ছিটমউল (Chestnut Tiger) | |
---|---|
ডানা বন্ধ অবস্থায় | |
ডানা খোলা অবস্থায় | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণীজগৎ |
পর্ব: | সন্ধিপদী |
শ্রেণী: | পতঙ্গ |
বর্গ: | লেপিডোপ্টেরা |
পরিবার: | Nymphalidae |
গণ: | Parantica |
প্রজাতি: | P. sita |
দ্বিপদী নাম | |
Parantica sita (কোলার, ১৮৪৪) |
ছিটমউল[১] (বৈজ্ঞানিক নাম: Parantica sita (Kollar)) যার শরীর ও ডানা লালচে বাদামি রঙের, তার ওপরে ফিকে আকাশী রঙের ছিট এবং ডোরা থাকে। এরা মাঝারি আকারের প্রজাপতি। এরা ‘নিমফ্যালিডি’ পরিবারের সদস্য এবং 'ডানায়িনি' উপগোত্রের অন্তর্ভুক্ত।[২]
ছিটমউলের প্রসারিত অবস্থায় ডানার আকার ৭৫-৮০মিলিমিটার দৈর্ঘের হয়।[৩]
ভারতে প্রাপ্ত ছিটমউল এর উপপ্রজাতি হল- [৪]
সাধারণত এই জাতীয় প্রজাপতিটি হিমালয়ে প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়, কাশ্মীর এবং কুমায়ুন অঞ্চলে ও এছাড়া নেপাল, আসাম, সিকিম[৫], মালয়, মিয়ানমার এবং জাপানেও দেখা যায়।[৬]
প্রজাপতির দেহাংশের পরিচয় বিশদ জানার জন্য প্রজাপতির দেহ এবং ডানার অংশের নির্দেশিকা দেখুন:-
স্ত্রী এবং পুরুষ উভয় প্রকারের সামনের ডানার উপরিতলের মূল রঙ (ground colour) কালো এবং পিছনের ডানার উপরিতল বাদামী এবং উভয় ডানাতেই বিস্তীর্নভাবে, খুব স্বচ্ছ নীলচে সাদা দাগ-ছোপ বন্ধনী দ্বারা আকর্ষনীয় ভাবে চিত্রিত। উভয় ডানায় সেল নীলচে সাদা এবং বেসাল (গোড়া) অংশে ডরসামের উপরে চওড়া অনুরূপ রঙের বন্ধনী বর্তমান। পিছনের ডানার সেল বিভক্ত। সামনের ডানার সাবটার্মিনাল ছোপের সারি সুস্পস্ট এবং সম্পূর্ণ, পিছনের ডানার সাবটার্মিনাল ছোপের সারি ফ্যাকাশে এবং অস্পষ্ট ও অসম্পূর্ণ। পিছনের ডানার টার্মিনাল এবং পোস্ট ডিসকাল অংশ জুড়ে চওড়া বাদামী অংশ প্রতীয়মান। পুরুষ প্রকারে পিছনের ডানায় ১খ এবং ১গ শিরামধ্য জুড়ে গন্ধ পটি (scent patch) বর্তমান।[৭]
ডানার নিম্নতল উপরিতলের অনুরূপ তবে পিছনের ডানার বেসাল অংশে ৩টি লম্বা ফ্যাকাশে পুরু রেখা লক্ষনীয় এবং পিছনের ডানার দাগ-ছোপ ইষদ ফ্যাকাশে।[৭]
এই প্রজাতির উড়ান শক্তিশালী। উঁচু গাছের চূড়ায় এবং ঘন উঁচু ঝোপঝাড়পূর্ন আগাছার জঙ্গলে এদের হালকা চালে উড়তে দেখা যায়। অন্যান্য Tiger প্রজাতিদের মত মঝামধ্যে ডানা ভাসিয়ে ধীর এবং অলস উড়ানও চোখে পড়ে। পুরুষ প্রকার স্থানিক (territorial)[৮] এবং নিজেদের পছন্দের অঞ্চলে ঘুড়ে বেড়াতে দেখা যায়। এরা একটানা অনেকক্ষণ ফুলের ওপর বসে মধু পান করে এবং একা অথবা অন্যান্য Tiger দের সাথে দলবন্ধ অবস্থায় ভিজে মাটিতে বসে একসাথে জলপান করতেও দেখা যায়। পার্বত্য অঞ্চলের পাদদেশ থেকে ৩০০০ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত বনাকীর্ন অঞ্চলে[৯] এবং আশেপাশের গ্রামাঞ্চলে উন্মুক্ত পরিবেশে এদের বিচরণ লক্ষ্য করা যায় মার্চ-এপ্রিল থেকে ডিসেম্বর অবধি। হিমালয়ের অধিকাংশ অঞ্চলে উপযুক্ত পরিবেশে এরা খুবই সুলভ দর্শন। আসাম এর পার্বত্য জঙ্গলে ৩০০০-৮০০০ ফুট উচ্চতা অবধি এদের দর্শন মেলে। উড়ানকালে এদের খুব সহজেই চিহ্নিত করা যায় এবং সম্ভবত এই কারনেই চিলেখাগড়া, বড় আঁচরার এবং কুশ (প্রজাপতি) এদের অনুকরণ (mimic) করে।[২][৩]
ছিটমউলের ডিমের বর্ণ সাদা।[১]
শূককীট ধূলটে সাদা বর্ণের হয় এবং প্রতিটি দেহ খণ্ডে আড়াআড়ি ভাবে কিছু দাগ দেখা যায়। দেহের ৩ এবং ১২ নং দেহের খণ্ডে দু'জোড়া সরু এবং লম্বা মাংসল কর্শীকা থাকে। প্রথম জোড়া কর্শিকার দৈর্ঘ্য বড় হয়। পূর্ণাঙ্গ শূককীটগুলি মোটামুটি দেড় ইঞ্চির মতো লম্বা হয় এবং তখন এদের দেহের বর্ণ হয় হাল্কা হলদেটে সবুজ এবং পিঠের উপর দুটি হলুদ রঙের সারি এবং পাশের দিকেও অনুরূপ দেখা যায়। এদের মাথা এবং মুখ কালো বর্ণের এবং ছাই রঙের ছোপ যুক্ত। পা গুলি কালো বর্ণের হয়।[১]
এই শূককীট Marsdenia roylei,মরিচা ফুল (Asclepias curassavica), Cynanchum caudatum, C. grandifolium, C. sublanceolatum, Hoya carnosa, Marsdenia tinctoria, Marsdenia tomentosa, Metaplexis spp., Tylophora aristolochioides, Tylophora floribunda, Tylophora japonica, Tylophora ovata, Tylophora tanakaeগাছের কচি পাতার রসালো অংশ আহার করে।[২]
মূককীট এর বর্ণ ফ্যাকাশে পান্না সবুজ এবং তাতে সোনালি ঘেঁষা হলুদ রঙের দাগ দেখা যায়।[১]