 
  10. Khandker, Shahidur R.; Baqui, M. A.; Khan Z. H. (১৯৯৫)। Grameen Bank: Performance and Sustainability। World Bank Publications। পৃষ্ঠা vi। আইএসবিএন 978-0-8213-3463-8 
  11. Anand Giridharas; Keith Bradsher (১৩ অক্টোবর ২০০৬)। "Microloan Pioneer and His Bank Win Nobel Peace Prize"The New York Times। সংগ্রহের তারিখ ১৩ অক্টোবর ২০০৬ 
  12. "History"Grameen Bank। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ডিসেম্বর ২০১১ 
  13. Rahman, Aminur (২০০১) [First published 1999]। Women and Microcredit in Rural Bangladesh: Anthropological Study of the Rhetoric and Realities of Grameen Bank Lendingসীমিত পরীক্ষা সাপেক্ষে বিনামূল্যে প্রবেশাধিকার, সাধারণত সদস্যতা প্রয়োজনBoulder, Colorado: Westview Press। পৃষ্ঠা 4আইএসবিএন 978-0-8133-3930-6 

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]