জিম ক্যারল | |
---|---|
জন্ম | জেমস ডেনিস ক্যারল ১ আগস্ট ১৯৪৯ |
মৃত্যু | সেপ্টেম্বর ১১, ২০০৯ ম্যানহাটন, নিউ ইয়র্ক সিটি, নিউ ইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স ৬০)
মৃত্যুর কারণ | হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ |
পেশা | লেখক, কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, আত্মজীবনীকার |
কর্মজীবন | ১৯৬৭–২০০৯ |
পরিচিতির কারণ | দ্য বাস্কেটবল ডায়েরিজ |
জেমস ডেনিস "জিম" ক্যারল (ইংরেজি: James Dennis "Jim" Carroll) (জন্ম: আগস্ট ১, ১৯৪৯[১] – সেপ্টেম্বর ১১, ২০০৯) ছিলেন একজন মার্কিন লেখক, কবি, আত্মজীবনীকার ও পাঙ্ক সঙ্গীতজ্ঞ। ক্যারল তার ১৯৭৮ সালের আত্মজীবনীমূলক দ্য বাস্কেটবল ডায়েরিজ-এর জন্য সর্বাধিক পরিচিত। এই আত্মজীবনী থেকে একই নামের চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। ছবিটিতে ক্যারলের ভূমিকায় অভিনয় করেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও।
ক্যারল ১৯৪৯ সালের ১ আগস্ট আইরিশ বংশোদ্ভূত এক শ্রমিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব কাটে নিউ ইয়র্ক সিটির লোয়ার ইস্ট সাইডে। যখন তার বয়স ১১ তখন তার পরিবার আপান ম্যানহাটনের ইনউডে চলে যায়। সেখানে তিনি গুড শেপার্ড স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৬৩ সালে তিনি সরকারী স্কুলে ভর্তি হন, কিন্তু কয়েকদিন পরে বৃত্তি পেয়ে ট্রিনিটি স্কুলে ভর্তি হন। সেখানে তিনি ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত পড়াশুনা করেন।[২]
পরে তিনি অল্পদিনের জন্য ওয়াগনার কলেজ ও কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করেন।[৩] এসময়ে তিনি রাইনার মারিয়া রিলকে, ফ্রাঙ্ক ও'হারা, জন আসরেবি, জেমস স্কুইলার,[৪] অ্যালেন গিনসবারর্গ, ও উইলিয়াম এস. বারফস কর্তৃক তার শিল্পী জীবনে অনুপ্রাণিত হন।[৫]
মাধ্যমিকে পড়াকালীনই ক্যারলের প্রথম কবিতার সংকলন অরগানিক ট্রেইনস প্রকাশিত হয়। স্থানীয় সহিত্যিকদের দৃষ্টিগোচর হওয়ার পরে তার কবিতা ১৯৬৭ সালে দ্য ওয়ার্ল্ড ম্যাগাজিনে প্রকাশ হতে থাকে। এক বছর পরে ১৯৬৮ সালে তার কবিতা প্যারিস রিভিউ,[২] ও পোয়েট্রির মত সাহিত্য ম্যাগাজিনে প্রকাশ হয়। ১৯৭০ সালের তার দ্বিতীয় কবিতার সংকলন ৪ আপস অ্যান্ড ১ ডাউন প্রকাশিত হয়। তিনি অ্যান্ডি ওয়ারল-এর সাথে কাজ শুরু করেন। প্রথমে তিনি চলচ্চিত্রের সংলাপ লিখতেন এবং চরিত্রের নাম ঠিক করে দিতেন। পরবর্তীতে তিনি ওয়ারলের থিয়েটারের সহ-ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন। মূলধারার প্রকাশনী থেকে ক্যারলের প্রথম প্রকাশিত বই হল লিভিং অ্যাট দ্য মুভিজ নামে কবিতার সংকলন, যা ১৯৭৩ সালে প্রকাশ করে গ্রসম্যান পাবলিশার্স।[৬]
১৯৭৮ সালে ক্যারল তার কৈশোর জীবনের নিউ ইয়র্ক সিটির মাদক সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে তার আত্মজীবনীমূলক বই দ্য বাস্কেটবল ডায়েরিজ প্রকাশ করে। এটি তার ১২ বছর থেকে ১৬ বছরের ডায়েরির সংকলন। এতে তার যৌন অভিজ্ঞতা, হাই স্কুল বাস্কেটবল জীবন, ও তার ১৩ বছর বয়স থেকে হিরোইনে আসক্তি সম্পর্কে বর্ণনা রয়েছে।
১৯৮৭ সালের ক্যারল তার দ্বিতীয় স্মৃতিকথা ফোর্সড এন্ট্রিস: দ্য ডাউনটাউন ডায়েরিজ ১৯৭১–১৯৭৩ লিখেন, যেখানে তিনি তার বয়োপ্রাপ্ত জীবনে নিউ ইয়র্ক সিটিতে সঙ্গীতে অংশগ্রহণ ও মাদকাসক্তি দূর করার সংগ্রামের কথা বর্ণনা করেন।
১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝিতে সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবে কিছুদিন কর্মজীবন পার করার পর তিনি লেখালেখিতে পূর্ণ মনোনিবেশ করেন এবং বিভিন্ন সাহিত্য সভায় যোগ দিতে থাকেন। ১৯৯১ সাল থেকে ক্যারল তার প্রথম উপন্যাস দ্য পেটিং জুর কাজে হাত দেন।[৭]
১৯৯৫ সালে কানাডীয় চলচ্চিত্রকার জন ল'একুয়ার ক্যারলের ১৯৯৩ সালে প্রকাশিত ছোটগল্প ফিয়ার অফ ড্রিমিং অবলম্ববনে কার্টিসস্ চার্ম চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন[৮]
১৯৭৮ সালে তিনি মাদকাসক্তি ত্যাগ করে ক্যালিফোর্নিয়ায় চলে যান, এবং দ্য জিম ক্যারল ব্যান্ড গঠন করেন। এই ব্যান্ড গঠনের পিছনের তার অনুপ্রেরণা ছিলেন পাত্তি স্মিথ। ক্যারল, পাত্তি স্মিথ ও রবার্ট ম্যাপলথর্প একসময় নিউ ইয়র্ক সিটিতে একই অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন।[৯] ক্যারল পাত্তি স্মিথ দলের সাথে সান দিয়েগোতে গানের মাঝে ভাষ্যে কণ্ঠ দেন। ক্যালিফোর্নিয়ার বলিনাসভিত্তিক স্মিথের ব্যান্ডের নাম ছিল অ্যামস্টারডাম। এই ব্যান্ডের সদস্যরা ছিলেন বেইজে স্টিভ লিনস্লে, ড্রামে ওয়েন উডস, গিটারে ব্রায়ান লিনস্লে ও টেরেল উইন। তারা তাদের ১৯৮০ সালের ক্যাথলিক বয় অ্যালবাম থেকে পিপল হু ডায়েড নামে একটি একক গান প্রকাশ করে। এই অ্যালবামে অ্যালেন ল্যানিয়ার ও ববি কিজের অবদান ছিল। ১৯৮২ সালে গানটি ই.টি. দ্য এক্সটা-টেরেস্ট্রিয়াল ছবিতে ব্যবহৃত হয়, যার জন্য ক্যারল ২০০৯ সালে তার মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত রয়্যালিটি পান। এছাড়া গানটি ১৯৮৫ সালের কিম রিচার্ডস পরিচালিত জেমস স্পেডার ও রবার্ট ডাউনি জুনিয়র অভিনীত টাফ টাফ ছবিতে ব্যবহৃত হয়, যেখানে ব্যান্ডটিকে ক্যামিও হিসেবে দেখা যায়; এবং ২০০৪ সালের ডন অফ দ্য ডেড, ও ২০১৫ সালে মিঃ রোবট প্রথম সিজনের দশম পর্বে ব্যবহৃত হয়। ১৯৯৫ সালে তার আত্মজীবনীমূলক চলচ্চিত্র দ্য বাস্কেটবল ডায়েরিজ গানটি ব্যবহৃত হয়। এবং জন কেইল তার আন্তারতিডা অ্যালবামে গানটি কভার করেন। গানের শিরোনামটি টেড বেরিগান রচিত কবিতা থেকে নেওয়া হয়।[১০] তার অন্যান্য অ্যালবামগুলো হল ড্রাই ড্রিমস (১৯৮২), ও আই রাইট ইউর নেইম (১৯৮৩), দুই অ্যালবামেই লেনি কে ও পল সানচেজের অবাদান ছিল। ক্যারল লু রীড, ব্লু অয়েস্টার কাল্ট, দ্য ডোর্স-এর বজ স্কাগস, পার্ল জ্যাম, ইলেক্ট্রিক লাইট অর্কেস্ট্রা ও র্যানসিডের সাথে গান করেন।
ক্যারল ৬০ বছর বয়সে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার ম্যানহাটনের বাসায় ২০০৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।[১] বলা হয় তিনি তার টেবিলে বসে কাজ করছিলেন। তার শেষকৃত্য গ্রিনউইচ ভিলেজ-এর কারমিন সেইন্টের আওয়ার লেডি অফ পম্পেই রোমান ক্যাথলিক চার্চে অনুষ্ঠিত হয়।[১১]
কবিতা
আত্মজীবনী
উপন্যাস