চন্দ্রিকা বন্দরনায়েকে কুমারাতুঙ্গা | |
---|---|
শ্রীলঙ্কার ৫ম রাষ্ট্রপতি | |
কাজের মেয়াদ ১২ নভেম্বর, ১৯৯৪ – ১৯ নভেম্বর, ২০০৫ | |
প্রধানমন্ত্রী | সিরিমাভো বন্দরনায়েকে রত্নাসিরি বিক্রমানায়েকে রনীল বিক্রমাসিংহে মহিন্দ রাজাপক্ষ |
পূর্বসূরী | দীনগিরি বান্দা বিজেতুঙ্গা |
উত্তরসূরী | মহিন্দ রাজাপক্ষ |
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ১৯ আগস্ট, ১৯৯৪ – ১২ নভেম্বর, ১৯৯৪ | |
রাষ্ট্রপতি | দীনগিরি বান্দা বিজেতুঙ্গা |
পূর্বসূরী | রনীল বিক্রমাসিংহে |
উত্তরসূরী | সিরিমাভো বন্দরনায়েকে |
শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির সভাপতি | |
কাজের মেয়াদ ১৯৯৪ – ১৮ নভেম্বর, ২০০৫ | |
পূর্বসূরী | সিরিমাভো বন্দরনায়েকে |
উত্তরসূরী | মহিন্দ রাজাপক্ষ |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | চন্দ্রিকা বন্দরনায়েকে ২৯ জুন ১৯৪৫ |
জাতীয়তা | শ্রীলঙ্কান |
রাজনৈতিক দল | শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি |
দাম্পত্য সঙ্গী | বিজয় কুমারাতুঙ্গা (বি. ১৯৭৮-১৯৮৮) |
সন্তান | যশোধরা কুমারাতুঙ্গা ওয়াকার বিমুক্তি কুমারাতুঙ্গা |
পিতামাতা | |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ইনস্টিটিউট ডি’এতুদেস পলিটিকস ডি প্যারিস |
ধর্ম | থেরবাদ বৌদ্ধ |
স্বাক্ষর | |
ওয়েবসাইট | www |
চন্দ্রিকা বন্দরনায়েকে কুমারাতুঙ্গা (জন্ম: ২৯ নভেম্বর, ১৯৪৫) কলম্বোয় জন্মগ্রহণকারী শ্রীলঙ্কার বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ। তিনি শ্রীলঙ্কার পঞ্চম রাষ্ট্রপতি ছিলেন। অদ্যাবধি তিনি শ্রীলঙ্কার একমাত্র মহিলা হিসেবে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও, শ্রীলঙ্কার সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রীর কন্যা তিনি। ২০০৫ সাল পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি’র (এসএলএফপি) দলীয় প্রধান ছিলেন চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা।[১][২][৩]
দেশের দীর্ঘ সামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলনের ইতিহাসের সাথে সংশ্লিষ্ট পরিবারে তার জন্ম। জন্মকালীন সময়ে তার বাবা সলোমন বন্দরনায়েকে মন্ত্রী ছিলেন ও পরবর্তীকালে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৫৯ সালে এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী কর্তৃক তার বাবা নিহত হন। এরপর তার মা সিরিমাভো বন্দরনায়েকে শ্রীলঙ্কার তথা বিশ্বের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী মনোনীত হন।
অনূঢ়া বন্দরনায়েকে, সুনেত্রা বন্দরনায়েকে তার ভাই-বোন। তাদের দাদা স্যার সলোমন ডায়াস বন্দরনায়েকে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে সিলনের প্রতিনিধি ও সিলন গভর্নরের পরামর্শক ছিলেন।[৪]
কলম্বোর সেন্ট ব্রিজেট’স কনভেন্টে অধ্যয়ন করেন। এরপর একুইনাস বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে আইনে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি নিয়ে পাঁচ বছর ফ্রান্সে অবস্থান করেন। ১৯৭০ সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে ইনস্টিটিউট ডি’এতুদেস পলিটিকস ডি প্যারিস থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। ফ্রান্সে অবস্থানকালে ১৯৬৮ সালের ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে জানা যায়।[৫] সিংহলী, ইংরেজি ও ফরাসী ভাষায় অনর্গল কথা বলতে পারেন তিনি।[৬]
১৯৭০-৭৩ মেয়াদে প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উন্নয়নমূখী অর্থনীতি বিষয়ে পিএইচডি নেয়ার সময় শ্রীলঙ্কায় ফিরে আসেন ও রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এরফলে তার পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটে। এ সময় শ্রীলঙ্কা সরকার সমাজ পুণঃগঠন ও উন্নয়ন বিষয়ে বিস্তৃত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল।[৭]
১৯৭৪ সালে শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি’র সক্রিয় কর্মী হিসেবে মহিলা লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য হন। ১৯৭২-৭৬ সময়কালে শ্রীলঙ্কায় ভূমি পুণঃগঠনের সময় তিনি ভূমি পুণঃগঠন কমিশনের প্রধান পরিচালক ছিলেন। ১৯৭৬-৭৭ সময়কালে তিনি জনভাষা কমিশনের চেয়ারম্যান হন ও সম্মিলিত খামার প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৬-৭৯ মেয়াদে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার পরামর্শকের দায়িত্ব পালন করেন।
শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টি ত্যাগ করে স্বামী বিজয় কুমারাতুঙ্গা’র দল শ্রীলঙ্কা মহাজন পার্টিকে সমর্থন দেন। স্বামীর হত্যাকাণ্ডের পর দেশত্যাগ করে যুক্তরাজ্যে চলে যান ও জাতিসংঘ বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নমূখী অর্থনীতি গবেষণা বিশ্ব সংস্থায় কাজ করেন।
১৯৯১ সালে দেশে ফিরে এসে শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টিতে পুনরায় যোগদান করেন। দলকে নেতৃত্ব দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে ঐতিহাসিক ও সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন জয়ে ভূমিকা রাখেন। ১৯৯৩ সালে দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ১৯ আগস্ট, ১৯৯৪ তারিখে পিপলস অ্যালায়েন্সের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ও অল্প কিছুদিন পর নভেম্বরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও জয়ী হয় তার দল। এরফলে ১৭ বছরের ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির রাজত্বকালের সমাপণ ঘটে। তিনি তার মাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করেন।
এ সময় তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদী তামিল টাইগার্সের সাথে বিবদমান গৃহযুদ্ধের অবসানের দিকে মনোনিবেশ ঘটান। কিন্তু এতে ব্যর্থ হয়ে তাদের দমনে আরও সামরিক কৌশল অবলম্বন করেন।
অক্টোবর, ১৯৯৯ সালে কুমারাতুঙ্গা তার সরকারের মেয়াদ শেষ হবার পূর্বেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন।[৮] নির্বাচনী প্রচারণার শেষ মুহুর্তে ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৯৯ তারিখে তামিল টাইগার্সের আক্রমণে তার ডান চোখে মারাত্মক আঘাত হানে। ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে রনীল বিক্রমাসিংহকে পরাভূত করেন ও পরদিনই পরবর্তী মেয়াদের জন্য ক্ষমতায় আরোহণ করেন।[৯]
১৯৭৮ সালে বিশিষ্ট চিত্রতারকা ও শ্রীলঙ্কান রাজনীতিবিদ বিজয় কুমারাতুঙ্গা’র সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৮ তারিখে নিজ বাসভূমির বাইরে অবস্থানকালে চন্দ্রিকা ও তাদের দুই সন্তানের উপস্থিতিতে বিজয়কে হত্যা করা হয়। মার্কসবাদী জনতা বিমুক্তি পেরামুনা এ হত্যার সাথে সম্পৃক্ততার কথা দাবী করে। তাদের সংসারে যশোধরা কুমারাতুঙ্গা ওয়াকার ও বিমুক্তি কুমারাতুঙ্গা নামীয় দুই সন্তান রয়েছে।
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী রনীল বিক্রমাসিংহে |
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৪ |
উত্তরসূরী সিরিমাভো বন্দরনায়েকে |
পূর্বসূরী দীনগিরি বান্দা বিজেতুঙ্গা |
শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি ১৯৯৪-২০০৫ |
উত্তরসূরী মহিন্দ রাজাপক্ষ |