আর্জেন্টেনীয় প্রজাতন্ত্র República Argentina | |||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
১৯৭৬–১৯৮৩ | |||||||||
জাতীয় সঙ্গীত: হিমনো ন্যাশিওনাল আর্জেন্টিনো | |||||||||
রাজধানী | বুয়েন্স আয়ার্স | ||||||||
প্রচলিত ভাষা | স্পেনীয় | ||||||||
সরকার | সামরিক একনায়কতন্ত্র | ||||||||
আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপতি | |||||||||
• ১৯৭৬-৮১ | জর্জ রাফায়েল ভাইদেলা | ||||||||
• ১৯৮১ | রবার্তো এডুয়ার্ডো ভাইওলা | ||||||||
• ১৯৮১ | কার্লোস লাকোস্তে | ||||||||
• ১৯৮১-৮২ | লিওপলদো গালতাইরি | ||||||||
• ১৯৮২ | আলফ্রেদো অস্কার সেন্ট জ্যঁ | ||||||||
• ১৯৮২-৮৩ | রেনাল্দো বিগনান | ||||||||
ঐতিহাসিক যুগ | স্নায়ুযুদ্ধ | ||||||||
২৪ মার্চ ১৯৭৬ | |||||||||
৩০ অক্টোবর ১৯৮৩ | |||||||||
মুদ্রা | আর্জেন্টেনীয় পেসো (১৯৭৫-৯০) | ||||||||
আইএসও ৩১৬৬ কোড | AR | ||||||||
|
জাতীয় পুণর্গঠন প্রক্রিয়া (স্পেনীয়: Proceso de Reorganización Nacional) ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৩ মেয়াদকালে আর্জেন্টিনায় সামরিক শাসন চলাকালে ক্ষমতাসীন সরকারের নেতৃবৃন্দ কর্তৃক প্রদেয় নামকরণ। এ নামটি এল প্রোসেসো বা দ্য প্রসেস নামেও পরিচিত।[১] আর্জেন্টিনায় আরও সহজতরভাবে লা আলটিমা জান্তা মিলিটার (সাম্প্রতিকতম সামরিক জান্তা) বা লা আলটিমা ডিকটাদুরা (সাম্প্রতিকতম সামরিকতন্ত্র) বলা হয় মূলতঃ সেখানে বহুবার এ শাসন থাকায়।[২]
মার্চ, ১৯৭৬ সালে আর্জেন্টেনীয় সেনাবাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্রপতি জুয়ান ডোমিঙ্গো পেরনের সমর্থকদের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে সামরিক বাহিনী এ হস্তক্ষেপ নেয়। সামরিক সরকার নোংরা যুদ্ধ অব্যাহত রাখে। ১৯৮২ সালে ফকল্যান্ডের যুদ্ধে যুক্তরাজ্যের কাছে পরাজিত হবার পর সামরিক সরকার ব্যাপক জনরোষের কবলে পড়ে। অবশেষে তাঁরা ১৯৮৩ সালে ক্ষমতা পরিত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল।
আর্জেন্টিনার রাজনীতিতে সামরিকবাহিনী সর্বদাই ব্যাপকভাবে প্রভাববিস্তার করে আসছে। আর্জেন্টিনার ইতিহাসে নিয়মিতভাবে ও নিয়মিত বিরতিতে সামরিক শাসন পরিচালিত হয়েছে। আর্জেন্টেনীয় জনপ্রিয় নেতা জুয়ান পেরন তিনবার আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি কর্নেল ছিলেন। ১৯৪৩ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রথমবারের মতো রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। তিনি নতুন ধরনের নীতি গ্রহণ করেন যা জাস্টিসিয়ালিজম নামে পরিচিতি পায়। এ জাতীয়তাবাদী নীতিকে তিনি তৃতীয় পন্থা নামে অভিহিত করেন। এটি পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্র - উভয়ের বিকল্প ছিল। জনসমর্থন লাভ করে রাষ্ট্রপতি পদে পুণঃনির্বাচিত হলে রেভোলুসিওন লিবার্তাদোরা কর্তৃক ১৯৫৫ সালে ক্ষমতা ত্যাগ ও নির্বাসিত হন।
বেশ কয়েকটি দূর্বল সরকার কাজ করে ও সাত বছর সামরিক সরকার ক্ষমতায় আসার পর পেরন ১৯৭৩ সালে আর্জেন্টিনায় ফিরে আসেন। এ সময় তিনি ২০ বছর যাবৎ ফ্রাঙ্কোর স্পেনে জীবনযাপন করছিলেন। রাজনৈতিক অস্থিরতা, পেরনীয় আন্দোলন ও নিয়মিতভাবে রাজনৈতিক সহিংসতা আর্জেন্টিনায় বিরাজমান ছিল। ২০ জুন, ১৯৭৩ তারিখে তাঁর প্রত্যাবর্তনের দিনটিতে এজেইজা গণহত্যা পরিচালিত হয়েছিল যাতে ডানপন্থী পেরনীয় আন্দোলন সংশ্লিষ্ট ছিল।
১৯৭৩ সালে নাটকীয়ভাবে পেরন রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। কিন্তু, জুলাই, ১৯৭৪ সালে তাঁর দেহাবসান ঘটে। তাঁর উপ-রাষ্ট্রপতি ও তৃতীয় স্ত্রী ইসাবেল মার্টিনেজ দে পেরন তাঁর উত্তরাধিকারী মনোনীত হন। কিন্তু তিনি কার্যত দূর্বল শাসনকার্য পরিচালনা করেছেন ও অকার্যকর শাসকের পরিচয় দেন। ২৪ মার্চ, ১৯৭৬ তারিখে লেফটেন্যান্ট জেনারেল জর্জ রাফায়েল ভাইদেলার নেতৃত্বে সামরিক সরকার তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়।
জাতীয় পুণঃসংগঠন প্রক্রিয়ায় আদেশ বহিঃর্ভূত ও আর্জেন্টিনার সমালোচিত পরিস্থিতি সামাজিক-রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ লাভের উদ্দেশ্যে পরিচালিত হয়। জোরপূর্বক আদর্শগত কারণে অদৃশ্যকরণ এবং অবৈধভাবে গ্রেফতারী কার্যক্রম চলে ও সাধারণ বিষয় হিসেবে গণ্য করা হয়। অস্ত্রসজ্জ্বিত সৈনিকগণ পর্যায়ক্রমে নির্বাচিত ব্যক্তিদের গৃহে বলপূর্বক নিয়ে যেতো। পুলিশও কোন কারণ ছাড়াই গাড়ীতে উঠিয়ে নিতো। নির্বিচারে পিটুনি দিতো ও কারণ কারণ ছাড়াই ফেরৎ পাঠাতো। সরকারের গোয়েন্দারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ছড়িয়ে পড়ে। যে সকল ছাত্র প্রতিবাদ জানাতো ও বামপন্থী রাজনৈতিক দলের মতামত মৃদুস্বরে বলতো তাঁদেরকেও অদৃশ্য করা হতো।
নোংরা যুদ্ধের সমাপ্তির পর আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এতে ৮,৯৬১জনের নিখোঁজ হবার খবর পাওয়া যায়।[৩] এছাড়াও, অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার কথাও জানা যায়। অনেকগুলো অভিযোগ কখনো লিপিবদ্ধ করা হয়নি। কিন্তু, পুরো পরিবারই অদৃশ্য হয়ে যায় এবং সামরিকবাহিনী তাঁদের রেকর্ডপত্র ধ্বংস করে ফেলার মাসখানেক পরই গণতন্ত্র ফিরে আসে।[৩] নিখোঁজ গর্ভবতী মহিলাদেরকে কারাগারের গোপন প্রকোষ্ঠে রাখা হয়। নবজাতকদেরকে সাধারণতঃ প্রশাসনের সাথে জড়িত সামরিক বা রাজনৈতিক পরিবারে অবৈধভাবে দত্তক দেয়া হয়। সাধারণতঃ মায়েদেরকে হত্যা করা হয়েছিল। হাজারো আটক ব্যক্তিকে নেশাষক্ত করে বিমানে উঠানো হয়। সম্পূর্ণ উলঙ্গ করে রিও দে লা প্লাতায় নিক্ষেপ বা আটলান্টিক মহাসাগরে ফেলা হয়েছিল। এটি পরবর্তীকালে ডেথ ফ্লাইট নামে পরিচিতি পেয়েছিল।[৪][৫][৬][৭]
পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় চারটি সামরিক সরকার অংশ নেয়। তাঁরা প্রত্যেকেই আর্জেন্টেনীয় সামরিক বাহিনীর তিন বাহিনীর প্রধান ছিলেন:
সেনাবাহিনী প্রধান | নৌবাহিনী প্রধান | বিমানবাহিনী প্রধান |
---|---|---|
প্রথম সামরিক সরকার (১৯৭৬-১৯৭৮) | ||
লেফটেন্যান্ট জেনারেল জর্জ ভাইদেলা |
এডমিরাল এমিলিও মাসেরা |
|
দ্বিতীয় সামরিক সরকার (১৯৭৮-১৯৮১) | ||
লেফটেন্যান্ট জেনারেল রবার্তো ভাইওলা |
এডমিরাল আর্মান্দো লাম্ব্রুসিনি |
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওমর গ্রাফিগনা |
তৃতীয় সামরিক সরকার (১৯৮১-১৯৮২) | ||
লেফটেন্যান্ট জেনারেল লিওপল্ডো গালতাইরি |
এডমিরাল জর্জ আনায়া |
|
চতুর্থ সামরিক সরকার (১৯৮২-১৯৮৩) | ||
লেফটেন্যান্ট জেনারেল ক্রিস্টিনো নিকোলাইদেস |
এডমিরাল রুবেন ফ্রাঙ্কো |
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অগাস্তো হিউজ |
|আইএসবিএন=
এর মান পরীক্ষা করুন: invalid prefix (সাহায্য)।