জুয়ান জার্মান রসিও | |
---|---|
ভেনেজুয়েলার ১ম পররাষ্ট্রমন্ত্রী | |
কাজের মেয়াদ ২৫ এপ্রিল, ১৮১০ – ২ মার্চ, ১৮১১ | |
রাষ্ট্রপতি | ক্রিস্টোবাল মেন্দোজা |
উত্তরসূরী | পেদ্রো গুয়াল |
গ্রান কলম্বিয়া উপ-রাষ্ট্রপতি | |
কাজের মেয়াদ ২১ মার্চ, ১৮২০ – ১০ মার্চ, ১৮২১ | |
রাষ্ট্রপতি | সিমন বলিভার |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | সান জোস দ্য তিজনাদোস, ভেনেজুয়েলা প্রদেশ | ২৭ মে ১৭৬৩
মৃত্যু | ১০ মার্চ ১৮২১ কুকুতা, গ্রান কলম্বিয়া | (বয়স ৫৭)
জীবিকা | আইনজীবী, সাংবাদিক, লেখক ও রাজনীতিবিদ |
ধর্ম | রোমান ক্যাথলিক |
স্বাক্ষর |
জুয়ান জার্মান রসিও (স্পেনীয়: Juan Germán Roscio; জন্ম: ২৭ মে, ১৭৬৩ - মৃত্যু: ১০ মার্চ, ১৮২১) ভেনেজুয়েলা প্রদেশের গুয়ারিকো রাজ্যের স্যান ফ্রান্সিসকো দ্য তিজনাদোস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিশিষ্ট ভেনেজুয়েলীয় আইনজীবী ছিলেন। পাশাপাশি তিনি সাংবাদিক ও লেখক ছিলেন। এছাড়াও ইতালীয় বংশোদ্ভূত ভেনেজুয়েলীয় রাজনীতিবিদ ছিলেন।
রসিও ইতালির মিলানে অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গিওভান্নি রসিও এবং লা ভিক্টোরিয়ার মিশ্র স্থানীয় অধিবাসী পলা মারিয়া নাইভেস দম্পতির সন্তান।[১] জার্মান তার শৈশবকাল স্যান ফ্রান্সিসকো দে তারনিশেডে পিতার মালিকানাধীন কৃষি জমিতে অতিবাহিত করেন। তিনি শুরুর দিককার ইতালীয় ভাষা ও লাতিন ভাষা পিতার কাছ থেকে শিখেন। এরফলে তিনি খুবই সংস্কৃতিবান ও শিক্ষিত ছাত্র হিসেবে পরিচিতি পান। ১৭৭৪ সালে কারাকাস ভ্রমণ করেন। সেখানে স্যান জাভিয়ের কাউন্টের কন্যার কঠোর তত্ত্বাবধানে পড়াশোনা শিখতে শুরু করেন। এ সময়ে তিনি ধর্মতত্ত্ব, ভক্তিমূলক শিক্ষা এবং বেসামরিক আইন বিষয়ে অধ্যয়ন করেন। ১৭৯৪ সালে ডক্টর অব ক্যানন ল এবং ১৯৮০ সালে ডক্টর অব সিভিল ল লাভ করেন।
১৭৯৬ সাল থেকে কারাকাস রিয়্যাল হিয়ারিংয়ে আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধনভূক্ত করার আবেদন বিচারবিভাগীয় জেলায় অনুমোদন পেলেও বারে তাকে অন্তর্ভুক্ত করতে বাঁধার প্রাচীর গড়ে তোলে। সেখানে রসিও'র মা ও তার মাতৃপক্ষীয় দাদীমার বহমান রক্তধারায় ইন্ডিয়ান হিসেবে গণ্য করা হয়নি। ঐ পরিস্থিতিতে রসিও অভিযোগের বিপক্ষে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন যাতে তিনি তার আইনি-আদর্শগত প্রশিক্ষণ ও চিন্তার দার্শনিক স্থিতিবিন্যাস ছিল। এ প্রক্রিয়াটি ১৮০৫ সাল পর্যন্ত চলতে থাকে। অতঃপর বারে তার প্রবেশাধিকার উন্মুক্ত হয়। এ প্রক্রিয়াটি 'জাজমেন্ট আইনেস মারিয়া পেজ' নামে পরিচিতি পায়। এরফলে রসিও নাগরিক অধিকার রক্ষা ও আমেরিকায় বৈষম্যের বিপক্ষে লড়াইয়ের অগ্রদূত হিসেবে পরিগণিত হন।
দ্য গ্যাজেটা দ্য কারাকাস দৈনিকের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। করিও দেল অরিনোকো'র পরিচালক রসিও ভেনিজুয়েলা প্রথম প্রজাতন্ত্রের প্রথম চ্যান্সেলর ও প্রধান নির্বাহী পদে নিযুক্ত ছিলেন। কারাকাসের তৎকালীন সামরিক জান্তা সরকারের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক সচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।[২] ১৯ এপ্রিল, ১৮১০ তারিখে ভেনেজুয়েলার স্বাধীনতার ঘোষণা আইনের প্রধান সম্পাদকীয় ভূমিকা রাখেন। ৫ জুলাই, ১৮১১ তারিখে ভেনেজুয়েলার স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের প্রধান সম্পাদকীয় ভূমিকা রাখেন।[৩] এছাড়াও, প্রথম কংগ্রেস নির্বাচনে ধারা প্রণয়নসহ ১৮১১ সালে ভেনেজুয়েলার সংবিধান প্রণয়নে প্রধান রূপকার ছিলেন তিনি। প্রথম সংবিধানে ১৮১৯ সালে আঙ্গোস্তুরা কংগ্রেসে সভাপতিত্ব করেন তিনি। এছাড়াও গ্রান কলম্বিয়ার উপ-রাষ্ট্রপতি ছিলেন।[৪]
রসিও জামাইকা হয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেন। ১৮১৭ সালে ফিলাডেলফিয়ায় 'ট্রাম্ফ অব ফ্রিডম ওভার ডেসপটিজম' শীর্ষক গ্রন্থ প্রকাশ করেন। ১৮১৮ সালে আঙ্গোস্তুরায় অবস্থান করে সিমন বলিভারের ভেনিজুয়েলার পুণঃসংবিধান প্রণয়নে সহায়তা করেন ও গ্রান কলম্বিয়া তৈরিতে প্রভূতঃ ভূমিকা রাখেন। এ সময়ে তিনি রাজস্ব মহাপরিচালক, আঙ্গোস্তুরা কংগ্রেসের সভাপতি, ভেনিজুয়েলার উপ-রাষ্ট্রপতি এবং গ্রান কলম্বিয়ার উপ-রাষ্ট্রপতি পদে অভিষিক্ত ছিলেন। কুকুতা কংগ্রেস আয়োজনের প্রাক্কালে মৃত্যুমুখে পতিত হন তিনি যাতে তার সভাপতি হবার কথা ছিল। বলিভার নামে কাগুজে মুদ্রা প্রণয়নের প্রস্তাবক ছিলেন রসিও।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত ছিলেন। গায়ানীয় দেশপ্রেমিক মারিয়া ডোলোরেস কুভাসের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন তিনি। তাদের সংসারে কারম্যান রসিও কুভাস নাম্নী এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ১০ মার্চ, ১৮২১ তারিখে গ্রেট কলম্বিয়ার উপ-রাষ্ট্রপতি থাকাকালে কুকুতায় গুয়ারিকোনো প্রোসরে দেহাবসানের দিন কারম্যান পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন।
১০ মার্চ, ১৮২১ তারিখে কলম্বিয়ার কুকুতায় তার দেহাবসান ঘটে। ২০১৩ সালে তার জন্মের ২৫০ বছর পর এক বাস্তো শেখানো হচ্ছে।[৫] তার সমাহিত ক্ষেত্র চিহ্নিতকরণে সমস্যা হওয়ায় কারাকাস প্যানথীয়ন থেকে তার দেহাবশেষ স্থানান্তর প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে।