![]() | |||
ব্যক্তিগত তথ্য | |||
---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | জুস্ত ফোঁতেন | ||
জন্ম | ১৮ আগস্ট ১৯৩৩ | ||
জন্ম স্থান | মারাকেচ, মরক্কো | ||
উচ্চতা | ১.৭৪ মিটার (৫ ফুট ৮+১⁄২ ইঞ্চি) | ||
মাঠে অবস্থান | স্ট্রাইকার | ||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | |||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) |
১৯৫০-১৯৫৩ | কাসাব্ল্যাঙ্কা | ৪৮ | (৬২) |
১৯৫৩-১৯৫৬ | নিস | ৬৯ | (৪৩) |
১৯৫৬-১৯৬২ | স্ট্যাডি রিমস | ১৩১ | (১২২) |
জাতীয় দল | |||
১৯৫৩-১৯৬০ | ফ্রান্স | ২১ | (৩০) |
পরিচালিত দল | |||
১৯৬৭ | ফ্রান্স | ||
১৯৬৮-১৯৬৯ | লুচন | ||
১৯৭৩-১৯৭৬ | প্যারিস সেন্ট-জার্মান | ||
১৯৭৮-১৯৭৯ | তুঁলো | ||
১৯৭৯-১৯৮১ | মরক্কো | ||
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে |
জুস্ত "জুস্তো" ফোঁতেন (ফরাসি: Just "Justo" Fontaine; জন্ম: ১৮ আগস্ট, ১৯৩৩) মরক্কোর মারাকেচ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ফ্রান্সের সাবেক ফুটবল খেলোয়াড়।[১] মারাকেচে জন্মগ্রহণ করলেও তিনি পরবর্তীতে কাসাব্লাঙ্কায় স্থানান্তরিত হন এবং ফরাসী মিশনারী প্রতিষ্ঠান লিসি লিয়তেঁ পড়াশোনা করেন।
বিশ্বকাপ ফুটবলের মূল পর্বের একটি প্রতিযোগিতায় তিনি সবচেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ডের অধিকারী যা অদ্যাবধি অক্ষত রয়েছে। ১৯৫৮ সালের ফিফা বিশ্বকাপে সর্বাধিক ১৩টি গোল করেছিলেন। এছাড়াও তিনি বিশ্বকাপে ৪র্থ সর্বোচ্চ গোলদাতার অবস্থানে রয়েছেন। রোনালদো'র ৩ বিশ্বকাপে ১৫ গোল, গার্ড ম্যুলারের দুই বিশ্বকাপ এবং মিরোস্লাভ ক্লোজের ৩ বিশ্বকাপে ১৪ গোলের পরই তার এ অবস্থান। এ অসাধারণ সাফল্য থাকা স্বত্ত্বেও ফ্রান্স ১৯৫৮ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। এলসিডেস ঘিগিয়ার পর তিনি হচ্ছেন ২য় খেলোয়াড় যিনি বিশ্বকাপের প্রতিটি খেলায় গোল করেছেন।
ইউএসএম কাসাব্ল্যাঙ্কা দলের মাধ্যমে ফন্তেইন তার শৌখিন ক্রীড়া জীবন শুরু করেন। সেখানে তিনি ১৯৫০ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত খেলেন। ১৯৫৩ সালে নিস দলের সদস্য নিযুক্ত হন ও তিন মৌসুমে ৪৪ গোল করেন। ১৯৫৬ সালে স্ট্যাড ডি রিমস দলে রেমন্ড কোপা'র সাথে খেলেছেন। সেখানে ছয় মৌসুমে ১২১ গোল করেন। এরপর কোপা'র সাথে তিনিও ১৯৫৮ সালে রিয়াল মাদ্রিদ দলের পক্ষে খেলেন।
লিগ ১-এ সর্বমোট ২০০ খেলায় ১৬৫ গোল করেন এবং দলকে ১৯৫৮ ও ১৯৬০ সালে শিরোপা এনে দেন।
ফ্রান্স জাতীয় দলের পক্ষে নীল শার্ট পরিধান করে খেলেন যাতে তার অংশগ্রহণ ছিল আরও চমকপ্রদ। ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৫৩ সালে অভিষিক্ত ফোঁতেন লুক্সেমবার্গের বিপক্ষে হ্যাট্রিক করে যাতে দলটি ৮-০ গোলের ব্যবধানে জয়লাভ করে। জাতীয় দলের হয়ে ৭ বছরে ২১ খেলায় অংশ নিয়ে ৩০ গোল করেন।
ফোঁতেন ১৯৫৮ সালের ফিফা বিশ্বকাপের অবিশ্বাস্য ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। মাত্র ছয় খেলায় তিনি ১৩ গোল করেছেন। তন্মধ্যে পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী খেলায় চারটি গোল করেছিলেন। এ বিপুলসংখ্যক গোল অদ্যাবধি যে-কোন বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলের রেকর্ডরূপে চিহ্নিত হয়ে আছে।[২] এরফলে তিনি গোল্ডেন বুট পুরস্কার পান।
১৯৬২ সালে জুলাই মাসে ফোঁতেন তার সর্বশেষ ফুটবল খেলায় অংশ নেন। মাত্র ২৮ বছর ১১ মাস বয়সে তিনি আঘাতজনিত কারণে অবসর নিতে বাধ্য হয়। এরপর ১৯৬৭ সালে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে ফরাসী জাতীয় দল পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। কিন্তু দুই খেলার পরপরই তিনি পরিবর্তিত হন। কেননা দু'টি প্রীতি খেলাতেই দলটি পরাজিত হয়েছিল।
১৯৮০ সালে মরক্কো জাতীয় দলের কোচ থাকা অবস্থায় তিনি এটলাস লায়ন্সকে আফ্রিকান নেশন্স কাপে ৩য় স্থান এনে দেন। বাদৌ জকি, মোহাম্মদ তিমৌমি এবং আজিজ বৌদারবালা প্রমূখ খেলোয়াড়েরা তার হাত দিয়েই বেড়ে উঠেছেন। ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে দলকে নিয়ে আসেন। কিন্তু তারা ক্যামেরুনের কাছে পরাভূত হয়।
২০১০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফুটবলে ফরাসী দলের দূর্বল খেলায় ব্যাপক সমালোচনা করেন।[৩] বিশেষ করে ফরোয়ার্ডদের ব্যার্থতায় দলটি গ্রুপ পর্বেই বিতাড়িত হয়। উরুগুয়ের সাথে ড্র এবং মেক্সিকো ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ফ্রান্স দলটি পরাজিত হয়েছিল।
২০০৪ সালের মার্চ মাসে বিশ্ব ফুটবলের কিংবদন্তি পেলে কর্তৃক ফিফা ১০০ তালিকায় অন্যান্য জীবিত ১২৫ জন বিখ্যাত ফুটবলারের পাশে তার নামও অন্তর্ভুক্ত হয়। নভেম্বর, ২০০৩ সালে উয়েফা’র পঞ্চাশতম বার্ষিকী পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ফরাসী ফুটবল ফেডারেশন কর্তৃক তিনি সেরা ফরাসী খেলোয়াড়রূপে মনোনীত হন।[৪]
১৯৬১ সালে ইউগিন এন’জো লিয়ের সাথে ফন্তেইন পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়দের জাতীয় সংগঠন প্রতিষ্ঠা করতে সহায়তা করেন।