এনএসকে | |
স্টেডিয়ামের তথ্যাবলি | |
---|---|
অবস্থান | করাচী, সিন্ধু, পাকিস্তান |
দেশ | পাকিস্তান |
স্থানাঙ্ক | ২৪°৫৩′৪৬″ উত্তর ৬৭°৪′৫৩″ পূর্ব / ২৪.৮৯৬১১° উত্তর ৬৭.০৮১৩৯° পূর্ব |
প্রতিষ্ঠা | ২১ এপ্রিল ১৯৫৫ |
ধারণক্ষমতা | ৩৪,২২৮[১] |
স্বত্ত্বাধিকারী | পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড |
পরিচালক | সিন্ধু প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন |
ভাড়াটে | পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দল সিন্ধু প্রদেশ ক্রিকেট দল করাচি কিংস |
প্রান্তসমূহ | |
প্যাভিলিয়ন প্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রান্ত | |
আন্তর্জাতিক খেলার তথ্য | |
প্রথম পুরুষ টেস্ট | ২৬ ফেব্রুয়ারি – ১ মার্চ ১৯৫৬: পাকিস্তান বনাম ভারত |
সর্বশেষ পুরুষ টেস্ট | ২৬-৩০ জানুয়ারি ২০২১: পাকিস্তান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা |
প্রথম পুরুষ ওডিআই | ২১ নভেম্বর ১৯৮০: পাকিস্তান বনাম শ্রীলঙ্কা |
সর্বশেষ পুরুষ ওডিআই | ২ অক্টোবর ২০১৯: পাকিস্তান বনাম শ্রীলঙ্কা |
প্রথম পুরুষ টি২০আই | ২০ এপ্রিল ২০০৮: পাকিস্তান বনাম বাংলাদেশ |
সর্বশেষ পুরুষ টি২০আই | ৩ এপ্রিল ২০১৮: পাকিস্তান বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ |
একমাত্র নারী টেস্ট | ১৫-১৯ মার্চ ২০০৪: পাকিস্তান বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ |
প্রথম নারী ওডিআই | ৯ এপ্রিল ২০০১: পাকিস্তান বনাম নেদারল্যান্ডস |
সর্বশেষ নারী ওডিআই | ২৬ অক্টোবর ২০০৮: পাকিস্তান বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ |
প্রথম নারী টি২০আই | ২৮ অক্টোবর ২০০৮: পাকিস্তান বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ |
সর্বশেষ নারী টি২০আই | ৩১ অক্টোবর ২০০৮: পাকিস্তান বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ |
২৬ জানুয়ারি ২০২১ অনুযায়ী উৎস: ক্রিকইনফো |
জাতীয় স্টেডিয়াম (উর্দু: نیشنل اسٹڈیم, সিন্ধি: قومي اسٽيڊيم) হচ্ছে পাকিস্তানের করাচিতে অবস্থিত একটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম যা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এর মালিকানাধীন।[২] করাচি কিংস সহ করাচির অন্যান্য ঘরোয়া দলগুলোর জন্য এটি হচ্ছে তাদের ঘরোয়া মাঠ।[৩] ৪০,০০০ আসনক্ষমতা সম্পন্ন এই স্টেডিয়ামটিই হচ্ছে ধারণক্ষমতার দিক দিয়ে পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ স্টেডিয়াম।[৪]
এই মাঠে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের টেস্ট ক্রিকেটে বেশ উল্লেখযোগ্য রেকর্ড রয়েছে, যাতে ৪০টি টেস্ট খেলে মাত্র দুটিতে পরাজিত হয়।[৫] (ইংল্যান্ডের সাথে ডিসেম্বর ২০০০-০১ মৌসুমে, ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে, অক্টোবর ২০০৭-০৮ মৌসুমে)। স্টেডিয়ামটি অনেকগুলো স্মরণীয় স্মৃতির স্বাক্ষী, যেমন ১৯৮৭ ক্রিকেট বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার বিপরীতে ভিভ রিচার্ডসের ১৮১ রান, মোহাম্মদ ইউসুফের রেকর্ড সংখ্যাক ৯ সেঞ্চুরি, যার ফলে এক পঞ্জিকা বর্ষে সর্বাধিক রান সংগ্রহের ভিভ রিচার্ডসের রেকর্ডটি ভেঙ্গে যায় ও কামরান আকমলের ২০০৬ সালে ভারতের বিপরীতে করা সেই স্মরণীয় সেঞ্চুরি, যখন ৩৯ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান প্রায় ধ্বসে পড়েছিল, সেখান থেকে দলকে জয় দেখিয়েছিল।
স্টেডিয়ামটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৫৫ সালের এপ্রিলে, যখন করাচি ছিল পাকিস্তানের রাজধানী, কিন্তু সেখানে স্বল্প-সীমিত আসন বিশিষ্ট কেবল একটি ক্রিকেট গ্রাউন্ড ছিল করাচি জীমখানা।[৬] একটি নতুন স্টেডিয়াম তৈরীর পরিকল্পনা চলছিল, যার জন্য করাচি কমিশনারের মাধ্যমে পাকিস্তান পাবলিক ওয়ার্ক ডিপার্টমেন্ট ১৭৪.৫ একর জমি বরাদ্দ নেয়।[৬] পরে পূর্ব পাকিস্তানের একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার কফিলুদ্দিন আহমেদের পরামর্শে করাচিতে স্টেডিয়ামটি নির্মান করা হয়। ফলে করাচিতে ৫ম এবং সারা পাকিস্তানে ১১তম প্রথম-শ্রেণির ক্রিকেট মাঠ সংযুক্ত হয়।[৬]
এনএসকেতে উদ্বোধনী প্রথম-শ্রেণীর ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয় পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে, ২০-২৪ এপ্রিল ১৯৯৫, পরে যা পাকিস্তান ক্রিকেটের দুর্গে পরিণত হয়।[৫] প্রথম টেস্ট ম্যাচ থেকে ডিসেম্বর ২০০০ পর্যন্ত মোট ৩৪টি টেস্ট ম্যাচে পাকিস্তান ১৭টিতে জয়ী হয়, কোন পরাজয় নেই। এই মাঠে একমাত্র পরাজয় আসে ২০০০-০১ এ ইংল্যান্ড এর সাথে।
উক্ত স্টেডিয়ামে প্রথম ওডিআই ম্যাচটি হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর সাথে ২১ নভেম্বর ১৯৮০ তে এবং খেলাটি শেষ বল পর্যন্ত মাঠে গড়ায়, যেখানে গর্ডন গ্রিনিজ ইমরান খানের বলে ৩ রানের জন্য উপরে তুলে কভার বাউন্ডারীতে বল নিয়ে যায়। ফলে এ স্টেডিয়ামটি সাধারণ সীমিত ওভারের খেলায় খুব কম সফলতা পেয়েছে। এমনকি শুরু থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত পাচঁ বছরে পাকিস্তান একটিও ম্যাচ জেতে নি। এই মাঠেই ১৯৯৬-৯৭ ক্রিকেট বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয়।
শচীন তেন্ডুলকর ও ওয়াকার ইউনুস তাদের প্রথম টেস্ট ম্যাচটি এই মাঠেই খেলেছেন।
২০১৯ এর সেপ্টেম্বরে, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ২০১৯-২০ কায়েদ-ই-আজম ট্রফি প্রতিযোগিতার মাঠগুলোর একটি হিসাবে ঘোষণা করে।[৭]
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)'র সাবেক চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি ২০১৭ সালের এক ঘোষণায় বলেন যে, ২০১৮ পাকিস্তান সুপার লীগ এর ফাইনাল খেলাটি এ মাঠে অনুষ্ঠিত হবে ২০১৮ এর মার্চে। ফাইনালের জন্য মাঠের অবস্থার উন্নয়ন করা হয়েছে। ঐতিহাসিক এ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ইসলামাবাদ ইউনাইটেড ও পেশাওয়ার জলমি এর মধ্যে। যার ফলে এ মাঠে আন্তর্জাতিক তারকাদের দেখা মিলে দীর্ঘ নয় বছরের ব্যবধানে। খেলাটি এক-পেশে আকারে শেষ হয়, এবং বরাবরের মতো ইসলামাবাদ ইউনাইটেডকে বিজয়ের শিরোপা তুলে দেয়া হয়। ২০০৯ এর পর এটিই ছিল উক্ত মাঠে আয়োজিত প্রথম বড় কোন খেলার আসর এবং জনস্রোতের উপস্থিতিতে এটি হয়ে উঠে একটি স্মরণীয় খেলা। খেলাটিকে সফলভাবে সমাপ্ত করতে ও এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মাঠের ভিতরে ও চারপাশে অসংখ্য নিরাপত্তা কর্মীকে কাজে লাগানো হয়, যাদের অক্লান্ত চেষ্টায় খেলাটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
২০১৯-এর মে মাসে, সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সভায় পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) পাকিস্তানে দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলার জন্য শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি) কে অনুরোধ করে।[৮] ২০১৯-এর জুলাইয়ে, এসএলসি পাকিস্তানের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের পাঠায়,[৯] এবং তাদের রিপোর্ট বলে যে, দেশটিতে একটি টেস্ট ম্যাচ খেলা যেতে পারে।[১০] পরবর্তীতে করাচী ও লাহোরের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ এর আগস্টে শ্রীলঙ্কা তাদের সিদ্ধান্ত প্রকাশ করে।[১১][১২] নিরাপত্তা ডেলিগেশন দল "খুবই সম্মতিসূচক প্রতিবেদন" প্রদান করে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দল পাকিস্তানে টেস্ট ম্যাচ খেলতে পারবে এমন পরামর্শ প্রদান করে।[১৩] ২০১৯ এর ২২ আগস্ট, শ্রীলঙ্কা ক্রীড়া মন্ত্রী নিশ্চিত করে যে, তারা অক্টোবরে পাকিস্তানে ৩টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবে, কিন্তু টেস্ট ম্যাচগুলোকে বাতিল করা হয়।[১৪][১৫] ২৩ আগস্ট পিসিবি, ওডিআই ও টি২০আই সিরিজের সূচী প্রকাশ করে, শ্রীলঙ্কা ৩ ম্যাচের ওডিআই সিরিজ খেলবে জাতীয় স্টেডিয়ামে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে।[১৬] ২১ জানুয়ারি ২০০৯ এর পর এটিই হবে এ মাঠে অনুষ্ঠিত ১ম ওডিআই, কিন্তু প্রথম ওডিআইটি ভারী বৃষ্টির কারণে বাতিল করা হয়[১৭] এবং এ মাঠে এটিই প্রথম কোন ওডিআই বাতিল হওয়ার দৃষ্টান্ত।[১৮] ফলে, পিসিবি ২য় ওডিআইকে একদিন পিছিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ এ নিয়ে যায়।[১৯]
অক্টোবর ২০১৯, সংযুক্ত আরব আমিরাতের পরিবর্তে দুটি টেস্ট ম্যাচের সিরিজ পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি ও করাচীতে আয়োজন করার প্রস্তাব দেয়।[২০] জবাবে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট জানায়, পাকিস্তানে টেস্ট ম্যাচ এগিয়ে নিয়ে যেতে তারা আগ্রহী।[২১] ২০১৯ এর নভেম্বরে, পিসিবি টেস্ট সিরিজের তারিখ ও স্থান নিশ্চিত করে।[২২] টেস্ট সিরিজটি খেলতে সম্মত হওয়ার ফলে, পিসিবি আন্তর্জাতিক সূচীর আয়োজন করতে গিয়ে ২০১৯-২০ কায়েদ-ই-আজম ট্রফির ফাইনালকে পিছিয়ে দেয়।[২৩] ২য় টেস্ট খেলাটি অনুষ্ঠিত হয় ১৯ ডিসেম্বর, জাতীয় স্টেডিয়াম, করাচিতে।[২৪]