জর্জ গিফেন

জর্জ গিফেন
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
জর্জ গিফেন
জন্ম(১৮৫৯-০৩-২৭)২৭ মার্চ ১৮৫৯
নরউড, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া
মৃত্যু২৯ নভেম্বর ১৯২৭(1927-11-29) (বয়স ৬৮)
পার্কসাইড, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া
উচ্চতা১.৮০ মিটার (৫ ফুট ১১ ইঞ্চি)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ স্পিন
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৭)
৩১ ডিসেম্বর ১৮৮১ বনাম ইংল্যান্ড
শেষ টেস্ট১০ আগস্ট ১৮৯৬ বনাম ইংল্যান্ড
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৭৭–১৯০৩দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৩১ ২৫১
রানের সংখ্যা ১২৩৮ ১১৭৫৮
ব্যাটিং গড় ২৩.৩৫ ২৯.৫৪
১০০/৫০ ১/৬ ১৮/৫৪
সর্বোচ্চ রান ১৬১ ২৭১
বল করেছে ৬৩৯১ ৪৬৬১০
উইকেট ১০৩ ১০২৩
বোলিং গড় ২৭.০৯ ২১.২৯
ইনিংসে ৫ উইকেট ৯৫
ম্যাচে ১০ উইকেট ৩০
সেরা বোলিং ৭/১১৭ ১০/৬৬
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২৪/০ ১৯৫/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৫ আগস্ট ২০১৫

জর্জ গিফেন (ইংরেজি: George Giffen; জন্ম: ২৭ মার্চ, ১৮৫৯ - মৃত্যু: ২৯ নভেম্বর, ১৯২৭) দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার নরউড এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের সদস্য হিসেবে খেলেছেন তিনি।

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার ছিলেন। মাঝারিসারিতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি মিডিয়াম পেস সহযোগে অফ-স্পিন বোলিং করতেন।

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

অ্যাডিলেডের কাছাকাছি নরউডে রিচার্ড গিফেন নামীয় এক কাঠমিস্ত্রী ও তার স্ত্রী এলিজাবেথের (বিবাহ-পূর্ব: চাল্যান্ড) সন্তান তিনি।[] শৈশবকাল থেকেই ক্রিকেটের প্রতি আসক্ত হন ও চার্লস এবং জেমস গর্ডন নামীয় দুই ভাইয়ের সাথে খেলেন। তন্মধ্যে জেমস গর্ডন তাকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন। নরউড ক্রিকেট ক্লাবের মাধ্যমে তার ক্রিকেট জীবন শুরু হয় ও পরবর্তীকালে ওয়েস্ট অ্যাডিলেড ক্লাবে স্থানান্তরিত হন।[]

নভেম্বর, ১৮৭৭ সালে তাসমানিয়ার বিপক্ষে তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। খেলায় তিনি ৪৭ রান তোলেন ও প্রথম ইনিংসে ৪/৪৭ লাভ করেন। তাসমানিয়া ফলো-অনের কবলে পড়লে দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি আরও ২ উইকেট লাভ করেন।[]

সাউথ অস্ট্রেলিয়া দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন তিনি। বেশ কয়েক মৌসুম তিনি তার পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করতে সক্ষম হলেও কোন কারণে ব্যাটিংয়ে সাফল্য লাভ না করলেও বল হাতে তা পূরণ করেছেন। প্রথম অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে দশ সহস্রাধিক রান ও পাঁচশত উইকেট দখল করেছেন।

খেলোয়াড়ী জীবন

[সম্পাদনা]

২২ বছর বয়সে ১৮৮১-৮২ মৌসুমে মেলবোর্নে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক হয়। ৩০ রান সংগ্রহ করে টম এমেটের বলে বোল্ড হন তিনি।[] এছাড়াও কোন উইকেট পাননি ঐ খেলায়। সিডনিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে খেলার সুযোগ হয়নি তার। তৃতীয় টেস্টে ফিরে আসেন ও তার দল ৫ উইকেটে জয় পায়। কিন্তু খেলায় তিনি মাত্র দুই রান পান ও বোলিং করার সুযোগ পাননি।[] সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে উইলিয়াম স্কটনকে জ্যাক ব্ল্যাকহামের স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে প্রথম উইকেট লাভ করেন। খেলায় তিনি ২/১৭ ও ১৪ রান তোলেন।[] ঐ খেলাটি ড্র হলেও অস্ট্রেলিয়া দল ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় করে। তিনি তখন সবেমাত্র ডাকবিভাগের চাকরিতে যোগদান করেছেন। এরফলে তিনি চাকরি ছেড়ে দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছিলেন।[]

১৮৮৬ সালে ইংল্যান্ড সফরে তিনি তেমন সফলতা পাননি। তিন টেস্টের সিরিজের সবগুলোতেই হেরে যায় অস্ট্রেলিয়া দল। উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাক মন্তব্য করে যে, অস্ট্রেলিয়া দলের খেলার মান তেমন উঁচু স্তরের ছিল না। তারচেয়ে কাউন্টির সেরা দলই একটি দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম ছিল।[] সিরিজে তিনি মাত্র ৬০ রান ও মাত্র ৪ উইকেট পান।[][১০] কিন্তু অন্যান্য খেলায় তিনি অধিকতর সফল ছিলেন। রান সংগ্রহ করেছিলেন ১,৪২৪ যা কেবলমাত্র স্যামি জোন্স তার তুলনায় বেশি করেছিলেন। এছাড়াও কমপক্ষে ১৩-বার পাঁচ উইকেটসহ ১৫৪ উইকেট পান।[১১][১২] ১৮৯৪-৯৫ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজে অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।

সম্মাননা

[সম্পাদনা]

অ্যাডিলেড ওভালের গ্র্যান্ডস্ট্যান্ড তার সম্মানার্থে নামকরণ করা হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ তারিখে তাকে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।[১৩]

‘উইদ ব্যাট এন্ড বল’ শিরোনামীয় আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ প্রকাশ করেন।[১৪]

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

ক্রিকেটের পাশাপাশি অস্ট্রেলীয় রুলস ফুটবলের বৃহৎ আসরে অংশ নিয়েছেন। নরউড ফুটবল ক্লাবে খেলেন। সাউথ অস্ট্রেলিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনে ক্লাবের সদস্যরূপে কিকের মাধ্যমে প্রথম গোল করার কৃতিত্ব রয়েছে তার। তার খেলা প্রসঙ্গে ঐ সময়ের জনৈক পর্যবেক্ষক মন্তব্য করেন যে, তিনি অসম্ভব গতিতে দৌঁড়ুতেন। প্রতিপক্ষীয় খেলোয়াড়েরা স্থির দৃষ্টিতে তার কিক লক্ষ্য করতো। বাঁক খাবার সময় সকলে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার চেষ্টা করতো।[১৫]

২৯ নভেম্বর, ১৯২৭ তারিখে ৬৮ বছর বয়সে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার পার্কসাইডে জর্জ গিফেনের দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Morris, Christopher (১৯৭২)। "Giffen, George (1859 - 1927)"Australian Dictionary of Biography - online edition (ইংরেজি ভাষায়)। Australian National University। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-১১ 
  2. Pollard, pp. 467–469.
  3. "South Australia v Tasmania: Other First-Class matches 1877/78" (ইংরেজি ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০৫-১৭ 
  4. "Australia v England: A Shaw's XI in Australia 1881/82 (1st Test)" (ইংরেজি ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০০৮ 
  5. "Australia v England: A Shaw's XI in Australia 1881/82 (3rd Test)" (ইংরেজি ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০০৮ 
  6. "Australia v England: A Shaw's XI in Australia 1881/82 (4th Test)" (ইংরেজি ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০০৮ 
  7. Robinson (1996) pp. 59–65.
  8. "The Australians in England - 1886"Wisden Cricketers' Almanack - online archive (ইংরেজি ভাষায়)। John Wisden & Co.। ১৮৮৭। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০০৮ 
  9. "Test Batting and Fielding for Australia: Australia in England 1886" (ইংরেজি ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০০৮ 
  10. "Test Bowling for Australia: Australia in England 1886" (ইংরেজি ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০০৮ 
  11. "First-class Batting and Fielding for Australians; Australia in England 1886" (ইংরেজি ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০০৮ 
  12. "First-class Bowling for Australians Australia in England 1886" (ইংরেজি ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুন ২০০৮ 
  13. Coverdale, Brydon (২০০৮-০২-২৫)। "Healy given Hall of Fame honour" (ইংরেজি ভাষায়)। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-০২-২৫ 
  14. Barclay's World of Cricket – 2nd Edition, 1980, Collins Publishers, আইএসবিএন ০-০০-২১৬৩৪৯-৭, p576.
  15. "South Australia – Sport: A Personal Reminiscence"The Manning Index of South Australian historyState Library of South Australia। ১৬ এপ্রিল ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০০৮ 

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

গ্রন্থপঞ্জী

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
পূর্বসূরী
জ্যাক ব্ল্যাকহাম
অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক
১৮৯৪-৯৫
উত্তরসূরী
হ্যারি ট্রট