জেমস বন্ড | |
---|---|
প্রথম উপস্থিতি | ক্যাসিনো রয়্যাল |
স্রষ্টা | ইয়ান ফ্লেমিং |
চরিত্রায়ণ | অফিসিয়াল: শন কনারি (১৯৬২–১৯৬৭, ১৯৭১) জর্জ ল্যাজেনবি (১৯৬৯) রজার মুরে (১৯৭৩–১৯৮৫) টিমোথি ডাল্টন (১৯৮৬–১৯৯৩) পিয়ার্স ব্রুসনান (১৯৯৫–২০০২) ড্যানিয়েল ক্রেইগ (২০০৬–২০২১) অফিসিয়াল নয়: ব্যারী ন্যালসন (১৯৫৪) বব হলন্যাস (১৯৫৬) ডেভিড নিভেন (১৯৬৭) শন কনারি (১৯৮৩) |
তথ্য | |
লিঙ্গ | পুরুষ |
পদবি | বন্ড |
পেশা | ০০৭ এজেন্ট |
পরিবার | পিতা: এন্ড্রু বন্ড মাতা: মনিক ডেলাক্রইক্স বন্ড চাচী: চার্মিয়ান বন্ড চাচা: ম্যাক্স বন্ড |
দাম্পত্য সঙ্গী | টেরেসা ডি ভিসেঞ্জো (বিধবা) কিসি সুজুকি হ্যারিয়েট হর্নার |
সন্তান | জেমস সুজুকি বন্ড (কিসি সুজুকি'র গর্ভে) |
জন্মতারিখ | ১১ই নভেম্বর (জন্মের বছর বিতর্কে ছিল) |
সম্বন্ধীকরণ | এমআই৬ |
জেমস বন্ড (ইংরেজি: James Bond) বিখ্যাত ঔপন্যাসিক ইয়ান ফ্লেমিং কর্তৃক সৃষ্ট উপন্যাসের কাল্পনিক চরিত্র বিশেষ। ১৯৫৩ সালে রচিত এ উপন্যাসে জেমস বন্ড রয়েল নেভি কমাণ্ডার হিসেবে রয়েছেন। জেমস বন্ড নিয়ে সিরিজ আকারে নির্মিত অসংখ্য উপন্যাস, চলচ্চিত্র, কমিকস্ এবং ভিডিও গেমের প্রধান চরিত্রে রয়েছেন জেমস বন্ড। লন্ডনের সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস বা এসআইএসের প্রধান গুপ্তচর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় তাকে। ১৯৯৫ সালের পর থেকে সিক্রেট ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস বা এসআইএসের নাম পরিবর্তিত হয়ে এমআই৬ নামকরণ করা হয়।
০০৭ সাঙ্কেতিক নম্বরটি জেমস বন্ড ধারণ করেছেন। ব্যতিক্রম হিসেবে রয়েছে ইউ অনলি লাইভ টুয়াইস উপন্যাসটি। সেখানে তাকে অস্থায়ীভাবে ৭৭৭৭ নম্বর দেয়া হয়েছে। ডাবল-ও বা ডাবল-জিরো শব্দটির মাধ্যমে জেমস বন্ডকে তার কর্তব্য-কর্মে যে-কাউকে হত্যা করার জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে।
বন্ড নিজেকে অন্য কারো সাথে পরিচয় করেন, "বন্ড, জেমস বন্ড" হিসেবে। মার্টিনি ককটেল হিসেবে ভদকাতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তিনি। তার সহজাত ও স্বাভাবিক পোশাক হচ্ছে একটি ডিনার জ্যাকেট। সচরাচর তিনি রোলেক্স সাবমেরিনার হাতঘড়ি পড়তেই পছন্দ করেন। পরবর্তীতে তাকে ওমেগা সীমাস্টার ঘড়ি পড়তে দেখা যায়।
শন কনারি, জর্জ ল্যাজেনবি, রজার মুরে, টিমোথি ডাল্টন, পিয়ার্স ব্রুসনান এবং ড্যানিয়েল ক্রেইগ - এ ছয় জনের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে জেমস বন্ডের প্রতিকল্প হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। তবে, বন্ডকে প্রথমবারের মতো চলচ্চিত্ররূপ প্রদান করা হয়েছে মার্কিন টেলিভিশনে। ব্যারি নেলসন ১৯৫৪ সালে উপন্যাস হিসেবে ক্যাসিনো রয়েলে বন্ডের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৫৬ সালে বব হলনেসের পরিচালনায় দক্ষিণ আফ্রিকান রেডিওতে মুনর্যাকার উপন্যাস অবলম্বনে ধারাবাহিকভাবে নাটক প্রচার করা হয়।
ইয়ান ফ্লেমিং রচিত গল্পগুলোর পটভূমিতে জেমস বন্ড চরিত্রটি নির্দিষ্ট বয়সের নয়। সচরাচর চরিত্রটি ত্রিশোর্ধ্ব বয়সী এক যুবকের। মুনরেকার উপন্যাসে তাকে বাধ্যতামূলকভাবে চাকরি থেকে অবসর দেয়া হয়।[১]
উপন্যাসে জেমস বন্ডের জন্ম তারিখ ও সালকে ঊহ্য রাখা হয়েছে। কেননা, ফ্লেমিং তার সৃষ্ট উপন্যাসের প্রেক্ষাপটে তারিখ ও ঘটনার সময়কালকে বিভিন্নভাবে ধারণ করেছেন। ফলে, জেমসের প্রকৃত জন্ম তারিখ ও সাল নিয়ে বেশ বিতর্ক রয়েছে। অধিকাংশ গবেষক ও জীবনীকারদের ধারণা যে, জেমস বন্ডের জন্ম হচ্ছে - ১৯১৭, ১৯২০, ১৯২১ অথবা ১৯২৪ সালে। অবশ্য, ফ্লেমিং তার সাহিত্যকর্মে কখনো জেমসের বন্ডের জন্ম, জন্ম সাল বা জন্ম স্থান নিয়ে আলোকপাত করেননি।
জেমস বন্ডকে ইউ অনলি লাইভ টুয়াইস চলচ্চিত্রে স্কটিশ পিতা এন্ড্রু বন্ড এবং সুইস মাতা মনিক ডেলাক্রইক্সের সন্তান হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। কৈশোরকাল থেকেই জেমস বন্ডকে বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করতে দেখা যায়। পিতা একটি কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতেন বিধায়, জেমসও জার্মান এবং ফ্রেঞ্চ ভাষা শিক্ষালাভে সক্ষম হয়েছিলেন। চ্যামোনিক্সের কাছাকাছি আইগুইলস্ রোগেসে পর্বত আরোহণের সময় তার বাবা মারা যান। অনাথ অবস্থায় জেমস বন্ডের তখন বয়স ছিল এগার বছর।[২]
অন হার ম্যাজিস্ট্রিজ সিক্রেট সার্ভিসে বন্ডের পরিবারের মূল লক্ষ্য হিসেবে ল্যাটিন বাক্য "অরবিস নন সাফিসিট" প্রয়োগ করতে দেখা যায়। ইংরেজিতে এর অর্থ দাঁড়ায় "দি ওয়ার্ল্ড ইজ নট এনাফ" বা পৃথিবীই যথেষ্ট নয়।
পিতা-মাতার মৃত্যুর পর বন্ড মিস চার্মিয়ান বন্ড নাম্নী কাকীর বাসায় অবস্থান করেন। পেট বটম নামক গ্রামের বাড়ীতে প্রাথমিক শিক্ষাজীবন সম্পন্ন করেন তিনি। পরবর্তীতে ১২ বছর বয়সে (ইয়াং বন্ডে ১৩ বছর) এটন কলেজে সংক্ষিপ্ত সময়ে অধ্যয়ন করেন। কিন্তু নারী সংক্রান্ত ঘটনায় তিনি চার বছর পর চলে যান। ১৬ বছর বয়সে প্যারিস ভ্রমণে আসেন ও কুমারত্ব হারান। এটন থেকে বন্ড চলে যান এবং তার পিতার অধ্যয়নকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় ফেটেস কলেজে ভর্তি হন। পিয়ারসনের জেমস বন্ডঃ দি অদরাইজড বায়োগ্রাফী এবং ফ্রম রাশিয়া, উইদ লাভ উপন্যাসে তাকে সংক্ষিপ্তকাল সময়ের জন্য ইউনিভার্সিটি অব জেনেভায় অধ্যয়ন করতে দেখা যায়। বন্ডের শিক্ষা সম্বন্ধে ফ্লেমিং এটন এবং ইউনিভার্সিটি অব জেনেভায় অধ্যয়নের কথা উল্লেখ করেন।[৩]
১৯৪১ সালে ২য় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে জেমস বন্ডকে বয়সজনিত কারণে রাজকীয় নৌবাহিনীতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে ঢোকানো যায়নি। সেখানে তার ভূমিকা ছিল একজন উদীয়মান কমাণ্ডারের। পরবর্তীতে ফ্লেমিংয়ের উপন্যাস, জন গার্ডেনার কর্তৃক ঐ উপন্যাসের সম্প্রসারণ এবং চলচ্চিত্রের মাধ্যমে জেমস বন্ড ব্রিটিশ গুপ্তচর বিভাগের মাধ্যমে রাজকীয় নৌবাহিনীতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। জন গার্ডেনারের সম্প্রসারিত, লস অর ডাই উপন্যাসে বন্ডকে ক্যাপ্টেন হিসেবে পরিচিত করেন। রেমণ্ড বেনসনের রিবুট কল্পকাহিনীতে রাজকীয় নৌবাহিনীর সংরক্ষিত অতিরিক্ত স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে বন্ডকে কমাণ্ডার দেখানো হয়, যিনি যুদ্ধ পরবর্তীকালে একজন প্রাক্তন কর্মকর্তা ছিলেন।[৪]
রাজকীয় নৌবাহিনীতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগদানের পর বন্ডকে যুক্তরাষ্ট্র, হংকং এবং জ্যামাইকা ভ্রমণে যেতে দেখা যায়। সেখানে তিনি অন্য কোন সংস্থায় 'বিশেষ কার্যসম্পাদনের নির্বাহী কর্মকর্তা' হিসেবে অথবা 'রাজকীয় নৌবাহিনী ইউনিটের প্রধান' হিসেবে যোগদান করেন। ফ্লেমিংয়ের "রেড ইণ্ডিয়ানস্" উপন্যাসে '৩০ কমাণ্ডো অ্যাসাল্ট ইউনিট' এর প্রধান উদাহরণ।[৫] এই ৩০ কমাণ্ডো অ্যাসাল্ট ইউনিট হচ্ছে একমাত্র ব্রিটিশ ক্ষুদ্র দল যা ইউরোপে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সাথে যুক্ত ছিল। জেমস বন্ডের কমাণ্ডিং অফিসার হিসেবে রয়েছেন এম। বন্ডের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এম উল্লেখ করেনঃ
“ | স্বাভাবিক ও সহজাত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে রাজকীয় নৌবাহিনীতে স্বেচ্ছাসেবক দলের বিশেষ শাখার লেফ্টেন্যান্ট পদের সমতুল্য তিনি। এ মানদণ্ডে তিনি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরকে সন্তুষ্ট করেছেন যা যুদ্ধ শেষে তাকে কমাণ্ডার পর্যায়ে উন্নীত করা যায়। - ইউ অনলি লাইভ টুয়াইস (উপন্যাস), ২১ অধ্যায়ঃ মৃত্যু। | ” |
জেমস বন্ড ব্রিটিশ রাণীর অধীনে কর্মরত একজন সরকারি চাকরিজীবী। প্রধান কর্মকর্তা পদবীধারী হিসেবে প্রতিরক্ষা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন তিনি।[৬][৭] প্রধান কর্মকর্তার পদটি রাজকীয় নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন পদের সমমর্যাদার অধিকারী।[৮]
বন্ড ক্যাসিনো রয়েল উপন্যাসে সাবেক জিরোজিরো-এজেন্ট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। কিন্তু কখন তিনি ডাবল ও-এজেন্ট হয়েছিলেন, তা বিবৃত হয়নি। তা স্বত্ত্বেও ক্যাসিনো রয়েলের মাধ্যমে জানা যায় যে, ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময়; আবার গোল্ডফিঙ্গার উপন্যাসে তাকে ১৯৫২ সালে ০০-এজেন্ট হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করা হয়।
জেমস বন্ড দুইটি কাজের জন্য জিরোজিরো-এজেন্ট মর্যাদার অধিকারী হন যা ক্যাসিনো রয়েলে বর্ণনা করা হয়েছে।
জেমস বন্ডঃ দি অদরাইজড বায়োগ্রাফী অব ০০৭ উপন্যাসে পিয়ারসন একজন কিশোরকে প্রথম হত্যা করেছিলেন বলে জানান। বন্ডের জন্য ক্যাসিনো রয়েলে পূর্ব বরাদ্দকৃত কাজগুলো কখনও কখনও উপন্যাসের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছে। ঐ সময়ে বন্ডকে তার কার্যসম্পাদনের জন্য মন্টে কার্লো, হংকং, জ্যামাইকা ভ্রমণ করতে দেখা যায়। ফ্রম রাশিয়া, উইদ লাভ উপন্যাসের আলোকে ১৯৫৪ সালে সোভিয়েট দলিলপত্রাদিতে তাকে কম্প্যানিয়ন অব দি অর্ডার অব সেন্ট মাইকেল এণ্ড সেন্ট জর্জ পদকে ভূষিত করা হয়, যা সাধারণত চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পরই প্রদানযোগ্য। দ্য ম্যান উইদ দ্য গোল্ডেন গান উপন্যাসে তিনি নাইট কমান্ডার পদবীতে ভূষিত হবার প্রস্তাবনা প্রত্যাখ্যান করেন। সোভিয়েত গুপ্তঘাতক ফ্রান্সিসকো স্কারামাঙ্গাকে সফলভাবে হত্যা করার পরও তিনি সর্বসাধারণের কাছে প্রকাশিত হতে চাচ্ছিলেন না।
সাহিত্য ক্ষেত্রে জেমস বন্ডকে হত্যা করার অনুমতিপত্র দেয়া হয়। মাঝে মাঝে আদেশ অমান্যকারীকে হত্যা করা হয় যদিও কার্যসম্পাদন ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। অক্টোপুসি এবং দ্য লিভিং ডেলাইটস উপন্যাসে দেখা যায় যে, আদেশকে অমান্য করে শেষ মুহুর্তের সিদ্ধান্ত হিসেবে একজন মহিলা গুপ্তঘাতককে হত্যা করেছিলেন জেমস। তা নাহলে গুপ্তঘাতকের বন্দুকের গুলিতে নিজেই মারা পরতেন বন্ড এবং তার কার্যকালেরও সমাপণ ঘটতো। পরবর্তীতে, তিনি অনুধাবন করেছিলেন যে আদেশ অমান্য করায় হয়তোবা তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা "এম" রাগে অগ্নিশর্ম্মা হয়ে যাবেন।
ফ্লেমিংয়ের সাহিত্য-কর্মে বন্ডের মাধ্যমে নিরস্ত্র ব্যক্তিকে কাউকে হত্যা করতে দেখা যায়নি। নিরস্ত্র ব্যক্তিকে যারা হত্যা করতো বিশেষ করে মহিলাদেরকে, তাদেরকে বন্ড প্রচণ্ডভাবে ঘৃণা করতেন। এছাড়া কেবলমাত্র প্রয়োজন পড়লেই সাধারণতঃ তাকে হত্যা করতে দেখা যায়।
যে-কাউকে হত্যা করা ছিল তাঁর পেশার একটি অংশ। তিনি কাউকে হত্যা করতে মোটেই পছন্দ করতেন না। হত্যাকাণ্ডের পর তিনি কেন হত্যা করেছেন - এ বিষয়টি যতদ্রুত সম্ভব ভুলে যাবার চেষ্টা করতেন।
বন্ডকে নিজের মৃত্যু ভয় থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। বরঞ্চ যদি তিনি ধৃত হবার পরিবেশের দিকে অগ্রসর হতে থাকেন, তাহলে তিনি মরে যেতেই বেশি পছন্দ করবেন কিংবা এমআই৬ থেকে তাকে দূরে রাখা হবে। তাকে 'ক্যাসিনো রয়েল' উপন্যাসে কোনরূপ জবানবন্দি বা কথাবার্তা ছাড়াই অমানুষিক নির্যাতনের মুখোমুখি করানো হয়েছে।
'জেমস বন্ডঃ দ্য সিক্রেট ওয়ার্ল্ড অব ০০৭' ছবিতে বলা হয়েছে যে, তিনি একজন জুডুকা বা জুডু খেলায় পারদর্শী। এছাড়াও, বন্ড মার্শাল আর্ট জানেন। 'ফ্রম রাশিয়া, উইদ লাভ' উপন্যাসের ৪র্থ পরিচ্ছেদে "মৃত্যু পরওয়ানা" জারী করা হয় বন্ডের উপর। এবং প্রথমেই নিশ্চিত করা হয় যে, "জেমস বন্ড জুডুতে পারদর্শী"।
উপন্যাসে বিশেষ করে "ফ্রম রাশিয়া, উইদ লাভে" জেমস বন্ডের শারীরিক গঠন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোকপাত করা হয়েছে। সেখানে তার শারীরিক কাঠামো দাঁড় করা হয়েছে এভাবে - পাতলা ও চিকন শরীর; গালে তিন ইঞ্চি লম্বা কাটা দাগ, নীলাভ-ধূসর চোখ; নির্দয়-নিষ্ঠুর মুখমণ্ডল; ছোট ছাঁচের চুল যা কপালে কমা আকারে রয়েছে। কিন্তু প্রতিমূর্ত্তি হিসেবে গার্ডেনারের উপন্যাসে এবং পরবর্তীতে "ক্যাসিনো রয়েলে" তার চুল ধূসররূপে চিত্রিত করা হয়েছে। হাতে রাশিয়ান অক্ষর "Ш" (SH) (for Shpion: "Spy") রয়েছে। ফ্রম রাশিয়া উইদ লাভ উপন্যাসে বন্ডের উচ্চতা ১৮৩ সে.মি. বা ৬ ফুট এবং ওজন ৭৬ কিলোগ্রাম বা ১৬৭ পাউণ্ড দেখানো হয়েছে।
জেমস বন্ডের যখন কোন কাজ থাকে না বা প্রধান কার্যালয়ে অবস্থান করেন না, তখন তাকে চেলসির কিংস রোডের নিজ ফ্লাটে অবস্থান করতে দেখা যায়। জেমসের একান্ত ঘনিষ্ঠজন হিসেবে তারচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ স্কটিশ গৃহপরিচারিকা "মে" ফ্লাট দেখাশোনা ও রক্ষণাবেক্ষন করেন। জেমসের প্রতি ভীষণ আনুগত্য ও বিশ্বস্ত মে। কখনোবা তাকে মায়ের মতো আদর করতে দেখা যায়। "লাইভ এণ্ড লেট ডাই" চলচ্চিত্রে এম এবং মানিপেনি তার ফ্ল্যাট পরিদর্শনে আসলে বন্ড তার নারী সহচর সিলভিয়া ট্রেঞ্চকে ওয়ারড্রবে লুক্কায়িত রাখতে দেখা যায়। হিগসনের ইয়ং বন্ড সিরিজ মোতাবেক মে পূর্বে বন্ডের কাকী, চেয়ারম্যান হিসেবে পূর্বে কর্মরত ছিলেন। বাড়ীতে তাঁর দু'টি টেলিফোন রয়েছে। একটি ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য এবং অপরটি বাড়ীর সাথে প্রধান কার্যালয়ের সরাসরি যোগাযোগ রক্ষার্থে, যা গুরুত্বপূর্ণ মুহুর্তগুলোতে সর্বদাই বাজতে দেখা যায়।
জেমস বন্ডের উপন্যাসগুলোতে এ পর্যন্ত ৩১৭ বার মদপানের কথা উল্লেখ রয়েছে। তন্মধ্যে হুইস্কি ১০১, সেক ৩৫, শ্যাম্পেন ৩০, ভদকা মার্টিনিজ ১৯সহ অন্যান্যগুলো। প্রতি সাত পৃষ্ঠায় গড়ে একবার মদ্যপানের কথা বিবৃত করা হয়েছে।[৯] বন্ডকে মাঝেমাঝেই অ্যালকোহলের পরিবর্তে অন্যান্য পানীয় গ্রহণ করতে দেখা যায়। এগুলো মূলতঃ রূচিবোধ পরিবর্তন এবং বিনোদনের জন্য গ্রহণ করে থাকেন।
ফ্লেমিংয়ের উপন্যাসগুলোয় জেমস বন্ডকে প্রচণ্ড রকমের ধূমপায়ী হিসেবে ফুঁটিয়ে তোলা হয়েছে। এক পর্যায়ে তাকে দৈনিক ৭০টি সিগারেট টানতে দেখা যায়।[১০] গড়ে তাকে ৬০টি সিগারেটের দিকে অগ্রসর হতে হয়। বন্ডকে বলকান এবং তুর্কি তামাক দিয়ে গড়া মরল্যান্ড স্পেশাল সিগারেটের দিকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে।
বন্ডকে নৌচালনায় অতি উৎসাহী ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। চলচ্চিত্র-উপন্যাসে তিনি ব্যবসায়ের প্রয়োজনে এবং অবসর সময় অতিবাহিত করা - উভয় ক্ষেত্রেই নৌকায় সময় ব্যয় করছেন। ড. নো, ফ্রম রাশিয়া উইদ লাভ, ডায়মণ্ডস আর ফরএভার, থাণ্ডারবল, ইউ অনলি লাইভ টুয়াইস, লাইভ এণ্ড লেট ডাই, দ্য ম্যান উইদ দ্য গোল্ডেন গান, দি ওয়ার্ল্ড ইজ নট এনাফ, ক্যাসিনো রয়েল এবং কোয়ান্টাম অব সোলেস উপন্যাস ও চলচ্চিত্রে বন্ডকে নৌকায় চড়তে দেখা যায়।
১৯৫৪ সালে প্রথমবারের মতো জেমস বন্ডকে চলচ্চিত্ররূপ প্রদান করা হয়। এক ঘণ্টাব্যাপী ক্যাসিনো রয়েলের আমেরিকান সংস্করণে ব্যারী নেলসন 'জিমি বন্ড' নামে অভিনয় করেছিলেন। ইয়ন প্রোডাকশনের ব্যানারে নির্মিত জেমস বন্ড চরিত্রে প্যাট্রিক ম্যাকগুহানকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও, পরবর্তীতে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।
১৯৬২ সালে ড. নো চলচ্চিত্রে স্যার শন কনারি প্রথমবারের মতো জেমস বন্ডের নাম ভূমিকায় অংশ নেন। পরবর্তীতে জেমস বন্ড সিরিজে তিনি আরো চারটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।
১৯৬৯ সালে অস্ট্রেলিয়ান অভিনেতা জর্জ ল্যাজেনবি অন হার ম্যাজিস্টিজ সিক্রেট সার্ভিস ছবিতে দ্বিতীয়তম বন্ড হিসাবে বন্ডের চরিত্রে অংশ নেন। এটি ল্যাজেনবির একমাত্র বন্ড ফিল্ম, তিনি প্রথম থেকেই ঠিক করেছিলেন যে তিনি মাত্র একবারই চলচ্চিত্রে বন্ড হবেন।
জর্জ ল্যাজেনবি পরের ছবিতে অংশগ্রহণ না করায় শন কনারি ১৯৭১ সালে নির্মিত ডায়মণ্ডস আর ফরএভার ছবিতে পুনরায় বন্ড হিসেবে ফিরে আসেন। ১৯৮৩ সালে ইয়ন প্রোডাকশনের বাইরে নেভার সে নেভার এগেইন ছবিতেও কনারি অভিনয় করেছিলেন। এর ফলে তিনি ২১ বছর যাবৎ সবচেয়ে দীর্ঘদিনের বন্ড হিসেবে নিজেকে বিশ্বে তুলে ধরেন। তিনি সর্বমোট সাতটি (ইয়ন প্রোডাকশনের ছয়টি ও ইয়ন প্রোডাকশনের বাইরে ১৯৮৩ সালের "নেভার সে নেভার এগেইন" যা তারই অভিনীত চতুর্থতম চলচ্চিত্র "থান্ডারবল" এর পুনঃনির্মাণ।) চলচ্চিত্রে বন্ডের ভূমিকায় অভিনয় করেন।
১৯৭৩ সালের লাইভ এণ্ড লেট ডাই ছবিতে রজার মুর তৃতীয়তম বন্ড হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছিলেন। তিনিও ১৯৭৩ থেকে ১৯৮৫ সালের মধ্যে ধারাবাহিকভাবে জেমস বন্ডের নাম ভূমিকায় অংশগ্রহণ করেছিলেন।তিনি পরপর সাতটি চলচ্চিত্রে বন্ডের নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।
এরপর চতুর্থতম বন্ড হন টিমোথি ডাল্টন। ১৯৮৭ সালের "দ্য লিভিং ডেলাইটস" চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ডাল্টনের বন্ডের নাম ভূমিকায় অভিষেক ঘটে। তিনি মাত্র দুটি চলচ্চিত্রে বন্ডের ভূমিকায় অভিনয় করেন। ১৯৮৯ সালে বন্ডের ভূমিকায় অভিনীত তার সর্বশেষ চলচ্চিত্রের নাম "লাইসেন্স টু কিল"।
দীর্ঘ ছয় বছর পরে চলচ্চিত্রে ফের বন্ডের প্রত্যাবর্তন ঘটে। এবার রুপোলী পর্দায় পিয়ার্স ব্রসনান পঞ্চমতম বন্ড হিসাবে বন্ডের নাম ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ১৯৯৫ সালের "গোল্ডেন আই" চলচ্চিত্রের থেকে শুরু করে ২০০২ সালের "ডাই এনাদার ডে" পর্যন্ত চারটি চলচ্চিত্রে তিনি বন্ডের ভূমিকায় অভিনয় করেন।
এরপর আবার চার বছর পর ষষ্ঠ বন্ড হিসেবে ড্যানিয়েল ক্রেইগ এর অভিষেক ঘটে। ২০০৬ সালে তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র "ক্যাসিনো রয়েল" এর মাধ্যমে বন্ড সিরিজ রিবুট বা পুনরায় শুরু করা হয়। এরপর ২০০৮ সালে "ক্যাসিনো রয়েল" এর সিক্যুয়েল "কোয়ান্টাম অব সোলেজ" মুক্তি পায়। এর আবার চার বছর পরে ২০১২ সালে মুক্তি পায় স্কাইফল। ক্রেইগ আরো দুটি চলচ্চিত্রে বন্ডের ভূমিকায় অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। ২০১৫ সালে তার পরবর্তী চলচ্চিত্র "স্পেক্টর" মুক্তি পায়।
গুপ্তচর হিসেবে জেমস বণ্ডের নাম ভূমিকায় অভিনয়ের মাধ্যমে সকলের নজরে আসেন স্যার শন কনারি। ১৯৬২ সালে ড. নো চলচ্চিত্রে শন কনারি প্রথমবারের মতো জেমস বন্ডের নাম ভূমিকায় অংশ নেন। পরবর্তীতে জেমস বন্ড সিরিজে তিনি আরো চারটি - ফ্রম রাশিয়া উইদ লাভ (১৯৬৩), গোল্ডফিঙ্গার (১৯৬৪), থাণ্ডারবল (১৯৬৫) এবং ইউ অনলি লাইভ টুয়াইস (১৯৬৭) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছিলেন। ১৯৭১ সালে নির্মিত ডায়মণ্ডস আর ফরএভার ছবিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি পুনরায় বন্ড হিসেবে ফিরে আসেন।
১৯৮৩ সালে ইয়ন প্রোডাকশনের বাইরে নেভার সে নেভার এগেইন ছবিতেও কনারি অভিনয় করেছিলেন। এর ফলে তিনি ২১ বছর যাবৎ সবচেয়ে দীর্ঘদিনের বন্ড হিসেবে নিজেকে বিশ্বে তুলে ধরেন। তাঁর অভিনীত বণ্ড সিরিজের সাতটি চলচ্চিত্রই বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক সাফল্য লাভ করেছিল।
এমআই৬ এজেন্ট জেমস বন্ডের নাম ভূমিকায় এ পর্যন্ত ৬ জন অভিনেতা অভিনয় করেছেন। ২০১২ সাল পর্যন্ত জেমস বন্ড সিরিজের মোট ২৪টি ছবি মুক্তি পায়। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে স্কাইফল নামে জেমস বন্ড সিরিজের ২৪তম চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে।[১১]
ক্রমিক নং | ছবির নাম | অভিনয়ে | পরিচালক | মুক্তির তারিখ |
১। | ড. নো | শন কনারি, জোসেফ ওয়াইজম্যান | টেরেন্স ইয়াং | ৫ অক্টোবর, ১৯৬২ |
২। | ফ্রম রাশিয়া উইদ লাভ | শন কনারি, ড্যানিয়েলা বিয়াঞ্চি | টেরেন্স ইয়াং | ১০ অক্টোবর ১৯৬৩ |
৩। | গোল্ডফিঙ্গার | শন কনারি, শার্লি এটন | গাই হ্যামিলটন | ১৭ সেপ্টেম্বর, ১৯৬৪ |
৪। | থাণ্ডারবল | শন কনারি, ক্লডিন অগার | টেরেন্স ইয়াং | ৯ ডিসেম্বর, ১৯৬৫ |
৫। | ইউ অনলি লাইভ টুয়াইস | শন কনারি, মাই হ্যামা | লুইস গিলবার্ট | ১২ জুন, ১৯৬৭ |
৬। | অন হার ম্যাজিস্টিজ সিক্রেট সার্ভিস | জর্জ লেজনবি, ডায়ান রিগ | পিটার আর. হান্ট | ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৬৯[১২] |
৭। | ডায়মন্ডস আর ফরেভার | শন কনারি, জিল সেন্ট জন | গাই হ্যামিলটন | ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৭১ |
৮। | লিভ অ্যান্ড লেট ডাই | রজার মুর, ইয়াফেট কতো | গাই হ্যামিলটন | ২৭ জুন, ১৯৭৩ |
৯। | দ্য ম্যান উইদ দ্য গোল্ডেন গান | রজার মুর, ব্রিট একল্যাণ্ড | গাই হ্যামিলটন | ২০ ডিসেম্বর, ১৯৭৪ |
১০। | দ্য স্পাই হু লাভড্ মি | রজার মুর, বারবার ব্যাচ | লুইস গিলবার্ট | ৭ জুলাই, ১৯৭৭ |
১১। | মুনর্যাকার | রজার মুর, মাইকেল লণ্ডসডেলে | লুইস গিলবার্ট | ২৬ জুন, ১৯৭৯ |
১২। | ফর ইওর আইজ অনলি | রজার মুর, জুলিয়ান গ্লোভার | জন গ্লেন | ২৪ জুন, ১৯৭৯ |
১৩। | অক্টোপুসি | রজার মুর, জিউফ্রে কিন | জন গ্লেন | ৬ জুন, ১৯৮৩ |
১৪। | আ ভিউ টু কিল | রজার মুর, ক্রিস্টোফার ওয়াকেন | জন গ্লেন | ২২ মে, ১৯৮৫ |
১৫। | দ্য লিভিং ডেলাইটস | টিমোথি ডাল্টন, জো ডন বেকার | জন গ্লেন | ২৯ জুন, ১৯৮৭ |
১৬। | লাইসেন্স টু কিল | টিমোথি ডাল্টন, ক্যারে লোওয়েন | জন গ্লেন | ১৩ জুন, ১৯৮৯ |
১৭। | গোল্ডেন আই | পিয়ার্স ব্রসনান, শন বিন | মার্টিন ক্যাম্পবেল | ১৩ নভেম্বর, ১৯৯৫ |
১৮। | টুমরো নেভার ডাইস | পির্য়াস ব্রসনান, জনাথন প্রাইস | রজার স্পটিশউড | ১২ ডিসেম্বর, ১৯৯৭ |
১৯। | দ্য ওয়ার্ল্ড ইজ নট এনাফ | পির্য়াস ব্রসনান, সোফি মার্সিও | মাইকেল এ্যাপটেড | ৮ নভেম্বর, ১৯৯৯ |
২০। | ডাই এনাদার ডে | পিয়ার্স ব্রসনান, হ্যালি বেরি | লি তামাহোরি | ২০ নভেম্বর, ২০০২ |
২১। | ক্যাসিনো রয়েল | ড্যানিয়েল ক্রেইগ, ইভা গ্রিন | মার্টিন ক্যাম্পবেল | ১৪ নভেম্বর, ২০০৬ |
২২। | কোয়ান্টাম অব সোলেজ | ড্যানিয়েল ক্রেইগ, ওল্গা কুরিলেঙ্কো | মার্ক ফরস্টার | ২৯ অক্টোবর, ২০০৮ |
২৩। | স্কাইফল | ড্যানিয়েল ক্রেইগ, নাওমি হ্যারিস, জুডি ডেঞ্চ, রেফ ফাইঞ্জ, অ্যালবার্ট ফিনি, বেরেনিস মার্লো, হাভিয়ের বারদেম | স্যাম মেন্ডেজ | ২৬ অক্টোবর, ২০১২ |
২৪। | স্পেক্টার | ড্যানিয়েল ক্রেইগ, নাওমি হ্যারিস, জুডি ডেঞ্চ, রেফ ফাইঞ্জ, মনিকা বেলুচ্চি, ক্রিস্টফ ভালৎজ | স্যাম মেন্ডেজ | ২৬ অক্টোবর, ২০১৫ |
১৯৬২ সালে সিনেমা হিসেবে জেমস বন্ড প্রথম চলচ্চিত্রায়ণ করা হয়। সেখানে বন্ড গোয়েন্দা বিভাগের একজন প্রাক্তন গুপ্তচর হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন। ড. নো ছবিতে তাকে ৭.৬৬ মিলিমিটার ওয়ালদার পিপিকে পিস্তলকে বেরেতা অটোমেটিক পিস্তলের পরিবর্তে দেখা যায়। যেখানে ০০৭ বাঁধা দিয়েছিলেন যা তিনি দীর্ঘ ১০ বছর ব্যবহার করেছেন বলে দাবী করেন।
চলচ্চিত্র ও পুস্তকসহ বন্ডকে অত্যন্ত বুদ্ধিমান এবং উচ্চ শিক্ষিত হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। গোল্ডফিঙ্গার ছবিতে তিনি হিসেব কষে দেখিয়েছেন যে স্বর্ণ পরিবহনের জন্য কতগুলো ট্রাকের প্রয়োজন পড়তে পারে। ইউ লাইভ টুয়াইস ছবিতে জেমস বন্ড ক্যাম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহজাত ভাষা প্রয়োগ করেছেন। দ্য স্পাই হু লাভড্ মি ছবিতে তাকে ক্যাম্ব্রিজের স্নাতক হিসেবে দেখানো হয়েছে। টুমরো নেভার ডাইজ ছবিতে বন্ডকে ড্যানিশ ভাষা শেখার জন্য অক্সফোর্ডে প্রেরণ করা হয়। ফ্লেমিংয়ের উপন্যাস, চলচ্চিত্র এবং ফ্লেমিংয়ের মৃত্যু পরবর্তীকালে রচিত উপন্যাসগুলোয় জেমস বন্ডকে বিভিন্ন ভাষায় কথা বলতে দেখা যায়। জার্মান, ফ্রেঞ্চ, রাশিয়ান এবং জাপানী ভাষায় তাকে কথা বলতে দেখা যায়।
কাল্পনিক জীবনীগ্রন্থে জেমস বন্ডকে ফিলিপ জোসে ফার্মার নামীয় লেখক কর্তৃক ওল্ড নিউটন গোত্রের বলে অভিহিত করেছেন। এ গোত্রটি টারজান এলাইভ, ডক স্যাভেজ-সহ বিভিন্ন কল্প কাহিনীর ন্যায় জেমস বন্ডকে জনপ্রিয় নায়ক ও বীর হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে।[১৩]