জাতীয় সড়ক ১২ | ||||
---|---|---|---|---|
পথের তথ্য | ||||
এএইচ১-এর অংশ | ||||
দৈর্ঘ্য | ৬১২ কিমি (৩৮০ মা) | |||
প্রধান সংযোগস্থল | ||||
থেকে: | বকখালি, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পশ্চিমবঙ্গ | |||
তালিকা
| ||||
পর্যন্ত: | ডালখোলা, উত্তর দিনাজপুর, পশ্চিমবঙ্গ | |||
অবস্থান | ||||
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ: ৬১২ কিলোমিটার (৩৮০ মা) | |||
মহাসড়ক ব্যবস্থা | ||||
|
১২ নং জাতীয় সড়ক বা এনএইচ ১২ ভারতের উত্তর-দক্ষিণ মহাসড়কগুলির একটি। সড়কটি দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার বকখালি থেকে শুরু হয় এবং উত্তর দিনাজপুর জেলার ডালখোলা শহরে ২৭ নং জাতীয় সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত হয়। এই জাতীয় সড়কটি দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা, কলকাতা, উত্তর চব্বিশ পরগনা, নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা, উত্তর দিনাজপুর জেলার মধ্য দিয়ে ৬১২ কিমি পথ অতিক্রম করে ডালখোলায় ২৭ নং জাতীয় সড়কের সঙ্গে মিলিত হয়।[১]
১২ নং জাতীয় সড়কটির সম্প্রসারণের কাজ চলছে বর্তমানে। এই সড়কটির ৬০ শতাংশের বেশি কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। বাকি কাজ দ্রুত সম্পূর্ণ হবে। মহাসড়কটিকে বর্তমানে ২ লেন থেকে চার লেনে উন্নীত করা হচ্ছে।[২]
সড়কটি দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার দক্ষিণ প্রান্তে বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত বকখালি থেকে শুরু হয়। এর পর সড়কটি উত্তর দিক বরাবর হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদী পর্যন্ত বিস্তৃত। সড়কটি হাতানিয়া দোয়ানিয়া নদী উপর নির্মিত নামখান সেতু দ্বারা নদীটি অতিক্রম করে নামখানায় প্রবেশ করে। এর পর সড়কটি নামখানা অতিক্রম করে উত্তর দিক ডায়মন্ড হারবার পর্যন্ত বিস্তৃত। ডায়মন্ড হারবারের আগে কুলপিতে সড়কটিতে রাজ্য সড়ক ১ মিলিত হয়। সড়কটি ডায়মন্ড হারবার অতিক্রম করে প্রথমে উত্তর দিকে, পরে উত্তর-পূর্ব দিকে শেষে আবার উত্তর দিকে বিস্তৃত হয়ে আমতলায় পৌচ্ছায়। আমতলা থেকে জাতীয় সড়ক ১২ আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে জোকা পৌচ্ছায়। সড়কটি জোকার কাছে কলকাতা জেলার সীমান্তে উপস্থিত হয়।
জোকা থেকে সড়কটি কলকাতা জেলার পূর্ব প্রান্ত দিয়ে অগ্রসর হয়ে উত্তর ২৪ পরগণা জেলার চিংড়িঘাটা ক্রসিংয়ে উপস্থিত হয়। কলকাতা জেলার মধ্যে সড়কটি ই.এম.বাইপাস নামে পরিচিত।
সড়কটি চিংড়িঘাটা ক্রসিংয়ে উত্তর ২৪ পরগণা জেলায় প্রবেশ করে। চিংড়িঘাটা ক্রসিং থেকে সড়কটি খালের সমান্তরালে অগ্রসর হয়। সড়কটি বিধাননগরের সেক্টর ফাইভে দক্ষিণ দিকে বাক নেয় এবং কিছু দূর অগ্রসর হয়ে পূর্ব দিকে বাঁক নিয়ে কেষ্টপুর খাল অতিক্রম করে নিউ টাউনে প্রবেশ করে। বিশ্ব বাংলা গেটের কাছে সড়কটি উত্তরে বাঁক নেয়। বিশ্ব বাংলা গেট থেকে সড়কটি উত্তরে চলে এবং আকাংক্ষা মোড়ে পশ্চিমে বাঁক নিয়ে কৈখালি পৌচ্ছায়। এখানে সড়কটি সঙ্গে ভিআইপি রোড যুক্ত হয় এবং সড়কটি উত্তরে বাঁক নিয়ে বিমানবন্দরে পৌচ্ছায়। বিমানবন্দর থেকে সড়কটি বারাসত পৌচ্ছায়। বারাসতে সড়কটি জাতীয় সড়ক ১১২ এর সঙ্গে সংযোগ গঠন করে। বারাসত শহর থেকে সড়কটি উত্তর ২৪ পরগণা জেলার গ্রামীণ এলাকার মধ্য দিয়ে নদীয়া জেলার সীমান্তে উপস্থিত হয়।
জাগুলিয়ার কাছে সড়কটি নদিয়া জেলায় প্রবেশ করে। জাগুলিয়া থেকে সড়কটি উত্তরে অগ্রসর হয়ে রানাঘাট শহরে উপস্থিত হয়। রানাঘাট শহরে সড়কটি চূর্ণী নদী অতিক্রম করে উত্তর-পশ্চিমে অগ্রসর হয় শান্তিপুর শহর পর্যন্ত। অতীতে সড়কটি শান্তিপুর শহরের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হলেও বর্তমানে সড়কটি শান্তিপুর বাইপাস হয়ে অগ্রসর হয়। শান্তিপুর বাইপাসের উত্তর প্রান্ত থেকে এটি উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে জেলা সদর কৃষ্ণনগরে পৌঁছায়। কৃষ্ণনগর শহরে সড়কটি দ্বিজেন্দ্র সেতু দ্বারা জলঙ্গী নদী অতিক্রম করে জেলার উত্তরভাগ দিয়ে চলে। সড়কটি পলাশীর কাছে মালদা বিভাগের মুর্শিদাবাদ জেলার সীমান্তে উপস্থিত হয়।
নদিয়া জেলা অতিক্রম করে সড়কটি রেজিনগর ও বেলডাঙা হয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার জেলা সদর বহরমপুর শহর পর্যন্ত চলে। সড়কটি বহরমপুর শহরে রামেন্দ্র সুন্দর ত্রিবেদী সেতু দ্বারা ভাগীরথী নদী (গঙ্গা) অতিক্রম করে। সেতুর পশ্চিম প্রান্ত থেকে ১.৫ কিলোমিটার চলার পরে রাজ্য সড়ক ১১ সংযুক্ত হয়। ১১ নং রাজ্য সড়কের সংযোগ স্থল থেকে উত্তর-পশ্চিমমুখী হয়ে সড়কটি ৩০ কিলোমিটার অতিক্রম করে মোরগ্রামে জাতীয় সড়ক ১৪ এর সাথে সংযোগ গঠন করে। বহরমপুর শহরের সম্প্রসারণের জন্য জমি না থাকায় একটি বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা হয় শহরে দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে। এই বাইপাস সড়কের জন্য একটি নতুন সেতু নির্মিত হয় ভাগিরথী নদীর উপরে। বাইপাস সড়কটি নিউ বলরামপুর হল্ট রেলওয়ে স্টেশনের কাছে শুরু হয় এবং ফাতেপুরের কাছে শেষ হয়। মোরগ্রামে এনএইচ ১৪ এর সংযোগ স্থান থেকে সড়কটি উত্তরমুখী হয়ে ৬৩ কিলোমিটার (৩৯ মা) অতিক্রম করে ফারাক্কা ব্যারাজ টাউনে ফারাক্কা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে পৌচ্ছায়। সড়কটি ফারাক্কা বাঁধের দ্বারা মুর্শিদাবাদ-মালদা জেলা সীমান্ত অতিক্রম করে।
ফারাক্কা বাঁধ থেকে সেতুটি উত্তর-পূর্বমুখী হয়ে মালদা শহর পর্যন্ত চলে। শহরে সড়কটি মহানন্দা নদী অতিক্রম করে মহানন্দা সেতুর মাধ্যমে। মালদা শহরের মহানন্দা সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে ফারাক্কা সেতুর পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের ২৬ কিমি ৪ লেন বিশিষ্ট এবং অবশিষ্ট অংশ ২ লেন বিশিষ্ট। ফারাক্কা সেতু থেকে মালদা বাইপাসের দক্ষিণ প্রান্ত পর্যন্ত সড়কে ৪ লেনে উন্নিত করা হলেও, সড়কটিকে শহরের মধ্যে সম্প্রসারণের কোন উপায় না থাকায় শহরটিকে অতিক্রম করতে ১১ কিলোমিটার (৬.৮ মা) দীর্ঘ ও ৪ লেন বিশিষ্ট বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা হয়। এই বাইপাস সড়কটি ‘‘মালদা বাইপাস’’ নামে পরিচিত। মালদা বাইপাস কমলাবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ে সম্মুখে দক্ষিণ প্রান্ত থেকে শুরু হয়ে মালদা শহরের উত্তর প্রান্তে শেষ হয়। মালদা বাইপাসের উত্তর প্রান্তিক থেকে সড়কটি উত্তরমুখী হয়ে গাজোল শহর অতিক্রম করে ময়নায় মালদা-উত্তর দিনাজপুর জেলা সীমান্ত পর্যন্ত অগ্রসর হয়। এই অংশটি ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৪ লেন বিশিষ্ট।
মালদা জেলার ময়নায় মালদা-উত্তর দিনাজপুর জেলা সীমান্ত অতিক্রম করে সড়কটি উত্তর দিকে ১৮ কিলোমিটার (১১ মা) অগ্রসর হয়ে ইটাহার পৌচ্ছায়। ইটাহার থেকে সড়কটি ২২ কিলোমিটার (১৪ মা) জেলা শহর রায়গঞ্জে উপস্থিত হয়। এর পরে এন এইচ ১২ উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে কুলিক সেতু দ্বারা কুলিক নদী অতিক্রম করে করনদীঘি পৌচ্ছায়। করনদীঘি থেকে সড়কটি উত্তর দিকে অগ্রসর হয় দোমোহন পর্যন্ত চলে। দোমোহন থেকে সড়কটি পশ্চিম দিকে চলে এবং ডালখোলা শহরের জাতীয় সড়ক ২৭ এর সাথে সংযুক্ত হয়। করনদীঘি ও ডালখোলাতে সড়ক সম্প্রসারণের জন্য জমি না থাকায় বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা হয়। ডালখোলা বাইপাস সড়কে একটি উড়ালপুল নির্মাণ করা হয় হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি রেলপথ অতিক্রম করতে। উত্তর দিনাজপুর জেলার মধ্যে সড়কটি মোট ৯০ কিলোমিটার (৫৬ মা) পথ অতিক্রম করে।