ছাতিম Alstonia scholaris | |
---|---|
Indian Devil tree (Alstonia scholaris) | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | সপুষ্পক উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | Eudicots |
শ্রেণীবিহীন: | Asterids |
বর্গ: | Gentianales |
পরিবার: | Apocynaceae |
গোত্র: | Plumeriae |
উপগোত্র: | Alstoniinae |
গণ: | Alstonia |
প্রজাতি: | A. scholaris |
দ্বিপদী নাম | |
Alstonia scholaris L. R. Br. |
ছাতিম গাছ (ইংরেজি: Blackboard Tree অথবা devil's tree[১]) “অ্যাপোসাইনেসি” বর্গের অন্তর্ভুক্ত একটি উদ্ভিদ যার বৈজ্ঞানিক নাম Alstonia scholaris, Echites scholaris L. Mant., Pala scholaris L. Roberty)। এর আদি নিবাস ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়। ক্রান্তীয় অঞ্চলের এই গাছটি বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বত্র জন্মে। আর্দ্র, কর্দমাক্ত, জলসিক্ত স্থানে ছাতিম বেশি জন্মে। ছাতিম মূলাবর্তে সাতটি পাতা এক সঙ্গে থাকে বলে সংস্কৃত ভাষায় একে 'সপ্তপর্ণ' বা 'সপ্তপর্ণা' নামে ডাকা হয়। ছাতিম গাছ হল পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য উদ্ভিদ।
ছাতিম গাছ ৪০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। বহুশাখা বিশিষ্ট গাছটির ছাল গন্ধহীন, অসমতল ও ধূসর। ছাতিম পাতার উপরের দিক চকচকে আর তলার দিক ধূসর থাকে।[২] এর শাখা পত্রমূলাবর্ত বিশিষ্ট। ১০ থেকে ১৫ সে. মি. লম্বা পাতা একই মূলাবর্তে ৪ থেকে ৭ টা পর্যন্ত থাকে। শাখার শীর্ষে সবুজ মেশানো সাদা রংয়ে থোকায় থোকায় ক্ষুদ্রাকৃতি ফুল ফোঁটে। ৩০ থেকে ৬০ সে.মি. লম্বা সরু ফল এক বৃন্তে সাধারণতঃ দুটো ক’রে ঝুলে থাকে। ছাতিমের বীজ লম্বাটে ডিম্বাকার, কিনারায় আঁশ থাকে আর শেষ প্রান্তে এক গোছা চুল থাকে।[৩] ছাতিম গাছের অভ্যন্তরে দুধের মতন সাদা এবং অত্যন্ত তেতো কষ প্রচুর পরিমাণে থাকে।
ছাতিম গাছের আদি নিবাস নিম্নোক্ত অঞ্চলসমূহে রয়েছে:
এছাড়া অন্যান্য অনেক ক্রান্তীয় এবং উপক্রান্তীয় অঞ্চলেও গাছটি পরবর্তীতে বিস্তার লাভ করেছে। এটি পশ্চিমবঙ্গের 'প্রাদেশিক বৃক্ষ'রূপে ঘোষিত হয়েছে।[৪]
ছাতিমের কষ অনেকে ওষুধরূপে ঘা বা ক্ষতে লাগিয়ে থাকেন। ছাতিম গাছের বাকল বা ছাল শুকিয়ে নিয়ে ওষুধের কাজে ব্যবহার করা হয়। দীর্ঘস্থায়ী অতিসার এবং আমাশয়ে এটি অত্যন্ত উপকরী। জ্বর ধীরে ধীরে নামায় বলে ম্যালেরিয়াতেও উপকারী। অন্যান্য ওষুধে জ্বর নামার সময় খুব ঘাম এবং পরে যে দুর্বলতা হয়, ছাতিমে তা হয় না। চর্মরোগেও ছাতিম ফলপ্রদ। স্নায়ুর শক্তিসূত্রে অসাড়তা আনে বলে রক্তের চাপ কমাতে ছাতিম উপকারী। কিছু পরীক্ষায় দেখা গেছে যে অ্যাণ্টিবায়োটিক কোন গুণ বা শারীরিক ক্রিয়ার সাহায্য করার কোন শক্তি ছাতিমের নেই।
ছাতিম গাছের কাঠ পেন্সিল তৈরির পক্ষে উপযুক্ত।[৫] ছাতিমের কাঠ দিয়ে খুব সাধারণ মানের আসবাবপত্র, প্যাকিং কেস, চায়ের পেটি, পেনসিল এবং দেশলাইযের কাঠি তৈরী হয়। পুরাকালে ছাতিমের কাঠ দিয়ে শিশুদের লেখার জন্য তক্তা বানান হত। মনে করা হয় সেই কারণেই বৈজ্ঞানিক নামে “এলস্টোনিআ”-এর পর “স্কলারিস” কথাটি যোগ করা হয়েছে। ছাতিমের হালকা কাঠ দিয়ে শ্রীলঙ্কায় কফিন বানানো হয়। ছাতিম গাছের মূলের কাছাকাছি অঞ্চলের কাঠ অনেক হালকা ও সাদা, এটি বোর্নিওতে জালের ভাসানী-খন্ডরূপে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া এটি দিয়ে চামচ, কর্ক ইত্যাদি বানানো হয়।[৬]