চৌধুরী

চৌধুরী (হিন্দি: चौधुरी; গুরুমুখী: ਚੈਧਰੀ; উর্দু: چودهرى‎‎; নেপালি: चौधरी) ভারত উপমহাদেশে প্রচলিত একটি উপাধি। চৌধুরী শব্দের চৌর উৎপত্তি চৌ বা চৌত অর্থ চার বোঝায় আর ধুরী শব্দের অর্থ ধারক। মূলত এই দুইটা শব্দের মিশ্রনে চৌধুরী শব্দের উৎপত্তি।

ভারতীয় উপমহাদেশে কোন সামন্ত রাজা যিনি যুদ্ধের জন্য নৌ, হস্তী, অশ্ব ও পদাতি এই চার শক্তির অধিকারী হতেন। তাদের ওই সাম্রাজ্যের সম্রাট চৌধুরী পদবীতে ভূষিত করতেন। পরবর্তীতে মুসলিম শাসন আমলে সুলতানরা রাজকীয় ব্যক্তিদের চৌধুরী উপাধি দিয়ে সম্মানিত করতে দেখা যায়। ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশে এর প্রচল রয়েছে।

সুলতানী আমলে সুলতানরা রাজা, জমিদার, সম্ভ্রান্ত ধনী ব্যক্তি দের চৌধুরী উপাধি দিতেন। যেমন বর্ধমানের রাজপরিবারের জমিদার কৃষ্ণরাম রায়কে ১৬৮৯ সালে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের কাছ থেকে ফরমানে সম্মানিত হন এবং সুখাইড় জমিদার বাড়ি একইসাথে রাজা উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছিলো কিন্তু এই উপাধি কোনো এক অজ্ঞাত কারনে প্রত্যাক্ষান করেছিলো এই জমিদার পরিবার। কিন্তু বর্ধমানের জমিদার ও চৌধুরী হিসাবে তাঁর উপাধি নিশ্চিত করে। নাটোরে রাজপরিবারের রাজা রাম জীবন চৌধুরী এই উপাধি ব্যবহার করতে দেখা যায়। বোমাং বংশের রাজাদেরও চৌধুরী ব্যবহার করতে দেখা যায় — যেমন রাজা মং শৈ প্রু চৌধুরী। চৌধুরী, সাহেব, মল্লিক, সরদার এই ধরনের উপাধি বৃটিশদের অধীনে নিয়োজিত বাঙালি কর্মচারীদের ও ব্যবহার করতে দেখা যায়। জমিদার বঙ্কু বিহারী রায়ের পুত্র আবু রায় ১৬৫৭ সালে চাকলা বর্ধমানের ফৌজদারের অধীনে বর্ধমানের রেখাবী বাজারের চৌধুরী ও কোতোয়াল নিযুক্ত হন। তাঁকে বর্ধমান রাজপরিবারের পিতৃপুরুষ বলে মনে করা হয় কারণ তাঁর সময়েই জমিদারির বিকাশ শুরু হয়েছিল এবং জমিদারি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

বৃটিশরা বাংলা শাসন ভার দখলের পর, তাদের শাসন পরিচালনার জন্য সমাজে কিছু মানুষ তাদের সাহায্য করত। তাদের কাজে খুশি হয়ে বৃটিশরা তাদের চৌধুরী উপাধি প্রদান করতো। মূলত তখন থেকে চৌধুরী নামটি পারিবারিক পদবিতে রূপান্তিত হয়। চৌধুরীরা বৃটিশদের ক্ষমতা ব্যবহার করে সমাজে প্রভাব বিস্তার করত। কিন্তু এছাড়াও 'মাল্লাহ' জাতির পদবি চৌধুরী। তাদের কথা অনুসারে মাল্লাহ জাতের পদবি ব্রিটিশরা ব্যবহার করে থাকে।

চৌধুরী পদবি যুক্ত বিখ্যাত ব্যক্তি

[সম্পাদনা]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]

বাংলাপিডিয়া