জুয়ান লুইস ভিভেস | |
---|---|
![]() বাইবলিওটেকা ন্যাশনাল দ্য এসপানার সামনে অবস্থিত ca নির্মিত জুয়ান লুইস ভিভেসের মূর্তি (১৮৯২) | |
জন্ম | |
মৃত্যু | ৬ মে ১৫৪০ | (বয়স ৪৭)
যুগ | পুনর্জাগরণ দর্শন |
অঞ্চল | পশ্চিমা দর্শন |
ধারা | পুনর্জাগরণ মানবতা |
প্রধান আগ্রহ | মনস্তত্ত্ব, শিক্ষা |
উল্লেখযোগ্য অবদান | মনবিদ্যা |
স্বাক্ষর | |
![]() |
জুয়ান লুইস ভিভেস (ইংরেজি: Juan Luis Vives) (লাতিন: লোনিস লোডোভিসাস ভিভেস), এছাড়াও জুয়ান লুইস ভিভেস ই মার্চ (ভ্যালেন্সিয়া উচ্চারণ: [ʒuˈaɲ ʎuˈiz ˈvivez i ˈmaɾk]) বা জ্যান লোডোভিসাস ভিভেস(ওলন্দাজ উচ্চারণ: [jɑn lydoːvikys vivɛs]) (৬ই মার্চ, ১৪৯৩[১] – ৬ই মে, ১৫৪০), ছিলেন একজন ভ্যালেন্সিয়ান বিজ্ঞ ব্যক্তি এবং মানবতাবাদী যিনি তার সম্পূর্ণ প্রাপ্তবয়স্ক জীবন দক্ষিণ নেদারল্যান্ডে কাটান। তার আত্মিক প্রত্যয়, প্রথম দিককার ঔষধের জ্ঞান এবং আবেগের ওপর দৃষ্টিভঙ্গি, স্মৃতিশক্তি এবং শিক্ষা তাকে আধুনিক মনস্তত্ত্ববিদ্যার জনক উপাধীতে ভূষিত করেছে। [২]. ভিভেস সর্বপ্রথম মনস্তত্ত্বের কিছু মৌলিক বিষয়ের ওপর আলোকপাত করেন যা বর্তমান মনস্তত্ত্বের ভিত্ রচনা করে।
ভিভেস ভ্যালেন্সিয়ায় একটি ইসরাইলি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন যারা পরবর্তীতে খ্রিস্টান হয়ে যায়।[৩] শৈশবে তিনি তার পিতা, দাদি এবং গ্রেট পিতামহকে এবং পরিবারের অন্যান্যদেরও দেখেন কারণ তাদের ছিল স্প্যানিশ নিয়ম মোতাবেক যৌথ পরিবার। তার মা প্লেগে মারা যান। তখন তার বয়স পনের। এর অল্পকাল পরেই তিনি স্পেন ত্যাগ করেন এবং আর কখনই ফিরে আসেননি।
স্পেনে থাকাকালীন তিনি ভ্যালেন্সিয়া একাডেমীতে যুক্ত হন। সেখানে জেরোমে আমিগুয়েতাস এবং ড্যানিয়েল সিসো তাকে শেখায়। বিদ্যালয়টি ন্যায় এবং বাদানুবাদ শিক্ষা সরবরাহের মধ্যে একটি কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করত, এবং সেটি দার্শনিক দ্বারা প্রভাবিত ছিল.
এমনকি কনিষ্ঠতম স্কলাররাও কখনও নীরবতা পালন করত না; তাঁরা সর্বদা বিবাদে জড়িয়ে থাকত, তাদের মনে যা আসে তারা তাই সবলে করত। পাছে তারা তাদের দাবি থেকে সরে আসে। শুধু দুই-একজন না, সবাই ঝগড়া করত। তাঁর ব্রেকফাস্টে ঝগড়া করত, রাতে খাবারের আগে এবং পরেও ঝগড়া করত। বাড়িতে থাকাকালীন তারা ঝগড়া করত, বাইরেও করত। তারা তাদের খাবার সময় বিবাদ করত, স্নানের সময়, অবসরের সময়, গীর্জায়, শহরে, দেশে, সাধারণের মধ্যে, প্রাইভেটে সবসময়ই তারা শুধু ঝগড়াই করত।[৪]
তিনি ১৫০৯ থেকে ১৫১২ সালের মধ্যে প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং পরবর্তীতে লিউভেন ওল্ড বিশ্ববিদ্যালয়-এর মানবিকে শিক্ষক হন। তার বন্ধু এরামুস জোর করে তাকে হিপোর অগাস্টিন নামক একটি বিশদ ভাষ্য প্রস্তুত করেন। ১৫২২ সালে ইংল্যান্ডের অষ্টম হেনরিকে উৎসর্গকৃত হয় বইটি। এর কিছুকালের মধ্যেই তাকে ইংল্যান্ডে ডাকা হয়। সেখানে তিনি রাজকন্যা ম্যারির শিক্ষক হন যার জন্য তিনি দ্য র্যাশন স্টুডি পুয়েরিলস এপিস্টোলে ডুয়্যে (১৫২৩) এবং এরপর তিনি নারীবিদ্যার জন্য দ্য ইনস্টিউশন ফেমিনা ক্রিশ্চিয়ানা (ইংরেজ রাণী আরাগোনের ক্যাথারিনকে উৎসর্গকৃত বই) লেখেন।[৫]
ইংল্যান্ডে থাকাকালীন তিনি কর্পাস ক্রিস্টি কলেজ, অক্সফোর্ড-এ অবস্থান করেন। সেখানে তিনি আইনের উপরন উচ্চত্র ডিগ্রী লাভ করেন এবং দর্শন বিষয়ে অনেক বক্তৃতা দেন। অষ্টম হেনরি ও আরাগনের ক্যাথারিন এর বিয়ে রদের বিরুদ্ধে তিনি অবস্থান নেন এবং ছয় সপ্তাহ নিজের বাড়িতে আটক থাকেন। মুক্তি পাবার পর তিনি ব্রাজেস-এ ফিরে যান এবং সেখানে আমৃত্যু তিনি নিজেকে নানা কাজে ব্যস্ত রাখেন, প্রধানত স্কলাস্টিক দর্শনের এবং এরিস্টটল এর অধিকতর প্রভাবসম্পন্ন প্রশ্নহীন কর্তৃপক্ষের বিজ্ঞ দর্শন-এর বিরুদ্ধে পরিচালনা করেন। তার আরবীয় চিকিৎসা চুক্তির মধ্যে দ্য কাউসিস করাপ্টারাম আর্টিয়াম সবচে' গুরুত্বপূর্ণ যা বেকন কর্তৃক অরগানন' র্যাঙ্ক পায়।[৬]
তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাবিজ্ঞান বিষয়ক কাজগুলো হলঃ ইনট্রোডাক্টিও এড স্যাপিয়েন্টিয়াম (১৫২৪), দ্য ডিসিপ্লিন্স্ যা আরো প্রয়োজনীয় এবং উল্লেখ্য এবং এক্সারসিটাটিও লিঙ্গুয়ে লাতিনা (কিছু বুদ্ধিমান কথাসম্বলিত একটি লাতিন পাঠ্যবই)। তার দার্শনিক কাজের মধ্যে দ্য এনিমা এত ভিতা (১৫৩৮), দ্য ভারিটেট ফিদেই ক্রিশ্চিয়ানে এবং দ্য সাবভেনশন পাউপেরাম সিভে দ্য হিউম্যানিস নেসেটাটিবাস (দরিদ্রকে সহায়তা) (১৫২৬), পাশ্চাত্য দেশে শহুরে দারিদ্র্যের সমস্যা, তাদের আচরণ ও সামাজিক আইন সংবলিত একটি নীতি জন্য কংক্রিট পরামর্শ উত্থাপন জনিত একটি গল্প। ভিভেস দার্শনিক বিশ্লেষণ থেকে বুঝতে পারেন যে এরিস্টিসে লেখা নামক যে লেখক সেপ্টুয়াগিন্টর এর অনুবাদ করছেন তিনি একজন গ্রীক নন কিন্তু ইহুদি হতে পারেন।
তিনি ১৫৪০ সালে ব্রাজেসে মাত্র ৪৭ বছর বয়সে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।[৬] পরবর্তীতে তাকে সেন্ট ডোনাটিয়ানের ক্যাথেড্রাল-এ দাফন করা হয়।
ভিভেস কল্পনা করে শিক্ষার ব্যাপক তত্ত্ব বর্ণনা করেন। তিনি সরাসরি মিশেল ইউকুইম দ্য মন্টেইন এর রচনাগুলি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকতে পারেন।[৭] থমাস মোর এবং ইরাসমাস তার প্রশংসা করে বলেন, "তিনি ইরাসমাসের নাম ছায়াচ্ছন্ন করবে।"[৮]
ভিভেসকে প্রথম বিজ্ঞ ব্যক্তি হিসেবে সম্মান দেয়া হয় যিনি মনস্তত্ত্বকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন।[৯] তিনি বিভিন্ন মানুষের সাথে ব্যাপক সাক্ষাৎকার নেন এবং তাদের বিভিন্ন কথায় তাদের মনোভাব কিংবা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তারা কীভাবে কথা বলে বা আলোচনা করে তা লক্ষ্য করেন। এটা জানা যায়না যে ফ্রেড ভিভেসের কাজের সাথে পরিচিত ছিলেন কিনা, তবে মনোরোগ ইতিহাসবেত্তা গ্রেগরি জিলবর্গ ভিভেসকে মনোবিশ্লেষণ এর গডফাদার হিসেবে স্বীকৃতি দেন। (মেডিকেল মনস্তত্ত্বের ইতিহাস, ১৯৪১) এবং ফোস্টার ওয়াটসন তাকে আধুনিক মনস্তত্ত্বের জনক বলেন (১৯১৫)।
ভিভেস রাজাদের শিখাতেন। তার একটি বৈচিত্র্যময় এবং জমাটবদ্ধ শিশুদের শিক্ষা সম্পর্কে তার ধারণা দীর্ঘকাল পূর্বে জাঁ জ্যাক রোউসেঁ দ্বারা, এবং পরোক্ষভাবে রোউদে মনটেইন কর্তৃক প্রভাবিত হতে পারে। ভিভেস শাস্ত্রীয় অলংকারশাস্ত্রকে পরিবর্তন করে তার নিজের ন্যায় প্রায় কুমারীত্ব অর্ধ নারীবাদ-যা অজানা এক ঐতিহাসিক আগ্রহের অবশেষ।[১০] ষষ্ঠদশ শতকে স্পেনের বিভিন্ন "মহিলাদের জন্য এবং বিরুদ্ধে আরবীয় চিকিৎসা চুক্তি" শুরু হয়, "ভিভেস একটি মধ্যম পথ" (p. xxiv-xxv) অবলম্বন করেন যা নারীবিদ্বেষী কিংবা পাবক নয়।[১১]
তবে ষষ্ঠদশ শতকের দিকে তিনি অনুপ্রাণিত হতে পারেন, কিন্তু ভিভেস বিশেষায়িত একাডেমিক ক্ষেত্রের বাইরে ন্যূনতম গুরুত্ব দেয়। ভিভেসের এই নীতি দুই বেলজিয়ান বিদ্যালয়কে (কাথো এবং ক্যাথোলিয়েকে হগস্কুল ব্রাজ-ওস্টেন্ডে) সেপ্টেম্বর, ২০১৩ থেকে উচ্চতর শিক্ষার জন্য ভিভেস নামটি সহযোগীতা/সংযোজনের জন্য আগ্রহী করে তোলে। তবে ভিভেসের সাথে পশ্চিম ফ্লান্ডারার আঞ্চলিক সম্বন্ধ এক্ষেত্রে একটি বিশেষ অবদান রেখেছে।
ভিভেস আত্মার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বিশ্বাস করতেন আত্মার কার্যকারিতার চেয়ে আত্মার নিজকে বোঝাটা বেশি মূল্যবান। "তিনি আত্মার কিসের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল তার দিকে বেশি মনোযোগ দেননি, বরং আত্মা কিসের মত ছিল তার দিকে মনোযোগ দেন" -নোরেনা তার আত্মা সম্পর্কে ভাবনার প্রসঙ্গ সম্পর্কে বলেন।[১২] তিনি বিশ্বাস করতেন যে আত্মার শ্রেষ্ঠ দিকটি হল "..., বোঝা, কারণ, মনে রাখা, এবং বিচার করা। ভিভেস আত্মা সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তাঁর মনকে স্পর্শ করতেন--তিনি বলতেন যে একজন সহজেই আত্মার সংজ্ঞা দিতে পারবে না, কিন্তু এগুলোকে একত্রে জুড়ে দিয়ে আত্মা কীভাবে কাজ করে তার একটা ভাল ধারণা পাওয়া যাবে।[১২] ভিভেস মানব চরিত্রের নিয়তিবাদকে প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন যে আমাদের আত্মাই আমাদের ব্যবহারকে নীতিগত ভাবে এবং সামাজিকভাবে ঠিক করে।[১৩] তিনি আরো প্রস্তাব করেন যে যেভাবে আমরা দিন-দিন প্রভাবিত হই, ঠিক সেইভাবে আমাদের আত্মা ভাল বা মন্দ কাজ অর্জন করে।[১৪]
ভিভেস মনোবিজ্ঞান এবং ঔষধ একীভূত করার জন্য স্বীকৃত হয়। "তাঁর চিন্তাগুলো নতুনের মত ছিল এবং সেগুলো অন্যান্যদের অবদান রাখার পথ তৈরি করে দেয় এবং এর ফলেই আজকাল আমাদের সমাজ ঔষধ কীভাবে মানুষের ওপর কাজ করে সে ব্যাপারে বিরাটভাবে প্রভাবিত হচ্ছি।"[১৫] তিনি মানুষের ওপর পরীক্সার আগে প্রাণির উপর পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। "যদিও ভিভেস সত্যিকার অর্থে মেডিকেল পদ্ধতিতে কাজ করত না, কিন্তু তাঁর প্রস্তাবগুলো সাধারণের ওপর প্রভাব ফেলে।"[১৫] ভিভেসের এই আশা ছিল যে তার চিন্তাগুলো মানুষের ওপর প্রভাব ফেলবে। "সময়ের সাথে কেউ হয়ত তর্ক করবে যে এ ধরনের সামাজিক পুনর্গঠন মূলত ভিভেসের জন্যই হয়েছে।[১৫] ক্লিমেন্ট ভিভেসের অবদানকে "সত্যিকার" বলেন যদিও অনেকে তাকে প্রশংসা ও চিন্তার ব্যাপারে কম গুরুত্ব দিত।[১৫] ভিভসে মানবস্বাস্থ্যের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি বলেন, "পরিচ্ছন্নতা ও মিতাচার এর ব্যক্তিগত অভ্যাস ব্যাপকভাবে স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে।"[১৬] তিনি দাবি করেন যে দেহের পরিচ্ছন্নতা মানুষের মন এবং দেহের ওপরও প্রভাব ফেলে।[১৭] তিনি কীভাবে একজন মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিকে সুস্থ করানো হয় তা নিয়ে বলেন বিদ্রূপকারী উত্তেজনাপূর্ণ ব্যক্তিরা মানসিকভাবে অসুস্থ এবং তাদের চিকিৎসা সম্পর্কে তিনি অবদান রাখেন না।[১৬] এই দাবি সেই সময়ের দিক দিয়ে অত্যন্ত আধুনিক ছিল। ভিভেস বলেন, "মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিদের বিনোদনের খোরাক বানানো আমাদের দেখা সবচেয়ে অমানবিক পন্থা।"[১৬] তার বিশ্বাস ছিল যে কিছু ব্যক্তি যারা মানসিকভাবে অসুস্থ, তাদের চিকিৎসা হওয়া উচিত এবং অন্যদের বন্ধুত্বপূর্ণ চিকিৎসা প্রয়োজন।[১৮]
ভিভেসের আরেকধরনের মানসিক ক্ষেত্রে অবদান হল আবেগের উপর তার চিন্তা। তার চিন্তাগুলো গ্যালেন এবং হিপোক্র্যাটদের মত বিশিষ্ট চিন্তাবিদদের চিন্তা থেকে অনুপ্রাণিত হতে পারে যে কীভাবে আবেগ শরীরের সাথে যুক্ত।[১৫] তিনি ঐ দুইজনের সাথে একমত হন এই বিশ্বাসে যে "বিভিন্ন আবেগ মানুষ বিভিন্ন রঙিন বাইলসের মাধ্যমে প্রতিফলিত করে।[১৯] এরপর, ভিভেস বিশ্বাস করতেন যে "মানুষের দেহের মধ্যে রঙিন বাইল এবং রঙিন দেহ আবেগের উপর প্রভাব খাটায়।"[২০] নরেনার মতানুযায়ী, ভিভেস গ্যালেনের পরামর্শ মেনেই বিশ্বাস করতেন যে বিভিন্ন রকম খাবার বিভিন্ন মেজাজের ওপর কাজ করে।[১৭] ভিভেস আরো বলেন যে আমাদের প্রায় সব রকমের আবেগ, এমনকি যা খারাপ হিসেবে বিবেচিত হয়, তাও আসলে নানা প্রকারেই উপকারী।[১৪] তিনি প্রকাশ করেন কীভাবে শিখার ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা কাজ করেন এবং ভাল ও খারাপ আবেগ বের হয়ে আসে। তিনি প্রাণিত্ব বা প্রাণিজ আত্মার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এই ঘটনা ক্লিমেন্টের মত ডিকার্টিসকে অনুপ্রাণিত করে।[২০] ভিভেস তার কাজে প্রস্তাব করেন যে মানুষ যে আদর্শে তার মত গ্রহণ করেন, সেই মত তারা যে উপায়ে অনুভব করে তার উপর প্রভাব ফেলে। "মানসিক শক্তি শারীরিক শক্তিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।[১৬] ভিভেসের মতে, আবেগকে "গরম, ঠান্ডা, আর্দ্র শুষ্ক, এবং এই চাররকমের সমন্বয়ে ভাগ করা যায়।"[১৮] ব্যক্তিত্বে আবেগ ব্যাঘাত ঘটায় যা শরীরে সঠিক তাপমাত্রা দিয়ে সংশোধন করা যেতে পারে।[১৯]
ভিভেস স্মৃতির উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি স্মৃতিকে "অতীতের সাথে সম্পর্কিত, তবে অনুমান বর্তমানের সাথে সম্পর্কিত"-এভাবেই সংজ্ঞায়িত করেন।[২১] “স্মৃতি হল বাইরের মাধ্যমে বা ভেতর দ্বারা অপরিবর্তিত রাখা হয় এমন কিছু বোঝার বিষয়।”[২২] তিনি বিশেষত স্মৃতিরক্ষার্থে মানুষ কীভাবে ভিতর থেকে কোন কিছু অনুমান করে এবং কোন ঘটনার সাথে একে সম্পর্কিত রাখে-এর উপর গুরুত্ব দেন। ভিভেসের মতে এই তথ্য আহরণ স্মৃতিরক্ষাকে সহজ করে দেয়।[২৩] তিনি মনস্পর্শ করেন যার সম্পর্কে আমরা অচেতন। অন্য কথায় বলা যায় আমরা অসচেতন।[২৩] তিনি তথ্যকে "স্মৃতিতে সর্বাধিক প্রবেশযোগ্য" বলে অভিহিত করেন। যখন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সচেতনতা কোন কিছুর উপর আবদ্ধ হয়, তখনই সেই তথ্যটা গৃহীত হয়। মুরের মতানুযায়ী ভিভেস আধুনিক যুগের ধারণায় দেখিয়েছেন কীভাবে মানুষের তথ্য আহরণ প্রক্রিয়াটি ঘটে।[২৩] ভিভেস দেখেন যে স্মৃতি আবেগময় অভিজ্ঞতার সাথে জোরালভাবে সংযুক্ত এবং সহজেই একে মনে করা যায়। স্মৃতি বোঝার জন্য কল্পনা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে, বিশেষত শিশুদের জন্য।[১৭] তিনি এই নীতিতেও বিশ্বাসী ছিলেন যা এই তথ্যের দিকে নির্দেশ করেঃ- স্মৃতিকে অনুশীলন দ্বারা উন্নত করা যায়। তিনি উপদেশ দিতেন, "প্রত্যেকের প্রতিদিনই কিছু না কিছু মনে রাখা উচিত, তা এক গুরুত্বহীন বাণীই হোক।"[২৪] ভিভেস শিশুদের স্মৃতিকেও স্পর্শ করেন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে শিশুরা সবকিছু দ্রুত শেখে কারণ তাদের মন দুশ্চিন্তা দ্বারা কম আচ্ছন্ন যেটা বড়দের মনে থাকে। তিনি আরো বিশ্বাস করতেন যে স্মৃতিকে ফিরিয়ে আনা হল একটি পদ্ধতি যেখানে আত্মা স্মৃতিকে প্রক্রিয়াজাত করে। ভিভেসের নিজেরই শৈশবের একটি অভিজ্ঞতার কথা মনে আছে যেখানে তিনি জ্বরাক্রান্ত অবস্থায় চেরি খাচ্ছিলেন। বড় হবার পর তিনি আবারও চেরি খান এবং তিনি যেন আবারও শৈশবের রোগাক্রান্ত অবস্থায় ফিরে যাচ্ছিলেন।"[২৫] তিনি একে উল্লেখযোগ্য মনে অরেন এবং নির্ধারণ করেন যে স্মৃতি অজান্তেই একটি দীর্ঘ সময়ের জন্য রয়ে যেতে পারে। তিনি আরো বিশ্বাস করতেন, "স্মৃতি প্রতিদিনই একটু একটু করে ক্ষয়ে যায় যদি তা অনুশীলন করা না হয়।"[২৬]
ভিভেস "বুদ্ধিমত্তা" শব্দটি এমনভাবে ব্যবহার করতেন যে তাকে "তত্ত্বাবোধায়ক" (যা আমরা এখন জানি) হিসেবে অনুবাদ করা যায়। ভিভেসের মতানুযায়ী বুদ্ধিমত্তা বিভিন্ন উদ্দীপক বস্তুর আকর্ষণ ধারণ থেকে তৈরি হয়।[২২] ভিভেসের মতে বুদ্ধিমত্তা একটি অত্যন্ত জ্ঞানীয় বস্তু। যখন আমরা শিখি, আমাদের অভিজ্ঞতার স্মৃতি আসল বুদ্ধিমত্তার স্থানে তালাবদ্ধ হয়ে যায়।[২৩] ভিভেসের বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক অনুমান অনুযায়ী এটি তখনই প্রয়োজনীয় যখন এটিকে ব্যবহার করা হয়। সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত বুদ্ধিমত্তা নামক উপহারটি তখনই গুরুত্ববাহী যখন এর চর্চা হয়। বুদ্ধিমত্তার চর্চা স্মৃতি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয়, যা সাধারণভাবে একটি অধিকতর ভাল শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করে। ভিভেসই প্রথম যিনি ছাত্রের স্বাস্থ্য, শিক্ষকের ব্যক্তিত্ত্ব, শিক্ষার পরিবেশ এবং লেখকদের ধরন সম্পর্কে বলেন যেন ছাত্ররা সেভাবেই শেখে, যেভাবে তাদে শেখা উচিত।[১৬] “ভিভেস বিদ্যালয়ের সটিক পরিবেশের উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন কারণ সেটাই শিশুর অনুভূতিময় অভিজ্ঞতার ওপর প্রথম প্রভাব ফেলে।[২৭] তিনি শেখা এবং জ্ঞান আহরণকে মানুষের খাদ্য-পরিপাকের সাথে তুলনা করেন।[১৬] মনকে জ্ঞানের মাধ্যমে খাওয়ানো হল বাচ্চাকে খাবার খাওয়ানোর ন্যায়; এটা মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।[২৮]
|প্রথমাংশ1=
এর |শেষাংশ1=
নেই (সাহায্য)