![]() | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | গ্রাহাম রয় ডিলি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ডার্টফোর্ড, কেন্ট, ইংল্যান্ড | ১৮ মে ১৯৫৯|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৫ অক্টোবর ২০১১ লিচেস্টার, ইংল্যান্ড | (বয়স ৫২)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | ডিল, পিক্কা | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি (১.৯৩ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | বামহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | বোলার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৪৮৩) | ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১১ জুলাই ১৯৮৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ৫১) | ২৮ নভেম্বর ১৯৭৯ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ২১ মে ১৯৮৮ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৮৭–১৯৯২ | ওরচেস্টারশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৮৫–১৯৮৬ | নাটাল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৭৭–১৯৮৬ | কেন্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১ অক্টোবর ২০১৭ |
গ্রাহাম রয় ডিলি (ইংরেজি: Graham Dilley; জন্ম: ১৮ মে, ১৯৫৯ - মৃত্যু: ৫ অক্টোবর, ২০১১) ডার্টফোর্ডে জন্মগ্রহণকারী প্রথিতযশা ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন।[১][২] ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। প্রথম-শ্রেণীর কাউন্টি ক্রিকেটে কেন্ট ও ওরচেস্টারশায়ার দলে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৪১ টেস্ট ও ৩৬ ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ করেছেন গ্রাহাম ডিলি। দলে তিনি মূলতঃ ফাস্ট বোলার হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও নিচেরসারিতে ব্যাটিং করতেন।
১৯৮১ সালে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে স্মরণীয় ক্রীড়ানৈপুণ্য প্রদর্শন করেন। হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ইয়ান বোথামের সঙ্গে অষ্টম উইকেটে জুটি গড়ে ৮০ মিনিটে ১১৭ রান তুলে তাক লাগান। এরফলে ইংল্যান্ড ফলো-অনে থাকা অবস্থায়ও অস্ট্রেলিয়াকে পরাজিত করেছিল। এতে বাজীকরেরা ৫০০-১ ধরেছিলেন।[৩][৪] খেলায় তিনি নিজস্ব সর্বোচ্চ ৫৬ রান সংগ্রহ করেছিলেন।
ক্রিকেট সংবাদদাতা কলিন বেটম্যান তার কার্যকারিতা সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, যখন সবকিছু কাজ করে, তখন সুন্দরভাবেই কাজ করতে থাকে।
কেন্টের ডার্টফোর্ড এলাকায় ডিলি জন্মগ্রহণ করেন ও সেখানেই তার শৈশবকাল অতিবাহিত হয়। ডার্টফোর্ড হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেন তিনি।[৫] হেসকেথ পার্কের ডার্টফোর্ড ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে ক্রিকেট জীবনে ঝুঁকে পড়েন। ডায়মন্ড কাটার হিসেবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর কেন্ট কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাবের পক্ষে খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করেন।[৬] ১৭ বছর বয়সে ১৯৭৬ সালে কেন্ট দ্বিতীয় একাদশের পক্ষে খেলতে থাকেন।
আঠারো বছর বয়সে ১৯৭৭ সালে কেন্টের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ডিলি’র অভিষেক ঘটে। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় তিনি কোন উইকেট লাভে সক্ষমতা দেখাতে পারেননি। পরের মৌসুম শুরু না হওয়া পর্যন্ত তিনি আর কোন খেলায় অংশ নিতে পারেননি। জুন, ১৯৭৮ সালে সফরকারী পাকিস্তান একাদশের বিপক্ষে দ্বিতীয় খেলায় অংশ নেন। এবারও তিনি কোন উইকেট পাননি। নিজস্ব তৃতীয় প্রথম-শ্রেণীর খেলায় মিডলসেক্সের বিপক্ষে নিজের উপস্থিতির কথা জানান দেন। খেলায় সাত উইকেট নিয়ে দলকে ছয় উইকেটের বিজয় এনে দেন।
ঐ মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের আরও দুই খেলায় অংশ নেন। তবে কেবলমাত্র একটি উইকেটই পেয়েছিলেন তিনি। তাস্বত্ত্বেও ইংল্যান্ডের তরুণ ক্রিকেটারদেরকে নিয়ে গড়া দলের সদস্যরূপে তাদের প্রতিপক্ষীয় ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান দলের বিপক্ষে তিন টেস্টের দুইটিতে এবং একমাত্র একদিনের খেলার জন্য তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কাউন্টি ক্রিকেটে ক্রমশঃ উত্তরণ ঘটে তার। ১৯৭৯ সালে কেন্টের বড়দের দলে ৩১ খেলায় অংশ নেন। বিশ্বকাপের প্রস্তুতিমূলক খেলায় নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪/৪১ পান। ঐ মৌসুমে ২৩.৪৮ খরচায় ৪৯টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পান তিনি। তার পেসের চিত্র আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
শীতকালে অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য তরুণ ফাস্ট বোলারের সন্ধান করছিল ইংল্যান্ড দল নির্বাচকমণ্ডলী। ২০ বছর বয়সী ডিলিকে দলে অন্তর্ভুক্ত করে তারা সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তার ওডিআই অভিষেক হয়। ত্রি-দেশীয় প্রতিযোগিতায় অপর দেশ ছিল অস্ট্রেলিয়া।
২৪ নভেম্বর, ১৯৭৯ তারিখে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ডিলি তার প্রথম একদিনের খেলায় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৯-৮০ মৌসুমের বেনসন এন্ড হেজেস বিশ্ব সিরিজ কাপে সিডনিতে প্রথম খেলতে নামেন তিনি। খেলায় ইংল্যান্ড নাটকীয়ভাবে দুই রানের জয় পায়। নতুন বল হাতে নিয়ে নিজস্ব তৃতীয় ওভারে ডেসমন্ড হেইন্সের উইকেট লাভ করেন। বৃষ্টির কারণে জয়ের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রয়োজন ছিল ৪৭ ওভারে ১৯৮ রান। ঐ খেলায় তার বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৬-২-২১-১।
এক পক্ষকাল পর ডিলি প্রথম টেস্ট খেলায় অংশ নেন। ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭৯ তারিখে ওয়াকার পার্থ টেস্টে মাঠে নামার মাধ্যমে গত ত্রিশ বছরের মধ্যে তিনিই সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে মাঠে নামেন।[৭] ইংরেজ অধিনায়ক মাইক ব্রিয়ারলি ডিলির উপর বেশ আস্থা রেখে নতুন বল হাতে তুলে দেন ও বোলিং আক্রমণ পরিচালনা করতে বলেন। শুরুতে বেশ ভালো বোলিং করলেও সফলতা পাবার জন্য তাকে অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম উইকেট পতন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। ১২৭ রানে এ উইকেট পতনে তিনি পিটার টুহিকে ডেরেক আন্ডারউডের কটে ১৯ রানে বিদায় করেন। পরবর্তীতে বব টেলরের হাতে কট দিয়ে রড মার্শকে প্যাভিলিয়নে ফেরৎ পাঠান। ৪২ রানে মার্শ বিদায় নিলে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ দাঁড়ায় ২১৯/৭। এরপর অস্ট্রেলিয়া ২৪৪ রানে অল-আউট হয়। খেলায় তার বোলিং পরিসংখ্যান ১৮-১-৪৭-২ হয়। তার অভিষেক পর্বের বিপরীতে বোথামের বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৬/৭৮।
২২৮ রানে ইংল্যান্ড অল-আউট হলে অস্ট্রেলিয়া ১৬ রানে এগিয়ে থাকে। ডিলি ২০৬ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করে ৫৭ বল মোকাবেলায় ৩৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। ইনিংসে অধিনায়ক মাইক ব্রিয়ারলির পর তিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হন। দ্বিতীয় ইনিংসেও ডিলি পুনরায় নতুন বল নিয়ে আক্রমণ শানান। ডেনিস লিলিকে গালিতে পিটার উইলির কটে পরিণত করে একমাত্র উইকেট পান। স্কোরকার্ডে তখন 'লিলি ক উইলি ব ডিলি ১৯' দেখানো হয় যা বেশ স্মরণীয় বিষয় ছিল।[৫][৮][৯] জয়ের জন্য ৩৫৪ রানের লক্ষ্যমাত্রায় নেমে জিওফ বয়কট অপরাজিত ৯৯ রান তুলে প্রতিরক্ষা ব্যূহ তৈরি করেন। অষ্টম উইকেটে ডিলি তার সাথে উনিশ রানের জুটি গড়েন। খেলায় অস্ট্রেলিয়া ১৩৮ রানে জয় পায়।
দ্বিতীয় টেস্টেও দল পরাজিত হলে তৃতীয় ও চূড়ান্ত খেলায় জন লিভার তার স্থলাভিষিক্ত হন। ঐ সফরে ডিলি সাত উইকেট পান। দলীয় ব্যবস্থাপক অ্যালেক বেডসার মন্তব্য করেন যে, ৭,০০০ পাউন্ডের বিনিময়ে সাত উইকেট দখল। সিরিজে অস্ট্রেলীয়রা দাপট দেখিয়ে ৩-০ ব্যবধানে রাবার জয় করলেও এক বছর পূর্বে ৫-১ ব্যবধানে ছয় খেলার সিরিজে জয়ের ফলে অ্যাশেজ হস্তান্তর হয়নি।
১৯৮০ সালে ওল্ড ট্রাফোর্ডে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের বৃষ্টিবিঘ্নিত তৃতীয় টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ ঘটে তার। চতুর্থ ও পঞ্চম টেস্টেরও একই পরিণতি হয়। সবগুলোই ড্র হয়েছিল। তিন ইনিংসে এগারো উইকেট দখল করায় একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে শীতকালে ক্যারিবীয় সফরের জন্য মনোনীত হন তিনি। বিদেশ সফরের অনুষ্ঠিত টেস্টগুলোয় ইংল্যান্ড খেলার বাইরে অবস্থান করছিল। চার খেলার সিরিজে ২-০ ব্যবধানে পরাজিত হয় তার। তন্মধ্যে, রবিন জ্যাকম্যানের বিষয়ে গায়ানা টেস্ট বাতিল ঘোষিত হয়। ওডিআইগুলোয় ডিলি দশ উইকেট পান যা তাকে ১৯৮১ সালের অ্যাশেজ সিরিজে অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা এনে দেয়।
১৯৮১ সালের অ্যাশেজ সিরিজে বেশ জোড়ালো ভঙ্গীমায় ডিলি অগ্রসর হন। প্রথম দুই টেস্টে তিনি ১২ উইকেট তুলে নেন। ফলশ্রুতিতে হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টে তাকে দলে রাখা হয়। এ খেলাটি ইংল্যান্ডের অবিস্মরণীয় জয়ের সাথে জড়িত ছিল।
ফলো-অনের পরও ইংল্যান্ডের জয়ে ইয়ান বোথাম ও বব উইলিসের বীরত্বগাঁথার পাশাপাশি ডিলিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন যা তার স্বভাববিরুদ্ধ ছিল।
১৩৫/৭ থাকা অবস্থায় ৯২ রানে পিছিয়ে থেকে দলনায়ক মাইক ব্রিয়ারলি’র কাছ থেকে কোনরূপ পরামর্শ ছাড়াই মাঠে নামেন। ইয়ান বোথামের সাথে জুটি গড়েন গ্রাহাম ডিলি। এক পর্যায়ে বোথাম তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন যে, এরপর, চলো কিছুটা মজা করি। এ দুজন মাত্র ৮০ মিনিটে ১১৭ রান তুলেন। তন্মধ্যে ডিলি ৭৫ বল মোকাবেলা করে মূল্যবান ৫৬ রান তুলে টেরি অল্ডারম্যানের শিকারে পরিণত হন। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ড দল ১৩০ রানে এগিয়ে ইনিংস শেষ করে।
দ্বিতীয় ইনিংসে বাউন্ডারি সীমানারেখা থেকে রড মার্শকে তালুবন্দী করেন তিনি। বব উইলিসের বিধ্বংসী ৮/৪৩ বোলিংয়ের ফলে অস্ট্রেলিয়া ১১১ রানে অল-আউট হয় ও ইংল্যান্ড দল অপ্রত্যাশিতভাবে ১৮ রানের জয় পায়।
হেডিংলিতে টেস্ট জয়ে অসামান্য ভূমিকা পালন করা স্বত্ত্বেও চতুর্থ টেস্টে তাকে খেলার সুযোগ দেয়া হয়নি। এমনকি পরবর্তী দুই টেস্টে অংশগ্রহণ থেকেও তিনি বঞ্চিত হন। তার পরিবর্তে জন এম্বুরি, পল অ্যালট ও মাইক হেনড্রিক অংশ নিয়েছিলেন।
১৯৮১-৮২ মৌসুমে ভারত সফরে যান। গ্রাহাম গুচের নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী দলের তৎকালীন নিষিদ্ধঘোষিত দক্ষিণ আফ্রিকায় অর্থনৈতিক কারণে অংশগ্রহণের ফলেই তার এ অন্তর্ভুক্তি ঘটে।[১০] পরবর্তী কয়েকবছর দলে আসা-যাওয়ার পালায় ছিলেন তিনি। ১৯৮৩ সালে টেস্ট খেলোয়াড় হিসেবে ডিলির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা উঁকি দেয়।
১৯৮৩ সালে ইংল্যান্ড দলের ক্রিকেট বিশ্বকাপের অন্যতম সদস্য মনোনীত হন। এ প্রতিযোগিতার পর ঘাড়ে আঘাতের ফলে পরবর্তী এক বছর খেলার বাইরে অবস্থান করেন।
১৯৮৫ সালে কাউন্টি ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন ঘটলেও দীর্ঘকাল ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন কি-না সন্দেহ দেখা দেয়। শীতকালে নাটালের পুণরুজ্জীবনে অসামান্য অবদান রাখেন। ১৯৮৬ সালে ৬৩টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট লাভের প্রেক্ষিতে ইংল্যান্ড দলে খেলার জন্য পুনরায় আমন্ত্রণ জানানো হয় তাকে।
২০১১ সালে মাইক সেলভি এক প্রতিবেদনে লিখেন যে, এরপূর্বে তেমন কিছু করতে না পারলেও গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ইংরেজ ক্রিকেটার হিসেবে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে তিনি তেমন কিছুই করেন। তবে ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমের শীতকালে ব্রিসবেন টেস্টে ৫/৬৮ লাভ করে খেলায় ইংল্যান্ডের জয়ের পাশাপাশি অ্যাশেজ সিরিজ জয়ে ভূমিকা রাখেন যা হেডিংলিতে বিস্ময়কর উত্থানের অনুরূপ ছিল। ব্রিটিশ ক্রীড়ার ইতিহাসে অন্যতম আনন্দঘন মুহুর্তের অন্যতম ছিল এটি।[১১]
১৯৮৬ থেকে ১৯৮৮ সালের মধ্যে ২৬.৪৩ গড়ে ৮৩টি টেস্ট উইকেট পান। এ সময় তাকে ইংল্যান্ডের সেরা সফলতম বোলাররূপে আখ্যায়িত করা হয়েছিল। দীর্ঘ দূরত্ব থেকে উল্লেখযোগ্য পেস ও আউটসুইংয়ে প্রায় ৪৫ ডিগ্রী কোণে উইকেট বল ফেলতেন তিনি। ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমে ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৫/৬৮ পান। এরফলে দলের অ্যাশেজ জয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। এছাড়াও ওডিআই সিরিজে ১৫.৮৫ গড়ে ২০ উইকেট পান।
পরবর্তী শীতকালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ড্র হওয়া সিরিজে খেলোয়াড়ী জীবনের সেরা বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। ক্রাইস্টচার্চের ল্যাঙ্কাস্টার পার্কের খেলায় প্রথম পাঁচটি উইকেট পতনসহ ৬/৩৮ বোলিং করেন ডিলি।
তবে, আম্পায়ারের সাথে তর্ক-বিতর্কের প্রেক্ষিতে ২৫০ পাউন্ড জরিমানার সম্মুখীন হতে হয় যা স্ট্যাম্পে রক্ষিত মাইক্রোফোনে স্পষ্ট শোনা যাচ্ছিল।[১২] অকল্যান্ডেও ৫/৬০ পান। এ সিরিজটিতে ১৪ গড়ে পনেরো উইকেট পেয়েছিলেন গ্রাহাম ডিলি।
তার বোলিং ভঙ্গীমার বিশেষ করে অপ্রত্যাশিতভাবে দৌঁড়ানোর বিষয়টি প্রায়শঃই আলোচনার খোড়াক জোগাতো। ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করা হয় যে, তিনি জেফ থমসনের বোলিং অনুসরণ করতেন। পরবর্তীকালে ডিলির বোলিংয়ের ধরনটি নিউজিল্যান্ডের ক্রিস কেয়ার্নস ব্যবহার করেছেন।
১৯৮৮ সালে ফাস্ট বোলারদের কোচিংয়ের প্রভাব সম্পর্কে কথা বলার এক পর্যায়ে জিওফ্রে বয়কট মন্তব্য করেন যে, গ্রাহাম ডিলির জীবনে কি ঘটেছে তা নিশ্চয়ই আপনাদের স্মরণে আছে। তিনি প্রকৃত দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলার হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। নিজ কানে সঠিক স্থান ও দূরত্ব বজায় রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন। এখন তিনি ডেনিস লিলির বোলিং অনুসরণ করছেন ডেনিস থ্যাচার পেস নিয়ে।
১৯৮৭ মৌসুমে ওরচেস্টারশায়ারের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। দলটি তাদের ইতিহাসের সেরা সময়ে পথে ধাবিত হয়। পরবর্তী তিন বছরে দলটি চারটি ট্রফি জয় করতে সমর্থ হয়। আঘাতের সমস্যা নিয়েও ১৯৮৮ ও ১৯৮৯ সালের কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন গ্রাহাম ডিলি।
দলীয় সঙ্গী গ্রেইম হিককে সাথে নিয়ে এ অধ্যায়ের সূচনা ঘটালেও শিরোনামে হিক'এন'ডিলি সার্কাস লেখা হয়।
ডিলির খেলোয়াড়ী জীবনে শুরু হয়েছিল নাজুকতায়; তেমনি ১৯৮৯ সালের অ্যাশেজ সিরিজের এজবাস্টনের সর্বশেষ টেস্টেও একই ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। ঐ শীতে মাইক গ্যাটিংয়ের নেতৃত্বাধীন দলের সাথে বিদ্রোহী দলের সদস্যরূপে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর না করার সিদ্ধান্ত নেন। তবে, পরবর্তী কয়েক মৌসুম কাউন্টি দলে খেলা অব্যাহত রাখেন। এপ্রিল, ১৯৯২ সালে ওরচেস্টারশায়ারের পক্ষে তিনটি খেলায় অংশ নেন। দ্বিতীয় একাদশে আরও কয়েকটি খেলায় অংশ নেয়ার পর ঐ মৌসুম শেষে আঘাতের কারণে অবসর গ্রহণের কথা ঘোষণা করেন।
ওরচেস্টারশায়ারে স্থানান্তরের পর আর্থিক সুবিধা মৌসুমেও তার আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি।
খেলা থেকে অবসর নেয়ার পর কোচ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন। প্রথমে ইংল্যান্ড মহিলা ক্রিকেট দলের কোচ মনোনীত হন। এরপর ২০০১-০২ মৌসুমে ভারত সফরে পুরুষ দলের সহযাত্রী হন। জিম্বাবুয়ে ও স্কটল্যান্ডে কোচের দায়িত্ব পালন করেন। লাফবোরা ইউসিসিইতে প্রধান কোচ হিসেবে ১১ বছর ক্রিকেট পরিচালক পদে ছিলেন।[৬][১৩][১৪]
মন্টি পানেসর, জেমস অ্যানিয়ন, রুয়েল ব্রাদওয়েট, জেমস অ্যাডামস ও রব টেলরকে প্রশিক্ষণ দেন তিনি।
ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন তিনি। দুইবার বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে তার। কেন্টের ক্রিকেটার গ্রাহাম জনসন সম্পর্কে তার শ্যালক।
চার সন্তানের জনক ছিলেন তিনি। ওরচেস্টার ওয়ারিয়র্স রাগবি দলের সহঃ অধিনায়ক ক্রিস পেনেল তার সন্তান।[১৫]
৫২ বছর বয়সে ৫ অক্টোবর, ২০১১ তারিখে লিচেস্টারে তার দেহাবসান ঘটে। মৃত্যুর এক সপ্তাহ পূর্বে কণ্ঠনালীর ক্যান্সারের চিকিৎসা করেছিলেন। ৯ নভেম্বর, ২০১১ তারিখে ওরচেস্টার ক্যাথেড্রালে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।