জনসন বেবি (Johnson's Baby) হচ্ছে জনসন এন্ড জনসনের মালিকানাধীন শিশুর প্রসাধনী এবং ত্বক-যত্ন পণ্যগুলির একটি আমেরিকান ব্র্যান্ড। ১৮৯৩ সালে ব্র্যান্ডের জন্ম যখন জনসন বেবি পাউডার চালু হয়। এদের পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে শিশুর পাউডার, শ্যাম্পু, শরীরের লোশন, মালিশ তেল, ঝরনা জেল এবং শিশুর মুছনি বা বেবি ওয়াইপস। অন্তত ১৯৮০ এর দশকের পর থেকে এই ব্র্যান্ডের পণ্যগুলি "ব্যতিক্রমীভাবে বিশুদ্ধ এবং নিরাপদ" পণ্য তৈরির জন্য খ্যাতি লাভ করেছে।[১]
১৯৮৫ সালের ডিসেম্বরে দুইজন চিকিৎসক বাবামাকে বাচ্চাদের পাউডার ব্যবহার না করার আহ্বান জানান, এতে বলা হয় যে এটি সেবন করা বা শ্বাসগ্রহণ করা অনিরাপদ। এরপর জনসন এন্ড জনসন এর প্রতিক্রিয়ায় একটি সরকারী বিবৃতি দিয়ে জানান যে "যেভাবে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সেভাবে ব্যবহার করলে পণ্যগুলো নিরাপদই থাকে"।[২]
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ২০১৫ সালে ৬২ বছর বয়সী এক নারীর ওভারিয়ান ক্যান্সারে মারা যাওয়ায় জ্যাকি ফক্স পরিবারের ক্ষতির জন্য জনসন এন্ড জনসনকে ৭২ মিলিয়ন ডলার দিতে আদেশ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বহু বছর ধরে জনসনের শিশুর পাউডার ব্যবহার করেছিলেন। জনসন অ্যান্ড জনসন দাবি করেছে যে প্রসাধনীগত ট্যাল্ক এর নিরাপত্তা কয়েক দশকের বৈজ্ঞানিক প্রমাণের দ্বারা সমর্থিত এবং এটি রায়কে আপীল করার পরিকল্পনা করে। ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা ওভাকোম থেকে বলা হয়, ১৬টি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ট্যালকাম পাউডারের ব্যবহার ওভারিয়ান ক্যান্সারের সম্ভাবনা প্রায় এক তৃতীয়াংশ বৃদ্ধি করে। ২০১৩ সালের যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাগুলোর একটি পর্যালোচনা বলে যৌনাঙ্গে ট্যালকাম পাউডারের ব্যবহারে সেই ফলাফল পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু সাধারণ ব্যাবহারে তা পাওয়া যাবে না, তারা গবেষণাগুলোর ফলাফলগুলো সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি। উপরন্তু তারা বলেন, "ওভারিয়ান ক্যান্সার একটি বিরল রোগ, এবং এর ঝুঁকি এক তৃতীয়াংশ পরিমাণে বৃদ্ধি পেলেও এর ঝুঁকি খুব কমই থাকে।"[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
২০০৭ সালে জনসন এন্ড জনসন স্পন্সর করেছিলেন "শিশুদের পরিষ্কার করার সর্বোত্তম চর্চা" নিয়ে প্রথম ইউরোপীয় গোলটেবিল বৈঠককে স্পনসর করেছিলেন। সেখানে ইউরোপ জুড়ে ডার্মাটোলজিস্ট এবং প্যাডিয়াট্রিশিয়ান বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেল অংশগ্রহণ করে। এই বৈঠকে শিশুদের স্থানের ক্ষেত্রে জলের বদলে তরল পরিষ্কারক এর ব্যবহারের ক্ষেত্র নজর দেয়া হয়। উপসংহারে টানা হয়, "মৌলিক সুরক্ষা পদ্ধতি অনুসরণ করা হলে স্নান সাধারণত ধৌত করার চেয়ে শ্রেয়, এবং এতে শিশু ও বাবামার মানসিকভাবেও উপকার হয়।"[৩]
২০১০ সালে জনসনস বেবি ব্র্যান্ড দ্বারা স্পনসরকৃত একটি য়াদৃচ্ছিক ক্লিনিকাল ট্রায়ালে মানসম্পন্ন ত্বকের যত্নের অংশ হিসেবে শিশুর ত্বকে আর্দ্রতা মাত্রার উন্নতির জন্য ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করার কার্যকারিতা নিয়ে গবেষণা করা হয়। গবেষণায় দেখা যায়, শিশুর ত্বকে উপযুক্ত আর্দ্রতা মাত্রা বজায় রাখতে বেবি লোশন ব্যবহার (শিশুর লোশন ব্যবহার না করার তুলনায়) কার্যকর।
ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সালে ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায়তনিকদের দ্বারা জার্নাল অফ অবস্টেট্রিক, গাইনেকোলজিক, এন্ড নিওনেটাল নারসিং এ প্রকাশিত একটি গবেষণা বলে, জনসনস বেবি এর টপ-টু-টো ওয়াশ শুধু জল ব্যবহার করার মতই নিরাপদ।[৪] গবেষণাটি জনসন এন্ড জনসন দ্বারা স্পনসর করা হয়, "কিন্তু এতি কঠোর, স্বাধীন বৈজ্ঞানিক নিয়মগুলোর অধীনে পরিচালিত হয়েছে, যেখানে ব্লাইন্ড টেস্টিং এবং পিয়ার রিভিউও অন্তর্ভুক্ত ছিল"।[৫]