জাকিয়া জাকি | |
---|---|
জন্ম | আনুমানিক ১৯৭২ আফগানিস্তান |
মৃত্যু | জুন ৪, ২০০৭ আফগানিস্তানের পারোয়ান প্রদেশের জাবাল সরোজ জেলার, জাবাল সরোজ |
মৃত্যুর কারণ | তার বাড়িতে ঘুমানোর সময় গুলি করে হত্যা। খুনের সময় কক্ষে তাঁর দুই শিশু উপস্থিত ছিলেন। |
জাতীয়তা | আফগানিস্তান |
পেশা | সাংবাদিক |
কর্মজীবন | ৮ বছর |
নিয়োগকারী | আফগান রেডিও শান্তি |
পরিচিতির কারণ | আফগানিস্তানে তালিবানদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া প্রথম নারী সাংবাদিক! |
দাম্পত্য সঙ্গী | আব্দুল আহাদ রঞ্জবর |
সন্তান | জাকি ও তাঁর স্বামীর ৬ সন্তান ছিল |
জাকিয়া জাকি (আনু. ১৯৭২ – জুন ৪, ২০০৭) আফগানিস্তানের কাবুলের উত্তরে আফগান শান্তি (সাদ-ই-সুলহ) রেডিও স্টেশনের আফগান সাংবাদিক। মার্কিন সৈন্যবাহিনী আফগানিস্তানে যুদ্ধ শুরু করবার পর (২০০১-২০১৪) জাকি প্রথম আফগানি সাংবাদিক যিনি তালিবানদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন, যেসময়ে তিনি আফগানিস্তানে লিঙ্গ সমতা ও নারী অধিকারের মত অন্যান্য আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন। ২০০৭ সালে তার হত্যা আফগানিস্তানের উচ্চ পদস্থ নারীদের বিরুদ্ধে হামলার ধারাবাহিক ক্রম।
জাকিয়া জাকি জনসমাজে স্বাধীন ও সক্রিয় কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি আফগান শান্তি রেডিও স্টেশনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন, ৩৫ বছর বয়সী জাকিয়া, স্থানীয় স্কুলে প্রধান শিক্ষকও ছিলেন।[১] তার ও তার স্বামী আব্দুল আহাদ রঞ্জবরের ছয় সন্তান-চার পুত্র এবং দুই মেয়ে। তার পরিবার কাবুলের প্রায় ৪০ মাইল উত্তরে পারওয়ানে বসবাস করতো।[২]
জাকি আফগানিস্তানের, পারওয়ান প্রদেশের, জাবাল সারজ জেলার, আফগানিস্তান শান্তি রেডিওর (সাদা-ই-সুলহ) প্রতিষ্ঠাতা এবং একজন সক্রিয় সাংবাদিক ছিলেন। স্টেশনের অর্থায়ন করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং এতে প্রায়ই নারী অধিকার ও তালিবান বিদ্রোহের মতো বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হতো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গোপনভাবে, বেতারকেন্দ্রের প্রতিদিন ৬ ঘণ্টার সম্প্রচারের খরচ প্রদান করতো। ফ্রান্স প্রথম বছরের প্রোডাকশনের খরচ এবং জাকির ১৫ দিনের রেডিও প্রশিক্ষণের ব্যয়ভার বহন করেছিল। তালেবানদের প্রাথমিক পতনের পর, অক্টোবর ২০০১ সালে আফগান রেডিও শান্তি শুরু হয়।[৩] স্থানীয় জঙ্গিরা ও রক্ষণশীলরা রেডিও স্টেশন বন্ধ করতে চেয়েছিলেন এবং জাকি তার হত্যাকাণ্ড ঘটবার আগে মৃত্যুর হুমকি পেয়েছিলেন।[৪] একজন সাংবাদিক হওয়ার পাশাপাশি, জাকি স্কুল শিক্ষকও ছিলেন এবং ২০০৫ সালে সংসদে দাঁড়িয়েছিলেন।[৫]
২০০৭ সালের এপ্রিল মাসে কাবুলের বাইরে জাকিকে, তার বাড়ীতে হত্যা করা হয়েছিল। জাকিকে খুনের আগে, তার রেডিও স্টেশন ও নিজ জীবন স্তব্ধ করার হুমকি দেয়া হয়েছিল। জুন ৪, ২০০৭ তারিখে, মধ্যরাত্রে, হ্যান্ডগান এবং রাইফেলসহ তিনজন পুরুষ জাকির পরিবারের বাড়িতে প্রবেশ করে এবং মাথায় ও বুকে তাকে সাতবার গুলি করে হত্যা করে এবং তারপর পালিয়ে যায়।[৬] তার ছয় সন্তানের মধ্যে দুজন ঘরে ছিল কিন্তু অনাহত ছিল। জাকির ৮ মাস বয়সী ছেলেটি, তার সাথে বিছানায় ছিল কিন্তু তার ৭ বা ৮ বছর বয়সী ছেলেটি জাকির স্বামীকে ডেকে তাকে জাকির মৃত্যুর কথা জানায়।
ইউনেস্কোর প্রধান অধিকর্তা কোচিরো মাতসুরা বলেন, "এই অপরাধগুলো আরো বেশি হতাশাজনক কারণ তারা কেবল মতপ্রকাশের স্বাধীনতার মৌলিক মানবাধিকারকেই নয়, বরং আফগানিস্তান পুনর্নির্মাণের জন্য নারীদের অপরিহার্য একটি পেশা অনুশীলন করার অধিকারও দমন করে।" [৭]
তার হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেন মার্কিন ফার্স্ট লেডি লরা বুশ।[৮]
রিপোর্টারস উইদাউট বর্ডার্সের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "এই বর্বর কাজটি তাঁর সাংবাদিক পেশা বা নাগরিক হিসেবে তাঁর দায়িত্বের সাথে যুক্ত ছিল কিনা, তার থেকে এটা গুরুত্বপূর্ণ, এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত শনাক্ত করা উচিত এবং শাস্তি দেওয়া উচিত।"[৯]