ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | জর্জ হার্বার্ট হার্স্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | কির্কহিটন, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড | ৭ সেপ্টেম্বর ১৮৭১|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১০ মে ১৯৫৪ লিন্ডলে, ইয়র্কশায়ার, ইংল্যান্ড | (বয়স ৮২)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | বামহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | অল-রাউন্ডার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১০৮) | ১৩ ডিসেম্বর ১৮৯৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৮ জুলাই ১৯০৯ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৮৯১-১৯২৯ | ইয়র্কশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯২১-১৯২২ | ইউরোপিয়ান্স (ভারত) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আম্পায়ারিং তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
এফসি আম্পায়ার | ৩০ (১৯২২–১৯৩৮) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ |
জর্জ হার্বার্ট হার্স্ট (ইংরেজি: George Hirst; জন্ম: ৭ সেপ্টেম্বর, ১৮৭১ - মৃত্যু: ১০ মে, ১৯৫৪) ইয়র্কশায়ারের কির্কহিটনে জন্মগ্রহণকারী পেশাদার ও বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ১৮৯৭ থেকে ১৯০৯ মেয়াদকালে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। এ সময়ে তিনি দুইবার অস্ট্রেলিয়া সফর করেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেন জর্জ হার্স্ট। তিনি তার সময়কালে অন্যতম সেরা অল-রাউন্ডার ছিলেন। বামহাতে মিডিয়াম-ফাস্ট বোলিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিংয়ে পারদর্শী ছিলেন তিনি।
হাডার্সফিল্ডের কাছাকাছি কির্কহিটনের ব্রাউন কাউ ইন এলাকায় হার্স্ট জন্মগ্রহণ করেন। জেমস হার্স্ট ও সারাহ মারিয়া উলহাউস দম্পতির ১০ সন্তানের মধ্যে তিনি সর্বকনিষ্ঠ ছিলেন। ১৮৮০ সালে বাবা মারা গেলে তিনি তার বোন মেরি এলিজাবেথ উলহাউস ও তার স্বামী জন বেরি’র তত্ত্বাবধানে শৈশবকাল অতিবাহিত করেন।[জ ১][২]
১৮৯২ মৌসুমে হাডার্সফিল্ডে যোগ দেন।[৩] মৌসুমের শুরুতে ইয়র্কশায়ারে যোগ দেন ও মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে অংশ নেন। ঐ সময়ে তিনি ব্যাটসম্যান হিসেবে সুবিধা না করলেও ১১ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ইনিংসে ২০ ও দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ৪৩* রান তোলেন। বোলিংয়ে নেমে ৪/২৯ ও ২/৫৮ লাভ করেন। উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাকের সম্পাদক সিডনি পারডনের দৃষ্টিতে তার বোলিং বেশ আকর্ষণীয় ছিল।[৩][৪]
১৮৯৯ থেকে ১৯০৯ সময়কালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সকল টেস্ট সিরিজে খেলেন। কিন্তু, অস্ট্রেলিয়া সফরে তিনি নিজেকে খেলার পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারেননি।
১৮৯৭-৯৮ মৌসুমের শীতকালে অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য অ্যান্ড্রু স্টডার্টের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড দলের সদস্য মনোনীত হন।[৫] কিন্তু দলটি বেশ অগোছালো ছিল ও ৪-১ ব্যবধানে সিরিজে পরাজিত হয়।[৬] অস্ট্রেলিয়ার পিচগুলো ব্যাটসম্যানদের অনুকূলে ছিল ও হার্স্টের বোলিংয়ের ধরন কার্যকরী ছিল না।[৩][৭] সিরিজের প্রথম টেস্টে ছয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬২ রান তোলেন। ৪১ ওভার বোলিং করলেও তিনি কোন উইকেট লাভ করতে পারেননি।[৮] তাস্বত্ত্বেও তার দল জয়লাভ করেছিল। পাঁচ টেস্টের ঐ সিরিজের চারটিতে তিনি অংশগ্রহণ করেন। দ্বিতীয় টেস্টে তিনি তার প্রথম উইকেট তুলে নেন। কিন্তু ঐ সিরিজে তিনি কেবলমাত্র দুটি উইকেট পেয়েছিলেন। তৃতীয় টেস্টে ৮৫ রান সংগ্রহ করেন যা তার টেস্ট জীবনে সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল। এরপর তিনি ঐ সিরিজে আরও একবার দুই অঙ্কের কোঠায় পৌঁছেন। সিরিজ শেষে তিনি ২৯.৫৭ গড়ে ২০৭ রান তুলেছিলেন।[৯]
১৯০২ সালের ওভাল টেস্টে তিনি ও তার ইয়র্কশায়ারের বোলিং সঙ্গী উইলফ্রেড রোডস শেষ উইকেটে ১৫ রান তুলে নিয়ে দলকে জয় এনে দেন।
শুরুতে তিনি বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পরবর্তীতে ১৯০০ সালের দিকে নিজের বোলিংয়ের ভঙ্গীমা পরিবর্তন করেন। শূন্যে বলকে সুইং করার ধরন পাল্টানোর কৌশল আবিষ্কার করেন। প্রথমদিকের অন্যতম বোলার হিসেবে বলকে সুইং করার উপর দক্ষতা থাকায় ব্যাটসম্যানগণ তার বল মোকাবেলা ব্যর্থ হতেন। এরফলে তিনি বেশ সফলতা লাভ করেন। কিন্তু, আঘাতপ্রাপ্তির ফলে তার বোলিংয়ের দক্ষতা অনেকাংশেই কমে যায়। তাস্বত্ত্বেও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্ব পর্যন্ত তার বোলিং বেশ কার্যকরী ছিল।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ইয়র্কশায়ারে ফিরে ইটন কলেজে ১৯২০ সালে ক্রিকেট কোচ হিসেবে নিযুক্ত হন। এ পদে তিনি ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন।[১০] অবসর পরবর্তীকালে তিনি মৃত্যুর পূর্ব-পর্যন্ত নিয়মিতভাবে ইয়র্কশায়ারের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখেন।[৪][১১] সেখানে তিনি তরুণ খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ পরিচিতি ঘটাতে সহায়তা করেন।[১২]
খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর নেয়ার পর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে মাঝে-মধ্যে আম্পায়ারিত্ব করতেন। ১৯২২ থেকে ১৯৩৮ সালের মধ্যে স্কারবোরা উৎসবের প্রত্যেক বছরেই কমপক্ষে একটি খেলা পরিচালনা করেছেন। এছাড়াও ১৯৩৬ সালে জ্যামাইকায় ইয়র্কশায়ারের সফরে দুইটি খেলায় আম্পায়ারের দায়িত্বে ছিলেন।[১৩]
১৮৯১ থেকে ১৯২১ মেয়াদকালে ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ইয়র্কশায়ারের সদস্য থাকা অবস্থায় চৌদ্দবার এক মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় এক হাজার বা ততোধিক রান এবং একশত বা ততোধিক উইকেট লাভের ন্যায় অনন্য সাধারণ কৃতিত্ব ডাবল লাভ করেন। দলীয় সঙ্গী উইলফ্রেড রোডসের ১৬বার ডাবল লাভের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪বার ডাবল লাভ করেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ৩৬,৩৫৬ রানসহ ২,৭৪২টি উইকেট দখলের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন।
১৯০১ সালে উইজডেন ক্রিকেটার্স অ্যালমেনাক কর্তৃক তিনি বর্ষসেরা ক্রিকেটাররূপে মনোনীত হন।[৩]
সম্ভবতঃ কাউন্টি ক্রিকেটে চমৎকার ক্রীড়াশৈলীর জন্য হার্স্ট অধিকতর পরিচিতি পেয়েছেন। তিনি ও রোডস ইয়র্কশায়ারকে ধারাবাহিকভাবে তিনবার চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা এনে দেন। ১৯০৬ সালে ২৩৮৫ রান ও ২০৮ উইকেট তুলে নিয়ে অনন্য সাধারণ ‘ডাবল ডাবল’ লাভ করেন। এ সময় তিনি একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে প্রথম-শ্রেণীর একই খেলায় দুইবার শতক ও দুইবার পাঁচ-উইকেট লাভের কৃতিত্ব প্রদর্শন করেন।[১৪]
১ জানুয়ারি, ১৮৯৬ তারিখে এমা কিলনারের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। একই বছরের ৬ অক্টোবর জেমস নামীয় সন্তানের জন্ম হয়।[৭] দ্বিতীয় সন্তান অ্যানি ডিসেম্বর, ১৮৯৯[১৫] ও মলি নাম্নী তৃতীয় সন্তান এপ্রিল, ১৯০৬ সালে জন্ম নেয়।[১৬] এ দম্পতি প্রথমে কির্কহিটনে ও পরবর্তীতে মার্শে স্থানান্তরিত হন।[৭][১৭] শেষ জীবনে তার শারীরিক কাঠামো বেশ ভেঙ্গে পড়ে ও নার্সিং হোমে সময় অতিবাহিত করতে থাকেন। ১৯৫৩ সালে এমা মৃত্যুবরণ করেন। স্ত্রীর মৃত্যুর বারোমাস পর ১০ মে, ১৯৫৪ তারিখে তার দেহাবসান ঘটে। লিডসের লন্সউড ক্রিমেটোরিয়ামে তাকে সমাহিত করা হয়।[১৮]