জাহানারা শাহনেওয়াজ | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১৯৭৯ |
জাতীয়তা | পাকিস্তান |
পেশা | রাজনীতিবিদ |
পরিচিতির কারণ | পাকিস্তান আন্দোলন |
দাম্পত্য সঙ্গী | মিয়াঁ শাহ নেওয়াজ |
পিতা-মাতা |
|
বেগম জাহানারা শাহনেওয়াজ (৭ এপ্রিল ১৮৯৬–১৯৭৯) নিখিল ভারত মুসলিম লীগের একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন।[১][২] তিনি মুহাম্মদ সাফি এর কন্যা।[৩] তাঁর স্বামী ছিলেন মিয়াঁ শাহ নেওয়াজ।[৩] তিনি লাহোরের কুইন মেরি কলেজে পড়াশুনা করেছেন।[৩]
বেগম শাহনেওয়াজের তিনটি সন্তান ছিল।
১৯১৮ সালে তিনি সফলতার সাথে সর্বভারতীয় মুসলিম মহিলা সম্মেলনে বহুবিবাহের বিরুদ্ধে বিল পাশের প্রস্তাব দেন।[৩] ১৯৩৫ সালে তিনি পাঞ্জাব প্রাদেশিক মহিলা মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা করেন।[৩] ১৯৩০ সালের রাউন্ড টেবিল কনফারেন্সে তিনি এবং রাধাভাই সুব্বারায়ণ মনোনীত মহিলা সংস্থার সক্রিয় সদস্য ছিলেন। কিন্তু তারা আইনসভায় মহিলাদের জন্য পাঁচ শতাংশ সিট সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ব্যর্থ হন।[৫] ১৯৩৭ সালে তিনি পাঞ্জাব বিধানসভায় নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং শিক্ষা, চিকিৎসা, ত্রাণ ও জনস্বাস্থ্যের সংসদীয় সচিব নিযুক্ত হন।[৩] ১৯৩৮ সালে তিনি মহিলা কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।[৩] ১৯৪২ সালে ভারত সরকার তাকে জাতীয় প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের সদস্য নিযুক্ত করেছিল, কিন্তু মুসলিম লীগ তাদের সদস্যদের প্রতিরক্ষা কাউন্সিল থেকে পদত্যাগ করতে বলেছিল এবং জাহানারা শাহনেওয়াজকে পদত্যাগ করতে বলেন।[৩] তিনি পদত্যাগ করতে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বলে তাকে মুসলিম লীগ থেকে বহিস্কার করা হয়।[৩] তবে ১৯৪৬ সালে তিনি আবারও মুসলিম লীগে যোগ দিয়েছিলেন এবং একই বছরে তিনি কেন্দ্রীয় গণপরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।[১][৩] একই বছর তিনি এম.এ. ইস্পাহানীর সাথে যুক্তরাষ্ট্রে যান মুসলিম লীগের দৃষ্টিভঙ্গি ও লক্ষ্যগুলো ব্যাখ্যা করার জন্য।[৩] পাঞ্জাবে ১৯৪৬ সালে নাগরিক অবাধ্যতা আন্দোলন সংঘটিত হয় এবং এ সময় অন্যান্য মুসলিম লীগ নেতাদের সাথে তাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ১৯৪৮ সালে তিনি লাহোরের রাস্তায় হাজার হাজার মহিলাদের নিয়ে বিক্ষোভ করেন এই কারণে যে নারীদের উন্নত অর্থনৈতিক সুযোগকে উৎসাহিত করে এমন একটি বিল সরকারী আদেশলিপি থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।[৬] প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৯৪৮ সালে শরীয়তে মুসলিম ব্যক্তিগত আইন পাস হয়েছিল। এই আইন বৈধভাবে কৃষিজমিসহ সকল প্রকার সম্পত্তিতে মহিলার অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে যা পাকিস্তানের ব্রিটিশ শাসনকালে স্বীকৃত ছিল না। তিনি সাত বছর অল ইন্ডিয়া মুসলিম মহিলা সম্মেলনের প্রাদেশিক শাখার সভাপতি ছিলেন এবং নিখিল ভারত মুসলিম মহিলা সম্মেলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছিলেন।[৩]
তিনি এশিয়ার প্রথম মহিলা যিনি আইনসভার অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেছিলেন।[৭] তিনি লাহোরের আঞ্জুমান-ই-হিমায়াত-ই-ইসলামের শিক্ষা এবং এতিমখানা কমিটির সাথে এবং বেশ কয়েকটি হাসপাতালের পাশাপাশি প্রসূতি ও শিশু কল্যাণ কমিটির সাথেও যুক্ত ছিলেন।[৩] তিনি রেড ক্রস সোসাইটি এর অল ইন্ডিয়ান জেনারেল কমিটির সদস্য ছিলেন।[৩] তিনি হাসন আরা বেগম নামে একটি উপন্যাস লিখেছিলেন এবং পিতা ও কন্যা: একটি রাজনৈতিক আত্মজীবনী শিরোনামে স্মৃতিচারণামূলক বই রচনা করেছেন।[৮][৯][১০]