চতুষ্কুমার | |
---|---|
চলনের দেবতা সনক, প্রবচনের দেবতা সনন্দন, গৌরবের দেবতা সনাতন, তপস্যার দেবতা সনৎকুমার | |
![]() | |
অন্যান্য নাম | সনকাদিক ঋষি |
অন্তর্ভুক্তি | দেব এবং ঋষি |
আবাস | ব্রহ্মলোক |
বাহন | ঈগল (সনকের বাহন), শকুন (সনন্দনের বাহন), চাতক (সনাতনের বাহন), চড়ুই (সনৎকুমারের বাহন) |
ব্যক্তিগত তথ্য | |
মাতাপিতা |
|
সহোদর | চিত্রগুপ্ত, নারদ ও প্রজাপতি দক্ষ |
হিন্দুদের পৌরাণিক একাধিক গ্রন্থ অনুযায়ী কুমারগণ হলেন চারজন ঋষি, যারা শিশুর ছদ্মবেশের সারাবিশ্বে ভ্রমণ করে বেড়ান৷ [১][২] তাদের নাম হলো যথাক্রমে সনক, সনন্দন, সনাতন ও সনৎকুমার৷ তাদেরকে সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার সর্বপ্রথম চার মানসপুত্র বলে অভিহিত করা হয়৷ ব্রহ্মার মন থেকে চার শিশুপুত্রের জন্মের পর তারা তাদের পিতার মতের বিরুদ্ধাচার করেন ও প্রতিজ্ঞা করেন যে তারা আজীবন অবিবাহিত কুমার হয়ে থাকবেন৷ তারা সিদ্ধান্ত নেন যে তাঁরা কোনো বাসনা ছাড়াই এই প্রকৃতিবাদী ও আধ্যাত্মবাদী মহাবিশ্বে ঘুরে বেড়াবেন এবং জীবজগৎকে জীবনের শিক্ষা দেবেন৷ [১] তারা সকলেই ছোটোবেলা থেকে বেদ অধ্যয়ণ শুরু করেন এবং একসাথে ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নেন৷ [৩]
ভাগবত পুরাণ এই চতুষ্কুমারকে বারোজন মহাজন বা মহাভক্তবৃৃন্দের তালিকার অন্তর্ভুক্ত করে।[৪] তারা জন্মের পর থেকেই আত্মমোক্ষ লাভ করলেও বিষ্ণুর চরণে তাদের সেবা নিবেদন করতে ইচ্ছুক ছিলেন৷ [৫] হিন্দু আধ্যাত্মিকতার বৈষ্ণবধারার একাধিক গ্রন্থে চতুষ্কুমারের উল্লেখ পাওয়া যায়৷ বৈষ্ণবদের মতে, বিষ্ণুর ও তার অবতার শ্রীকৃষ্ণের আরাধনাপদ্ধতি ভক্তবৃৃন্দের মধ্যে প্রচারে চতুষ্কুমার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য৷ শৈব্যধর্মেও চতুষ্কুমারের একাধিক উল্লেখ রয়েছে৷
ব্রহ্মার এই চারজন মানসপুত্র একত্রে একাধিক নামে পরিচিত যেমন: "কুমারগণ" "চতুর্সন" বা "চতুঃ সন" (যেই চারজনের নাম সন দিয়ে শুরু) এবং "সনকাদি" (সনক এবং অন্যান্য)৷[৬] তাদের সর্বাধিক প্রচলিত নামগুলি হলো, সনক (অর্থ আদি), সনাতন (অর্থ চিরন্তন), সনন্দন (অর্থ উৎফুল্লতা) এবং সনৎকুমার (অর্থ চিরকুমার).[১][২][৭] কিছু কিছু ক্ষেত্রে সনাতনের বদলে সনৎসুজাত নামটি পাওয়া যায়৷ মাঝে মধ্যে এই চারজন ব্যতীত ঋভু নামে পঞ্চম কুমারের নামও পাওয়া যায়৷ আবার অনেক সময়ে চতুর্কুমারের বদল ছয়জন কুমারের নামও পাওয়া যায় তার মধ্যে অতিযোজিত নামদুটি হলো সন এবং ঋভু বা সনৎসুজাত৷ [৮]
মহাভারতের কাহিনীতে আমরা এরকম সাতজন ব্রহ্মার কুমারের নাম পাই যেমন: অনিরুদ্ধ, সন, সনৎসুজাত, সনক, সনন্দন, সনৎকুমার, কপিল এবং সনাতন৷ এই সাত ঋষিকে জ্ঞানের উৎস (জ্ঞান আহরণ ব্যতীত) বলেও উল্লেখ করা হয়েছে৷ পরে এই সাতজন নিবৃত্তিকে বিবাহ করেছিলেন বলেও বর্ণিত রয়েছে৷ [৯]
সনৎকুমার শব্দের সংস্কৃত অর্থ "চিরকুমার"৷ [১০] তিনি শিব পুরাণের একটি অন্যতম খণ্ড ৫৯টি অধ্যায় সমন্বিত সনৎকুমার সংহিতা-র লেখক৷ এটিকে বৈষ্ণব ধারার ধর্মীয় পুস্তক পঞ্চরাত্রের একটি খণ্ড বলে মনে করা হয়৷
ছান্দোগ্য উপনিষদের সপ্তম অধ্যায়ে দেবর্ষি নারদ|নারদের কাছে সনৎকুমারের ভূম-বিদ্যায় অদিপর্ব অধ্যয়ণের কথা বর্ণনা করা হয়েছে৷ [১১][১২] মহাভারতে সনৎকুমারের উল্লেখ রয়েছে একজন মহান সন্ন্যাসী রূপে,[১৩][১৪] যাঁকে যোগ সম্পর্কিত একাধিক সংশয় বা প্রশ্নের সঠিক ব্যাখ্যা দিতে দেখা যায়৷ [১৫]
হিন্দুদের কনখল তীর্থস্থানে বহুল প্রচলিত জনশ্রুতি অনুসারে, হরিদ্বার (প্রাচীন গঙ্গাদ্বার)-এর নিকট কঠোর তপস্যার মাধ্যমে সনৎকুমার মহাসুতপশক্তি লাভ করেন৷ [১৬]
চতুর্কুমাররা ছিলেন সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মার প্রথম চারজন মানসপুত্র৷[১৭] ব্রহ্মা সমস্ত বিশ্ব সংসার সৃষ্টির দায়ভার গ্রহণ করলে তিনি প্রথমেই তার নিজের দেহাংশ ব্যবহার করে এমন কিছু সৃৃষ্টি করেন যা বা যারা তার সেই ক্ষত নিরাময় করতে পারবে৷ কুমারগণ ছিলেন প্রথম সৃষ্ট সেই জীব৷ তারা ব্রহ্মার মন থেকে সৃষ্ট হয়েছিলেন এবং তারা শিশুকুমার রূপে অবতীর্ণ হন৷ ব্রহ্মা তাদেরকে তাঁর পরবর্তী সৃৃষ্টির সুশ্রুষা করতে বললে তারা তাদের পিতার বাক্য না মেনে তারা বিশ্বজুড়ে সমস্ত জীবজগতের মধ্যে সত্ত্বগুণের প্রকাশ করতে এবং চিরজীবন দেবার্চনা করে কৌমার্য বজায় রাখতে অধিক উদ্যোগী হন৷ [৬][১৭] The ভাগবত পুরাণে উল্লেখ রয়েছে চতুর্কুমার তাদের পিতা ব্রহ্মার কথা মানতে নারাজ হলে ব্রহ্মা ক্রোধান্বিত হন এবং তার ক্রোধ থেকে রুদ্র (যিনি ছিলেন শিবের আরেক রূপ) সৃষ্টি হয়৷ [১] আবার মতান্তরে বিষ্ণুর প্রতি ব্রহ্মার তপস্যায় বিষ্ণুদেব খুশি হয়ে তার চারপুত্র হিসাবে চতুর্কুমার রূপে জন্ম নেন৷ [১৭] দেবীভাগবত পুরাণ এবং ভবিষ্যপুরাণের মতো গ্রন্থগুলি অনুসারে চতুর্কুমার ব্রহ্মারও পূর্বে সৃৃষ্ট (জীবনচক্রে চতুর্কুমার সৃষ্টি করে ব্রহ্মার মৃত্যু হয় এবং আবার তিনি জন্মলাভ করেন৷) [৬]
ভাগবত পুরাণের একটি কাহিনী অনুসারে চতুর্কুমার নিজের ইচ্ছায় যেকোনো জায়গায় ভ্রমণ করতে পারতেন৷ একদা তাঁরা একসঙ্গে বিষ্ণুর দর্শন পেতে বৈকুণ্ঠে এসে হাজির হন৷ তারা অনায়াসে বৈকুণ্ঠের বাইরের ছয়টি দ্বার অতিক্রম করে সপ্তম দ্বারের সামনে এসে হাজির হন৷ তাদের তপস্যার জেরে তাঁরা দীর্ঘায়ীযুক্ত হলেও শিশুসদৃৃশ দেখতে ছিলো, কিন্তু সপ্তম দ্বারে থাকা দ্বারপাল জয় ও বিজয় এবিষয়ে বিশেষ অবগত ছিলেন না৷ ফলে তারা চতুর্কুমারকে শিশু ভেবে বৈকুণ্ঠের দ্বারের সম্মুখে আটকে দেন ও ভেতরে ঢুকতে বাধা দেন৷ তারা চতুর্কুমারকে এও বলেন যে বিষ্ণুদেব এখন শয্যাগ্রহণ করছেন ফলে তিনি এখন দর্শন দিতে অপারক৷ [১৮] জয় ও বিজয়ের ওপর ক্রুদ্ধ হয়ে চতুর্কুমার তাদের প্রত্যুত্তরের বলেন যে বিষ্ণু তার দর্শনপ্রার্থীদের ও ভক্তদের জন্য সর্বদা উপলব্ধ থাকেন৷ এই বলে তারা দুই দ্বারপালকে অভিশাপ দেন যে তারা দুজনেই মরণশীল মানবরূপে ভূলোকে জন্মগ্রহণ করবেন তাঁদের সাধারণ মানুষের মতোই জন্মমৃত্যুর মায়াচক্রে জীবন অতিবাহিত করতে হবে৷ বিষ্ণু তাদের সম্মুখে প্রকট হলে জয় ও বিজয় তাকে অনুরোধ করেন এই শাপমোচনের কোনো উপায় করতে৷ বিষ্ণু বলেন ব্রহ্মাপুত্র চতুর্কুমারের শাপ বিফল করার কোনো পন্থা নেই বরং নিস্তারের দুটি পথ আছে৷ দ্বারপালগণ সেই উপায় জিজ্ঞাসা করলে বিষ্ণু বলেন হয় তাদেরকে সাধারণ মানুষ হয়ে সাতটি জন্মে পৃথিবীতে বিষ্ণুর সেবক হয়ে জন্ম নিতে হবে নতুবা দ্বিতীয় মতে তিনটি জন্মে পৃথিবীতে বিষ্ণুর বিভিন্ন অবতারের শত্রু হয়ে জন্ম নিতে হবে৷ এই দুটির যেকোনো একটি শর্ত পূরণ করে তবেই তারা আবার স্থায়ীভাবে বৈকুণ্ঠে প্রবেশ করতে পারবে৷ জয় এবং বিজয় উভয়ই সাতটি জন্ম অবধি শ্রীবিষ্ণুর থেকে দূরে থাকার কথা ভাবতেও পারতেন না, তাই তারা তিন জন্ম বিষ্ণুর একাধিক অবতারের শত্রুরূপে জন্মগ্রহণ করাকে স্বাচ্ছন্দবোধ করে শর্তপূরণের জন্য প্রস্তুত হন৷ [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
পৃৃথিবীতে প্রথম জীবনে তারা কৃতযুগে মহর্ষি কশ্যপ এবং প্রজাপতি দক্ষর কন্যা দিতির দুই পুত্র হিরণ্যাক্ষ ও হিরণ্যকশিপু নামে জন্মগ্রহণ করেন৷ সত্যযুগে বিষ্ণুর অবতার বরাহ অবতার বধ করেন হিরণ্যাক্ষকে এবং ঐ যুগেই বিষ্ণুর নৃসিংহ অবতার বধ করেন হিরণ্যকশিপুকে৷ দ্বিতীয় জীবনে ত্রেতাযুগে তাঁরা ঋষি বিশ্রবা ও রাক্ষসী নিকষার দুই পুত্র রাবণ ও কুম্ভকর্ণ নামে জন্মগ্রহণ করেন৷ ঐ যুগেই বিষ্ণুর রামাবতার তাদের হত্যা করেন৷ তৃতীয় জীবনে দ্বাপরযুগে তারা শিশুপাল ও দন্তবক্র নামে জন্মলাভ করেন এবং কৃষ্ণের হাতে নিহত হন৷
চার কুমারদের বক্তব্য হিন্দু মহাকাব্য মহাভারতের পাশাপাশি ভাগবত পুরাণে পাওয়া যায়।
মহাভারতের শান্তি পার্ব গ্রন্থে চার কুমার রাক্ষস রাজা বৃত্র ও তাঁর গুরু - ঋষি শুক্রকে প্রদত্ত বক্তৃতাটির বর্ণনা দিয়েছেন। রাজা এবং তাঁর গুরু কুমারদের পূজা করেন এবং তারপরে শুক্র তাঁদের বিষ্ণুর মাহাত্ম্য বর্ণনা করতে বলেছিলেন। সনাত-কুমার শুরু হয় বিষ্ণুকে সমস্ত স্রষ্টার স্রষ্টা ও ধ্বংসকারী হিসাবে বর্ণনা করে। তিনি বিষ্ণুর দেহের অংশগুলিকে মহাবিশ্বের উপাদান এবং উপাদানগুলির সাথে সমান করেছেন, উদাহরণস্বরূপ, পৃথিবী বিষ্ণুর পা এবং জল তাঁর জিহ্বা। সমস্ত দেবতাকে বিষ্ণু বলে বর্ণনা করা হয়েছে। সানতকুমারা তখন তিনটি গুনের অনুপাতের উপর নির্ভর করে সমস্ত প্রাণীকে ছয় বর্ণে শ্রেণিবদ্ধ করেছেন: সত্ত্ব (খাঁটি), রাজস (ম্লান) এবং তমস (অন্ধকার)। সর্বনিম্ন থেকে সর্বাগ্রে প্রাণীদের, বর্ণগুলি অন্ধকার (তমাস উচ্চ, রাজাস মধ্য, সত্ত্ব কম), ত্বকী (তমাস উচ্চ, সত্ত্ব্ব মাঝারি, রাজ কম), নীল (রাজাস উচ্চ, তমাস মাঝারি, সত্ত্ব কম), লাল (রাজাস উচ্চ, সত্ত্ব মধ্যমতমাস কম), হলুদ (তত্ত্ব বেশি, তমাস মাঝারি, রাজ কম) এবং সাদা (সত্ত্ব আরও, রাজাস মাঝ, তমাস কম)॥(বিষ্ণু পুরাণ জীবন্ত প্রাণী, নীচু প্রাণী এবং পাখি দেয়, মানুষ, প্রজাপতি, দেবতা এবং কুমাররা উপরের বর্ণগুলির স্বতন্ত্র উদাহরণ।সনাত-কুমার আরও ব্যাখ্যা করেছেন যে কীভাবে একটি জীব (জীব সত্তা) তার বিভিন্ন জন্মের মধ্যে অন্ধকার থেকে সাদাতে ভ্রমণ করে, শেষ পর্যন্ত যদি সে ভাল কর্ম, ভক্তি এবং যোগব্যায়াম করে তবে মোক্ষ লাভ করে।
ভাগবত পুরাণে চার কুমারদের হিন্দু পুরাণে প্রথম সার্বভৌম রাজা এবং বিষ্ণুর অবতার রাজা পৃথুর দরবারে যাওয়ার বিবরণ বর্ণনা করা হয়েছে। রাজা ঋষিদের উপাসনা করেছিলেন এবং তাদের মুক্তির উপায় (মোক্ষ) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যা পার্থিব জিনিসের জালে ধরা সমস্ত লোক অনুসরণ করতে পারে। সনাত-কুমার রাজাকে বলেছিলেন যে বিষ্ণু সকলেরই আশ্রয়স্থল এবং জন্ম ও পুনর্জন্মের চক্রকে মুক্তি দান করেন। তাঁর উপাসনা একজনকে বস্তুগত বাসনা এবং কামনা থেকে মুক্তি দেয়। একজনকে বৈষয়িক বস্তু থেকে মুক্তি দেওয়া উচিত, বিষ্ণুর অহিংসা ও ভক্তির সরল জীবনযাপন করা উচিত এবং একজন ভাল গুরুর শিক্ষা অনুসরণ করে আত্ম-উপলব্ধি অর্জন করা উচিত। একটি উপলব্ধি করা উচিত যে সমস্ত জীবন্ত জিনিস ঈশ্বরের ফর্ম। নিষ্ঠা ও জ্ঞান ছাড়া মানুষ অসম্পূর্ণ। চার পুরুষার্থ ("জীবনের লক্ষ্য") এর মধ্যে কেবল মোক্ষই চিরন্তন, যদিও ধর্মীয় কর্তব্য, সম্পদ এবং আনন্দ এই জীবনের সাথে ক্ষয় হয়। যদিও সমস্ত প্রাণী ধ্বংসের অধীনে রয়েছে, আমাদের দেহে আত্মা এবং ঈশ্বর চিরন্তন। সানাত-কুমার তাঁর পরামর্শ শেষ করে বলেছিলেন যে, ঈশ্বরের কাছে (বিষ্ণু বা কৃষ্ণ হিসাবে) আত্মসমর্পণ করা সর্বজনীন বিষয়। পৃথু আবার কুমারদের পূজা করেন, যিনি তাকে আশীর্বাদ করেছিলেন।
প্রথম স্তম্ভ বা নারদীয় পুরাণের পূর্বেভাগ, একটি উপপুরাণে ৪ টি পাদ বা বিভাগ রয়েছে, প্রত্যেকটি কুমার যথাক্রমে নারদকে বলেছিলেন। ব্রহ্মা, যিনি বিষ্ণুর কাছ থেকে পুরাণের জ্ঞান লাভ করেছিলেন, তিনি তাঁর চার কুমারকে এটি নকল করেছিলেন, যিনি তখন পুরাণগুলি নারদকে শিক্ষা দিয়েছিলেন। নারদ এটিকে ব্যাসের কাছে সঞ্চারিত করেছিলেন, যিনি এগুলি পুরাণ গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেন। বিষ্ণু পুরাণ দুটি অংশে রেকর্ড করা হয়েছে, বিষ্ণু পুরাণ এবং নারদিয়া পুরাণ।কুমার ভাইদের সনাকের শিক্ষা নারদীয় পুরাণে রয়েছে যা দুটি ভাগেও বিভক্ত, প্রথম অংশটি সনাক ও অন্যান্যদের শিক্ষা সংবলিত।
বিষ্ণুর অবতার রামের সাথে চার কুমারের সাক্ষাত সম্পর্কে একটি ঘটনা রামচরিতমানদের উত্তরাখণ্ডায় বর্ণিত। কুমাররা একবার ঋষি অগস্ত্যের সন্ন্যাসে অবস্থান করেছিলেন, যিনি তাদের রামের গৌরব সম্পর্কে বলেছিলেন। রামের সাথে দেখা করতে গিয়ে তারা বনভূমিতে গেলেন যেখানে রাম তাঁর ভাই এবং শিষ্য হনুমানের সাথে এসেছিলেন। রাম ও তাঁর ভাইয়েরা চার আলোকিত ঋষির সাথে সাক্ষাত করে এতটা সন্তুষ্ট হয়েছিলেন যে তারা তাদের প্রতি সম্মান জানায়। Ramaষিরা আশ্চর্য হয়ে রামের দেবতার দিকে তাকিয়ে রইল যে তারা তাঁর সামনে সিজদা করলেন এবং অত্যন্ত আনন্দের মধ্য দিয়ে সুখের অশ্রু বর্ষণ শুরু করলেন। রাম ঋষিদের দিকে তাকাতে গিয়ে গভীরভাবে মুগ্ধ হন এবং তাদের বসার জন্য বলেছিলেন এবং তাদের দুর্দান্ত কৃতিত্ব এবং বেদ ও পুরাণ সম্পর্কে ভ্রান্ত জ্ঞানের জন্য তাদের প্রশংসা করেছেন। রাম কর্তৃক প্রদত্ত প্রশংসার কথা শুনে চার কুমারও আনন্দিত হয়েছিল। তারা পরিবর্তে একটি স্তবক মধ্যে তাঁর মহান গুণাবলী গুণগান করেছেন।
বৈষ্ণবধর্ম (যে সম্প্রদায়টি বিষ্ণুকে সর্বোচ্চ বলে উপাসনা করে) চারটি সমপ্রদায় বা ঐতিহ্যে বিভক্ত। তাদের প্রত্যেকটি স্বর্গীয় সত্তার সাথে এর বংশের সন্ধান করে। কুমার সামপ্রদায়, যাকে নিম্বার্ক সম্প্রদায়, চতুঃ সন সম্প্রদায় এবং সনকাদি সম্প্রদায় নামেও পরিচিত এবং এর দর্শন দ্বৈতদ্বৈত ("দ্বৈততা") চার কুমার দ্বারা মানবতায় প্রচারিত বলে বিশ্বাস করা হয়। বিষ্ণু হামসার রাজহাঁস অবতারই এই দর্শনের সূচনা করেছিলেন এবং এটিকে চার কুমারকে শিখিয়েছিলেন, যিনি ফলশ্রুতিতে নারদকে শিখিয়েছিলেন, যিনি অবশেষে এটিকে সংস্রদের মূল ঘোষক পৃথিবী নিম্বার্কচার্য্য দিয়েছিলেন।