গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড বা 'জি টি রোড' এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন ও দীর্ঘতম সড়ক পথ। অন্তত ২৫০০ বছর ধরে[১][২] এটি মধ্য এশিয়াকে ভারতীয় উপমহাদেশের সাথে সংযুক্ত করেছে। এটি বাংলাদেশের মায়ানমার সীমান্তে টেকনাফ হতে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও ঢাকা, কলকাতা, কানপুর, দিল্লি, ভারতের অমৃতসর হয়ে পশ্চিমে পাকিস্তানের লাহোর, গুজরাট, রাওয়ালপিন্ডি এবং পেশোয়ার কাবুল, আফগানিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত। [৩] এর প্রাক্তন নামের মধ্যে ছিল উত্তরপথ, শাহ রাহে আজ়ম, সড়কে আজ়ম, বাদশাহি সড়ক।
গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডে বিস্তৃত রুট মৌর্য সাম্রাজ্যের সময় থেকে ছিল। মহাসড়কটি খ্রিস্টপূর্ব ৩ য় শতাব্দীতে উত্তরপথ নামে একটি প্রাচীন পথ ধরে তৈরি করা হয়েছিল,[৪] এটি গঙ্গার মুখ থেকে ভারতের উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। অশোকের অধীনে এই রাস্তার আরও উন্নতি করা হয়েছিল।
শের শাহ শুরি পুরানো রুটে সোনারগাঁও এবং রোহতাস পুনরায় যোগ করেছিলেন।[৫] রাস্তার আফগান প্রান্তটি মাহমুদ শাহ দুররানির অধীনে পুনর্নির্মিত হয়। ১৮৩৩ থেকে ১৮৬০ সালের মধ্যে ব্রিটিশরা এর আরো সংস্কারসাধন করে।
বৌদ্ধ সাহিত্য এবং মহাভারতের মতো ভারতীয় মহাকাব্যগুলি মৌর্য সাম্রাজ্যের আগেও গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডের অস্তিত্ব স্বীকার করে এবং তখন একে উত্তরপথ বলা হত। রাস্তাটি ভারতের পূর্বাঞ্চলকে মধ্য এশিয়ার সাথে সংযুক্ত করত[৬]
সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত আধুনিক গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডের অগ্রদূত এবং এটি পারস্যের রয়্যাল রোড দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল। [৭]খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দীতে মৌর্য সাম্রাজ্যের সময়, ভারত এবং পশ্চিম এশিয়া এবং বিশ্বের বিভিন্ন অংশের মধ্যে ওভারল্যান্ড বাণিজ্য উত্তর-পশ্চিমের শহরগুলির মধ্য দিয়েই চলত। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য, তক্ষশীলা থেকে পাটলিপুত্র (বর্তমান ভারতের পাটনা) পর্যন্ত রাস্তার রক্ষণাবেক্ষণে কর্মকর্তাদের একটি সম্পূর্ণ বাহিনী তৈরি করে ছিলেন। আটটি ধাপে নির্মিত রাস্তাটি পুরুষপুরা, তক্ষশীলা, হস্তিনাপুরা, কান্যকুব্জা, প্রয়াগ, পাটলিপুত্র এবং তাম্রলিপ্ত শহরগুলি সংযোগ করত।[৮]
পাণিনি উল্লেখ করেন চন্দ্রগুপ্তের পথটি প্রাচীন "উত্তরাপথ" বা উত্তর পথের উপর দিয়ে নির্মিত হয়েছিল। সম্রাট অশোক, রুট বরাবর
গাছ লাগানো, কূপ নির্মাণ এবং ভ্রমণকারীদের জন্য নিমিষধ্যায়" নামক বিশ্রাম-গৃহ তৈরি করেন। সম্রাট কনিষ্ক উত্তরপথ নিয়ন্ত্রণ করতেন বলেও জানা যায়।[৯][১০][১১]
সুর সাম্রাজ্যের মধ্যযুগীয় শাসক শের শাহ সুরি ১৬ শতকে চন্দ্রগুপ্তের রয়্যাল রোড মেরামত করছিলেন। সোনারগাঁও এবং রোহতাসের পুরানো রুটটি আবার নতুন করে তৈরি করা হয় এবং একটি সরাই তৈরি করা হয়। জাহাঙ্গীর তার শাসনামলে ফরমান জারি করেন যে সমস্ত সরাই পোড়া ইট ও পাথর দিয়ে তৈরি করা হবে। লাহোর এবং আগ্রার মধ্যবর্তী এলাকায় গাছ লাগানো হয় এবং সেতু নির্মাণ করা হয়।[১২] রুটটিকে সুরি দ্বারা "সদক-ই-আজম" এবং মুঘলদের দ্বারা "বাদশাহী সড়ক" হিসাবে উল্লেখ করা হত।[১৩]
১৮৩০-এর দশকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাণিজ্যিক ও প্রশাসনিক উদ্দেশ্যে ধাতব রাস্তা নির্মাণের একটি কার্যক্রম শুরু করে। কলকাতা থেকে দিল্লি হয়ে আফগানিস্তানের কাবুল পর্যন্ত রাস্তাটি পুনর্নির্মিত হয়েছিল
↑Sanjeev, Sanyal (15 November 2012). Land of the Seven Rivers: A Brief History of India's Geography. Penguin Random House India Private Limited. pp. 72–73, 103. ISBN 9788184756715.
↑Benjamin Walker, p. 69, Hindu World: An Encyclopedic Survey of Hinduism. In Two Volumes. Volume II M-Z
Usha Masson Luther; Moonis Raza (১৯৯০)। Historical routes of north west Indian Subcontinent, Lahore to Delhi, 1550s-1850s A.D.। Sagar Publications।
Tayler, Jeffrey (নভেম্বর ১৯৯৯)। "India's Grand Trunk Road"। The Atlantic Monthly। 284 (5): 42–48।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
Farooque, Abdul Khair Muhammad (1977), Roads and Communications in Mughal India. Delhi: Idarah-i Adabiyat-i Delli.
Weller, Anthony (1997), Days and Nights on the Grand Trunk Road: Calcutta to Khyber. Marlowe & Company.
Kipling, Rudyard (1901), Kim. Considered one of Kipling's finest works, it is set mostly along the Grand Trunk Road. Free e-texts are available, for instance here.
Usha Masson Luther; Moonis Raza (১৯৯০)। Historical routes of north west Indian Subcontinent, Lahore to Delhi, 1550s–1850s A.D। Sagar Publications।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)
Arden, Harvey (মে ১৯৯০)। "Along the Grand Trunk Road"। National Geographic। 177 (5): 118–38।উদ্ধৃতি টেমপ্লেট ইংরেজি প্যারামিটার ব্যবহার করেছে (link)