জে. এডগার | |
---|---|
পরিচালক | ক্লিন্ট ইস্টউড |
প্রযোজক |
|
রচয়িতা | ডাস্টিন ল্যান্স ব্ল্যাক |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | ক্লিন্ট ইস্টউড |
চিত্রগ্রাহক | টম স্টার্ন |
সম্পাদক |
|
প্রযোজনা কোম্পানি |
|
পরিবেশক | ওয়ার্নার ব্রস. পিকচার্স |
মুক্তি |
|
স্থিতিকাল | ১৩৭ মিনিট[১] |
দেশ | যুক্তরাষ্ট্র |
ভাষা | ইংরেজি |
নির্মাণব্যয় | $৩৫ মিলিয়ন[২] |
আয় | $৮৪.৬ মিলিয়ন[৩] |
জে. এডগার ক্লিন্ট ইস্টউড প্রযোজিত ও পরিচালিত ২০১১ সালের জীবনী নির্ভর মার্কিন চলচ্চিত্র।[৪] ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন ডাস্টিন ল্যান্স ব্ল্যাক। এতে এফবিআই পরিচালক জে. এডগার হুভার পরিচালিত পালমার রেইড থেক শুরু করে তার বাকি কর্মজীবন তুলে ধরা হয়েছে। ছবিটিতে জে. এডগারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও। এছাড়া অন্যান্য ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আর্মি হ্যামার, নাওমি ওয়াটস, জশ লুকাস, জুডি ডেঞ্চ, এড ওয়েস্টউইক প্রমুখ। জে. এডগারের প্রিমিয়ার হয় ২০১১ সালের ৩ নভেম্বর লস অ্যাঞ্জেলেস-এ এএফআই চলচ্চিত্র উৎসবে। ৯ নভেম্বর ছবিটির সীমিত মুক্তি ও পরে ১১ নভেম্বর সারা যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি পায়।[১]
জে. এডগার হুভার তার অফিসে এজেন্ট স্মিথকে এফবিআইয়ের শুরুর দিকের গল্প বলতে থাকেন। ১৯১৯ সালে এ. মিচেল পালমার তখন তার বস ছিলেন এবং জঙ্গিরা পালমারকে হত্যা করার জন্য তার বাড়িতে বোমা রেখেছিল কিন্তু সে বাড়ি ফিরার আগেই তা ফাটলে পালমার সেই যাত্রায় বেঁচে যায়। হুভার অপরাধ বিজ্ঞানের প্রয়োগ করে এই ধরনের জঙ্গিবাদ মোকাবেলা করার চিন্তা করে। বোস্টন পুলিশ বিভাগ ধর্মঘট ডাকলে ও জনমনে জঙ্গিবাদের ভীতির সঞ্চার হলে পালমার তাকে এন্টি-র্যা ডিকেল বিভাগের দায়িত্ব দেয়। হুভার কিছু সন্দেহভাজন সংস্কারপন্তীর তালিকা করে।
কয়েকজন সন্দেহভাজন অভিবাসী সংস্কারপন্তীদের উপর নজরদারীর পরও শ্রম বিভাগ কোন প্রকার অপরাধের সত্যতা না দেখেই তাদের খালাস করে দেয়। সন্দেহভাজন সংস্কারপন্তীদের উপর কয়েকটি তল্লাসী চালানোর পর অনেক অভিবাসীকে নির্বাসিত করা হয় এবং পালমার এটর্নি জেনারেল পদে থেকে তার চাকরি হারায়। তার পরবর্তী এটর্নি জেনারেল হারলান এফ. স্টোন হুভারকে নতুন ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন-এর পরিচালক করেন।
পরবর্তীতে তিনি ব্যুরোর পরিচালক হিসেবে অপরাধীদের ধরার জন্য এবং অপরাধ ঠেকানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল তদন্তে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ, যেমন আঙ্গুলের ছাপ ও রক্তের গ্রুপ থেকে অপরাধী শনাক্তকরণ।
শার্লিজ থিরন'র হেলেন গান্দি চরিত্রের জন্য অভিনয়ের কথা থাকলেও পরে তিনি স্নো হোয়াইট অ্যান্ড দ্য হান্টসম্যান ছবিতে অভিনয়ের জন্য তা ছেড়ে দেন। ইস্টউড থিরনের স্থলে নাওমি ওয়াটসকে নেওয়ার আগে অ্যামি অ্যাডামসকে নির্বাচন করেছিলেন।[১২]
জে. এডগার ২০১১ সালের ৯ নভেম্বর সীমিত পরিসরে ৭টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এবং $৫২,৬৪৫ আয় করে।[১৬] ১১ ডিসেম্বর সারা যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তি দেওয়ার পর প্রথম সপ্তাহে $১১,২১৭,৩২৪ আয় করে।[১৭] লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস-এর ধারণা করেছিল প্রথম সপ্তাহে ছবিটি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় প্রায় $১২ মিলিয়ন আয় করবে। জে. এডগার বিশ্বব্যাপী মোট $৮৪.৬ মিলিয়ন আয় করে।[৩] দর্শকদের উপর করা এক জরিপে দেখা যায় ৯৫% এর উপর দর্শক ২৫ বছরোর্ধ্ব এবং ৫০% উপর নারী।[২]
জে. এডগার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুই ধরনের সমালোচনা লাভ করে। অনেক সমালোচক ডিক্যাপ্রিও অভিনয়ের প্রশংসা করলেও বলেছেন ছবিটিতে অসংলগ্নতা রয়েছে। রটেন টম্যাটোস-এ ২২০জন সমালোচকের পর্যালোচনার ভিত্তিতে ছবিটির রেটিং স্কোর ৪৩% এবং গড় রেটিং ৫.৭/১০। ওয়েবসাইটিতে বলা হয়েছে, "লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও আশানুরূপ অভিনয় করেছেন, কিন্তু অন্য বিভাগগুলো: রূপসজ্জা, আলোকসজ্জা, কাহিনি বর্ণনায় হোঁচট খেয়েছে"[১৮] মেটাক্রিটিক-এ ৪২ জন প্রধান সমালোচকদের পর্যালোচনার ভিত্তিতে ছবিটির স্কোর ১০০-এ ৫৯।[১৯]
চলচ্চিত্র সমালোচক রজার ইবার্ট ছবিটিকে ৪-এ ৪.৫ দিয়েছেন এবং ছবিটিকে "মনোমুগ্ধকর" ও "নিপুণ" বলে উল্লেখ করেছেন এবং ডিক্যাপ্রিও অভিনয়ের প্রশংসা করে বলেন "সূক্ষ্ম ও পরিশ্রমী অভিনয়।"[২০] দ্য হলিউড রিপোর্টার-এর টড ম্যাকার্থিও ইতিবাচক সমালোচনা করে বলেছেন, "পরিচালক কিন্ট ইস্টউড ও চিত্রনাট্যকার ডাস্টিন ল্যান্স ব্ল্যাকের সমন্বয় কিছু বিতর্কিত বিষয় থাকা স্বত্ত্বেও ছবিটিকে সঙ্গত করে তুলেছে।"[২১] দ্য নিউ ইয়র্কার-ম্যাগাজিনের ডেভিড ডেনবিও ছবিটি পছন্দ করেছেন এবং বলেছেন সামান্য পরিমাণ ভুল থাকলেও ইস্টউডের পরিচালনার কারণে সেগুলো উৎরে গেছে।[২২]
দ্য ভিলেজ ভয়েস-এর জে. হবারম্যান লিখেছেন, "যদিও একেবারে খুঁতহীন নয়, ইস্টউডের এই জীবনীনির্ভর চলচ্চিত্র লেটারস ফ্রম ইয়ো জিমা ও ফ্ল্যাগস অফ আওয়ার ফাদারস্-এর পর তার অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র"[২৩] ভ্যারাইটি ম্যাগাজিনের পিটার ডিব্রুগ ছবিটির মিশ্র সমালোচনা করে লিখেছেন, "যেসব ছবিতে এফবিআইয়ের কোন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে কেন্দ্রীয় চরিত্রে দেখানো হয়েছে, তাতে সে কেন সেই পদের যোগ্য বা তার সংগ্রাম দেখানো হয়েছে, জে. এডগারও তার বেশি কিছু দেখাতে পারে নি"[২৪] নিউ ইয়র্ক ম্যাগাজিন-এর ডেভিড এডেলস্টেইন ছবিটির নেতিবাচক সমালোচনা করে বলেন, "জে. এডগার খাপছাড়া ও বিস্তৃত এবং বাজে সংলাপে ভরপুর।" তবে তিনি ডিক্যাপ্রিওর অভিনয়ের প্রশংসা করে লিখেছেন, "সে যেভাবে হুভারের ভিতরকার সংগ্রামকে প্রকাশ করেছে তা সত্যিই মর্মস্পর্শী।"[২৫]
পুরস্কারের তারিখ | পুরস্কার | বিভাগ | পুরস্কার গ্রহীতা/মনোনীত | ফলাফল |
---|---|---|---|---|
১ ডিসেম্বর, ২০১১ | ন্যাশনাল বোর্ড অফ রিভিউ পুরস্কার[২৬] | সেরা দশ চলচ্চিত্র | জে. এডগার | বিজয়ী |
১১ ডিসেম্বর, ২০১১ | আমেরিকান ফিল্ম ইন্সটিটিউট পুরস্কার[২৭] | সেরা দশ চলচ্চিত্র | বিজয়ী | |
১৮ ডিসেম্বর, ২০১১ | স্যাটেলাইট পুরস্কার[২৮] | শ্রেষ্ঠ অভিনেতা – চলচ্চিত্র | লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও | মনোনীত |
১২ জানুয়ারি, ২০১২ | ক্রিটিকস চয়েস পুরস্কার[২৯] | শ্রেষ্ঠ অভিনেতা | মনোনীত | |
১৫ জানুয়ারি, ২০১২ | গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার[৩০] | শ্রেষ্ঠ অভিনেতা – নাট্য চলচ্চিত্র | মনোনীত | |
২৭ জানুয়ারি, ২০১২ | এএসিটিএ আন্তর্জাতিক পুরস্কার[৩১] | শ্রেষ্ঠ অভিনেতা - আন্তর্জাতিক | মনোনীত | |
২৯ জানুয়ারি, ২০১২ | স্ক্রিন অ্যাক্টরস গিল্ড পুরস্কার[৩২] | শ্রেষ্ঠ প্রধান চরিত্রে অভিনেতা | মনোনীত | |
শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রে অভিনেতা | আর্মি হ্যামার | মনোনীত |
অল থিংস কনসিডারডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হুভারের জীবনীকার ইয়েল ইউনিভার্সিটির ইতিহাসের প্রফেসর বেভারলি গেইজ বলেন চলচ্চিত্রটি হুভারের এফবিআইতে যোগদান, সংস্কারক হিসেবে একে নতুন ও পেশাদারী করে গড়ে তোলা, তদন্তে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ, যেমন আঙ্গুলের ছাপ ও রক্তের গ্রুপ থেকে অপরাধী শনাক্তকরণকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করেছে। হুভারের গলার স্বরের তাল ঠিক রাখার জন্য তিনি ডিক্যাপ্রিওর প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন হুভারের জীবনী বর্ণনার জন্য ছবিতে ব্যবহৃত ডিভাইসটি কাল্পনিক, কারণ তিনি আসলে তার কর্মজীবনে এমন সময়ই পান নি।[৩৩] The historian Aaron J. Stockham of the ওয়াটারফোর্ড স্কুল-এর ইতিহাসবেত্তা অ্যারন জে. স্টকহাম জর্জ ম্যাসন ইউনিভার্সিটির হিস্ট্রি নিউজ নেটওয়ার্ক-এ লেখেন, "জে. এডগার ছবিতে হুভারকে আইন প্রণয়ন ও তদন্তে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সফল প্রয়োগকারী হিসেবে দেখিয়েছে। এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই যে হুভার এফবিআইয়ের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি প্রনয়নে সুখ্যাতি অর্জন করেছেন।"[৩৪] স্টকহাম ধারণা করেন সম্ভবত হুভার মার্টিন লুথার কিংয়ের কাছে আত্মহত্যার চিঠি প্রেরন করেন নি।[৩৪]