চামরাজেন্দ্র ওয়াদিয়ার | |||||
---|---|---|---|---|---|
![]() চামরাজেন্দ্র ওয়াদিয়ার | |||||
মহীশূরের ২৩ তম মহারাজ | |||||
রাজত্ব | ২৩ সেপ্টেম্বর ১৮৬৮ – ২৮ ডিসেম্বর ১৮৯৪ | ||||
রাজ্যাভিষেক | ২৩ সেপ্টেম্বর ১৮৬৮ | ||||
পূর্বসূরি | কৃষ্ণ রাজা ওয়াদিয়ার তৃতীয় | ||||
উত্তরসূরি | কৃষ্ণ রাজা ওয়াদিয়ার চতুর্থ | ||||
জন্ম | চামুন্ডি পর্বত, মহীশূর, মহীশূর সাম্রাজ্য (বর্তমানে কর্ণাটক, ভারত) | ২২ ফেব্রুয়ারি ১৮৬৩||||
মৃত্যু | ২৮ ডিসেম্বর ১৮৯৪ কলকাতা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ, ভারত) | (বয়স ৩১)||||
দাম্পত্য সঙ্গী | ভানীবিলাস Sannidhana Sri Kempa Nanjammanni Avaru | ||||
বংশধর | কৃষ্ণরাজা ওয়াদিয়ার চতুর্থ, Kanteerava Narasimharaja Wadiyar, Jayalakshmi Ammanni, Krishnaraja Ammanni, Chaluvaja Ammanni, Krishnajammanni | ||||
| |||||
প্রাসাদ | ওয়াদিয়ার রাজবংশ | ||||
পিতা | চিক্কা কৃষ্ণরাজ উরস কৃষ্ণরাজা ওয়াদিয়ার তৃতীয় (পিতামহ) | ||||
মাতা | রাজকুমারী পুটমণি দেবী | ||||
ধর্ম | হিন্দুধর্ম |
চামরাজেন্দ্র ওয়াদিয়ার (২২ ফেব্রুয়ারি ১৮৬৩ - ২৮ ডিসেম্বর ১৮৯৪) ছিলেন মহীশূর সাম্রাজ্যের ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দ হতে ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়ের তেইশতম মহারাজা।
চামরাজেন্দ্র ওয়াদিয়ারের জন্ম ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দের ২২ ফেব্রুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের মহীশূর সাম্রাজ্যের চামুন্ডি পর্বতের পুরানো প্রাসাদে। তিনি বেত্তাদা-কোট উরস শাখার সর্দার চিক্কা কৃষ্ণরাজ উরস এবং রাজকুমারী পুটমণি দেবীর তৃতীয় পুত্র সন্তান। তার জন্মের এক সপ্তাহ আগেই তার পিতা মারা যান। মাতা ছিলেন কৃষ্ণরাজা ওয়াদিয়ার তৃতীয়-এর জ্যেষ্ঠা কন্যা। কৃষ্ণরাজা ওয়াদিয়ার তৃতীয়ের কোন পুত্র উত্তরসূরি না থাকার কারণে তিনি চামরাজেন্দ্রকে ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দের ১৮ জুন দত্তক নেন এবং ব্রিটিশ শাসক ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের ১৬ এপ্রিল সম্মতি দেয়।
কৃষ্ণরাজা ওয়াদিয়ার তৃতীয় ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দের ২৭ মার্চ প্রয়াত হলে চামরাজেন্দ্র ওয়াদিয়ার ওই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর মহীশূরের রাজ সিংহাসন আরোহণ করেন। প্রসঙ্গত,১৮৩১ খ্রিস্টাব্দ থেকে মহীশূর রাজ্য মহীশূর কমিশনের মাধ্যমে রাজের সরাসরি প্রশাসনের অধীনে ছিল। এর আগে অপশাসনের অভিযোগে কৃষ্ণরাজা ওয়াদিয়ার তৃতীয়কে পদচ্যুত করেছিল। পরে, যুক্তরাজ্যের প্রিভি কাউন্সিল মহীশূরকে সংযুক্ত করার কোম্পানির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিলে ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দের এক নির্দেশনামায় মহীশূর রাজ্য পুনর্গঠন করা হয় এবং ওয়াদিয়ার রাজবংশকে পুনঃস্থাপিত করা হয়। ব্রিটিশ প্রশাসন চামরাজেন্দ্র ওয়াদিয়াকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলে রাজ্যের দায়িত্বভার ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দের ২৫ মার্চ অর্পণ করে।
মহারাজ চামারাজেন্দ্র ওয়াদিয়ারের রাজত্বকাল ছিল স্বল্প সময়ের। তবে এই সময়ের মধ্যে বহু কাজ সম্পন্ন করেন। মহারাজ নিজে ছিলেন অত্যন্ত দূরদর্শী, ন্যায়পরায়ণ, উদার, নিঃস্বার্থ, মর্যাদাবান এবং দক্ষ শাসক। শিল্প ও সঙ্গীতের প্রতি বিশেষ ভালোবাসা ছিল। প্রশাসনকেও তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পরিচালনা করতেন। তার আগে মহীশূর রাজ্যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। কিন্তু মিতব্যয়ী হয়ে এবং বিশেষ করে কৃষকদের উৎসাহিত করে তিনি খাদ্য সংকটের সমাধান করেন। শিক্ষার প্রতি মহারাজের বিশেষ আগ্রহ ছিল। শুধু ছেলেদের লেখাপড়াই নয়,মহিলাদের আরও উন্নতি হয়েছে। এটা বিস্ময় ও গর্বের বিষয় যে,ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে তিনিই ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দেই মহীশূর প্রতিনিধি পরিষদ গঠন করে প্রথম মহীশূরে প্রতিনিধিত্বমূলক শাসনের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। এটিই ছিল দেশীয় ভারতে প্রথম আধুনিক, গণতান্ত্রিক আইন প্রণয়ন প্রতিষ্ঠান।
স্বামী বিবেকানন্দকে তাঁর রাজত্বের শেষ দিনে আমেরিকায় পাঠানোর খরচ মিটিয়ে; তিনি নিজেকে একজন জনপ্রিয় শাসক হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। তাই বিদেশে গিয়ে হিন্দু ধর্মের মর্যাদা বৃদ্ধিতে স্বামীজির অবদানও কম ছিল না। স্বামীজি খুশি হয়ে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে আশীর্বাদ করেন। সেই আশীর্বাদপত্রটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মহীশূর এবং ব্যাঙ্গালোরে যে যে স্থাপত্য ও নির্মাণ কাজ জনহিতে করে গেছেন তার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হল:
১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বর মাসে মহারাজা চামরাজেন্দ্র ওয়াদিয়ার তৎকালীন ভাইসরয় লর্ড এলগিনের সঙ্গে দেখা করতে কলকাতায় আসেন। আসার সাত দিনের মধ্যেই তিনি প্রাণঘাতী ডিপথেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দের ২৮ ডিসেম্বর প্রয়াত হন। তার শেষকৃত্য কলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশানের পাশে রাজ পরিবারের কেনা জমিতে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। সেই জমিটিতে রাজ পরিবার গড়ে তোলে মহীশূর উদ্যান।