জেমস হ্যাডলি চেজ | |
---|---|
জন্ম | রেনে লজ, ব্রাবাজন রেমন্ড ২৪ ডিসেম্বর ১৯০৬ লন্ডন, ইংল্যান্ড |
মৃত্যু | ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫ সুইজারল্যান্ড | (বয়স ৭৮)
ছদ্মনাম | জেমস এল. ডচার্টি রেমন্ড মার্শাল আর. রেমন্ড এম্ব্রস গ্র্যান্ট |
পেশা | ঔপন্যাসিক |
ভাষা | ইংরেজি |
জাতীয়তা | ইংরেজ |
ধরন | ক্রাইম কল্পকাহিনীর, রহস্য, থ্রিলার, গোয়েন্দ কাহিনী |
সাহিত্য আন্দোলন | গোয়েন্দা কল্পকাহিনীর স্বর্ণযুগ |
দাম্পত্যসঙ্গী | সিলভিয়া রে (১৯৩২–১৯৮৫) |
সন্তান | ১ জন |
স্বাক্ষর |
জেমস হ্যাডলি চেজ (২৪ ডিসেম্বর ১৯০৬ – ৬ ফ্রেব্রুয়ারি ১৯৮৫) [১] একজন ইংরেজ লেখক। জন্মের পর তার নাম রাখা হয় রেনে লজ ব্রাবাজন রেমন্ড, তবে তিনি তার বিভিন্ন ছদ্ম নামে বেশি পরিচিত। যেমন: জেমস হ্যাডলি চেজ, জেমস এল. ডচার্টি, রেমন্ড মার্শাল, আর. রেমন্ড, এবং এ্যাম্ব্রস গ্যান্ট। তিনি ইংরেজি সাহিত্যির একজন অন্যতম পরিচিত থ্রিলার লেখক। তার লেখা গ্রন্থ ‘দ্যা ক্যানন অব দ্যা চেজ’ তাকে ইউরোপের থ্রিলার কাহিনীর রাজা হিসাবে স্বীকৃতি এনে দেয়।[২] জেমস সমগ্র বিশ্বে বেস্ট সেলার লেখকদের অন্যতম। তার লেখা ৫০ টি বইয়ের গল্প থেকে চলচ্চিত্র তৈরী করা হয়েছে।[৩]
জেমস হ্যাডলি চেজ ২৪ ডিসেম্বর ১৯০৬ সালে লন্ডনে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবা কর্ণেল ফ্রান্সিস রেমন্ড ছিলেন ব্রিটিশ ঔপনিবেসিক ভারতের সেনাবাহিনীর একজন ভেটেরেনারি সার্জন। জেমস হ্যাডলি তার বাবার ইচ্ছায় কিংস স্কুল, রোচেষ্টারে পড়াশুনা করেন। তিনি ১৮ বছর বয়সে গৃহত্যাগ করেন। ১৯৩২ সালে তিনি বিয়ে করেন সিলভিয়া রে নামের এক ইংরেজ তরুনীকে। ১৯৫৬ সালে তারা ফ্রান্সে চলে আসেন। ১৯৬৯ সালে তারা সুইজারল্যান্ডের লেক জেনেভার তীরে ছো্ট্ট শহর করসিয়া্ক্সে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জেমস হ্যাডলি চেজ মিত্র বাহিনীর পক্ষে যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। ব্রিটিশ রাজকীয় বিমান বাহিনীতে তার পদবী ছিল স্ক্রোয়ার্ডন লিডার। তিনি রাজকীয় বিমান বাহিনীর জার্নালের একজন সম্পাদক ছিলেন। যুদ্ধের পর এই জার্নালে প্রকাশিত তার কিছু গল্প বই আকারে প্রকাশিত হয়।[৪]
বাড়ী ছাড়ার পর তিনি প্রথমে শুরু করেন বই বিক্রেতার কাজ। তিনি সে সময়ে ‘শিশু-কিশোরদের এনসাইক্লোপিডিয়া’ বিক্রি করতেন। বই বিক্রির পাশাপাশি তিনি একটি পুস্তক প্রকাশনা কোম্পানিতেও চাকরি করতেন। ফটোগ্রাফিতে তার বিশেষ দক্ষতা ছিল। উচ্চাঙ্গ সংগীত এবং মঞ্চ নাটকে তার আগ্রহ ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯২৯ থেকে ১৯৩৯ সালের অর্থনৈতিক মন্দার ফলে ঠিক প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে শিকাগো গ্যাংস্টার নামে এক অপরাধি গোষ্ঠির উত্থান হয়। জেমস এই সময়ে উপলব্ধি করেন যে পাঠকদের মধ্যে গ্যাংস্টারদের নিয়ে গল্পের প্রচুর চাহিদা আছে। এ সময়ে তিনি জেমস কেনস এর লেখা ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত ‘পোষ্টম্যান অলয়েজ রিংস টুআইজ’ লেখাটি পড়েন। আরো কিছু লেখা এবং একটি ‘গালি অভিধান’ এর সাহায্য নিয়ে তিনি লেখেন ‘নো অর্কিড ফর মিস ব্লানডিস’। ছয়টি সাপ্তাহিক ছুটির দিনে লিখে তিনি সম্পূর্ণ লেখাটি শেষ করেন। বইটি প্রকাশিত হবার পর বিপুল জনপ্রিয়তা পায় এবং দশকের সেরা বিক্রিত গ্রন্থ হিসাবে স্বীকৃতি পায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি রাজকীয় বিমানবাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করেন। চেজ এই সময বিমান বাহিনীর জার্নাল সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন। এই জার্নালেই প্রকাশিত হয় তার ব্যাতিক্রমি একটি ছোট গল্প, ”দি মিরর ইন রুম টুইন্টি টু’’ এই লেখায় তিনি অপরাধ কাহিনীর বাইরে কিছু নিয়ে লেখার পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন।
বিশ্বযুদ্ধ চলাকালিন সময়ে তার পরিচয় হয় চেজ মেরিল পানিতের সাথে। তিনি চেজকে একটি আমেরিকান গালি অভিধান এবং আন্ডার ওয়ার্ল্ড দলগুলির একটি বিস্তারিত ম্যাপ এবং বাস্তাব ঘটনার উপর ভিত্তি করে কিছু বই দিয়েছিলেন। এসব উপকরণ চেজকে মার্কিন পটভূমিতে লেখা তার উপন্যাসগুলির জন্য রসদ যুগিয়েছিল। ১৯৪১ সালে প্রকাশিত একটি লেখা ‘মিস কালাহান কামস টু গ্রিফ’ অশ্লিলতার দায়ে আদালত কর্তৃক নিষিদ্ধ হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষে চেজ কিছুটা ভিন্নধারনের লেখার দিকে মনযোগী হন। তিনি আমেরিকান গ্যাংস্টারদের গল্প থেকে সরে এসে লন্ডনের আন্ডার ওয়ার্ল্ড এর গল্প লেখা শুরু করেন। লেক জেনেভার তীরে ছো্ট্ট শহর করসিয়া্ক্সে ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫ সালে ৭৮ বয়সে তিনি মারা যান।[৫]