গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশন (সংক্ষেপে জিএসএম) এক ধরনের ডিজিটাল তারবিহীন সেলুলার বা মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থা। জিএসএম তথ্য আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে ন্যারোব্যান্ড টিডিএমএ ব্যবহার করে। এটি GMSK মড্যুলেশন টেকনিক ব্যবহার করে থাকে। এভাবে একটি নির্দিষ্ট রেডিও তরংঙ্গে একই সাথে আটটি কলের সুবিধা নিশ্চিত করা যায়, তবে, অর্ধ-দ্রূতি(HR) প্রযুক্তি ব্যবহার করে সর্ব্বোচ্চ ১৬ টি পর্যন্ত কল করা যায়।। জিএসএম এর সূত্রপাত ১৯৯১ সালে। ১৯৯৭ সালের শেষ ভাগে এসে জিএসএম হয়ে ওঠে ১০০ টির বেশি দেশে জনপ্রিয় এবং বিশেষ করে ইউরোপ এবং এশিয়া তে প্রামাণ্য মোবাইল ব্যবস্থা।
সারা বিশ্বে বহু ফ্রিকোয়েন্সিতে জিএসএম প্রচলিত আছে। নিম্নের ছকে প্রধান কতগুলো ফ্রিকোয়েন্সির মধ্যে পার্থক্য দেওয়া হল।
সিস্টেম | GSM 800 | PGSM 900 | EGSM 900 | DCS 1800 | PCS 1900 |
---|---|---|---|---|---|
আপলিংক ফ্রিকোয়েন্সি | ৮২৪ - ৮৪৯ মেগাহার্টজ | ৮৯০ - ৯১৫ মেগাহার্টজ | ৮৮০ - ৯১৫ মেগাহার্টজ | ১৭১০ - ১৭৮৫ মেগাহার্টজ | ১৮৫০ - ১৯১০ মেগাহার্টজ |
ডাউনলিংক ফ্রিকোয়েন্সি | ৮৬৯ - ৮৯৪ মেগাহার্টজ | ৯৩৫ - ৯৬০ মেগাহার্টজ | ৯২৫ - ৯৬০ মেগাহার্টজ | ১৮০৫ - ১৮৮০ মেগাহার্টজ | ১৯৩০ - ১৯৯০ মেগাহার্টজ |
তরঙ্গদৈর্ঘ্য | ৩৭.৫ সেমি | ৩৩ সেমি (প্রায়) | ৩৩ সেমি (প্রায়) | ১৭ সেমি (প্রায়) | ১৬ সেমি (প্রায়) |
ব্যান্ডউইথ | ২৫ মেগাহার্টজ | ২৫ মেগাহার্টজ | ৩৫ মেগাহার্টজ | ৭৫ মেগাহার্টজ | ৬০ মেগাহার্টজ |
দুই ব্যান্ডের মধ্যবর্তি দূরত্ব | ৪৫ মেগাহার্টজ | ৪৫ মেগাহার্টজ | ৪৫ মেগাহার্টজ | ৯৫ মেগাহার্টজ | ৮০ মেগাহার্টজ |
রেডিও চ্যানেল সংখ্যা | ১২৫ | ১২৫ | ১৭৫ | ৩৭৫ | ৩০০ |
ট্রান্সমিশন রেট | 270kbps | 270kbps | 270kbps | 270kbps | 270kbps |
উপরিল্লিখিত ফ্রিকোয়েন্সি ছাড়াও ৪৫০,৪৮০,৭৫০,৮১০,৮৫০ ফ্রিকোয়েন্সিতেও জিএসএম প্রচলিত আছে। এছাড়া "রেলওয়ে জিএসএম" (GSM-R 900) নামে ভিন্ন ধরনের জিএসএম, ৯০০ ফ্রিকোয়েন্সিতে চালু আছে, যা দ্রুত গতির ট্রেনে ( যেমন TGV /Shinkansen/ Intercity-Express ) PGSM মোবাইল ফোন গুলোকে যথাযথ সার্ভিস প্রদান করে।
জিএসএমের সবচেয়ে প্রচলিত ফ্রিকোয়েন্সি হচ্ছে প্রাইমারি জিএসএম ৯০০ । এই ফ্রিকোয়েন্সিতে মোট ১২৪ টি নির্দিষ্ট রেডিও তরংঙ্গ আছে যা ১,২,৩ ... ... ১২৪ এইভাবে নম্বরকরন করা হয়েছে। এই নির্দিষ্ট নম্বরকে ARFCN বলা হয়। ARFCN জানা থাকলে সূত্র অনুযায়ী ফ্রিকোয়েন্সি বের করা যায়। যেমন, সূত্র অনুযায়ী ARFCN = ৫৬ হচ্ছে ৯০১.২ MHz ফ্রিকোয়েন্সি। ১২৪ টি রেডিও তরংঙ্গ এর প্রতিটি ২০০KHz দ্বারা বিভক্ত, তার মানে, ৯০১.২ এর পরবর্তী রেডিও তরংঙ্গ হবে ৯০১.৪ এবং এর ARFCN মান হবে ৫৭।
ARFCN নম্বর শুধু প্রতিদিনের কাজে ব্যবহার করা হয়, ফ্রিকোয়েন্সিকে যদি 216.239.51.99 IP address এর সাথে তুলনা করা যায়, তবে ARFCN কে তুলনা করা যায় www.google.com এর সাথে।
একটি নির্দিষ্ট রেডিও তরংঙ্গে ৮টি কল করা যায়, তবে অর্ধ-দ্রুতি (HR) প্রযুক্তি দিয়ে ১৬টি কল করা সম্ভব, তবে কলের গুনগত মান কমে যাবে। প্রতিটি রেডিও তরংঙ্গ TDMA প্রযুক্তি দ্বারা ৮টি সময়-কুঠুরি (Time Slot) বিভক্ত। একটি সময়-কুঠুরি শুধু একটি মোবাইলে ফোনকে বরাদ্দ করা যায়। অর্ধ-দ্রুতি (HR) প্রযুক্তি দ্বারা একটি রেডিও তরংঙ্গকে ১৬টি সময়-কুঠুরিতে বিভক্ত করা হয়,তাই ১৬টি কল করা সম্ভব। মানুষের শ্রবন শক্তির সীমাবদ্ধতার কারণে একটি রেডিও তরংঙ্গকে ১৬টি সময়-কুঠুরির বেশি ভাগে বিভক্ত করা সম্ভব নয়।
একটি জিএসএম সিস্টেমে মূলত তিনটি অংশ থাকে:-
এদের মধ্যে এসএস এবং বিএসএস দুটির মধ্যে সম্বয় করে এনএমসি (NMC - Network Management Center) বা ওএমসি (OMC - Operation & Maintenance Center)-র মাধ্যমে।
সুইচিং সিস্টেমে নিম্নলিখিত যন্ত্রাংশ থাকে:-
বেজ স্টেশন সিস্টেমে দুটি যন্ত্রাংশ থাকে:-
মোবাইল সিস্টেমে দুটি যন্ত্রাংশ থাকে:-
সাধারণভাবে জিএসএম-এ একটি মোবাইল ফোনের তিনটি অবস্থা থাকে।
সাধারণভাবে আমাদের মনে হতে পারে IDLE অবস্থায় কোনও কাজ হয় না। বাস্তবে এ সময় নিম্নলিখিত ব্যাপারগুলি ঘটে থাকে।
সবুজ বোতাম চেপে কল করা থেকে লাল বোতাম চেপে কল শেষ করা পর্যন্ত যা ঘটে:-
যখন আমরা কথা বলি তখন কথা যেভাবে যায়:-