জর্জ ফ্রান্সিস ফিট্জেরাল্ড | |
---|---|
![]() জর্জ ফ্রান্সিস ফিট্জেরাল্ড | |
জন্ম | ৩ আগস্ট ১৮৫১ |
মৃত্যু | টেমপ্লেট:D-da ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড |
জাতীয়তা | আইরিশ |
মাতৃশিক্ষায়তন | ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিন |
পুরস্কার | রাজকীয় পদক (১৮৯৯) |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | পদার্থবিজ্ঞান |
প্রতিষ্ঠানসমূহ | ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিন |
অধ্যাপক জর্জ ফ্রান্সিস ফিট্জেরাল্ড এফআরএস এফআরএসই (৩ আগস্ট ১৮৫১ - ২২ ফেব্রুয়ারি ১৯০১) একজন আইরিশ তাত্ত্বিক এবং ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিন (টিসিডি) এ ইরাসমাস স্মিথের প্রাকৃতিক ও পরীক্ষামূলক দর্শনের অধ্যাপক (১৮৮১-১৯০১) ছিলেন। ফিট্জেরাল্ড বৈদ্যুতিক চৌম্বকীয় তত্ত্ব এবং লরেঞ্জ-ফিট্জেরাল্ড সংকোচন তত্ত্বের জন্য পরিচিত, এটি আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্বের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। টিসিডির একটি ভবন যেমন চাঁদের উল্টো দিকের একটি জ্বালামুখের নামকরণ তার নামে করা হয়েছে, টিসিডির একটি ভবনের নামকরণও তার নামে করা হয়েছে।
১৮৫১ সালের ৩ আগস্ট ডাবলিনের লোয়ার মাউন্ট স্ট্রিটে ফিট্জেরাল্ড জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হলেন রেভারেন্ড উইলিয়াম ফিট্জেরাল্ড এবং মাতা হলেন অ্যান ফ্রান্সেস স্টোনি (জর্জ জনস্টোন স্টোনি ও বিন্ডন ব্লাড স্টোনির বোন)।[১] সন্তান জন্মের সময় উইলিয়াম ফিট্জেরাল্ড ট্রিনিটির নৈতিক দর্শন বিভাগের অধ্যাপক এবং ডসন স্ট্রিটের সেন্ট অ্যানস এর ভিকার ছিলেন, তিনি ১৮৫৭ সালে কর্ক, ক্লোইন এবং রসের বিশপ নিযুক্ত হন এবং ১৮৬২ সালে কিল্লালো এবং ক্লোনফার্ট অনুবাদ করেন। জর্জ ডাবলিনে ফিরে এসে ১৬ বছর বয়সে ছাত্র হিসাবে টিসিডিতে ভর্তি হন। তিনি ১৮৭৭ সালে ট্রিনিটির ফেলো হন এবং তাঁর কর্মজীবনের বাকী সময় সেখানেই কাটান, ১৮৮১ সালে ইরাসমাস স্মিথের প্রাকৃতিক এবং পরীক্ষামূলক দর্শনের অধ্যাপক হন।
অলিভার লজ, অলিভার হেভিসাইড এবং হাইনরিখ হের্ত্স-এর সাথে ফিট্জেরাল্ড "ম্যাক্সওয়েলীয়" দলের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি ছিলেন, তারা ১৮৭০ এর দশকের শেষের দিকে এবং ১৮৮০ এর দশকে জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েলের তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্রের গাণিতিক তত্ত্বকে সংশোধন, সম্প্রসারিত, বিশদ এবং প্রতিপাদিত করেন।[২]
১৮৮৩ সালে ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণ অনুসরণ করে ফিট্জেরাল্ডই প্রথম তড়িৎ-চৌম্বকীয় বিকিরণ তৈরির জন্য দ্রুত দোলক তড়িৎ প্রবাহ তৈরির একটি যন্ত্র প্রস্তাব করেন, ১৮৮৮ সালে জার্মান পদার্থবিদ হাইনরিখ হের্ত্স পরীক্ষামূলকভাবে অস্তিত্বটির নজির দেখিয়েছিলেন।[৩]
১৮৮৩ সালে তিনি রয়্যাল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন। ১৮৯৯ সালে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে তার গবেষণার জন্য রয়্যাল পদক লাভ করেন। ১৯০০ সালে তিনি এডিনবার্গের রয়্যাল সোসাইটি সম্মানিত ফেলো হন।[৪]
ফিট্জেরাল্ড তাঁর স্বল্পকালীন জীবনের বেশিরভাগ সময় হজমের সমস্যায় ভুগেছেন। পেটের সমস্যায় তিনি খুব অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। ১৯০১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সচ্ছিদ্র আলসার অপারেশনের কিছু দিন পর ডাবলিনের ৭ ইলি প্লেসে[৫] তাঁর নিজ বাড়িতে মারা যান। তাকে মাউন্ট জেরোম কবরস্থানে কবরস্থ করা হয়েছে।
"দি ইথার অ্যান্ড দ্য আর্থ এটমস্ফেয়ার" (১৮৮৯) শিরোনামে সায়েন্স সম্পাদককে লেখা সংক্ষিপ্ত চিঠিতে ফিট্জেরাল্ড তাঁর অনুমানের জন্য বেশি পরিচিত, সেখান তিনি বলেন যদি সমস্ত চলমান বস্তুগুলি তাদের গতির দিকের দিক থেকে পূর্বনির্ধারিত হয় তবে এটি মাইকেলসন - মোরলে পরীক্ষার অদ্ভুত অকার্যকর-ফলাফল গণনা করবে। যেভাবে তড়িচ্চুম্বকীয় বল গতি দ্বারা প্রভাবিত হয় বলে জানা যায় তার একটি অংশ দ্বারা ফিট্জেরাল্ড এই ধারণাটি তৈরি করেছিলেন। বিশেষত ফিট্জেরাল্ড কিছু সমীকরণ ব্যবহার করেছিলেন যা তার বন্ধু তড়িৎ প্রকৌশলী অলিভার হ্যাভিসাইড অল্প কিছুুদিন আগেই নিষ্পন্ন করেছিলেন। ডাচ পদার্থবিজ্ঞানী হেন্ড্রিক লোরেন্ৎস ১৮৯২ সালে একটির খুব অনুরূপ ধারণা করেছিলেন এবং এটি আরও সম্পূর্ণরূপে তার ইলেক্ট্রন তত্ত্বের সাথে সম্পর্কিত লরেন্টজ ট্রান্সফরমেশনে বিকশিত করেছিলেন। লোরেন্ৎস–ফিট্জেরাল্ড সংকোচনের (বা ফিট্জেরাল্ড–লোরেন্ৎস সংকোচন) অনুসিদ্ধান্তটি ১৯০৫ সালে প্রকাশিত হওয়া অ্যালবার্ট আইনস্টাইন এর বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠে। তিনি আপেক্ষিকতার নীতি এবং আলোর গতির স্থায়িত্ব থেকে এই প্রভাবের বিশুদ্ধ গতিময় প্রকৃতিটি প্রদর্শন করেছিলেন।
ফিট্জেরাল্ড ১৮৮৫ সালের ২১ ডিসেম্বর টিসিডির প্রোভাস্ট রেভারেন্ড জন হুইট জেলেটের কন্যা হ্যারিয়েট মেরিকে বিয়ে করেন। তাঁর তিন পুত্র ও পাঁচ কন্যাসহ মোট আট জন সন্তান ছিল।
ফিট্জেরাল্ড আইরিশ পদার্থবিদ "ইলেক্ট্রন" নামকরণকারী জর্জ জনস্টোন স্টোনির ভাগ্নে ছিলেন। ১৮৯৬ সালে জে. জে. থমসন এবং ওয়াল্টার কাউফম্যান কণাটি আবিষ্কার করার পরে ফিট্জেরাল্ডই এদের ইলেক্ট্রন নামকরণের প্রস্তাব করেন। ফিট্জেরাল্ড বিশিষ্ট আইরিশ প্রকৌশলী বিনডন ব্লাড স্টোনিরও ভাগ্নে ছিলেন। অগ্রণী মহিলা চিকিৎসা বিজ্ঞানী এডিথ অ্যান স্টোনি তার মামাতো বোন ছিলেন।
উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে অন্যদের সাথে ফিট্জেরাল্ডও উড়ানোর আকাঙ্ক্ষায় নিমগ্ন হয়ে পড়েছিলেন। ১৮৯৫ সালে ডাবলিনের কলেজ পার্কে তাঁর প্রচেষ্টায় লিলিয়েনথাল গ্লাইডারের সাথে সংযুক্ত গুণ-রশি টানতে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী জড়িত ছিলেন এবং নাসাউ স্ট্রিট রেইলিংয়ের বাইরেও ডাবলিনের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। এ সময় ফিট্জেরাল্ড তার কোট খুলে ফেলেন তবে তার উঁচু টুপিটি ধরে রাখেন যা তখনকার সময়ে একজন ফেলোর স্বাভাবিক উষ্ণীশ ছিল। পরীক্ষাটি সাফল্যের মুখ দেখেনি এবং শেষ পর্যন্ত তা পরিত্যাগ করা হয়। বেকার প্রকৌশল শিক্ষার্থী যে রশি থেকে ঝুলছিল তাতে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন না লাগানো পর্যন্ত প্রাথমিক বিমানটি বহু বছর ধরে যাদুঘর ভবনে ঝুলেছিল। আগুনের শিখা রশি বেয়ে অসহায় দর্শনার্থীদের সামনে গ্লাইডারটিকে গ্রাস করে ফেলে।
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; dnb
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি