ছুঁচো | |
---|---|
![]() | |
পোষ মানা
| |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Animalia |
পর্ব: | Chordata |
শ্রেণী: | Mammalia |
বর্গ: | Soricomorpha |
পরিবার: | Talpidae |
গণ: | Scalopus |
প্রজাতি: | Scalopus aquaticus |
দ্বিপদী নাম | |
'"Scalopus aquaticus'" |
ছুঁচো বা ছুছুন্দর (Scalopus aquaticus) একপ্রকার তীক্ষ্ণদন্তী প্রাণী। অপূর্ণাঙ্গ ও ক্ষুদ্রাকৃতি চোখ; নরম, পুরু, কোমল পশম; লম্বাটে মুখের গড়ন এর প্রধান বৈশিষ্ট্য। এছাড়াও এটি ছোট পা; প্রশস্ত পায়ের পাতা, লম্বা ও শক্তিশালী থাবার অধিকারী। ইউরোপ, এশিয়া এবং উত্তর আমেরিকার দেশসমূহের মাটির গর্তে এদের প্রধান আবাসস্থল।[১]
ভূ-গর্ভস্থ মাটি খননের মাধ্যমে কেঁচো এবং পোকামাকড়ের ডিম সংগ্রহ করে এ প্রাণী জীবনধারণ করে। চতুষ্পদী প্রাণী হিসেবে গন্ধমূষিক তার সামনের শক্তিশালী পা জোড়ার থাবা দিয়ে খুব দ্রুত মাটিকে পেছনে ধাক্কা দিয়ে বের করার মাধ্যমে খনন করতে পারে। চলাফেরার সুবিধার্থে মাটির অভ্যন্তরে অনেকগুলো প্রকোষ্ঠসহ ভূমি সংযোগকারী গর্ত তৈরী করে।
ট্রু মোল বা প্রকৃত গন্ধমূষিক হিসেবে এটি সোরিকোমোরফা বর্গের তালপিডে গোত্রের আওতাধীন। অস্ট্রেলিয়া এবং আফ্রিকার দক্ষিণে শারীরিক গড়নে একই হলেও পুরোটাই সম্পৃক্তবিহীন স্তন্যপায়ী রয়েছে যা গন্ধমূষিকের সংজ্ঞার আওতায় পড়ে না।
গন্ধমূষিকের গণের সংখ্যা ১২টি। তন্মধ্যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫টি গণ দেখা যায়। মাঝারি আকারের ইস্টার্ন মোল (বৈজ্ঞানিক নাম: Scalopus aquaticus) ধূসর আকৃতির। এটি লম্বায় প্রায় ১২ থেকে ২১ সে.মি লম্বা। এর নগ্নাকৃতির লেজের দৈর্ঘ্য ২ থেকে ৪ সেন্টিমিটার। ওয়েস্টার্ন মোল (Scapanus townsendii) আমেরিকান প্রজাতির মধ্যে তুলনামূলকভাবে বড় এবং লম্বায় ২৪ বা ততোধিক সেন্টিমিটারবিশিষ্ট। লোমশ লেজবিশিষ্ট গন্ধমূষিকের (Parascalops breweri) বক্র-চাঁদের ন্যায় নাসারন্ধ্র রয়েছে। তারা-নাকের অধিকারী গন্ধমূষিকের (Condylura cristata) ২২টি শুঁড় রয়েছে। এগুলোর ইন্দ্রিয়শক্তি হিসেবে কাজ করে পরিবেশে অভিযোজিত হতে সাহায্য করে। নিচু-মাত্রার বিদ্যুৎ তরঙ্গ প্রয়োগ করে কেঁচোর আবাসস্থল নির্দিষ্ট করতে পারে। প্রাণীটি চমৎকারভাবে সাঁতারও কাটতে জানে। ধূর্ত প্রকৃতির গন্ধমূষিক (Neurotrichus gibbsii) আমেরিকার অন্যান্য গন্ধমূষিকের তুলনায় সবচেয়ে ছোট। এগুলো দৈর্ঘ্যে মাত্র ১০ থেকে ১৩ সে.মি হয়ে থাকে। তন্মধ্যে লেজের দৈর্ঘ্য ৩ থেকে ৪ সে.মি।
গন্ধমূষিক অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর তুলনায় উচ্চমাত্রার কার্বন ডাই অক্সাইডযুক্ত পরিবেশে বসবাস করে থাকে। তাদের রক্তকোষে বিশেষ ধরনের একীভূত হিমোগ্লোবিন প্রোটিনের কারণেই এ সক্ষমতা অর্জন। এছাড়াও এরা অক্সিজেনকে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করে ব্যবহার করে। যখন পরিবেশে বিশেষ করে ভূ-অভ্যন্তরের গর্তে নিম্নমাত্রায় অক্সিজেন বিদ্যমান থাকে, তখনই আত্মরক্ষার্থে তারা এভাবে শ্বাসকার্য পরিচালনা করে।[২]
সাধারণতঃ কেঁচো তাদের প্রিয় খাবার। এছাড়াও, ভূমিতে অন্যান্য মেরুদণ্ডহীন প্রাণী ও বিভিন্ন ধরনের বাদামজাতীয় খাদ্য খেয়ে থাকে। কেঁচোর সন্ধানে তারা বিশেষ ধরনের ইন্দ্রিয়ের সাহায্য নেয় এবং গর্তে পড়ে গেলে দ্রুত এটিকে মেরে খেয়ে ফেলে।[৩] লালাগ্রন্থিতে বিশেষ ধরনের টক্সিন রয়েছে যা কেঁচোকে অবশ করে। পরবর্তীতে খাবার হিসেবে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে এটিকে সঞ্চিত রাখে। খাবার পূর্বে গন্ধমূষিক তাদের থাবা প্রয়োগের মাধ্যমে নিষ্পেষণ করে এবং কেঁচোর অন্ত্র ছিড়ে ফেলে।[৪]
তারা-নাকের অধিকারী গন্ধমূষিক মানুষের পলক ফেলার পূর্বেই .৩ সেকেন্ডের মধ্যে খাদ্য সনাক্তকরণ, ধরা এবং খাদ্যগ্রহণ করতে পারে।[৫]
গন্ধমূষিকের থাবায় বহু আঙ্গুল রয়েছে। অতিরিক্ত বৃদ্ধাঙ্গুল প্রিপোলেক্স নামে পরিচিত যা মূল বৃদ্ধাঙ্গলের পাশে রয়েছে। অন্যান্য আঙ্গুলে অনেকগুলো সংযোগ থাকলেও এটিতে কোন সংযোগ নেই।
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য)