ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | চার্লস লুকাস চার্লি টাউনসেন্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | ৭ নভেম্বর, ১৮৭৬ ব্রিস্টল, ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১৭ অক্টোবর, ১৯৫৮ স্টকটন-অন-টিস, ডারহাম, ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | বামহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | লেগ ব্রেক | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | অল-রাউন্ডার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
সম্পর্ক | পিতা - এফ টাউনসেন্ড, ভ্রাতা - এফএন টাউনসেন্ড, ভ্রাতা - এএফএম টাউনসেন্ড, পুত্র - পিএন টাউনসেন্ড, পুত্র - ডিসিএইচ টাউনসেন্ড, নাতি - জেসিডি টাউনসেন্ড, নাতি - জেআরএ টাউনসেন্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১২৪) | ১৫ জুন ১৮৯৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ১৬ আগস্ট ১৮৯৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৮ জানুয়ারি ২০১৮ |
চার্লস লুকাস চার্লি টাউনসেন্ড (ইংরেজি: Charlie Townsend; জন্ম: ৭ নভেম্বর, ১৮৭৬ - মৃত্যু: ১৭ অক্টোবর, ১৯৫৮) ব্রিস্টলে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৮৯৯ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে গ্লুচেস্টারশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার ছিলেন। ধ্রুপদী ভঙ্গীমায় বামহাতের ব্যাটিংয়ে বলকে সজোরে মাঠের বাইরে ফেলতেন। এছাড়াও লেগ ব্রেক বোলিং করতেন চার্লি টাউনসেন্ড।
অফ-সাইডে তার ব্যাটিং বেশ কার্যকরী ছিল। কিশোর অবস্থায় স্পিন বোলিং করতেন। লেগ সাইড থেকে বড় ধরনের বাঁক খাওয়াতে পারতেন। পাশাপাশি অন্য দিক দিয়েও বলকে ঘুরাতে সক্ষমতা দেখাতেন।[১]
১৮৯৩ সালে ক্লিফটন কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় ১৬ বছর বয়সে লেগ ব্রেক বোলার হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে চার্লি টাউনসেন্ডের। চার খেলায় ২১ উইকেট তুলে নেন। অত্যন্ত পাতলা গড়নের হলেও অনেক বল করার ক্ষেত্রে সক্ষমতা দেখান ও লেগের দিক থেকে স্পিন করাতে পেরেছিলেন। মিডলসেক্সের বিপক্ষে এক ইনিংসে পাঁচ বল নিয়ে গড়া ওভারে ৭০ ওভার বল করেছিলেন। ঐ মৌসুমে তার কাউন্টির উইকেট-রক্ষক উইলিয়াম ব্রেইন স্ট্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে টাউনসেন্ডের বলে হ্যাট্রিক করতে সহায়তা করেছিলেন।[২][৩] পরের বছর টাউনসেন্ড মাঝারিমানের বোলিং করেন। তবে, গ্রেস তাকে বোলিং উপযোগী পিচে বোলিংয়ের জন্য বেশ সহায়তা করেছিলেন। ঐ সময়কার অধিকাংশ ক্রিকেট সমালোচকই কাউন্টি ক্রিকেট খেলার মতো তার যথেষ্ট শারীরিক সামর্থ্যের সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেন।[৪]
১৮৯৫ সালে টাউনসেন্ডের খেলোয়াড়ী জীবনের উল্লেখযোগ্য মুহুর্ত ছিল। বিদ্যালয়ের কর্মকাণ্ডে ব্যাপক সম্পৃক্ততা থাকায় ২১ জুলাই একটিমাত্র খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। খেলায় তিনি ৯৪ রান দিয়ে মাত্র দুই উইকেট পান। তবে, গ্লুচেস্টারশায়ারের বাদ-বাকী ১১ খেলায় তিনি ১২২ উইকেট পেয়েছিলেন। শারীরিক শক্তিমত্তাও বাড়তে থাকে। প্রায় সবগুলো খেলাতেই তার অংশগ্রহণ ছিল। প্রায়শঃই আলতোভাবে বোলিং করলেও ব্যাটসম্যানেরা তার বাঁক খাওয়া বলে বিভ্রান্ত হতো।[৫] এ সময়ে টাউনসেন্ড বেশ সফলতা পান। কেবলমাত্র ত্রিশটি বাদে ৬৫৯ ওভার একপ্রান্ত থেকে গ্রেস তাকে দিয়ে করিয়েছেন। তার পূর্ণাঙ্গ বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ৬৩০.১ ওভার ১৫১ মেইডেন ১৪৬৭ রান ১২২ উইকেট (গড় ১২.০২)।[৬][৭]
১৮৯৬ সালের মে, জুন ও জুলাই মাসে আবহাওয়া ক্রমাগত শুষ্ক হতে থাকলে টাউনসেন্ডের বোলিংও অনেকাংশে অকার্যকর হয়ে পড়ে।[৮] তবে, বৃষ্টির ঘনঘটা আসলে শেষ চার খেলায় ৩৮ উইকেট তুলে নেন।[৯] বল হাতে ব্যর্থ হলেও ব্যাটহাতে বেশ সফল হতে থাকেন ও অল-রাউন্ডারের মর্যাদা লাভ করেন। ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে নিজস্ব প্রথম সেঞ্চুরি করেন। নটিংহ্যামশায়ারের বিপক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খেলায় দলকে জয়ের মুখ দেখান।
১৮৯৮ সালে লর্ডসের পোতানো উইকেটে উদ্বোধনী খেলায় মিডলসেক্সের বিপক্ষে বোলিং করে জয় এনে দেন।[১০] বোলিং অনুপযোগী পিচে তার বোলিং অনেকাংশেই সাফল্যবিহীন ছিল। তবে, পূর্বেকার বছরের চেয়েও ব্যাটসম্যান হিসেবে বেশ সফল হন। পাঁচটি শতরানের দেখা পান। সর্বোচ্চ ১৫৯ রান তুলেন ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে। আগস্টে বৃষ্টি নামলে তার ব্যাট কথা বলেনি। কিন্তু, বোলিং ১৮৯৫ সালের চেয়েও অপ্রতিরোধ্য ছিল।[১১] পাঁচ খেলায় ১,৫৩৩ বল করে ৬৫ মেইডেন দেন ও ১১.১৭ গড়ে ৭১৫ রান দিয়ে ৬৪ উইকেট পান।
এ সকল অর্জনের প্রেক্ষিতে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত করা হয় টাউনসেন্ডকে। ১৮৯৯ সালের গ্রীষ্মের শুকনো আবহাওয়ায় এক লাফে সম্মুখসারির ব্যাটসম্যান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। নয়টি শতরান করেন তিনি। সর্বোচ্চ ২২৪ রান তুলেন এসেক্সের বিপক্ষে। তবে, তার বোলিং অনেকাংশে নিষ্প্রভ ছিল। এমনকি বোলিং সহায়ক পিচেও তার বোলিংয়ে ধার ছিল না।
১৯০০ সালে ৫৭টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পেলেও টাউনসেন্ড ব্যাট হাতে সফল হন। বড় ধরনের রান না করলেও পূর্বের চেয়েও বেশীমাত্রায় স্পিন বোলিং মোকাবেলা করেছেন বিশেষ করে চেল্টেনহামে মৌসুমের শেষ দিকে।[১২]
১৯০১ সালের গ্রীষ্মের অধিকাংশ সময় আইন বিষয়ে পড়াশোনায় মনোনিবেশ ঘটান। এরপর তিনি উকিল হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। এরফলে ১৯০৬ সালের পূর্ব-পর্যন্ত মৌসুমের উল্লেখযোগ্য খেলায় অংশ নিতেন। সবগুলো খেলাতেই বোলিং করলেও ব্যাটহাতে ধারাবাহিকভাবে সফল ছিলেন। ১৯০২ সালে তুলনামূলক কঠিন পিচে সাসেক্সের বিপক্ষে ১৪৭ রান তুলেন।[১৩] ১৯০৬ সালে ওরচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে ২১৪ রান করেন। ১৯০৭ সাল থেকে স্টকটন-অন-টিসে অফিসিয়াল রিসিভার হিসেবে মনোনীত হন। খুব কমই খেলায় অংশ নিতেন। তবে, চেল্টেনহাম উৎসবে খেলতেন।[১৪]
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে অংশগ্রহণ করেন তিনি। খেলায় তিনি বেশ হতাশাব্যঞ্জক ফলাফল করেন। ঐ শীতকালে কে.এস. রঞ্জিতসিংজীর নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান।
১৯০৭ সালে একমাত্র খেলায় অংশ নিয়ে ইয়র্কশায়ারের অবিস্মরণীয় বোলিং আক্রমণ রুখে দিয়ে ৬১ রানের ইনিংস খেলেন। ১৯০৯ সালে অস্ট্রেলিয়া একাদশের বিপক্ষে ১২৬ ও ১৯২০ সালে মাত্র ২২ রানে গুটিয়ে যাওয়া গ্লুচেস্টারশায়ারের পক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৮৪ রান তুলেন। পরবর্তীতে তার দল সমারসেটকে পরাজিত করেছিল। ১৯২১ ও ১৯২২ সালে শেষবারের মতো খেললেও খুব কম সফলতা পান। এরপর আর তাকে খেলার জগতে দেখা যায়নি।
১৭ অক্টোবর, ১৯৫৮ তারিখে ৮২ বছর বয়সে ডারহামের স্টকটন-অন-টিস এলাকায় চার্লি টাউনসেন্ডের দেহাবসান ঘটে।