চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য | |
---|---|
![]() ধারাবাহিকের অফিসিয়াল পোস্টার | |
ধরন | |
নির্মাতা | সিদ্ধার্থ কুমার তিওয়ারী |
চিত্রনাট্য | মেধা যাদব |
পরিচালক | জে পি শর্মা সুমিত ঠাকুর |
সৃজনশীল পরিচালক | অমল সুরভি, অভিষেক সরকার |
শ্রেষ্ঠাংশে |
|
সুরকার | সঙ্গীত হলদিপুর সিদ্ধার্থ হলদিপুর সূর্যরাজ কমল লেনিন নন্দী রাজু সিংহ |
দেশ | ভারত |
মূল ভাষা | হিন্দি |
মৌসুমের সংখ্যা | ১ |
পর্বের সংখ্যা | ২০৮ |
নির্মাণ | |
প্রযোজক | গায়ত্রী গিল তিওয়ারি রাহুল কুমার তিওয়ারী সিদ্ধার্থ কুমার তিওয়ারী |
নির্মাণ স্থান | উমেরগাঁও, গুজরাত, ভারত |
সম্পাদক | তরুণ সুনিল বব্বর |
ক্যামেরা বিন্যাস | মাল্টি ক্যামেরা |
স্থিতিকাল | ২০-৪০ মিনিট |
নির্মাণ প্রতিষ্ঠান | ওয়ান লাইফ স্টুডিওস |
পরিবেশক | স্বস্তিক প্রোডাকশন[১] |
মুক্তি | |
নেটওয়ার্ক | সনি এন্টারটেইনমেন্ট টেলিভিশন |
মুক্তি | ১৪ নভেম্বর ২০১৮ ৩০ আগস্ট ২০১৯[২] | –
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য হল একটি ভারতীয় ঐতিহাসিক টেলিভিশন ধারাবাহিক যা সনি এন্টারটেইনমেন্ট টেলিভিশনে ১৪ নভেম্বর ২০১৮ থেকে ৩০ আগস্ট ২০১৯ পর্যন্ত প্রচারিত হয়েছিল। ধারাবাহিকটি এখন আইএন-১০ মিডিয়ার নতুন হিন্দি বিনোদন চ্যানেল ইশারা টিভিতে পুনরায় প্রচার করা হচ্ছে।[৩] ধারাবাহিকটি প্রথম মৌর্য সম্রাট এবং মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের জীবনীর ওপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে।[৪] ধারাবাহিকটি প্রযোজনা করেছে সিদ্ধার্থ কুমার তিওয়ারীর ওয়ান লাইফ স্টুডিও[৫][৬]
ধারাবাহিকটি ওয়ান লাইফ স্টুডিওস-এর পূর্ববর্তি শো পোরাস এর সিক্যোয়েল।[৭]
ধারাবাহিকটির কাহিনি খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩ খ্রিস্টাব্দে শুরু হয়েছিল। পৌরব সম্রাট পুরুষোত্তম (গ্রিক নাম পোরাস) এবং মেসিডোনিয়ার সম্রাট মহান আলেকজান্ডারের মৃত্যুর ঠিক পরে। আলেকজান্ডারের সেনাপ্রধান সেলিউকাস নিকেটর তখন ভারতে অবস্থান করছিলেন। তিনি তক্ষশীলার রাজা অম্ভিরাজকে (পূর্বের প্রিক্যোয়েল পোরাস-এ অম্ভিকুমার), যিনি পুরুষোত্তমকে হত্যা করার পরে পৌরব রাজ্য দখল করেছিলেন। তক্ষশীলার একজন ব্রাহ্মণ, পণ্ডিত এবং পৌরব রাজ্যের ভূতপূর্ব মহামাত্য চাণক্য অবিচারি ও নিষ্ঠুর নন্দ সম্রাট ধননন্দ কর্তৃক শাসিত মগধে পৌঁছেন। তিনি মেসিডোনিয়ানদেরকে ভারত হতে বিতাড়িত করে দেওয়ার এবং ১৬টি মহাজনপদকে (প্রাচীন ভারতীয় রাজ্য) একত্রিত করার জন্য তার সাহায্য চান। তবে ধননন্দ প্রকাশ্যে চাণক্যকে রাজসভায় অপমান করে, অখণ্ড ভারতের প্রস্তাবকে উপহাস করে এবং তাকে অবহিত করে যে, সে পুরুষোত্তমকে হত্যা করতে সেলিউকাসকে আর্থিকভাবে সহায়তা করেছিল, যাতে সেলিউকাস মগধে আক্রমণ না করে। চাণক্য নন্দ রাজবংশকে নির্মূল করার এবং মগধের সিংহাসনে একটি সক্ষম শাসককে আসীন করার প্রতিজ্ঞা করেন।
চাণক্য চন্দ্রগুপ্ত নামক (ডাকনাম চন্দ্র) এক কৃতদাসের সন্ধান পান, যে মূলত পীপলিবনের রাজপুত্র ছিল। ধননন্দ সেই রাজ্য ধ্বংস করেছিল এবং রাজাকে হত্যা করেছিল। চাণক্য তার মধ্যে একজন প্রকৃত শাসকের গুণ ও প্রতিভা দেখতে পান। এদিকে ধননন্দ (যে, চন্দ্রের বাস্তবতা সম্পর্কে অজ্ঞাত) তার তার প্রতিভা দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং তাকে তার প্রিয় ছোট বোন দুর্ধরার দেহরক্ষী হিসাবে নিয়োগ দেয়। পীপলিবনের ভূতপূর্ব সৈন্য এবং জনপদ অসক, বজ্রবাহুর সম্রাটদের সহায়তায় চন্দ্রগুপ্ত একটি ছোট সেনাবাহিনী গঠন করে। চন্দ্রগুপ্ত একাধিকবার ধননন্দের মুখোমুখি হয় এবং তার জ্যেষ্ঠ ভাই গোবিশঙ্কাকে হত্যা করে।
তবে, বজ্রবাহুর বিশ্বাসঘাতকতার কারণে (যিনি পরিশেষে ধননন্দের কাছে পরাজিত ও নিহত হন) অবশেষে চন্দ্রগুপ্ত শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়ে মগধ থেকে পালাতে বাধ্য হয়। পলায়নের আগে চন্দ্রগুপ্ত দুর্ধরাকে জানাতে সক্ষম হয়, যে তার বাবা মহাপদ্মনন্দকে ধননন্দই হত্যা করেছে, কারণ সে নন্দ সাম্রাজ্যকে আট ভাইয়ের মধ্যে বিভক্ত করে দিতে চাচ্ছিল না। ফলে ধনন্দের সাথে তার সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। চন্দ্রগুপ্ত ও চাণক্য সেলিউকাসের সাহায্য নিতে তক্ষশীলায় পৌছে। তবে অম্ভিরাজ সেলিউকাসকে তাদের বিরুদ্ধে চালিত করে এবং তাদেরকে ফাঁদে ফেলে দেয়।
দুর্ধরার নিকট নিজেকে নিজের পিতার যোগ্য উত্তরসূরি প্রমাণ করার জন্য ধননন্দ ১৩টি মহাজনপদ জয় করে এবং শুধু তক্ষশীলাই অবশিষ্ট থাকে, যা সবচেয়ে শক্তিধর ও অজেয় ছিল। চন্দ্রগুপ্ত চাণক্য ও পুরুষোত্তমের ছেলে মালয়কেতুসহ অনেককেই ফাঁদ থেকে বের করে নিয়ে আসে যাদেরকে পূর্বে সেখানে ফেলা হয়েছিল। ধননন্দ একটি অনাকাঙ্খিত যুদ্ধে মেসিডোনিয়ান এবং তক্ষশিলার সম্মিলিত সেনাবাহিনীর মুখোমুখি হয় তবে শেষ পর্যন্ত একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয় যার অনুসারে ধননন্দকে পৌরব রাজ্যের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হয়। চাণক্য এবং মালয়কেতুর সহায়তায় চন্দ্র মেসেডোনিয়ান এবং পৌরব বাহিনীকে একত্রিত করে এবং মগধ ও তক্ষশিলা বাহিনীকে পরাজিত করে, অম্ভিরাজকে হত্যা করে এবং ধননন্দকে মগধে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। পরে সে বর্তমানে সম্রাটবিহীন তক্ষশিলা এবং পৌরব বাহিনীকে ব্যবহার করে সেলিউকাসকেও পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য করে। এইভাবে তক্ষশিলা এবং পৌরব রাজ্য (যেখানে মালয়কেতু সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন) দখল করেন। দুর্ধারা এবং চন্দ্রগুপ্ত একে অপরের প্রেমে পড়ে এবং পরবর্তীতে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়।
চন্দ্রগুপ্ত ধননন্দের মুখোমুখি হয় (এবং পরবর্তীতে সেলিউকাস চন্দ্রগুপ্তের কাছ থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ধননন্দের সাথে পুনরায় মিত্রতা করেন) এবং শেষ পর্যন্ত ধননন্দ এবং তার অন্য ভাইদের হত্যা করতে সক্ষম হঋ (যাদের মধ্যে গোবিশঙ্কাসহ কারোরই কোন উত্তরাধিকারী ছিল না)। পরে সেলিউকাসকে আটক করা হয় এবং এই শর্তে মুক্তি দেওয়া হয় যে তার মেয়ে হেলেনাকে চন্দ্রগুপ্তের সাথে বিয়ে দিতে হবে এবং তিনি ভারত থেকে চুরি করা সমস্ত সম্পদ ফিরিয়ে দেবেন। অন্যদিকে চন্দ্রগুপ্তও প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হয়। মালয়কেতু (যিনি চন্দ্রের কাছে তার রাজ্য হস্তান্তর করেছিলেন) নিহত হয়েছিলেন এবং দুর্ধরা চন্দ্রগুপ্তের পুত্র ও উত্তরসূরি বিন্দুসারকে জন্ম দেওয়ার পর মৃত্যুবরণ করেন। তার নিজের ভাই ধননন্দ কর্তৃক অনিচ্ছাপূর্বক বিষ প্রয়োগে মারা যান। চন্দ্র পরিশেষে ধননন্দের মৃত্যুর পর চাণক্যের নন্দ বংশকে নির্মূল করার প্রতিজ্ঞা পূরণ করে এবং মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রথম সম্রাট হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে।
ধারাবাহিকটি মূলত বেশ প্রশংসিত হয়েছে। জুম-এর জন্য লিখতে গিয়ে অনুশা আয়েঙ্গার সৌরভ রাজ জৈনের ধননন্দ চিত্রায়নের প্রশংসা করেছেন এবং প্রথম পর্বের উপর ভিত্তি করে লিখেছিলেন, "চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য ধারাবাহিকটি একটি উত্তম বর্ণনা এবং সেট ডিজাইনগুলি আকর্ষণীয় এবং উপভোগযোগ্য। ভিজ্যুয়াল ইফেক্টগুলি আকর্ষণীয় এবং সংলাপগুলি আরও উৎকৃষ্ট।[২১] আইডব্লিউএম বাজ-এর জন্য অনিল মেরানি উল্লেখ করেছেন যে নির্মাতারা ইতিহাসে প্রচুর কল্পকাহিনী যুক্ত করেছেন কারণ পোরাস, চাণক্য এবং মগধের কোনও ঐতিহাসিক সংযোগ নেই।[২২]