গ্রেটা গারউইগ | |
---|---|
Greta Gerwig | |
![]() ২০১৮ সালে বার্লিনালেতে গারউইগ | |
জন্ম | গ্রেটা সেলেস্ট গারউইগ ৪ আগস্ট ১৯৮৩ |
মাতৃশিক্ষায়তন | বার্নার্ড কলেজ |
পেশা | অভিনেত্রী, নাট্যকার, পরিচালক, চিত্রনাট্যকার |
কর্মজীবন | ২০০৬–বর্তমান |
পুরস্কার | পূর্ণ তালিকা |
গ্রেটা সেলেস্ট গারউইগ (ইংরেজি: Greta Celeste Gerwig; জন্ম: ৪ঠা আগস্ট ১৯৮৩) হলেন একজন মার্কিন অভিনেত্রী, লেখক, পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার। তিনি শুরুতে স্বল্প বাজেটের কয়েকটি চলচ্চিত্রে কাজ করে পরিচিতি লাভ করেন।[১][২] ২০০৬ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে তিনি জো সোয়ানবার্গের কয়েকটি চলচ্চিত্রে কাজ করেন এবং যুগ্মভাবে কয়েকটি চলচ্চিত্র রচনা ও পরিচালনা করেন, তন্মধ্যে রয়েছে হ্যানা টেকস দ্য স্টেয়ারস (২০০৭) ও নাইটস অ্যান্ড উইকেন্ডস (২০০৮)।[৩]
২০১০-এর দশকের শুরু থেকে তিনি নোয়াহ বোমবাচের সাথে যৌথভাবে কয়েকটি চলচ্চিত্রে কাজ করেন, যার মধ্যে রয়েছে গ্রিনবার্গ (২০১০), ফ্রান্সেস হা (২০১২) ও মিস্ট্রেস আমেরিকা (২০১৫)। ফ্রান্সেস হা চলচ্চিত্রের জন্য তিনি একটি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। এছাড়া তিনি ড্যামসেলস ইন ডিসট্রেস (২০১১), টু রোম উইথ লাভ (২০১২), জ্যাকি (২০১৬) ও টোয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ওমেন (২০১৬) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। টোয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ওমেন ছবির জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে ক্রিটিকস চয়েস চলচ্চিত্র পুরস্কার মনোনয়ন লাভ করেন।[৪]
২০১৭ সালে লেডি বার্ড চলচ্চিত্র দিয়ে গারউইগের একক পরিচালক হিসেবে অভিষেক হয়। ছবিটি সমাদৃত হয় এবং ৭৫তম গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারে সেরা সঙ্গীতধর্মী বা হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র বিভাগে পুরস্কার লাভ করেন। লেডি বার্ড ছবিতে তার কাজের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যের জন্য গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার ও শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্য বিভাগে বাফটা পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। এছাড়া তিনি ৯০তম অস্কার আয়োজনে শ্রেষ্ঠ পরিচালনা ও শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্য বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। গারউইগ অস্কারের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে মনোনীত পঞ্চম নারী।[৫]
গারউইগ ১৯৮৩ সালের ৪ঠা আগস্ট ক্যালিফোর্নিয়ার স্যাক্রামেন্টোতে জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতা ক্রিস্টিন (জন্মনাম: সোয়ার) একজন ওবি-জিন সেবিকা এবং পিতা গর্ডন গারউইগ একটি ক্রেডিট ইউনিয়নে ক্ষুদ্র ব্যবসায় ঋণ বিভাগে কাজ করতেন।[৬] তার পিতামাতার তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এবং তার ফ্রান্সেস হা চলচ্চিত্রে তার চরিত্রের পিতামাতা চরিত্রে অভিনয় করেছেন।[৬] তার বড় ভাই একজন ল্যান্ডস্কেপ স্থপতি এবং বোন ইকুয়াল ইমপ্লয়মেন্ট অপরচুনিটি কমিশনের ব্যবস্থাপক।[৭][৮] তার পূর্বপুরুষগণ জার্মান, আইরিশ ও ইংরেজ ছিলেন এবং তিনি ইউনিটারিয়ান ইউনিভার্সালিস্ট হিসেবে বেড়ে ওঠেন।[৯]
গারউইগ স্যাক্রামেন্টোর বালিকা ক্যাথলিক বিদ্যালয় সেন্ট ফ্রান্সিস হাই স্কুলে পড়াশোনা করেন। তার ভাষ্যমতে তিনি শৈশবে খুবই গুরুগম্ভীর ছিলেন।[১০][১১] তার নৃত্যের প্রতি আকর্ষণ ছিল এবং তিনি নিউ ইয়র্কে সঙ্গীতধর্মী মঞ্চনাটকে ডিগ্রি অর্জন করার ইচ্ছা পোষণ করতেন। কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি বার্নার্ড কলেজ থেকে ইংরেজি ও দর্শন বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন।[১১][১২] শ্রেণিকক্ষের বাইরে তিনি কেট ম্যাকিননের সাথে কলাম্বিয়া ভার্সিটি শোতে অংশগ্রহণ করতেন।[১৩]
গারউইগ মূলত একজন নাট্যকার হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু নাট্য রচনা বিষয়ক এমএফএ প্রোগ্রামে ভর্তি হতে না পারায় তিনি অভিনয়ের দিকে ঝুঁকেন।[৬] ২০০৬ সালে বার্নার্ড কলেজে পড়া অবস্থায় তিনি জো সোয়ানবার্গের এলওএল চলচ্চিত্রে একটি ছোট চরিত্রে কাজের সুযোগ পান এবং পরে জে ও মার্ক ডুপ্লাসের ব্যাগহেড-এ কাজ করেন। সোয়ানবার্গের সাথে তার যুগলবন্দির ফলে তারা হ্যানা টেকস দ্য স্টেয়ারস (২০০৭) যুগ্ম-রচনা এবং নাইটস অ্যান্ড উইকেন্ডস (২০০৮) যুগ্ম-রচনা ও পরিচালনা করেন। এই চলচ্চিত্রগুলোর মধ্য দিয়ে তিনি উদীয়মান মাম্বলকোর চলচ্চিত্র আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন,[১][২] এবং তাকে প্রায়ই "ইট গার্ল" নামে অভিহিত করা হত।[৩][১৪][১৫]
যদিও তিনি একাধিক মাম্বলকোর চলচ্চিত্র নির্মাতাদের সাথে কাজ করেন এবং কয়েকটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ও করেন, তার মূলধারার সাফল্য অধরা রয়ে যায়। গারউইগ জীবনের এই সময় সম্পর্কে বলেন, "আমি খুবই হতাশাগ্রস্থ ছিলাম। আমার বয়স ছিল ২৫ [২০০৮ সালে] এবং ভাবতাম, 'এটাই সেরা সময় হওয়ার কথা এবং আমি দুর্বিসহ দিন যাপন করছি' কিন্তু মনে হচ্ছিল আমাকে দিয়ে অভিনয় হবে, এবং আমি অভিনয়ের পাঠে ফিরে গিয়েছিলাম।"[১১]
২০১০ সালে গারউইগ নোয়া বমবাখের গ্রিনবার্গ চলচ্চিত্রে বেল স্টিলার, রিস ইফ্যান্স ও জেনিফার জেসন লেইয়ের সাথে অভিনয় করেন।[১৬][১৭] দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর সমালোচক এ. ও. স্কট এই চলচ্চিত্র ও অন্যান্য চলচ্চিত্রে গারউইগের কাজ সম্পর্কে লিখেন, "গারউইগ হলেন চলচ্চিত্রের কৌশলের এমন একজন দূত যা প্রায়ই এই কৌশলের ধারণার বিপরীত হিসেবে প্রতীয়মান হয়ে থাকে।"[১৮] ২০১০ সালে জিমি কিমেল লাইভ! অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গারউইগকে প্রথমবারের মত আলাপচারিতা অনুষ্ঠানে দেখা যায়। ২০১১ থেকে ২০১৫ সালে তিনি অ্যাডাল্ট সুইমের অ্যানিমেটেড ধারাবাহিক চায়না, ইল-এর একটি প্রধান চরিত্রের জন্য কণ্ঠ প্রদান করেন। ২০১১ সালে তাকে এইচবিওর নির্মিতব্য দ্য কারেকশন্স-এ প্রধান চরিত্রে কাজের ডাক পান, কিন্তু ধারাবাহিকটিতে তাকে নেওয়া হয়নি।[১১] ২০১২ সালে গারউইগ উডি অ্যালেনের টু রোম উইথ লাভ চলচ্চিত্রে জেসি আইজেনবার্গ ও আলেক বল্ডউইনের সাথে অভিনয় করেন।[১৯]
বছর | চলচ্চিত্র | একাডেমি পুরস্কার | বাফটা পুরস্কার | গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার | |||
---|---|---|---|---|---|---|---|
মনোনয়ন | বিজয় | মনোনয়ন | বিজয় | মনোনয়ন | বিজয় | ||
২০১৭ | লেডি বার্ড | ৫ | ০ | ৩ | ০ | ৪ | ২ |
২০১৯ | লিটল উইমেন | ৬ | ১ | ৫ | ১ | ২ | ০ |