জাপানে টেলিভিশন প্রবর্তিত হয় ১৯৩৯ সালে। কিন্তু পরীক্ষাসমূহ হয় ১৯২০ দশকে, কেঞ্জিরো তাকায়ানাগির ইলেক্ট্রনিক টেলিভিশনে অগ্রগামী পরীক্ষা নিয়ে।[১] দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় টেলিভিশন সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়, তারপর নিয়মিত টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু হয় ১৯৫০ সালে।[২] ১৯৬০ দশকে জাপান প্রথম এইচডিটিভি পদ্ধতি নির্মাণ করার পর ১৯৭০ দশকে এমইউএসই হাই-ভিশন প্রবর্তিত হয়।
১৯৫০ সাল থেকে ২০১০ দশকের প্রথম সালগুলির পর্যন্ত অ্যানালগ সম্প্রচারের জন্য এনটিএসসি-জে নামের এনটিএসসির একটি পরিবর্তিত সংস্করণ ব্যবহার করা হতো। জাপানে অ্যানালগ সম্প্রচার প্রতিস্থাপিত হয় আইএসডিবি ধরণের ডিজিটাল সম্প্রচার দিয়ে। জাপানে উভয় এনটিএসসি-জে অ্যানালগ টেলিভিশন পদ্ধতি এবং পূর্বে ব্যবহৃত এমইউএসই হাই-ভিশন অ্যানালগ এইচডি পদ্ধতি স্থানান্তরিত করে আইএসডিবি। ২০০৩ সালের ডিসেম্বর মাসে শুরু হয় জাপানে আইএসডিবি-টি (আইএসডিবি-টি ইন্টারন্যাশনাল) ব্যবহার করে ডিজিটাল টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন সম্প্রচারের সার্ভিস (ডিটিটিবি), এবং তখন থেকে অন্যান্য ডিজিটাল টেলিভিশন সম্প্রচারের মধ্য বাদ দিয়ে জাপান আইএসডিবি গ্রহণ করেছে।
টেলিভিশন লাইসেন্স রাখা অন্তত একটি টেলিভিশন সেট সহ সমস্ত জাপানি গৃহের জন্য বাধ্যতামূলক, এর সাথে জাপানি সরকারি সম্প্রচারক এনএইচকেকে ভর্তুকি দেওয়ার জন্য তহবিল বেশিরভাগ ব্যবহৃত হয়। ফি খরচ হল ১৩,৬৫০ ইয়েন থেকে ২৪,৭৪০ ইয়েন (ওকিনাওয়ায় বসবাস করা গৃহের জন্য ১২,২৫৫ ইয়েন থেকে ২৩,৫৮৫ ইয়েন)[৩] যা টাকা দেওয়ার মধ্য এবং সময়ের উপর নির্ভর করে, এবং যা শুধু টেরেস্ট্রিয়াল অথবা স্যাটেলাইটেও সম্প্রচার গ্রহণ করে।[৪] কল্যাণের উপর পরিবাররা লাইসেন্স ফি থেকে অজুহাত হতে পারে। যে কোনো ক্ষেত্রে, অর্থ প্রদান না করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা বা জরিমানা আরোপের কোনো কর্তৃত্ব নেই; লোকেরা বিলগুলি ফেলে দিতে পারে এবং মাঝে মাঝে বিল সংগ্রহকারীকে পরিণতি ছাড়াই ফিরিয়ে দিতে পারে (এবং অনেকেই করে)।[৪]
১৯২৪ সালে কেঞ্জিরো তাকায়ানাগি ইলেক্ট্রনিক টেলিভিশনের উপর একটি গবেষণা অনুষ্ঠান শুরু করে। ১৯২৫ সালে তিনি তাপীয় ইলেকট্রন নির্গমন সহ ক্যাথোড রশ্মি নল টেলিভিশন প্রদর্শন করেন।[১] মিলিত যান্ত্রিক নিপকভ ডিস্ক এবং ইলেক্ট্রনিক ব্রাউন নল পদ্ধতি ব্যবহার করে ১৯২৬ সালে টেলিভিশন পরীক্ষা শুরু হয়।[৫] ১৯২৬ সালে তিনি ৪০-লাইন ডিসপ্লে রেজোলিউশন সহ একটি সিআরটি টেলিভিশন প্রদর্শন করেন,[৬] যা ছিল পূর্ণাঙ্গ ইলেক্ট্রনিক টেলিভিশন রিসিভারের প্রথম কার্যকর উদাহরণ।[১] ১৯২৭ সালে তিনি ১০০ লাইনে টেলিভিশনের রেজোলিউশন বাড়ান, যা ১৯৩১ সালের পর্যন্ত অপ্রতিদ্বন্দ্বী থাকে।[৭] ১৯২৮ সালে তিনি টেলিভিশনে অর্ধ-টোনে মানুষের মূখ সম্প্রচার করার প্রথম লোক ছিলেন।[৮]
১৯৩০ দশকে একটি স্থানীয়ভাবে তৈরি আইকনোস্কোপ পদ্ধতি ব্যবহার করে একটি সম্পুর্ণভাবে ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়।[৫] কিন্তু প্রশান্তে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শুরুর কারণে এই প্রথম পূর্ণাঙ্গ টেলিভিশন সম্প্রচার পরীক্ষাটি শুধু কয়েক মাসের জন্য টিকে। জাপানে নিয়মিত টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু হয় ১৯৫০ সালে, যুদ্ধের কিছু বছর পর।[২] ১৯৫৩ সালে উভয় সরকারি এনএইচকে জেনেরাল টিভি এবং বেসরকারি নিপ্পন টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু করে। সেই সময় মোটে ৩,০০০টি টেলিভিশন সেট ছিল। ১৯৫৯ সালে যুবরাজ আকিহিতোর রাজকীয় বিবাহের পরের সালে টেলিভিশন সেটের সংখ্যা ১.২ কোটিতে বেড়ে গেলো।[৯]
১৯৬৪ সালে টোকিও অলিম্পিকের পর এনএইচকে (নিপ্পন হোসো কিয়োকাই; জাপান সম্প্রচার কর্পোরেশন) "মানুষের পাঁচটি ইন্দ্রিয় নিয়ে ভিডিও এবং শব্দ মিথস্ক্রিয়া মৌলিক প্রক্রিয়া খোলার" জন্য গবেষণা করা শুরু করে। এনএইচকে একটি এইচডিটিভি পদ্ধতি তৈরি করে যা বিষয়গত পরীক্ষাতে এনটিএসসির "এইচডিটিভি" এর চেয়েও আরও বেশি স্কোর পায়ে উঠলো। ১৯৭২ সালে উদ্বোধন এনএইচকে কালার নামক এই নতুন পদ্ধতিতে রয়েছে ১,১২৫টি লাইন, একটি ৫:৩ অ্যাসপেক্ট রেশিও, এবং ৬০ হার্টজ রিফ্রেশ হার। চার্লস গিন্সবার্গ দ্বারা নেতৃত্ব চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন প্রকৌশলী সমাজ (সিম্পটি) আন্তর্জাতিক থিয়েটারে এইচডিটিভি প্রযুক্তির জন্য পরীক্ষা এবং প্রতিবেদন কর্তৃত্ব হয়ে গেলো। প্রতি ধারণাযোগ্য দৃষ্টিকোণ থেকে সিম্পটি বিভিন্ন কোম্পানির এইচডিটিভি পদ্ধতি পরীক্ষা করে, কিন্তু বিভিন্ন বিন্যাসগুলো একত্রিত করার সমস্যাটি অনেক বছর ধরে প্রযুক্তিটিকে অস্থির করেছিল।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
জাপানের কাছে সাতটি জাতীয় টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আছে – দুটি সরকারি সম্প্রচারক এনএইচকের মালিকানাধীন এবং পাঁচটি জাতীয় বেসরকারি টেলিভিশন কেন্দ্র (বিগ থ্রি এর জাপানি প্রতিপক্ষ যেমন নিপ্পন টিভি, ফুজি টেলিভিশন, এবং টিবিএস)। যদিও নিচে প্রদর্শিত কিছু টেলিভিশন নেটওয়ার্কের নাম শুধু সংবাদ অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহার হয়ে থাকে, সেই সংগঠনগুলো অন্যান্য অনুষ্ঠানের বিচিত্রও দেখায়।
নেটওয়ার্ক | ফ্ল্যাগশিপ কেন্দ্র (টোকিও) |
হিসেবে ব্যবসা (টোকিও) |
ট্রান্সমিটার এলাকা | সম্প্রচারের স্থান | চ্যানেল (টোকিও) |
ধরন (সংযুক্ত পত্রিকা এবং চলচ্চিত্রের কোম্পানি) |
---|---|---|---|---|---|---|
এনএইচকে জি | এনএইচকে (জেওএকে-ডিটিভি) |
টোকিও স্কাই ট্রি | কান্তোও অঞ্চল | ১ | সরকারি সম্প্রচার (নেই) | |
এনএইচকে ই | এনএইচকে (জেওএবি-ডিটিভি) |
২ | ||||
জেএআইটিএস–এসওয়াইএন | টিভিকে (জেওকেএম-ডিটিভি) |
৩ | বেসরকারি সম্প্রচার (নেই) | |||
এনএনএস/এনএনএন | নিপ্পন টিভি (জেওএএক্স-ডিটিভি) |
TYO: 9404 | ৪ | বেসরকারি সম্প্রচার (ইয়োমিউরি শিমবুন) | ||
এএনএন | টিভি আসাহি (জেওইএক্স-ডিটিভি) |
TYO: 9409 | ৫ | বেসরকারি সম্প্রচার (দ্য আসাহি শিমবুন এবং তোয়েই কোম্পানি) | ||
জেএনএন | টিবিএস (জেওআরএক্স-ডিটিভি) |
TYO: 9401 | ৬ | বেসরকারি সম্প্রচার (মাইনিচি শিমবুন) | ||
টিএক্সএন | টিভি টোকিও (জেওটিএক্স-ডিটিভি) |
TYO: 9413 | ৭ | বেসরকারি সম্প্রচার (দ্য নিক্কেই) | ||
এফএনএস/এফএনএন | ফুজি টিভি (জেওসিএক্স-ডিটিভি) |
TYO: 4676 | ৮ | বেসরকারি সম্প্রচার (সানকেই শিমবুন[ক] এবং তোহো[খ]) | ||
জেএআইটিএস–এসওয়াইএন | টোকিও এমএক্স জেওএমএক্স-ডিটিভি |
টোকিও | ৯ | বেসরকারি সম্প্রচার (চুনিচি শিমবুন[গ] এবং কাদোকাওয়া দাইএই স্টুডিও) |
চ্যানেল | চ্যানেলের নাম | কলসাইন | সিগনাল ক্ষমতা | ইআরপি | সম্প্রচারের স্থান |
---|---|---|---|---|---|
১
|
এনএইচকে জেনেরাল টিভি | জেওএকে-ডিটিভি | ১০ কিলোওয়াট | ৬৮ কিলোওয়াট | কান্তোও অঞ্চল |
২
|
এনএইচকে এডুকেশনাল টিভি | জেওএবি-ডিটিভি | |||
৩
|
টিভিকে | জেওকেএম-ডিটিভি | ৩ কিলোওয়াট | ১১.৫ কিলোওয়াট | কানাগাওয়া প্রশাসনিক অঞ্চল এবং টোকিও |
৪
|
নিপ্পন টিভি | জেওএক্স-ডিটিভি | ১০ কিলোওয়াট | ৬৮ কিলোওয়াট | কান্তোও অঞ্চল |
৫
|
টিভি আসাহি | জেওইএক্স-ডিটিভি | |||
৬
|
টিবিএস টেলিভিশন | জেওআরএক্স-ডিটিভি | |||
৭
|
টিভি টোকিও | জেওটিএক্স-ডিটিভি | |||
৮
|
ফুজি টিভি | জেওসিএক্স-ডিটিভি | |||
৯
|
টোকিও এমএক্স | জেওএমএক্স-ডিটিভি | ৩ কিলোওয়াট | ১১.৫ কিলোওয়াট | টোকিও |