জাক তাতি | |
---|---|
Jacques Tati | |
![]() | |
জন্ম | জাক তাতিশেফ ৯ অক্টোবর ১৯০৭ |
মৃত্যু | ৫ নভেম্বর ১৯৮২ প্যারিস, ফ্রান্স | (বয়স ৭৫)
মৃত্যুর কারণ | Pulmonary embolism |
পেশা | পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, অভিনেতা |
কর্মজীবন | ১৯৩৫-১৯৮২ |
দাম্পত্য সঙ্গী | মিশেলিন উইন্টার (বি. ১৯৪৪; তাঁর মৃত্যু ১৯৮২) |
পুরস্কার | পূর্ণ তালিকা |
জাক তাতি[ক] (জন্ম: জাক তাতিশেফ, উচ্চারণ: [tatiʃɛf]; ৯ই অক্টোবর, ১৯০৭ – ৫ই নভেম্বর, ১৯৮২)[১] ছিলেন একজন চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও অভিনেতা। এন্টারটেইনমেন্ট উয়িকলির এক জরিপে তাতি সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্র নির্মাতার তালিকায় ৪৬তম স্থান অধিকার করেন। মাত্র ছয়টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পরিচালনা করা তাতি ৫০ জনের এই তালিকায় সবচেয়ে কম চলচ্চিত্র পরিচালনাকারী পরিচালক।
তাতির প্লেটাইম (১৯৬৭) চলচ্চিত্রটি ২০১২ সালে সাইট অ্যান্ড সাউন্ড সাময়িকীর সমালোচকদের ভোটে সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্রের তালিকায় ৪৩তম স্থান অধিকার করে।[২]
তাতি ১৯০৭ সালের ৫ই নভেম্বর ফ্রান্সের সিন-এ-ওইসের ল্য পেকে (বর্তমান ইভেলিন) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রুশ, ওলন্দাজ ও ইতালীয় বংশোদ্ভূত। তার পিতা জর্জ এমানুয়েল তাতিশেফ (১৮৭৫-১৯৫৭) ছিলেন প্যারিসে রুশ দূতাবাসে কর্মরত রুশ সেনাবাহিনীর জেনারেল ও সেনা অ্যাটাশে দিমিত্রি তাতিশেফ। তাতিশেফগণ রুশ অভিজাত শ্রেণীর ছিলেন এবং তারা পিটার দিক থেকে রুরিকিদ বংশোদ্ভূত। প্যারিসে কর্মরত অবস্থায় দিমিত্রি রোজ আনাথালি আলিঙ্কোয়ান্ত নামে একজন ফরাসি নারীকে বিয়ে করেন। রুশ সূত্রে উল্লেখ রয়েছে যে রোজ সার্কাস পরিবেশনকারী ছিলেন এবং তারা বিয়ে করেন নি।[৩]
তাতির দ্বিতীয় চলচ্চিত্র লে ভ্যাকঁস দ্য মসিয়ে হুলো (জনাব হুলোর ছুটির দিন) ১৯৫৩ সালে মুক্তি পায়। এই ছবির মাধ্যমে মঁসিয়ে হুলো চরিত্রটি আত্মপ্রকাশ করে। ছবিতে বাধ্যতামূলক আগস্টের ছুটিতে ফ্রান্স জুড়ে তার রোমাঞ্চকর ভ্রমণের আড়ালে ফ্রান্সের রাজনৈতিক ও সামাজিক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সম্পূর্ণ চলচ্চিত্রটি লোর আটলান্টিক অঞ্চলে সুমুদ্রের পার্শ্ববর্তী পশ্চিম উপকূলের সাঁ-মার্ক-সুর-ম্য গ্রামে চিত্রায়িত হয়েছে। মঁসিয়ে হুলো যে হোটেলটিতে ছিলেন সেই ইউতেল দ্য লা প্লাগ এখনো সেখানে রয়েছে,[৪] এবং সমুদ্র সৈকতে তাতির একটি প্রতিমূর্তি স্থাপন করা হয়েছে।[৫] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধর পূর্বে নিকটবর্তী পোর্ট শার্লতে তার বন্ধু ল্যমোন ও তার স্ত্রীর সাথে থাকাকালীন তিনি এই সমুদ্র সৈকতটিকে পছন্দ করেছিলেন এবং এখানে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণের ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন।[৬] এই ছবির মাধ্যমে তাতি জাক লাগরাঁগকে সেট ডিজাইনার হিসেবে কাজের সুযোগ দেন, এবং তাদের এই সম্পর্ক আমৃত্যু ঠিকে ছিল। সমালোচকগণ লে ভ্যাকঁস দ্য মসিয়ে হুলো ছবিটির প্রশংসা করেন এবং তাতি যৌথভাবে অঁরি মার্কের সাথে শ্রেষ্ঠ মৌলিক চিত্রনাট্য বিভাগে একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। ছবিটি সেই সময়ের সবচেয়ে প্রশংসিত ও জনপ্রিয়তম চলচ্চিত্র হিসেবে এখনো বিদ্যমান।
তাতি ১৯৫৮ সালে মোঁ ওঁকল (আমার চাচা) চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। এটি তার পরিচালিত প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র। এতে যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে আধুনিকতার ও মার্কিনীদের মত ভোক্তাবাদের দিকে ফ্রান্সের ঝোঁকের কারণে মঁসিয়ে হুলো হাস্যরসাত্মক, উদ্ভট ও শিশুসুলভ সংগ্রাম চিত্রিত হয়েছে। ছবিটি বিশ্বব্যাপী সাড়া লাভ করে এবং সে বছর কান চলচ্চিত্র উৎসব থেকে গ্রাঁ প্রি,[৭] ৩১তম একাডেমি পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্রের পুরস্কার,[৮] এবং নিউ ইয়র্ক ক্রিটিকস সার্কেল পুরস্কার লাভ করে।
তাতি ১৯৮২ সালের ৪ঠা নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। তিনি কনফিউশন-এর শেষ দৃশ্যের কাজ বাকি রেখে মারা যান, যা পরবর্তীতে জাক লাগরাঞ্জ সম্পন্ন করেন।