জায়েদ বিন সুলতান বিন জায়েদ আল নাহিয়ান زايد بن سلطان بن زايد آل نهيان | |
---|---|
![]() ব্রাজিলে রাষ্ট্রীয় সফরকালে জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান, ডিসেম্বর ২০০৩ | |
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতি | |
কাজের মেয়াদ ২ ডিসেম্বর ১৯৭১ – ২ নভেম্বর ২০০৪ | |
প্রধানমন্ত্রী | মাকতুম বিন রশিদ আল মাকতুম রশিদ বিন সাইদ আল মাকতুম মাকতুম বিন রশিদ আল মাকতুম |
পূর্বসূরী | নেই |
উত্তরসূরী | মাকতুম বিন রশিদ আল মাকতুম (ভারপ্রাপ্ত) |
আবুধাবির আমির | |
কাজের মেয়াদ ৬ আগস্ট ১৯৬৬ – ২ নভেম্বর ২০০৪ | |
পূর্বসূরী | শেখ শাখবুত বিন সুলতান আল নাহিয়ান |
উত্তরসূরী | শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ৬ মে ১৯১৮[১] আল আইন, আবুধাবি, চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্র (বর্তমান আরব আমিরাত) |
মৃত্যু | ২ নভেম্বর ২০০৪ (৮৬ বছর) আবুধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত |
মাতা | শাইখা সালমা বিনতে বুতি আল হামিদ |
পিতা | সুলতান বিন জায়েদ আল নাহিয়ান |
ধর্ম | ইসলাম |
জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান (আরবি: زايد بن سلطان آل نهيان; ৬ মে ১৯১৮ – ২ নভেম্বর ২০০৪)[১] ছিলেন আবুধাবির আমির এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রথম রাষ্ট্রপতি। ১৯৭১ সাল থেকে ২০০৪ সালে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রপতির পদে ছিলেন।
জায়েদের সঠিক জন্মতারিখ জানা যায় না। তবে কিছু দলিলপত্রে দাপ্তরিকভাবে তার জন্ম তারিখ ৬ মে ১৯১৮ এর উল্লেখ পাওয়া যায়।[১] তিনি শেখ সুলতান বিন জায়েদ বিন খলিফা আল নাহিয়ানের কনিষ্ঠ পুত্র[২] তার জন্মের সাল হিসেবে ১৯১৬ এর উল্লেখও পাওয়া যায়।[৩] তার বাবা ১৯২২ সাল থেকে ১৯২৬ সালে নিহত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আবুধাবি শাসন করেছেন। জায়েদ তার চার ছেলের মধ্যে সবচেয়ে ছোট।[৪] জায়েদের মা শাইখা সালমা বিনতে বুতি আল হামিদ।[৫][৬] জায়েদের নাম তার দাদা শেখ জায়েদ বিন খলিফা আল নাহিয়ানের নামে রাখা হয়েছিল। তিনি ১৮৫৫ সাল থেকে ১৯০৯ সাল পর্যন্ত শাসন করেছেন[৭] জায়েদের জন্মের সময় আবুধাবি ছিল পারস্য উপসাগরের সাতটি চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্রের অন্যতম।[৮]
জীবনের প্রথম পনেরো বছর তিনি আল আইনে বড় হন।[৯] তিনি ইসলামের মৌলিক বিষয়াদি এখানে শিক্ষালাভ করেন এবং মরুভূমিতে বেদুইনদের সাথে থাকতেন। এর ফলে জনগণের জীবনধারার সাথে তিনি পরিচিত হয়ে উঠেন, তাদের ঐতিহ্যবাহী দক্ষতা ও কঠিন আবহাওয়াগত পরিবেশে টিকে থাকার জন্য তাদের সামর্থ্য সম্পর্কে জানতে পারেন।[১০]
তার চাচা সাকর বিন জায়েদ আল নাহিয়ান নিহত হওয়ার পর ১৯২৮ সালে জায়েদের বড় ভাই শেখ শাখবুত বিন সুলতান আল নাহিয়ান আবুধাবির শাসক হন।[৪]
১৯৪৬ সালে জায়েদ আবুধাবির পূর্বাঞ্চলের গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান।[৭] আল আইনের মুওয়াইজি দুর্গ ছিল তার শাসনকেন্দ্র। এসময় এই এলাকাটি ছিল দরিদ্র ও রোগপ্রবণ। পেট্রোলিয়াম ডেভেলপমেন্ট এখানে তেল অনুসন্ধান শুরু করার পর জায়েদ তাদের সহায়তা করেন।[১১]
১৯৫৮ সালে তেল আবিষ্কার এবং ১৯৬২ সালে তেল রপ্তানি শুরু হওয়ার পর শেখ শাখবুতের শাসন নিয়ে রাজবংশের অসন্তোষ দেখা দেয়।[১২] ১৯৬৬ সালের ৬ আগস্ট শাখবুত ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর জায়েদ আবুধাবির শাসক হন।
১৯৬০ এর দশকের শেষ জায়েদ জাপানি স্থপতি ড. কাতসুহিকু তাকাহাশিকে নগর পরিকল্পনার জন্য নিয়োগ দেন।[১৩]
১৯৭১ সালে ছয়টি চুক্তিবদ্ধ রাষ্ট্র নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত গঠিত হয়। জায়েদ এসময় রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে ১৯৭৬, ১৯৮১, ১৯৮৬ ও ১৯৯১ সালে তিনি পুনরায় নিয়োগ পান।[১৪]
১৯৭৪ সালে জেদ্দার চুক্তির মাধ্যমে তিনি সৌদি আরবের সাথে সীমান্ত বিরোধ নিরসন করেন।[১৫]
জায়েদ বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি ছিলেন। ফোর্বসের একটি হিসাব অনুযায়ী তার সম্পদের মূল্য ছিল ২০ বিলিয়ন ডলার।[১৬]
তেল রাজস্বের আয়ের মাধ্যমে জায়েদ হাসপাতাল, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলেন। এছাড়া বহির্বিশ্বেও তিনি বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করেছেন।
১৯৯৭ সালের এপ্রিলে দেশে গণতন্ত্রের অনুপস্থিতির কারণ সম্পর্কে নিউ ইয়র্ক টাইমস কর্তৃক প্রশ্ন করা হলে তিনি জবাব দেন,
কেন আমরা জনগণকে সন্তুষ্ট করে এমন পদ্ধতি বাদ দেব যাতে মতভেদ ও বিবাদ শুরু হয়? আমাদের সরকার পদ্ধতি আমাদের ধর্মের উপর ভিত্তি করে চলে এবং আমাদের জনগণ এটিই চায়। তারা যদি ভিন্ন কিছু চায়, আমরা তাদের কথা শুনতে প্রস্তুত রয়েছি। আমরা সবসময় বলেছি যে আমাদের জনগণ যাতে তাদের দাবি প্রকাশ্যে জানায়। আমরা সবাই একই নৌকায় আছি, এবং তারা একই সাথে ক্যাপ্টেন ও ক্রু। আমাদের দরজা যেকোনো মতামতের জন্য খোলা এবং এটি আমাদের জনগণ ভালো করে জানে। এটা আমাদের গভীর বিশ্বাস যে আল্লাহ মানুষকে স্বাধীনভাবে সৃষ্টি করেছেন এবং স্বাধীনতা দিয়েছেন যে প্রত্যেক ব্যক্তি বেছে নেয়ার স্বাধীনতা ভোগ করবে। কেউ এমনভাবে আচরণ করতে পারে না যে তারা অন্যকে অধিকার করে। যারা নেতৃত্বে রয়েছে তারা প্রজাদের সাথে সহানুভূতি ও বোঝাপড়ার সাথে আচরণ করবে, কারণ আল্লাহ তাদের উপর এই দায়িত্ব দিয়েছেন, তিনি আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন যাতে আমরা সকল সৃষ্টির প্রতি মর্যাদাপূর্ণ আচরণ করি। পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে সৃষ্ট হওয়ার পর মানুষের কাছে আর কী কম থাকতে পারে? আমাদের সরকার পদ্ধতি মানুষের কাছ থেকে কর্তৃত্ব গ্রহণ করে না, এটি আমাদের ধর্মের দ্বারা আলোকিত এবং আল্লাহর গ্রন্থ কুরআনের ভিত্তিতে চলে। অন্যরা কী বলছে তা নিয়ে আমাদের ভাবার কী দরকার? এর (কুরআন) শিক্ষা চিরস্থায়ী এবং পূর্ণাংগ, অন্যদিকে মানুষের পদ্ধতি ক্ষণস্থায়ী এবং অপূর্ণাংগ।[১৭]
২০০৪ সালের ২ নভেম্বর জায়েদ ৮৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। আবুধাবির শেখ জায়েদ মসজিদের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
তার জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ১৯৯০ এর দশক থেকে সরকারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে শুরু করেন। জায়েদের মৃত্যুর পর তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের নতুন রাষ্ট্রপতি হন।
|তারিখ=
(সাহায্য)
জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান জন্ম: ১৯১৮ মৃত্যু: ২ নভেম্বর ২০০৪
| ||
রাজত্বকাল শিরোনাম | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী শাখবুত বিন সুলতান আল নাহিয়ান |
আবুধাবির শাসক ৬ আগস্ট ১৯৬৬ - ২ নভেম্বর ২০০৪ |
উত্তরসূরী খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান |
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
পূর্বসূরী নতুন দপ্তর |
সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রপতি ২ ডিসেম্বর ১৯৭১ - ২ নভেম্বর ২০০৪ |
উত্তরসূরী খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান |