ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | গ্রিগরি মাইকেল রিচি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | স্টানথর্প, কুইন্সল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া | ২৩ জানুয়ারি ১৯৬০|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | ফ্যাট ক্যাট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | ব্যাটসম্যান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৮০–১৯৯২ | কুইন্সল্যান্ড বুলস | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৬ এপ্রিল ২০১৭ |
গ্রিগরি মাইকেল গ্রেগ রিচি (ইংরেজি: Greg Ritchie; জন্ম: ২৩ জানুয়ারি, ১৯৬০) কুইন্সল্যান্ডের স্টানথর্প এলাকায় জন্মগ্রহণকারী সাবেক অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৮০-এর দশকে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে কুইন্সল্যান্ডের প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শী ছিলেন। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৭ সময়কালে ৩০ টেস্ট ও ৪৪টি ওডিআইয়ে অংশগ্রহণ অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে খেলেছেন ‘ফ্যাট ক্যাট’ ডাকনামে পরিচিত গ্রেগ রিচি।
বিশাল দেহের অধিকারী হওয়ার কারণে তিনি ‘ফ্যাট ক্যাট’ নামে পরিচিতি পান। ১৯৮০ থেকে ১৯৯২ মেয়াদে কুইন্সল্যান্ডের পক্ষে খেলেন। ২০০০ সালে কুইন্সল্যান্ডের ইতিহাসে শেফিল্ড শিল্ডে ছয় সহস্রাধিক রান সংগ্রহকারী সাতজন সেরা ক্রিকেটারের একজনরূপে গণ্য হন।[১]
১৯৮০-৮১ মৌসুমে কুইন্সল্যান্ডের পক্ষে তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। প্রতিপক্ষ ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে একবার ব্যাটিং করে ৭ রান তুলেন।[২][২] তবে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতিমূলক নিজস্ব তৃতীয় খেলায় বেশ ভাল করেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৭ রান তুলে দলকে পরাজয়ের হাত থেকে বাঁচান।[৩][৪] সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭৪ করেন।[৫][৬] সফরকারী ভারতীয় একাদশের বিপক্ষে ৭৫ রানের ইনিংস উপহার দিয়ে ভবিষ্যতের টেস্ট খেলোয়াড়ের কথা জানান দেন।[৭][৮] এরপর ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে ১৪০ রান করে প্রথমবারের মতো সেঞ্চুরি করেন।[৯][১০]
১৯৮১-৮২ মৌসুম শেষে কিম হিউজের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়ার একদিনের দলের সংরক্ষিত সদস্য হন।[১১] কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন খেলায় অংশ নিতে পারেননি রিচি। ১৯৮২ সালের শুরুতে নিউজিল্যান্ড সফরে যাওয়া থেকে বঞ্চিত হন। কিন্তু, তাসমানিয়ার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করলে ১৯৮২ সালের পাকিস্তান সফরে তাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[১২][১৩]
১৯৮২-৮৩ মৌসুমে পাকিস্তান সফরে অস্ট্রেলিয়ার সদস্যরূপে যান ও মাঝারিসারির ব্যাটসম্যানরূপে গ্রেগ চ্যাপেলের স্থলাভিষিক্ত হন। ঐ সফরে কিম হিউজ, অ্যালান বর্ডার, ব্রুস লেয়ার্ড, জন ডাইসন ও গ্রেইম উডের ন্যায় শীর্ষসারির ব্যাটসম্যান ছিলেন। তন্মধ্যে রিচি ও ওয়েন ফিলিপসই তুলনামূলকভাবে কনিষ্ঠ ছিলেন। কিম হিউজের ভাষ্য মতে, তারা টেস্টের জন্য নিজেদেরকে উজাড় করে দিবেন।[১৪]
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড একাদশের বিপক্ষে ৫৯ রান তুললে তার টেস্ট অভিষেকের সুযোগ ঘটে।[১৫][১৬][১৭] তিনি ৪ ও ১৭ রান তুলেন।[১৮][১৯] খেলা চলাকালে আম্পায়ার বরাবর একটি পাথর নিক্ষেপ করা হয় যা পরবর্তীতে জানা যায় যে, দর্শকদের কাছ থেকে তাকে লক্ষ্য করে এ নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছিল।[২০] ফয়সালাবাদের ইকবাল স্টেডিয়ামে নিজস্ব দ্বিতীয় টেস্টে পিটার স্লিপের পরিবর্তে খেলেন।[২১] ঐ টেস্টে তিনি তার প্রথম সেঞ্চুরি অপরাজিত ১০৬ রান তুলেন। তাস্বত্ত্বেও তার দলের পরাজয় রুখা যায়নি।[২২][২৩] তৃতীয় টেস্টে ২৬ ও ১৮ রান তুলে ব্যর্থতার কথা জানান দেন।[২৪] তৃতীয় ওডিআই চলাকালে থার্ডম্যান অঞ্চলে ফিল্ডিংরত অবস্থায় ধাওয়ার কবলে পড়েন যাতে খেলা পরিত্যক্ত ঘোষিত হয়।[২৫]
১৯৮২-৮৩ ও ১৯৮৩-৮৪ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া দলে যুক্ত হতে ব্যর্থ হন। কিন্তু, ১৯৮৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারত সফরে তাকে নেয়া হয়। ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমের গ্রীষ্মেও অস্ট্রেলিয়া দলে ছিলেন।
১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত মাঝারিসারির ব্যাটসম্যানরূপে দলে খেলেন। তন্মধ্যে, ১৯৮৫ সালে ইংল্যান্ড সফরে অ্যাশেজ সিরিজও অন্তর্ভুক্ত ছিল। এ সময়েই নটিংহামের বিপক্ষে নিজস্ব সর্বোচ্চ ১৪৬ রান তুলেন। ১৯৮৬ সালে নিউজিল্যান্ড ও ভারত সফরের পর ১৯৮৬-৮৭ মৌসুমে ইংল্যান্ড সফরে যান।
১৯৮৬ সালের বিখ্যাত টাই টেস্টে অংশ নেন। মাদ্রাজে ভারতের বিপক্ষে অ্যালান বর্ডারের নেতৃত্বাধীন দলে ব্যাটসম্যান ডিন জোন্স ক্রিজে বমি করে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেলে বর্ডার তাকে ‘অনঢ় কুইন্সল্যান্ডার’ (রিচি) হিসেবে আখ্যায়িত করে মাঠে পাঠান। পরবর্তীতে জোন্স মাঠে ফিরে দ্বি-শতক হাঁকিয়েছিলেন।
রিচিকে প্রাধান্য দিয়ে ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে কুইন্সল্যান্ডের অধিনায়কত্ব থেকে অ্যালান বর্ডার সরে দাঁড়ান। এ প্রসঙ্গে রিচি মন্তব্য করেন যে, এ. বি [বর্ডার] ও গ্রেগ চ্যাপেলের ন্যায় সেরা অধিনায়কদের অধীনে খেলেছি। আশাবাদী যে, আমি তাদের অভিজ্ঞতাকে তুলে ধরতে পারবো।[২৬] ঐ মৌসুমে সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে ১২৩[২৭] ও দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২১৩ রান তুলেন।[২৮] শেফিল্ড শিল্ডের চূড়ান্ত খেলায় কুইন্সল্যান্ড অংশ নিলেও নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে পরাজিত হয় তার দল।[২৯][৩০] ব্যাট হাতে নিয়ে ৫৪ গড়ে ৯২৮ রান তুলে নিজের প্রতিভা স্বার্থক করেন।
১৯৯০ সালে গুজব রটে যে, রিচিকে কুইন্সল্যান্ডের অধিনায়কত্ব থেকে তুলে নেয়া হবে।[৩১] এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন।[৩২] তবে, নতুন কোচ জেফ থমসন ও কিউসিএ প্রধান নির্বাহী ব্যারি রিচার্ডসের হস্তক্ষেপে তাকে দলে রাখা হয়।[৩৩][৩৪]
১৯৯১-৯২ মৌসুমের শুরুতে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ফিরে আসেন।[৩৫] মৌসুমের শুরুর দিকে ধীরগতিতে অগ্রসর হলেও পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন।[৩৬] রিচি পুনরায় অবসর নেন; তবে এবার বেশ ভালো সময়ে।
ক্রিকেটের বাইরে এসে নৈশকালীন বক্তা ও ট্রাভেল এজেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। গণমাধ্যমেও বেশ সফলতা পেয়েছেন। পুরো দাড়িতে পূর্ণ পাঞ্জাবীশিখ হিসেবে কৌতুকপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। চ্যানেল নাইনের দ্য ফুটি শো’য় মহাত্মা কোট চরিত্রে অভিনয়সহ অন্যান্য রেডিও চ্যানেলের ক্রীড়াবিষয়ে কৌতুকধর্মী কথোপকথনে নিয়োজিত থাকেন।
বর্তমানে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বসবাস করছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় প্রায়শঃই ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে মনোনিবেশ ঘটাচ্ছেন। এছাড়াও, তাকে প্রায়শঃই পিজিএট্যুর.কমে ধারাভাষ্যকর্মে নিযুক্ত হতে দেয়া যায়।[৩৭][৩৮]
২০১২ সালে অ্যাডিলেড ওভালে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার প্রথম টেস্ট চলাকালে বর্ণবাদ ও ইসলামভীতি নেতিবাচক বক্তব্য দিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেন।[৩৯] চার মুসলিম ও দুই কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান খেলোয়াড় নিয়ে গড়া দক্ষিণ আফ্রিকা দলের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে অভিযোগ তুললে কার্যত ২০১২-১৩ মৌসুম থেকে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।[৪০]