জর্জ মেলিয়েস

জর্জ মেলিয়েস
Georges Méliès
জর্জ মেলিয়েস, আনু. ১৯৮০
জন্ম
মারি-জর্জ-জঁ মেলিয়েস

(১৮৬১-১২-০৮)৮ ডিসেম্বর ১৮৬১
মৃত্যু২১ জানুয়ারি ১৯৩৮(1938-01-21) (বয়স ৭৬)
প্যারিস, ফ্রান্স
জাতীয়তাফরাসি
পেশাচলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনেতা, ঐন্দ্রজালিক, খেলনা প্রস্তুতকারী, সেট নির্মাতা, পোশাক পরিকল্পনাকারী
কর্মজীবন১৮৮৮-১৯২৩
দাম্পত্য সঙ্গীইউজেনি জেনাঁ
(বি. ১৮৮৫; মৃ. ১৯১৩)

জান দালসি
(বি. ১৯২৫; মৃ. ১৯৩৮)
সন্তান
স্বাক্ষর

মারি-জর্জ-জঁ মেলিয়েস (ফরাসি: Marie-Georges-Jean Méliès; ৮ ডিসেম্বর ১৮৬১ - ২১ জানুয়ারি ১৯৩৮)[] ছিলেন একজন ফরাসি ঐন্দ্রজালিক ও চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনি চলচ্চিত্রের শুরুর সময়ের অনেক প্রযুক্তিগত ও বর্ণনাধর্মী বিকাশের পথ দেখান। মেলিয়েস বিশেষ দৃশ্যায়নের ব্যবহারের জন্য খ্যাতি অর্জন করেন এবং বিকল্প জোড়, একাধিক আলোক সম্পাত, সময়ানুক্রমিক চিত্রধারণ, অদৃশ্য হওয়া, হস্ত-অঙ্কিত রঙসহ বিভিন্ন পদ্ধতিকে জনপ্রিয়করণে ভূমিকা রাখেন। তিনি প্রথম দিকের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের একজন, যিনি গল্পের বোর্ড ব্যবহার করেন।[] তার নির্মিত চলচ্চিত্রসমূহ হল আ ট্রিপ টু দ্য মুন (১৯০২) এবং দ্য ইম্পসিবল ভয়েজ (১৯০৪)। দুটি চলচ্চিত্রেই জুল ভার্নের মত অদ্ভুত ও অধিবাস্তব ভ্রমণ চিত্রায়িত হয়েছে এবং এই দুটি চলচ্চিত্রকে প্রারম্ভিক বিজ্ঞান কল্পকাহিনী চলচ্চিত্রের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিবেচনা করা হয়, যদিও এদের বর্ণনাশৈলী কাল্পনিক ধরনের কাছাকাছি।

প্রারম্ভিক জীবন

[সম্পাদনা]

মারি-জর্জ-জঁ মেলিয়েস ১৮৬১ সালের ৮ই ডিসেম্বর প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জঁ-লুই-স্ত্রানিস্লা মেলিয়েস এবং মাতা ইয়োহানা-কাত্রিন শুয়েরিং।[] তার পিতা ১৮৪৩ সালে প্যারিসে যান এবং বুট ফ্যাক্টরিতে কাজ শুরু করেন, সেখানে মেলিয়েসের মায়ের সাথে তার সাক্ষাৎ হয়। ইয়োহানা-কাত্রিনের পিতা ওলন্দাজ রাজসভার বুট নির্মাতা ছিলেন। কাত্রিন লুই-স্ত্রানিস্লাকে পড়াশোনা শেখান এবং ততোদিনে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তারা দুজনে বুলেভার সাঁ মার্তাঁয় উচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন বুট ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠা করেন। জর্জ তাদের তৃতীয় সন্তান, তার বড় দুই ভাই অঁরি ও গাস্তঁ।[]

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]
চাঁদের চোখে বিদ্ধ হওয়া মহাশূন্য যানের দৃশ্য, যা চলচ্চিত্রের ইতিহাসের অন্যতম আইকনিক দৃশ্য।
চাঁদের চোখে বিদ্ধ হওয়া মহাশূন্য যানের দৃশ্য, যা চলচ্চিত্রের ইতিহাসের অন্যতম আইকনিক দৃশ্য।

১৯০২ সালে মেলিয়েস আ ট্রিপ টু দ্য মুন চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এটি আংশিক জুল ভার্নের ফ্রম দ্য আর্থ টু দ্য মুন এবং এইচ. জি. ওয়েল্‌সের দ্য ফার্স্ট মেন ইন দ্য মুন অবলম্বনে নির্মিত। ছবিতে মেলিয়েস অধ্যাপক বার্বেনফুইলি চরিত্রে অভিনয় করেন, যা ১৮৯৮ সালে তার নিজের অভিনীত দ্য অ্যাস্ট্রোনমার্স ড্রিম ছবির জ্যোতির্বিদ চরিত্রের মত। অধ্যাপক বারবেনফুইলি জ্যোতির্বিদদের ক্লাবের সভাপতি এবং চাঁদে ভ্রমণের প্রস্তাব দেন। তিনি তার গবেষণাগারে যুদ্ধাস্ত্র সজ্জিত বিশালাকার মহাশূন্য যান নির্মাণ করেন এবং তিনি নিজে সহ ছয়জনকে চাঁদে যাত্রা করেন। যানটি বিশাল কামান থেকে ছোড়া হয় এবং তা চাঁদের চোখে বিদ্ধ হয়। তারা ঘুমিয়ে যাওয়ার পূর্বে চাঁদে ঘুরা-ফিরা করেন। তারা স্বপ্ন দেখেন যে তারা চাঁদের দেবী ফিবি তুষারপাত ঘটান। পরবর্তীকালে চাঁদের অ্যালিয়েনদের একটি দল তাদের আক্রমণ করে ও বন্দি করে। অ্যালিয়েন রাজার সামনে নিয়ে যাওয়ার পর তারা পালিয়ে তাদের মহাশূন্য যানের কাছে ফিরে আসতে সক্ষম হয়। পরে যানটির সাথে লাগানো একটি দড়ির সাহায্যে তারা অ্যালিয়েনসহ চাঁদ থেকে পৃথিবীতে পড়েন, যা ঐন্দ্রজালিক গভীর সাগরের মাছের ট্যাঙ্কে পতিত হয়। ইতোমধ্যে যানটি সৈকতে ফিরে আসে এবং তারা শহরের লোকদের সাথে এই ভ্রমণের সফলতা উদ্‌যাপন করেন।[] ১৪ মিনিটের ছবিটি সেসময়ে মেলিয়েসের দীর্ঘতম চলচ্চিত্র ছিল এবং নির্মাণ করতে ১০,০০০ ফ্রাঁ লেগেছিল।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Georges Melies | Biography, Films, & Facts"এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  2. গ্রেস, জন (২০১৪)। Visual Effects and Compositing (ইংরেজি ভাষায়)। নিউ রাইডারস। আইএসবিএন 9780133807240। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৮ 
  3. রোজেন ১৯৮৭, পৃ. ৭৪৭।
  4. রোজেন ১৯৮৭, পৃ. ৭৫৫।

গ্রন্থপঞ্জি

[সম্পাদনা]
  • রোজেন, মিরিয়াম (১৯৮৭), "Méliès, Georges", in ওয়েকম্যান, জন, World Film Directors: Volume I, 1890–1945, নিউ ইয়র্ক: দি এইচ.ডব্লিউ. উইলসন কোম্পানি, পৃ. ৭৪৭–৬৫।

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]