সুপার ঘূর্ণিঝড় (আইএমডি স্কেল) | |
---|---|
শ্রেণী ৪ (স্যাফির-সিম্পসন মাপনী) | |
গঠন | ২৮ অক্টোবর ২০১৫ |
বিলুপ্তি | ৪ নভেম্বর ২০১৫ |
সর্বোচ্চ গতি | ৩-মিনিট স্থিতি: ২৪০ কিমি/ঘণ্টা (১৫০ mph) ১-মিনিট স্থিতি: ২৪০ কিমি/ঘণ্টা (১৫০ mph) |
সর্বনিম্ন চাপ | ৯২৬ hPa (mbar); ২৭.৩৪ inHg |
হতাহত | ৯ |
ক্ষয়ক্ষতি | > $১০০ মিলিয়ন (2015 $) |
প্রভাবিত অঞ্চল | ওমান, সোমালিয়া, ইয়েমেন |
২০১৫ উত্তর ভারত মহাসাগরীয় ঘূর্ণিঝড় মৌসুম ের অংশ |
ঘূর্ণিঝড় চপলা (আরবি: إعصار تشابالا, ইইসার তাসাবালান; আরবি উচ্চারণ: [i̠ʕsˤäː ɾ taʃaː balaː]) হচ্ছে আমেরিকা ভিত্তিক যৌথ ঘূর্ণিঝড় সতর্কতা কেন্দ্র জেটিডব্লিউসি এর মতে আরব সাগরে রেকর্ড করা দ্বিতীয় শক্তিশালী ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এটা ২৮ অক্টোবর পশ্চিম ভারতে উৎপন্ন হয়। সমুদ্র পৃষ্ঠের উষ্ণ তাপমাত্রায় এটি দ্রুত ঘনীভূত হলে ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর একে ঘূর্ণিঝড় চপলা হিসেবে ঘোষণা করে। ২০০৭ সালের ঘূর্ণিঝড় গনুর পরে এটি আরব সাগরে শক্তিশালী রূপ নিতে সক্ষম হয়। ঘনীভূত হওয়ার পরে চপলা ১ নভেম্বর ইয়েমেনী দ্বীপ সুকাত্রার উপর আঘাত হানে। স্থলভূমিতে পৌঁছে ঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়লেও ২ নভেম্বর এটা এডেন উপসাগরে প্রবেশ করে পানির সাহচর্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হয়। উত্তর সোমালিয়া পার হয়ে চপলা দুর্বল হয়ে পড়ে পশ্চিম উত্তর-পশ্চিমে ঘুরে যায়। ৩ নভেম্বর ইয়েমেনের মুকাল্লায় ঝড়টি আঘাত হানে এবং ইয়েমেনের সব থেকে শক্তিশালী ঝড় হিসেবে পরিচিতি পায়। পরেরদিন ঝড়টি শান্ত হয়ে যায়।
ঘূর্ণিঝড় চপলা নামটি বাংলাদেশের দেয়া। এই বাংলা শব্দটির অর্থ দূরন্ত বালিকা। মেয়েদের নাম হিসেবে চপলা শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
৩০ অক্টোবর ওমান উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যা এবং তীব্র স্রোতের ব্যাপারে সতর্ক করে। নিম্নাঞ্চল থেকে জনগণকে দূরে সরে যাওয়ার উপদেশ দেওয়া হয়। জেলেদেরকে সমুদ্র থেকে দূরে থাকতে বলা হয় কারণ ঢেউয়ের উচ্চতা ৫ থেকে ৭ মি (১৬ থেকে ২৩ ফু) পর্যন্ত হয়।[১] ধফার প্রদেশ এর সকল স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ধারণা করা হয়েছিলো ঝড়টি সালালাহ তে আঘাত হানবে কিন্তু সহসা বাতাসের গতিবেগ বদলে দক্ষিণ পশ্চিমে ঘুরে গেলে ভয় ছড়িয়ে পড়ে।[২]
শরণার্থীবিষয়ক জাতিসংঘের হাইকমিশন সোমালিয়া ও ইথিওপিয়ার অভিবাসী ও শরণার্থী দের উত্তাল সমুদ্রের কারণে ইয়েমেন অভিমুখে যেতে নিষেধ করে। ইরানের পতাকাবাহী একটি জলযান উপকূলে ধরা পরে যার যাত্রীদের অনেকেই নিখোঁজ হয়ে যায়।[৩] চপলা বিশাল সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি করে সোমালিয়ার উপকূলে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করে, ২৮০ টি নৌকা ধ্বংস হয়,[৪] হাজারের বেশি অধিবাসী গৃহহীন হয়।[৫] ৪৫ কিমি (২৮ মা) রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পান্টল্যান্ডের ২৮ টি বিদ্যালয়ের ছাদ উড়ে যায়, পরবর্তীতে তাবুতে শিক্ষাকাজ পরিচালনা করতে হয়।[৬] সোমালিয়ার বারি অঞ্চলে ঝড়ে ২৫ হাজার প্রাণী মারা যায় এবং ৫১০০ গাছ ভেঙে পড়ে।[৪] ঝড়ের প্রভাবে সোমালিয়ার উত্তর পূর্বাঞ্চলে এবং সোমালিল্যান্ডের বারবারা জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টিপাতে সেখানকার ৩০০০ ভেড়া ও ছাগল এবং ২০০ উট মারা গেলে স্থানীয় যাযাবর জনগোষ্ঠী মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কারণ এসব গবাদিপশুর উপর তাদের জীবন ও জীবিকা নির্বাহ হতো।[৭] টানা বর্ষণে নিম্নাঞ্চলের অধিবাসীরা ঘরবাড়ি ছেড়ে উচ্চভূমিতে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে যেতে বাধ্য হয়।[৮]
ঝড় থামলে সোমালিল্যান্ড সরকার চাল, চিনি এবং প্লাস্টিক পাত বিতরণ করে।[৯]