জাঁ-ক্লদ জাঙ্কার | |
---|---|
President of the European Commission | |
দায়িত্বাধীন | |
অধিকৃত কার্যালয় 1 November 2014 | |
উপরাষ্ট্রপতি | Frans Timmermans |
পূর্বসূরী | José Manuel Barroso |
উত্তরসূরী | Ursula von der Leyen (elect) |
Prime Minister of Luxembourg | |
কাজের মেয়াদ 20 January 1995 – 4 December 2013 | |
সার্বভৌম শাসক | Jean Henri |
ডেপুটি | Jacques Poos Lydie Polfer Jean Asselborn |
পূর্বসূরী | Jacques Santer |
উত্তরসূরী | Xavier Bettel |
President of the Eurogroup | |
কাজের মেয়াদ 1 January 2005 – 21 January 2013 | |
পূর্বসূরী | Position established |
উত্তরসূরী | Jeroen Dijsselbloem |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | Redange, Luxembourg | ৯ ডিসেম্বর ১৯৫৪
রাজনৈতিক দল | Christian Social People's Party |
অন্যান্য রাজনৈতিক দল | European People's Party |
দাম্পত্য সঙ্গী | Christiane Frising |
শিক্ষা | University of Strasbourg |
স্বাক্ষর | |
ওয়েবসাইট | Official website |
জাঁ-ক্লদ জাঙ্কার (লুক্সেমবার্গীয়: [ʒɑ̃ːkloːt ˈjuŋkɐ] ; জন্ম: ৯ ডিসেম্বর ১৯৫৪) একজন লুক্সেমবার্গীয় রাজনীতিবিদ যিনি ২০১৪ সাল থেকে ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৯৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি লুক্সেমবার্গের ২৩ তম প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন; ১৯৮৯ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত তিনি দেশটির অর্থ মন্ত্রীর পদেও ছিলেন ।
তিনি ইইউ এর অন্তর্ভুক্ত কোনো জাতীয় সরকারের সবচেয়ে দীর্ঘকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান ছিলেন। বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘকালীন দায়িত্বরত গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতাদের অন্যতম তিনি। তার সময়কাল ইউরোপীয় আর্থিক ও সার্বভৌম ঋণ সঙ্কটের চরম পর্যায় জুড়ে রয়েছে। [১] জাঙ্কার ২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ইউরোগ্রুপের প্রথম স্থায়ী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। [২]
ইউরোপীয় পিপলস পার্টি (EPP) ২০১৪ সালের নির্বাচনে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট পদে জাঙ্কারকে তাদের প্রধান প্রার্থী, বা Spitzenkandidat হিসেবে নির্বাচন করে। সেবারই প্রথমবারের মতো Spitzenkandidat প্রক্রিয়াটি শুরু হয়। [৩] জাঙ্কার হলেন প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি নির্বাচনের আগে এই পদের প্রার্থী হিসাবে প্রচারণা চালিয়েছিলেন। এ প্রক্রিয়াটি লিসবন চুক্তির মাধ্যমে প্রবর্তিত হয়েছিল। ইপিপি সংসদের ৭৫১ টি আসনের মধ্যে ২২০টিতে জয় লাভ করে। ২৭ জুন ২০১৪ তারিখে ইউরোপীয় কাউন্সিল আনুষ্ঠানিকভাবে জাঙ্কারকে উক্ত পদের জন্য মনোনীত করে,[৪][৫][৬] এবং ১৫ জুলাই ২০১৪ তারিখে ইউরোপীয় সংসদ তাকে নির্বাচিত করে। এতে তিনি মোট ৭২৯ ভোটের মধ্যে ৪২২ ভোট পান। [৭] তিনি ১ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে প্রেসিডেন্ট পদে হোসে ম্যানুয়েল বারোসোর উত্তরাধিকারী হন। [৮] জাঙ্কার তখন বলেছিলেন যে তার অগ্রাধিকারগুলো হ'ল ডিজিটাল একক বাজার তৈরি, ইইউ শক্তি ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা, ট্রান্স আটলান্টিক বাণিজ্য চুক্তির সমঝোতা, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনৈতিক ও মুদ্রা ইউনিয়নের ধারাবাহিক সংস্কার - সামাজিক রীতিনীতির প্রতি লক্ষ্য রেখে- এবং ইউরোজোনর জন্য একটি "লক্ষ্যযুক্ত রাজস্ব ক্ষমতা" তৈরী, পাশাপাশি ব্রিটেনের সাথে একটি নতুন চুক্তি করা। [৯]
জাঙ্কার লুক্সেমবার্গের রেডেঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশবের বেশিরভাগ অংশ কাটে বেলভক্সে । জাঙ্কারের বাবা জোসেফ ছিলেন স্টিল কর্মী এবং খ্রিস্টান ট্রেড ইউনিয়নবাদী, যিনি যুদ্ধের সময় জার্মান ওয়েরমাটে বাধ্যতামূলকভাবে নিযুক্ত হন। [১০] জাঙ্কারের মায়ের পিতৃপ্রদত্ত নাম মার্গুয়েরিট হেকার। [১১] লিসি মিশেল রোডঞ্জে স্নাতকোত্তর শিক্ষার জন্য লুক্সেমবার্গে ফিরে আসার আগে জাঙ্কার বেলজিয়ামের আরলনের প্রান্তে ক্লেয়ারফন্টেইনে রোমান ক্যাথলিক "ইকোলে অ্যাপোস্টলিকে" (মাধ্যমিক বিদ্যালয়) পড়াশোনা করেন । তিনি ১৯৭৪ সালে খ্রিস্টান সোশ্যাল পিপলস পার্টিতে যোগদান করেন। [১২] তিনি স্ট্রাসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং ১৯৭৯ সালে আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। লুক্সেমবার্গ বার কাউন্সিলে শপথ গ্রহণ করলেও তিনি কখনো আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন নি।
মাতৃভাষা লুক্সেমবার্গীয় ছাড়াও জাঙ্কার ফরাসি, জার্মান এবং ইংরেজি ভাষায় সাবলীল। [১৩]
স্ট্রাসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার পর জাঙ্কার সংসদীয় সচিব হিসাবে নিযুক্ত হন। পরে তিনি ১৯৮৪ সালে প্রথমবারের মতো চেম্বার অফ ডেপুটিস নির্বাচনে জয়ী হন এবং এর ঠিক পরপরই শ্রমমন্ত্রী হিসাবে প্রধানমন্ত্রী জ্যাক স্যান্টারের মন্ত্রিসভায় নিযুক্ত হন। [১২] এরই পথ পরিক্রমায় তাকে ইউরোপীয় কমিউনিটির বেশ কয়েকটি কাউন্সিলে সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়, যেখানে তার ইউরোপপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি প্রথম প্রকাশিত হয় ।
১৯৮৯ সালের নির্বাচনের কিছুদিন আগে জাঙ্কার একটি সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে দু'সপ্তাহ কোমায় ছিলেন। [১২] তিনি বলেন, এই দুর্ঘটনার পর থেকে তার ভারসাম্য রক্ষায় সমস্যা হচ্ছে। [১৪] তবু তিনি সুস্থ হয়ে পুনরায় চেম্বার অব ডেপুটিজে ফিরে আসেন। এর পরে তাকে অর্থ মন্ত্রীর পদে উন্নীত করা হয়, যে পদটিকে ঐতিহ্যগতভাবে দেশটির প্রধানমন্ত্রীত্বে উত্তীর্ণের আচার বলে মনে করা হয়। সে সময় তার প্রধানমন্ত্রী হওয়া অবশ্যম্ভাবী একটি ব্যাপার বলে মনে হচ্ছিল- রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, স্যান্টার নিজের উত্তরসূরী হিসেবে জাঙ্কারকে প্রস্তুত করছিলেন। এই সময় জাঙ্কার বিশ্ব ব্যাংকের ১৮৮ সদস্য বিশিষ্ট গভর্নর বোর্ডে লুক্সেমবার্গের প্রতিনিধির পদ গ্রহণ করেন। [১২]
সংসদে জাঙ্কারের দ্বিতীয় নির্বাচন তাকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে খ্যাতি এনে দেয়; তিনি অর্থনীতি ও আর্থিক বিষয়ক কাউন্সিলের (ইকোফিন) সভাপতিত্ব করেন এবং মাস্ট্রিচট চুক্তির একজন গুরুত্বপূর্ণ স্থপতিতে পরিণত হন। জাঙ্কার অর্থনৈতিক ও মুদ্রা ইউনিয়ন সম্পর্কিত ধারাগুলো প্রণয়নে বিশাল ভূমিকা রাখেন, যে প্রক্রিয়াটি পরবর্তীতে ইউরো মুদ্রার প্রচলন করে। ১৯৯২ সালে তিনি নিজে এ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। ইতোমধ্যে তিনি খ্রিষ্টান সোশ্যাল পিপলস পার্টির সংসদীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। [১২]
১৯৯৪ সালে জাঙ্কার তার মন্ত্রীর ভূমিকা বজায় রেখে চেম্বারে পুননিবার্চিত হন। এদিকে স্যান্টার ইউরোপীয় কমিশনের পরবর্তী সভাপতি হিসেবে মনোনীত হবার অপেক্ষায় থাকায়, মাত্র ছয় মাস পরই গ্র্যান্ড ডিউক জিন ১৯৯৫ সালের ২০ জানুয়ারিতে জাঙ্কারকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগের অনুমোদন দেন। এসময় জাঙ্কার বিশ্বব্যাংক থেকে পদত্যাগ করলেও অর্থ মন্ত্রীর পদে বহাল ছিলেন। [১২]