জর্জ লোহম্যান

জর্জ লোহম্যান
আনুমানিক ১৮৯৫ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে জর্জ লোহম্যান
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
জর্জ আলফ্রেড লোহম্যান
জন্ম(১৮৬৫-০৬-০২)২ জুন ১৮৬৫
কেনসিংটন, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১ ডিসেম্বর ১৯০১(1901-12-01) (বয়স ৩৬)
ওরচেস্টার, ব্রিটিশ কেপ উপনিবেশ
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম ফাস্ট
ভূমিকাবোলার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫১)
৫ জুলাই ১৮৮৬ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট২৪ জুন ১৮৯৬ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৮৪-১৮৯৬সারে
১৮৯৪-১৮৯৭ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৮ ২৯৩
রানের সংখ্যা ২১৩ ৭,২৪৭
ব্যাটিং গড় ৮.৮৭ ১৮.৬৭
১০০/৫০ ০/১ ৩/২৯
সর্বোচ্চ রান ৬২* ১১৫
বল করেছে ৩,৮৩০ ৭১,৭২৪
উইকেট ১১২ ১,৮৪১
বোলিং গড় ১০.৭৫ ১৩.৭৩
ইনিংসে ৫ উইকেট ১৭৬
ম্যাচে ১০ উইকেট ৫৭
সেরা বোলিং ৯/২৮ ৯/২৮
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ২৮/– ৩৩৭/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১০ মার্চ ২০১৭

জর্জ আলফ্রেড লোহম্যান (ইংরেজি: George Lohmann; জন্ম: ২ জুন, ১৮৬৫ - মৃত্যু: ১ ডিসেম্বর, ১৯০১) কেনসিংটনে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। তাকে সর্বকালের সেরা বোলারদের অন্যতম হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে।[] পরিসংখ্যানগতভাবে সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে সর্বনিম্ন টেস্ট বোলিং গড়ের রেকর্ড তিনি ধারণ করে আছেন যারা কমপক্ষে পনের উইকেট লাভ করেছেন। আইসিসি রেটিং প্রথায় বোলার হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে অবস্থান করে আছেন জর্জ লোহম্যান। এছাড়াও তিনি টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রতি উইকেট লাভে সবচেয়ে কম বল প্রদানের রেকর্ডও তার দখলে রয়েছে।

কাউন্টি ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৮৮৪ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে সারে দলের হয়ে দশটি খেলায় অংশ নেন। বোলিংয়ে তিনি অল্প সাফল্য লাভ করলেও ব্যাটিংয়ে পারদর্শীতা লাভ না করায় তাকে দলের নিয়মিত সদস্যরূপে রাখা হয়নি। কিন্তু পরের বছর তার কৌশলের ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়নি। তিনি শুধু যে সারের শীর্ষস্থানীয় বোলার ছিলেন না তা নয়, বরং ১৪২ উইকেট নিয়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে শীর্ষস্থানীয় উইকেটলাভকারী বোলার ছিলেন। এছাড়াও, উদীয়মান ব্যাটসম্যান হিসেবে ৫৭১ রান সংগ্রহ করেন। ১৮৮৫ সালেও লোহম্যান তার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখেন। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবর্তিত কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের উদ্বোধনী আসরে সারের দলীয় সঙ্গী জন শার্পের সাথে অবিস্মরণীয় জুটি গড়ে দলের প্রথম শিরোপা জয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা রেখেছিলেন। তবে, দলে উইকেট লাভে সক্ষম বোলারদের উপযোগী থাকায় বিকল্প বোলারের তেমন প্রয়োজন পড়তো না। প্রায়শঃই তার দাপটে ম্রিয়মাণ অবস্থায় থাকতে হতো জন শার্পকে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৮৮৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। ওল্ড ট্রাফোর্ডে এক উইকেট, লর্ডসে কোন উইকেট লাভ না করা স্বত্ত্বেও প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে চমৎকার ক্রীড়াশৈলীর দরুণ ওভালে অনুষ্ঠিত শেষ টেস্টেও তাকে রাখা হয়। ঐ টেস্টে লোহম্যান নিজেকে সেরা বোলার হিসেবে মেলে ধরেন। প্রথম ইনিংসে ৩৬ রানে ৭ ও ৬৮ রানে ৫ উইকেট সর্বসাকুল্যে ১০৪ রানে ১২ উইকেট লাভ করেন ও অ্যাশেজ সিরিজের অন্যতম জয় পায়। পুনরায় প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে শীর্ষস্থানীয় উইকেট সংগ্রহকারী হিসেবে আলফ্রেড শ’য়ের ইংল্যান্ড দলের অন্যতম সদস্যরূপে অস্ট্রেলিয়া সফরের সুযোগ লাভ করেন।

দক্ষিণ আফ্রিকা গমন

[সম্পাদনা]

১৮৯৫-৯৬ মৌসুমে ইংরেজ দলের সাথে দক্ষিণ আফ্রিকা গমন করেন তিনি। সফরকারী ঐ দলটি মূলতঃ মাইনর কাউন্টি কিংবা ক্লাব ক্রিকেটের সেরা খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠন করা হয়েছিল। তন্মধ্যে, দলের খুব কমসংখ্যক খেলোয়াড়ই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের সাথে যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীকালে ঐ খেলাগুলো টেস্টের মর্যাদাপ্রাপ্ত হয়। ফেব্রুয়ারি, ১৮৯৬ সালে পোর্ট এলিজাবেথে অনুষ্ঠিত টেস্টে জর্জ লোহম্যানের ৭/৩৮ ও ৮/৭ বোলিংয়ের কল্যাণে সফরকারীরা খুব সহজেই ২৮৮ রানে বড় ব্যবধানে জয় তুলে নেয়। লোহম্যান হ্যাট্রিক করেছিলেন।[] মার্চ, ১৮৯৬ সালে জোহেন্সবার্গের ২য় টেস্ট ও কেপটাউনের ৩য় টেস্টেও তিনি তার বোলিংয়ের দাপট অব্যাহত রাখেন। ৯/২৮, ৩/৪৩ এবং ৭/৪২ ও ১/৪৫ পেয়েছিলেন।

খেলার ধরন

[সম্পাদনা]

তিনি মিডিয়াম পেস বোলিংয়ে সিদ্ধহস্তের অধিকারী ছিলেন। সেরা ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে লোহম্যান তার সেরা বোলিং প্রদর্শনসহ বিভিন্ন ধরনের পেস বোলিং করতেন। স্লিপ ফিল্ডার হিসেবে তিনি কাউন্টি ক্রিকেটে মারমুখী ব্যাটসম্যানরূপে ১৮৮৭ সালে সারে দলের হয়ে ২৫ রান গড়ে দু’টি শতক করেছেন। সবচেয়ে কম টেস্ট খেলে তিনি ১০০ উইকেট লাভ করেন। এরজন্য তিনি মাত্র ১৬ টেস্ট খেলেন।[] ১৮৮৯ সালে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাক কর্তৃক লোহম্যানকে বর্ষসেরা ক্রিকেটারের মর্যাদায় অভিষিক্ত করা হয়।[] প্রকৃতপক্ষে ঐ সময় বর্ষসেরা ছয়জন বোলার হিসেবে মনোনীত করা হতো।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
পূর্ণাঙ্গ টেস্ট জীবনের বোলিং গড়
চার্লস ম্যারিয়ট (ইংল্যান্ড)
৮.৭২
ফ্রেডরিক মার্টিন (ইংল্যান্ড)
১০.০৭
জর্জ লোহম্যান (ইংল্যান্ড)
১০.৭৫
লরি ন্যাশ (অস্ট্রেলিয়া)
১২.৬০
জন ফেরিস (অস্ট্রেলিয়া/ইংল্যান্ড)
১২.৭০
টম হোরান (অস্ট্রেলিয়া)
১৩.০০
হ্যারি ডিন (ইংল্যান্ড)
১৩.৯০
আলবার্ট ট্রট (অস্ট্রেলিয়া/ইংল্যান্ড)
১৫.০০
মাইক প্রোক্টর (দক্ষিণ আফ্রিকা)
১৫.০২
জ্যাক আইভারসন (অস্ট্রেলিয়া)
১৫.২৩
টম কেন্ডল (অস্ট্রেলিয়া)
১৫.৩৫
অ্যালেক হারউড (অস্ট্রেলিয়া)
১৫.৪৫
বিলি বার্নস (ইংল্যান্ড)
১৫.৫৪
জন ট্রিম (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)
১৬.১৬
বিলি বেটস (ইংল্যান্ড)
১৬.৪২

তথ্য: ক্রিকইনফো
যোগ্যতা: পূর্ণাঙ্গ টেস্ট জীবনে কমপক্ষে ১০ উইকেট।
  1. Frindall, Bill (২০০৯)। Ask BeardersBBC Books। পৃষ্ঠা 148আইএসবিএন 978-1-84607-880-4। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০১১ 
  2. "England tour of South Africa, 1895/96 – 1st Test"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ 
  3. http://www.espncricinfo.com/magazine/content/story/638762.html
  4. "Wisden's Five Cricketers of the Year"ESPNcricinfoESPN। ২৩ মার্চ ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০১৫ 

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

আরও পড়ুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]