চুয়াডাঙ্গা | |
---|---|
জেলা | |
ডাকনাম: বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাজধানী মেহেরপুর এর পাশের জেলা | |
বাংলাদেশে চুয়াডাঙ্গা জেলার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°৩৬′ উত্তর ৮৮°৪২′ পূর্ব / ২৩.৬০০° উত্তর ৮৮.৭০০° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | খুলনা বিভাগ |
আসন | ২টি |
সরকার | |
• জেলা প্রশাসক | মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম |
আয়তন | |
• মোট | ১,১৭০.৮৭ বর্গকিমি (৪৫২.০৮ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০২২) | |
• মোট | ১২,৩৪,০৬৬ |
• জনঘনত্ব | ১,১০০/বর্গকিমি (২,৭০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৫৯.৯৭% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৭২০০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৪০ ১৮ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
চুয়াডাঙ্গা জেলা বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চলের খুলনা বিভাগের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল। ১৮৫৯ খ্রিষ্টাব্দে চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় বাংলাদেশের প্রথম রেলপথ স্থাপিত হয়। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ড গঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশের প্রথম ডাকঘর "চুয়াডাঙ্গা ডাকঘর" চুয়াডাঙ্গায় স্থাপিত হয়।[১] দেশের সর্ববৃহৎ চিনিকল কেরু এন্ড কোম্পানি চুয়াডাঙ্গাতে স্থাপিত হয় ১৯৩৮ সালে। চুয়াডাঙ্গা সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় এখানের মানুষের জীবন যাত্রার মান তেমন একটা ভালো না। জীবিকার তাগিদে অল্প বয়সেই এখানকার মানুষদের শহরমুখী হতে হয়। আবার ঝুঁকিপূর্ণ একটা জেলার তালিকায় এই জেলা অন্তর্ভুক্ত। তবে কৃষি কাজের জন্য জেলাটা খুবই আদর্শ একটা জেলা। কৃষি কাজের উপর এখানকার মানুষদের মুল জীবিকা নির্বাহ হয়ে থাকে।
গ্রিক ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিকদের বিবরণ ও টলেমির মানচিত্র অনুযায়ী, বর্তমান চুয়াডাঙ্গা জেলা সর্ব পশ্চিম ধারার[ক] অব্যবহিত পূর্বাঞ্চলেই ছিল। এই অঞ্চলটিতে গঙ্গাঋদ্ধি নামক শক্তিশালী রাজ্য ও গঙ্গে নামক একটি উল্লেখযোগ্য নগরী বিদ্যমান ছিল।
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের চব্বিশ পরগনা জেলার চন্দ্রকেতুগড় ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় খনন করে কতকগুলো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে। এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের ভিত্তিতে গবেষকগণ ধারণা করেন যে, বর্তমান দ্বি-গঙ্গা নামক জায়গাতেই গ্রিক ইতিহাসে উল্লেখিত গঙ্গাঋদ্ধি রাজ্যের রাজধানী ছিল। আবার, যশোর ও গোপালগঞ্জ জেলায় চতুর্থ শতকের কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন আবিষ্কার করা হয়েছে এবং এতে প্রমাণ করা সম্ভব হয়েছে যে চুয়াডাঙ্গা জেলা সেই প্রাচীন ভূখণ্ডের অংশবিশেষ। গুপ্তদের আসার আগে এ অঞ্চল সম্ভবত পুষ্করণাধিপতি শাসন করতেন। ষষ্ঠ শতকে এ অঞ্চল ভিন্ন এক রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। এই রাজ্যের ব্যাপ্তি ছিল কুমিল্লা থেকে বর্তমান ভারতের উড়িষ্যা রাজ্য পর্যন্ত।[খ] এ অঞ্চল তখন সমতট বা বঙ্গ নামে পরিচিত ছিল।
চুয়াডাঙ্গা সপ্তম শতকের প্রথম দশক থেকে দ্বিতীয় পদের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত শশাঙ্কের রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। এই রাজ্যের রাজধানী ছিল মুর্শিদাবাদ জেলার কানসোনায়।[গ]
বল্লাল সেনের (১১৬০ - ১১৭৮) আমলে চুয়াডাঙ্গা সেন রাজ্যভুক্ত ছিল। তার মৃত্যুর পর তার পুত্র লক্ষণ সেন রাজা হন। এরপর সেন বংশের রাজাগণ অল্প কিছুদিন রাজত্ব করেন। লক্ষণ সেনের আমলে ইখতিয়ার উদ্দিন তৎকালীন সেন রাজ্যের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী "নওদীহ্"[ঘ]-এ আক্রমণ করে এই অঞ্চল অধিকার করেন। কিন্তু তিনি মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি। পরবর্তী শাসনামলেও চুয়াডাঙ্গা মুসলিম শাসনাভুক্ত ছিল না।
১২৮১ খ্রিষ্টাব্দে দিল্লীর সুলতান গিয়াস উদ্দিন বলবান বাঙলার শাসনকর্তা মুঘীসউদ্দিন তোঘরীকে পরাজিত ও নিহত করে বর্তমান চুয়াডাঙ্গাসহ সমগ্র বাংলাদেশকে তাঁর সাম্রাজ্যভুক্ত করেন। ১৪১৪ সাল পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা জেলা সুলতানী শাসনের অর্ন্তভুক্ত ছিল। পরবর্তীতে শাহ শাসনামল ও হাবশী সুলতানদের শাসনামলে চুয়াডাঙ্গা তাঁদের অধীনে ছিল। ১৫৭৬ সালে দাউদ কররানী মোগল বাহিনীর কাছে পরাজিত ও নিহত হলে বাংলা মোগল শাসনে আসে। ১৬৯৫ সালে মেদেনীপুরের জমিদার শোভা সিংহ এবং জনৈক আফগান সর্দার রহিম খান দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলায় মোগল রাজশক্তির বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করে। তারা চুয়াডাঙ্গাসহ দক্ষিণ-পশ্চিম বাংলা থেকে মোগল সেনাবাহিনী তাড়াতে সক্ষম হন।
রাজা লক্ষণ সেনের রাজত্বকালে ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বখতিয়ার খিলজী নবদ্বীপ আক্রমণ করে নদীয়ার অধিকাংশ স্থান দখল করে নেন। বাংলাদেশের নবদ্বীপ দখল হওয়াতে অনেক ধর্মপ্রচারক এদেশে আগমন করেন। এই সময় চুয়াডাঙ্গার আশেপাশে অনেক দরবেশের আগমন ঘটে। তারা এসে ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করেন। এদের কবর বিভিন্ন স্থানে এখনও বিদ্যমান।
পরবর্তীতে বাংলার বার ভূঁইয়াদের অন্যতম রাজা প্রতাপ আদিত্যের অধীনে আসে। এর কিছুকাল পরে তা মোগল সাম্রাজ্যের অধীনে আসে। মোগলরা নদীয়া রাজ বংশের প্রতিষ্ঠাতা ভবানন্দ মজুমদারকে এই এলাকা ইজারা দেয়। ভবানন্দের উত্তর পুরুষ কৃষ্ণচন্দ্র রায় ১৭২৮ খৃস্টাব্দে নদীয়ার রাজা হন। এই সময় চুয়াডাঙ্গার অনেক স্থান রাণী ভবানীর জমিদারীর অংশ ছিল।
এদিকে মোগলদের দুর্বলতার সুযোগে সুবাদার মুর্শিদকুলী প্রায় স্বাধীনভাবে বাংলা শাসন করতেন। এরপর সুজা উদ্দিন ও সরফরাজ খান বাংলার সুবাদার হন। এই সময় রাজ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে আলীবর্দী খান বাংলার সিংহাসন দখল করে নেন। আলীবর্দীখার রাজত্বকালে বর্গী হামলায় অতিষ্ঠ হয়ে বহু লোক মুর্শিদাবাদ ত্যাগ করে চুয়াডাঙ্গার আশপাশে বসতি গড়ে তোলেন। দেশে শান্তি ফিরে এলে অনেকে এখানে স্থায়ীভাবে থেকে যায়।
১৭৫৭ সালে সিরাজউদ্দৌলার পতনের পর প্রাণভয়ে আরো লোকজন এখানে এসে বিভিন্ন স্থানে বসবাস করতে শুরু করেন। আস্তে আস্তে এলাকায় লোকসংখ্যা বাড়তে থাকে। ১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা বিহার উড়িষ্যার দেওয়ানী লাভ করে। পরবর্তীতে স্যার জোন শোয়েব প্রস্তাবক্রমে রাজস্ব আদায়ের সুবিধার্থে কালেক্টর প্রথা প্রবর্তিত হয়। এই সময় নদীয়া জেলা সর্বপ্রথম গঠন করা হয়। তখন ১৭৮৭ সাল।
ইখতিয়ার উদ্দিন মোহাম্মদ বখতিয়ার খলজির নবদ্বীপ জয়ের পড়ে অসংখ্য সাধু দরবেশ এবং সাধারণ মানুষ চুয়াডাঙ্গাতে আসতে থাকেন। আলিবর্দী খায়ের আমলে বর্গী হামলায় অতিষ্ঠ হয়ে অসংখ্য মানুষ নদীপথে চুয়াডাঙ্গায় এসে স্থানী ভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৭৩০ সালে ব্যবসা পরিচালনার জন্য মাদ্রাজ থেকে মারোয়ারী চুয়াডাঙ্গায় এসে বসতি স্থাপন করে। ১৭৪০ সালে নবাব আলীবর্দী খার আমলে মুর্শিদাবাদ জেলার সীমানার ইটেবাড়ি মহারাজপুর হতে চুঙ্গো মল্লিক মাথাভাঙ্গা নদী পথে সপরিবারে চুয়াডাঙ্গা শহরের উত্তর দিকে বসতি স্থাপন করেন। তিনি বসতি স্থাপন করার পর এই শহরে আস্তে আস্তে লোকসংখ্যা বাড়তে থাকে। এই সময় জলপথেই বেশি মানুষ চলাচল করতো।
১৭৮৭ সালের ২১ মার্চ নদীয়া জেলা গঠিত হয়। ইষ্ট - ইন্ডিয়া কোম্পানীর আমলে চুয়াডাঙ্গাসহ কুষ্টিয়া অঞ্চল রাজশাহী জেলাভুক্ত ছিল। ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহ এবং ১৮৬০/৬১ সালে নীল বিদ্রোহ দেখা দেয়। এই সময় নীল বিদ্রোহ দমন তথা প্রশাসনিক কাজের সুবিধার জন্য নদীয়া জেলাকে চারটি মহকুমায় ভাগ করা হয়। এগুলো হল কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর। ১৮৬৪ সালে কুষ্টিয়ায় রেলপথ চালু হলে কুষ্টিয়া মহুকুমা পাবনা জেলা থেকে নদীয়া জেলার ৫ম মহুকুমা হিসেবে যুক্ত হয়। ১৮৬১ সালে চুয়াডাঙ্গা মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হবার পর এইচজেএস কটন-এর প্রথম মহকুমা প্রশাসক হন। প্রথম মহকুমার সদর দফতর ছিল দামুড়হুদা।[২]
১৮৫৯ সালে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে কোম্পানি কোলকাতা-কুষ্টিয়া রেলপথ নির্মাণ শুরু করে। তৎকালীন নদীয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমা এবং যশোর জেলার ঝিনাইদহ মহকুমার সাথে কোলকাতার যোগাযোগ স্থাপনের জন্য দুই মহকুমার মধ্যস্থানে তথা চুয়াডাঙ্গাতে ১৮৫৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম রেলওয়ে স্টেশন চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন স্থাপিত হয়। ১৮৬২ সালে ১৫ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন চালু হয়। চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন চালু হলে ১৮৬২ সালে মহকুমা সদর দপ্তর দামুড়হুদা থেকে চুয়াডাঙ্গায় স্থান্তরীত হয়। যার ফলে চুয়াডাঙ্গা তখন নদীয়া জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ মহকুমা এবং বড় ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
ব্রিটিশ শাসনামলে এ এলাকাটি বেশ কিছু আন্দোলনের কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল; যেমন: ওয়াহাবী আন্দোলন (১৮৩১), ফরায়েজি আন্দোলন (১৮৩৮-৪৭), সিপাহী বিদ্রোহ (১৮৫৭), নীল বিদ্রোহ (১৮৫৯-৬০), খিলাফত আন্দোলন (১৯২০), স্বদেশী আন্দোলন (১৯০৬), অসহযোগ আন্দোলন, সত্যাগ্রহ আন্দোলন (১৯২০-৪০), ভারত ছাড়ো আন্দোলন (১৯৪২) ইত্যাদি।
১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগ হলে নদীয়া জেলাও ভাগ হয়। দেশ বিভাগের সময় কৃষ্ণনগর থানা (বর্তমানে নদিয়া জেলার অন্তর্গত) বাদে চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর মহকুমার ২টি থানা পূর্ব পাকিস্তানের অংশে পড়ে। উক্ত তিনটি মহুকুমার সমন্বয়ে কুষ্টিয়াকে জেলা করা হয়।[২]
মুক্তিযুদ্ধকালীন বেশ কয়েকবার পাক হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিপাগল সেনাদের সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধ ও খণ্ডযুদ্ধ সংগঠিত হয়। এখানে শতাধিক যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের সর্বপ্রথম কমান্ড, দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ড গঠিত হয়েছিল এ জেলায়, মুক্তিযুদ্ধের আট নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টার ছিল চুয়াডাঙ্গা সদরের ৪নং ইপিআর হেডকোয়ার্টার। ৪নং ইপিআর প্রধান মেজর আবু ওসমান চৌধুরী এবং ডাঃ আসহাব-উল-হক জোয়ার্দ্দারের নেতৃত্বে। একই দিন সকাল ০৯:৩০ এ বড়বাজার মোড়ে ডাঃ আসহাব-উল-হক জোয়ার্দ্দার সর্বপ্রথম দখলদার পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ এবং সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেন। ১৯৭১ সালের ৫ আগস্ট জেলার দামুড়হুদা উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামে হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখযুদ্ধে ৮ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। পরবর্তীতে ৮ শহীদের সম্মানার্থে জনগন্নাথপুর গ্রামে, স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। যা বর্তমানে ৮ কবর হিসেবে পরিচিত।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১০ই এপ্রিল প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার চুয়াডাঙ্গাকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী ঘোষণা করেন।[১] ১৪ই এপ্রিল চুয়াডাঙ্গাতে মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের কথা ছিলো, কিন্তু পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের কথা জানতে পেরে চুয়াডাঙ্গায় যুদ্ধ বিমান থেকে প্রচুর গোলা বর্ষণ করে। পরে নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে মুজিবনগর সরকারের শপথ অনুষ্ঠান তৎকালীন মেহেরপুর মহকুমার বৌদ্দনাথ তলায় বর্তমানে মুজিবনগর এই শপথ অনুষ্ঠান করা হয়। বাংলার প্রথম রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শপথ রুখতে মেহেরপুর জেলার সঙ্গে চুয়াডাঙ্গার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করতে দুই জেলার সংযোগ মাথাভাঙ্গা সেতু বোমা হামলা করে উড়িয় দেয়া হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান বাহিনী এবং মুক্তিবাহিনীর মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় একশরও বেশি সম্মুখ যুদ্ধের কথা নথিভুক্ত আছে। নথি অনুসারে ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর তারিখে, অর্থাৎ হানাদার বাহিনী কর্তৃক মিত্র বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণের ৯ দিন আগে, পাকিনস্তানীদের হাত থেকে চুয়াডাঙ্গা মুক্ত হয়।
দেশ স্বাধীনের পর প্রথম অস্থায়ী রাজধানীর কার্যক্রমও শুরু হয় চুয়াডাঙ্গা জেলাতেই। বাংলাদেশ রেডক্রস সোসাইটিও এখানেই প্রতিষ্ঠিত হয়, এছাড়াও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ডাক বিভাগ এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা এই জেলাতেই প্রথম প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বাংলাদেশের একমাত্র দু’তলা রেল স্টেশনটিও চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গাতে অবস্থিত। এছাড়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় মনোগ্রাম প্রণেতা এনএন সাহার জন্মগ্রহণ এই জেলাকে সমৃদ্ধ করেছে কয়েকগুণ। একুশে পদকপ্রাপ্ত বাউল সাধক প্রয়াত খোদাবক্স শাহ’র জন্মস্থানও চুয়াডাঙ্গায়।
যুদ্ধকালীন গণহত্যা এবং ধ্বংসযজ্ঞের স্মৃতিচিহ্ন রয়েছ- চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের পেছনের স্থানে, নাটুদহ উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে তিনটি গণকবর, জীবননগরে সীমান্তবর্তী ধোপাখালি গ্রামে, এবং আলমডাঙ্গা রেলস্টেশনের কাছে গঙ্গা-কপোতাক্ষ ক্যানালের তীরবর্তী স্থানে। যুদ্ধের স্মৃতি ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে দু'টি স্মৃতি স্তম্ভ।
১৯৮৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গা মহকুমার বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়। এই সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গা জেলার মর্যাদা লাভ করে। আজিজুল হক ভূঁইয়া প্রথম জেলা প্রশাসক নিযুক্ত হন। এই সময় চুয়াডাঙ্গা মহকুমার চারটি থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়। থানাগুলো হলো-আলমডাঙ্গা, জীবননগর, দামুড়হুদা ও চুয়াডাঙ্গা।[২]
গ্রিক ঐতিহাসিকদের মতে এ এলাকাতেই বিখ্যাত গঙ্গারিডাই (গঙ্গাঋদ্ধি) রাজ্য অবস্থিত ছিল।[৩] গাঙ্গেয় নামক একটি শহরও এ চুয়াডাঙ্গায় অবস্থিত ছিল বলে শোনা যায়। চুয়াডাঙ্গার নামকরণ সম্পর্কে কথিত আছে যে, এখানকার মল্লিক বংশের আদিপুরুষ চুঙ্গো মল্লিকের নামে এ জায়গার নাম চুয়াডাঙ্গা হয়েছে।[৩][৪] ১৭৪০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে চুঙ্গো মল্লিক তার স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ভারতের নদীয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলার সীমানার ইটেবাড়ি- মহারাজপুর গ্রাম থেকে মাথাভাঙ্গা নদীপথে এখানে এসে প্রথম বসতি গড়েন।[৩] ১৭৯৭ সালের এক রেকর্ডে এ জায়গার নাম চুঙ্গোডাঙ্গা উল্লেখ রয়েছে।[৫] ফারসি থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করার সময় উচ্চারণের বিকৃতির কারণে বর্তমান চুয়াডাঙ্গা নামটা এসেছে।[৬] চুয়াডাঙ্গা নামকরণের আরো দুটি সম্ভাব্য কারণ প্রচলিত আছে। চুয়া<চয়া<চষা শব্দের অর্থ পরিষ্কার। পরিষ্কার ডাঙ্গা অর্থেও এরকম নামকরণ হতে পারে।[৭] আবার অনেকের মতে, এই অঞ্চলে প্রচুর ইঁদুর ছিল। ইঁদুরকে হিন্দি ভাষায় বলে চুহা। হয়তো চুহাডাঙ্গা শব্দটি সামান্য পরিবর্তিত হয়ে চুয়াডাঙ্গা নামকরণ হয়েছে।[৮]
চুয়াডাঙ্গা জেলার আয়তন ১১৭০.৮৭ বর্গ কিলোমিটার। আয়তনের দিক থেকে চুয়াডাঙ্গা বাংলাদেশের ৫৪তম জেলা। চুয়াডাঙ্গা জেলার উত্তর-পূর্বদিকে কুষ্টিয়া জেলা, উত্তর-পশ্চিমে মেহেরপুর জেলা, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে, ঝিনাইদহ জেলা, দক্ষিণে যশোর জেলা, এবং পশ্চিমে ভারতের নদিয়া জেলা অবস্থিত। জেলার মূল শহর চুয়াডাঙ্গা মাথাভাঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত।
চুয়াডাঙ্গা জেলায় মোট ৪টি উপজেলা রয়েছে। উপজেলাগুলো হল:
ক্রম নং | উপজেলা | আয়তন (বর্গ কিলোমিটারে) |
প্রশাসনিক থানা | আওতাধীন এলাকাসমূহ |
---|---|---|---|---|
০১ | আলমডাঙ্গা | আলমডাঙ্গা | পৌরসভা (১টি): আলমডাঙ্গা | |
ইউনিয়ন (১৫টি): ভাংবাড়িয়া, হারদী, কুমারী, বাড়াদী, গাংনী, খাদিমপুর, জেহালা, বেলগাছি, ডাউকী, জামজামী, নাগদাহ, খাসকররা, কালিদাসপুর, চিৎলা এবং আইলহাঁস | ||||
০২ | চুয়াডাঙ্গা সদর | চুয়াডাঙ্গা সদর | পৌরসভা (১টি): চুয়াডাঙ্গা | |
ইউনিয়ন (৫টি): আলুকদিয়া, মোমিনপুর, কুতুবপুর, শংকরচন্দ্র এবং পদ্মবিলা | ||||
দর্শনা | ইউনিয়ন (৪টি): বেগমপুর, তিতুদহ, নেহালপুর এবং গড়াইটুপি | |||
০৩ | জীবননগর | জীবননগর | পৌরসভা (১টি): জীবননগর | |
ইউনিয়ন (৮টি): উথলী, আন্দুলবাড়িয়া, সীমান্ত, বাঁকা, হাসাদাহ, রায়পুর, মনোহর এবং কেডিকে | ||||
০৪ | দামুড়হুদা | দামুড়হুদা | ইউনিয়ন (৬টি): জুড়ানপুর, নতিপোতা, কার্পাসডাঙ্গা, হাউলী, দামুড়হুদা এবং নাটুদহ | |
দর্শনা | পৌরসভা (১টি): দর্শনা | |||
ইউনিয়ন (২টি): কুড়ালগাছী এবং পারকৃষ্ণপুর মদনা |
বর্তমানে এ জেলায় ০৪টি উপজেলা, ০৫টি থানা, ০৪টি পৌরসভা (২টি 'ক' শ্রেণীর, ২টি 'খ' শ্রেণীর), ৩৮টি ইউনিয়ন, ৩৭৬টি মৌজা, ৫১৪টি গ্রাম রয়েছে।[৯]
৪টি উপজেলা, ৩৮টি ইউনিয়ন এবং ৩৭৬ টি মৌজা নিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা গঠিত।
লর্ড ওয়েলেসলির শাসনামলে কালেক্টর ও বিচারকদের সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী ১৮৫২ সালে অবিভক্ত নদিয়া জেলায় জরিপ হয়। তবে এই জরিপ সফল হয়নি। ১৮৭১ সালে চুয়াডাঙ্গার তৎকালীন মহকুমা প্রশাসক ছিলেন এইচ জে জে কটন। তার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৮৭১ সালের চুয়াডাঙ্গার জনসংখ্যা ছিল ১,৭৮,৪৮৫ জন। ১৮৭২ সালে নদিয়া জেলায় আবার জরিপ করা হয়। তবে জরিপ নিয়ে তৎকালীন মানুষের মধ্যে গুজব ছড়িয়ে যায়।
১৮৯১ সালে ম্যালেরিয়া রোগের কারণে চুয়াডাঙ্গায় বিপুল জনগণের মৃত্যু হয়। এরপর ১৮৯৭ সালে ভয়াবহ ভূমিকম্প হলেও ১৮৯১ সাল অপেক্ষাকৃত ৫.৫৯% জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় ১৯০১ সালে। ১৯১১ ও ১৯২১ সালে জনসংখ্যা কিছুটা হ্রাস পায়। এটির কারণ হিসেবে অতিরিক্ত বহির্গমন এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশকে বিবেচনা করা হয়। আবার ১৯৫১ সালের জনসংখ্যা গণনায় দেখা যায় জনসংখ্যা অধিকহারে হ্রাস পেয়েছে। এর মূল কারণ ছিল সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ভারত গমন।
বার্ষিক গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৪২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ১,৪৬৭ মিলিমিটার। গোটা চুয়াডাঙ্গা জেলা গাঙ্গেয় অববাহিকায় অবস্থিত; যার ওপর দিয়ে মাথাভাঙ্গা, ভৈরব, কুমার, চিত্রা, এবং নবগঙ্গা নদীসমূহ প্রবাহিত হয়েছে।
এই জেলার জীবননগর থানার উপর দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা অতিক্রম করেছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে চুয়াডাঙ্গা ১১.৫ মিটার (৩৮ ফুট) উপরে অবস্থিত। এ উচ্চতা উত্তর-পশ্চিমাংশে বেশি এবং দক্ষিণ-পূর্বাংশে কম। এই তারতম্যের কারণে বৃষ্টিপাত ও আবহাওয়ার কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। সমুদ্র থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।[১০]
চুয়াডাঙ্গাতে বেশ কিছু হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য সেবা ক্লিনিক আছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:-
চুয়াডাঙ্গা জেলার মানুষ প্রাথমিক পর্যায়ের লেখাপড়া শেষ করলেও উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ তেমন একটা ভালো নেই। একে তো সীমান্তবর্তী জেলা তারপর মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা তেমন একটা সুবিধা জনক নয়। জীবিকার তাগিদে জেলার মানুষের তাড়াতাড়ি কর্ম জীবনে যেতে হয়। এই জেলার মানুষ চাকরির চেয়ে কৃষি কাজের উপর বেশি নির্ভরশীল। জেলায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯টি মহাবিদ্যালয়, ১৪০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৪৪৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। মাদ্রাসা রয়েছে ৩৯টি, পলিটেকনিক ইনিষ্টিটিউট রয়েছে ৫টি, যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে ১টি, টিটিসি ১টি ও পিটিআই রয়েছে ১টি। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান:
চুয়াডাঙ্গা বাংলাদেশের মধ্যে ভুট্টা,পান,শাকসবজি, খেজুরের গুড় উৎপাদনে প্রথম স্থান অর্জন কারী জেলা। এ ছাড়া বাণিজ্যিক ফুল এবং আম উৎপাদনে বাংলাদেশের জেলাসমূহের মধ্যে দ্বিতীয়। এই জেলার বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজে নিয়োজিত। শ্রমশক্তির ৫৮% কৃষিকাজে, এবং মাত্র ২২% ব্যবসা বাণিজ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট। আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ৮৯৪.২০ বর্গকিলোমিটার, যার মধ্যে ৯৯% কোন না কোন প্রকার সেচ ব্যবস্থার আওতাধীন।
ব্যবহৃত ভূমির মধ্যে আবাদী জমি ৮৯৪.২ বর্গকিলোমিটার; অনাবাদী জমি ২.৫৪ বর্গকিলোমিটার; দুই নফসলী জমি ১৪.৮৫%; তিন ফসলী জমি ৭৩.৮৫%; চার ফসলী জমি ১১.৮০%; সেচের আওতাভুক্ত আবাদী জমি ৯৯%। ভূমিস্বত্বের ভিত্তিতে ৩৭% ভূমিহীন, ৪৩% নিম্ন বর্গীয়, ১৮% মধ্যম এবং ২% ধনী; মাথাপিছু আবাদী জমির পরিমাণ ১,১০০ বর্গমিটার। প্রতি ১০০ বর্গমিটার মানসম্মত জমির বাজারমূল্য আনুমানিক ১,০০,০০০ টাকা।
প্রধান শস্য ধান, ভুট্টা, পান,পাট,গম, আলু, আখ, তামাক,বেগুন, পেঁয়াজ, রসুন, ডাল,বাঁধা কপি,পাতা কপি,মুলা,গাজর,ধনে পাতা,ঢেরশ,বরবটি, শিম, কুমরা, বিভিন্ন ধরনের ফুল এবং বিভিন্ন প্রকার শাক সবজি। বিলুপ্ত বা প্রায়-বিলুপ্ত শস্যের মধ্যে আছে তিল, তিসি, সরিষা, ছোলা, আউশ ধান এবং নীল।
প্রধান ফল আম, কাঁঠাল, লিচু, পেঁপেঁ, পেয়ারা, কুল,পান, নারিকেল এবং কলা।
জেলায় রয়েছে অসংখ্য মুরগির খামার, মাছের খামার, গরুর খামার ও বড় বড় মুরগি,হাঁস ও মাছের হ্যাচারি। জীবননগরে অবস্থিত দত্তনগর ফার্মটি এশিয়ার মধ্যে বৃহত্তম কৃষিখামার হিসেবে পরিচিত।
জেলার পেশার মধ্যে রয়েছে কৃষি ৩০.৩৩%, কৃষিশ্রমিক ১৮.০৮%, দিন মজুর ২.৬৯%,ব্যবসা ২২.৯৭% চাকরি ১৩.০৮%, পরিবহন খাত ৪.৯১% এবং অন্যান্য ৮.২২%।
উৎপাদনশীল কলকারখানার মধ্যে রয়েছ তুলার কল, চিনি কল, বিস্কুট কারখানা, স্পিনিং মিল, টেক্সটাইল মিল, এ্যালুমিনিয়াম কারখানা, ওষুধ তৈরির কারখানা, চালকল, চিরার কল, তেল কল, আটা কল, বরফ কল, করাত কল এবং ওয়েল্ডিং কারখানা। কুটির শিল্পের মধ্যে রয়েছে বয়নশিল্প, বাঁশের কাজ, স্বর্ণকার, কর্মকার, কুম্ভকার, ছূতার, তন্তুবায়, দরজি ইত্যাদি।
কৃষির পাশাপাশি জেলাটিতে বর্তমানে শিল্পেরও বিকাশ ঘটছে। প্রধান শিল্প কারখানা গুলো হল "জামান গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ:- হ্যাচারী, ফিড মিল, ব্যাভারেজ লিমিটেড, প্লাস্টিক ফ্যাক্টরি, ফ্রিজ ফ্যাক্টরী, এসি ফ্যাক্টরী, টিভি ফ্যাক্টরী,সিলিং ফ্যান ফ্যাক্টরী, স্টীল ফ্যাক্টরী," স্যার ফ্যাক্টরী, ইলেকট্রনিক্স ফ্যাক্টরী, তামাক ফ্যাক্টরী, বিস্কুট ফ্যাক্টরী, বঙ্গজ ব্রেড এন্ড বিস্কুট, তাল্লু স্পিনিং মিল্স লিমিটেড, কেরু এন্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড ইত্যাদি। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনায় অবস্থিত কেরু এ্যান্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড (১৯৩৩) বাংলাদেশের বৃহত্তম চিনি কল। কেরু এন্ড কোম্পানির সাথে যে ডিস্টালারিটি আছে তা বাংলাদেশের একমাত্র মদ্য প্রস্তুতকারী কারখানা। কেরু এন্ড কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেড বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্পোরেশনের অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান; যা বাংলাদেশের শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান।
প্রধান রপ্তানী পণ্যগুলো হল পান, ভুট্টা, শাক-সবজি, ধান, চাল, পাট, বিস্কুট, চিনি, তামাক, আখ, খেজুরের গুড়, সুপাড়ি, আম, কুমড়া, কাঁঠাল, কলা, ফিড,এস.এস.আসবাবপত্র,হাঁস-মুরগীর বাচ্চা, ঔষধ এবং ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী ইত্যাদি।
চুয়াডাঙ্গা জেলায় অনেকগুলো নদী রয়েছে। নদীগুলো হচ্ছে নবগঙ্গা নদী, চিত্রা নদী, ভৈরব নদ, কুমার নদ, মাথাভাঙ্গা নদী।[১২][১৩]