ব্যক্তিগত তথ্য | |||
---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | জেমি রিচার্ড ভার্ডি[১] | ||
জন্ম | ১১ জানুয়ারি ১৯৮৭ | ||
জন্ম স্থান | শেফিল্ড, ইংল্যান্ড | ||
উচ্চতা | ৫ ফুট ১০ ইঞ্চি (১.৭৮ মিটার)[২] | ||
মাঠে অবস্থান | স্ট্রাইকার | ||
ক্লাবের তথ্য | |||
বর্তমান দল | লিচেস্টার সিটি | ||
জার্সি নম্বর | ৯ | ||
যুব পর্যায় | |||
২০০২ | শেফিল্ড ওয়েডনেসডে ফুটবল ক্লাব | ||
২০০৩–২০০৭ | স্টকব্রীজ পার্ক স্টীলস ফুটবল ক্লাব | ||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | |||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) |
২০০৭-২০১০ | স্টকব্রীজ পার্ক স্টীলস ফুটবল ক্লাব | ১০৭ | (৬৬) |
২০১০-২০১১ | হেলিফ্যাক্স টাউন ফুটবল ক্লাব | ৩৭ | (২৭) |
২০১১-২০১২ | ফ্লীটউড টাউন ফুটবল ক্লাব | ৩৬ | (৩১) |
২০১২- | লিচেস্টার সিটি | ১১২ | (৩৯) |
জাতীয় দল‡ | |||
২০১৫– | ইংল্যান্ড | ৪ | (০) |
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ১২:৩৫, ৬-ই ডিসেম্বর, ২০১৫ (UTC) তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক। ‡ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা 21:51, ১২-ই অক্টোবর, ২০১৫ (UTC) তারিখ অনুযায়ী সঠিক। |
জেমি রিচার্ড ভার্ডি (জন্ম ১১-ই জানুয়ারী, ১৯৮৭) একজন পেশাদার ইংরেজ ফুটবল খেলোয়াড় যিনি লিচেস্টার সিটি ও ইংল্যান্ডের জন্য ফুটবল খেলে থাকেন। তিনি মুলতঃ একজন স্ট্রাইকার হিসেবে খেলেন, কিন্তু মাঝে মাঝে তাকে উইঙ্গার হিসেবে খেলতেও দেখা যায়।
১৬ বছর বয়সে শেফিল্ড ওয়েডনেসডে দ্বারা রিলিজপ্রাপ্ত হওয়ার পর, ২০০৭ সালে মূল একাদশে যায়গা করে নেওয়া এবং নর্দার্ন প্রিমিয়ার লিগের দল হেলিফ্যাক্স টাউনে ২০১০ সালে যোগ দেওয়ার পূর্বে ভার্ডি তার সিনিয়র ক্যারিয়ারের সুচনা করেন স্টকব্রীজ পার্ক স্টীলস নামক ক্লাবে। প্রথম সীজনেই ২৬ গোল করে তিনি ক্লাবের "প্লেয়ার্স প্লেয়ার অব দ্যা ইয়ার" পুরস্কার নিজের করে নেন। এরপর ২০১১ সালের আগস্ট মাসে কনফারেন্স প্রিমিয়ার লিগের দল ফ্লীটউড টাউনে যোগ দেন। এবং তার নতুন ক্লাবের হয়ে প্রথম সীজনেই ৩১-টি লিগ গোল করে ক্লাবকে ডিভিশান জিতিয়ে দেন এবং দলের বর্ষসেরা পুরস্কারটি নিজের করে নেন।
ভার্ডি ২০১২ সালের মে মাসে ১ মিলিয়ন পাউন্ডের (১০ লক্ষ পাউন্ড বা প্রায় ১২ কোটি টাকা) নন-লিগ রেকর্ড ট্রান্সফার ফী-এর মাধ্যমে ফুটবল লিগ চ্যাম্পিয়নশীপের ক্লাব লিচেস্টার সিটিতে যোগ দেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে ক্লাব চ্যাম্পিয়নশীপ জেতার পর তিনি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে টানা ১১ ম্যাচে গোল করার মাধ্যমে তিনি রুড ফন নিস্টালরয়ের করা রেকর্ড (টানা ১০ প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচে গোল করা) ভাঙেন। এই বছরই তিনি জাতীয় দলের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলেন।
ভার্ডি দক্ষিণ ইয়র্কশায়ারের শেফিল্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার ক্যারিয়ারের সুচনা করেন স্টকব্রীজ পার্ক স্টীলসের যুবকদলের সাথে, ১৬ বছর বয়সে শেফিলদ ওয়েডনেসডে দ্বারা রিলিজপ্রাপ্ত হওয়ার পর।[৩] তিনি রিজার্ভ দলে খেলার মাধ্যমে শুরু করেন এবং পরবর্তীতে দলীয় ম্যানেজার গ্যারী মারোর তত্ত্বাবধানে ২০০৭ সালে মুলদলে খেলার সুযোগ করে নেন।[৪] এখানে তার সাপ্তাহিক বেতন ছিল ৩০ পাউন্ড।[৫] তার অসাধারন খেলার প্রদর্শন দেখে তার উপর ফুটবল লিগের অনেক দলের নজর পড়ে এবং ২০০৯ সালে তিনি ক্রু আলেক্সান্দ্রাতে এক সপ্তাহের ট্রায়ালে ছিলেন।[৬] কিন্তু কোনো ত্রান্সফার চুক্তি হয়নি। পরবর্তীতে তিনি রোদারহ্যাম ইউনাইটেডের একটি স্বল্প মেয়াদী চুক্তি নাকচ করেন।[৭]
হেলিফ্যাক্স টাউনের ম্যানেজার নীল এস্পিন ২০১০ সালের জুন মাসে ১৫০০০ পাউন্ডের বিনিময়ে ভার্ডিকে সাইন করান। [৮][৯] হোম গ্রাউন্ডে বাক্সটন ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষে তার অভিষেক হয় এবং দলের হয়ে জয়সুচক গোল করে ২-১ এ দলকে জয় এনে দেন।[১০] ভার্ডি একটি সফল সিজন কাটান ক্লাবের টপ স্কোরার হন ২৬ গোল করে, এবং প্ল্যায়ার্স প্ল্যায়ার অব দ্যা সীজন নির্বাচিত হন। সিজনের শেষের দিকে তিনি এক গোলের কারণে হ্যাট্রিকের হ্যাট্রিক করার সুযোগ হাতছারা করেন নান্টউইচ টাউনের বিপক্ষে।[১১] তার গোল ক্লাবকে ২০১০-১১ সীজনে নর্দার্ন প্রিমিয়ার লিগ জিততে সহায়তা করে।[১২] ২০১১-১২ সিজনে ভার্ডি হেলিফ্যাক্সের প্রথম ৪ ম্যাচে ৩ গোল করেন।
হেলিফ্যাক্সে একবছরের কিছু বেশি সময় খেলার পর, এবং ২০১১-১২ সীজনে প্রথম ৪ ম্যাচে ৩ গোল করার পর, ভার্ডি কনফারেন্স প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব ফ্লীটউড টাউনে অপ্রকাশিত ফী-র মাধ্যমে যোগ দেন।[১৩] একইদিনে তিনি তার অভিষেক ম্যাচ খেলেন ইয়র্ক সিটির বিপক্ষে যা গোলশূন্য ড্র ছিল।[১৪] তিনি তার নতুন ক্লাবের হয়ে প্রথম গোলটি করেন তৃতীয় ম্যাচে ৩-রা সেপ্টেম্বর কেটেরিং টাউন ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষেএওয়ে ম্যাচে, তাও দুই গোল করে দলকে ৩-২ জয় এনে দেন। পরের সপ্তাহে তিনি আবার জোড়া গোল করেন ফ্লীটউডের ঘরের মাঠে গেইটসহেড ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষে, যার মাঝে এক গোল ছিল অতিরিক্ত সময়ের গোল। তিনি টানা তিন ম্যাচেই জোড়া গোল করার অধিকারী হন যখন তিনি এওয়ে ম্যাচে এবসফ্লীট ইউনাইটেড ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষে জোড়া গোল করে দলকে ৩-১ গোলের ব্যাবধানে জয় এনে দেন। পরবর্তী একমাস তিনি গোল পাননি। এবং পুনরায় ১৮-ই অক্টোবর আলফ্রেটন টাউন ফুটবল ক্লাবের বিপক্ষে হ্যাট্রিক করে তার গোলক্ষরা কাটান।[১৫] ২০-ই সেপ্টেম্বর, তাকে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠের বাইরে যেতে হয়, এটি এমন এক ম্যাচ ছিল যেখানে উভয় দল এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে দশজন খেলোয়াড় নিয়ে খেলেছিল।[১৬] হ্যাট্রিক করার চারদিন পর, ভার্ডি বাথ সিটির বিপক্ষে আরও দুইগোল করেন এবং দলকে ৪-১ গোলে জয় এনে দেন। যার মাধ্যমে ফ্লীটউড পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকা দল র্যাক্সহ্যাম ফুটবল ক্লাব থেকে মাত্র দুই পয়েন্টের ব্যাবধানে দ্বিতীয়তে অবস্থান করছিল।[১৭]
১২-ই নভেম্বর এফ.এ.কাপের প্রথম রাউন্ডে লিগ ওয়ানের দল উইকোম্ব ওয়ান্ডারার্সের বিপক্ষে দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন এবং ২-০ তে জয় পান।[১৮] পনের দিন পর, গেটসহেডের বিপক্ষে তার গোলের মাধ্যমে তিনি তার টানা ছয় ম্যাচ গোল করেন (১০ গোল);[১৯] এবং কনফারেন্স প্রিমিয়ারের নভেম্বরের মাসসেরা খেলোয়াড় পুরস্কার পান।[২০] ১৩-ই ডিসেম্বর, ক্যাপিটাল ওয়ান কাপে ইওভিল টাউনের বিপক্ষে অতিরিক্ত সময়ে গোল করলে, ফ্লিটউড কাপের দ্বিতীয় লেগে প্রতিপক্ষকে পরাস্ত করে।[২১]
১-লা জানুয়ারী, ২০১২, ভার্ডি সাউথপোর্টের বিপক্ষে ৬-০ গোলের জয়ের খেলায় জোড়া গোল করেন। ছয়দিন পর, কাপের তৃতীয় রাউন্ডে তাদের স্থানীয় প্রতিপক্ষ ব্ল্যাকপুলের কাছে নিজেদের ঘরের মাঠে ৫-১ গোলে পরাস্ত হয়।[২২] ম্যাচের পর, ব্ল্যাকপুল ম্যানেজার জেমির জন্য ক্লাবকে ৭৫০,০০০ পাউন্ডের অফার দেয়, যা ক্লাব নাকচ করে দেয়, বিনিময়ে ১ মিলিয়ন পাউন্ড চায় এই মর্মে যে জেমিকে ট্রান্সফারের পর পুনরায় ফ্লীটউডে লোনে খেলতে দেওয়া হবে।[২৩] নতুন বছরের প্রথম ৪ ম্যাচেই তিনি মোট ৬ গোলে করেন।[১৯] ২১-ই ফেব্রুয়ারি, তিনি সীজনের দ্বিতীয় হ্যাট্রিক করেন এবসফ্লীট ইউনাইটেডের বিপক্ষে ৬-২ গোলের জয়ে। যে জয় ফ্লীটউডকে পয়েন্ট টেবিলে র্যাক্সহ্যামের থেকে ২ পয়েন্ট এগিয়ে নেয় এবং তারা তাবিলের শীর্ষে পৌছে যায়।[২৪] জেমি ১৩-ই এপ্রিল লিঙ্কন টাউনের বিপক্ষে ২-২ গোলের ড্রয়ে জোড়া গোল করেন;[২৫] পরের দিন র্যাক্সহ্যাম ড্র করে গ্রিমসবি টাউনের বিপক্ষে, যা ফ্লিটউডকে কনফারেন্স চ্যাম্পিয়ন করে দেয় এবং তারা তাদের ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মত লিগ ওয়ানে উত্তীর্ণ হয়।[২৬] জেমি ভার্ডি সিজন শেষ করেন ৩১ লিগ গোল করে কনফারেন্স প্রিমিয়ারের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে।[২৭]
২০১২ সালের ১৭-ই মে ঘোষণা করা হয় যে, ২০১২-১৩ সীজনে জেমি ভার্ডিকে ১ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে লিচেস্টার সিটি সাইন করাচ্ছে, যা স্বয়ং একটি রেকর্ড ট্রান্সফার ফী একজন নন-লিগ প্লেয়ারকে কেনার জন্য, যা শর্ত সাপেক্ষে ১.৭ মিলিয়ন পাউন্ড হতে পারে।[২৮] পরের দিনই ভার্ডি ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত তিন বছরের চুক্তি সই করেন।[২৯] ১৪-ই আগস্ট টরকাই ইউনাইটেদের বিপক্ষে লিগ কাপে তিনি অভিষেক ম্যাচ খেলেন। তিনি পূর্ণ সময়ই ম্যাচটি খেলেন এবং ৪-০ গোলের জয়ে তিনি শেষ গোলটি করেন হেডের মাধ্যমে।[৩০] চারদিন পর কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে লিচেস্টারের হয়ে ফুটবল লিগের অভিষেক ম্যাচ খেলেন পিটারবোরো ইউনাইটেডের বিপক্ষে এবুং ২-০ গোলের জয়ের ম্যাচে এন্ডি কিংকে একটি এসিস্ট করেন।[৩১] তিনি তার প্রথম লিগ গোল করেন ২৫-ই আগস্ট ব্ল্যাকবার্ন রোভার্সের বিপক্ষে ২-১ গোলে এওয়ে ডিফিটের ম্যাচে। সেপ্টেম্বরে তিনি বার্নলে এবং মিডলসবোরো ফুটবল ক্লাব|মিডলসবোরোর]] বিপক্ষে ২-১ গোলের জয়ে দুইটি জয়সুচক গোলই করেন।[১৯] লিচেস্টারে ভার্ডির প্রথম সীজন তেমন ভালো কাটেনি তার নিজের ফর্মহীনতার কারণে, এমনকি কিছু সিটি ফ্যান তো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে তাকে নিয়ে ব্যাঙ্গ করাও শুরু করে। এমনকি তিনি ক্লাব ছেরে দেওয়ার চিন্তাভাবনাও করেন। কিন্তু ক্লাব ম্যানেজার নাইজেল পিয়ারসন এবং সহকারী ম্যানেজার ক্রেইগ শ্যাক্সপিয়ার তাকে ক্লাবের সাথে থেকে খেলে যাওয়ার জন্য রাজি করান।[৩২]
ক্লাব | সীজন | লিগ | এফএ কাপ | লিগ কাপ | অন্যান্য | সর্বমোট | ||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
ডিভিশন | ম্যাচ | গোল | ম্যাচ | গোল | ম্যাচ | গোল | ম্যাচ | গোল | ম্যাচ | গোল | ||
হেলিফ্যাক্স টাউন | ২০১০-১১[৩৩] | নর্দার্ন প্রিমিয়ার লিগ | ৩৩ | ২৪ | — | — | ৪ | ২ | ৩৭ | ২৬ | ||
২০১১-১২[৩৪] | কনফারেন্স নর্থ | ৪ | ৩ | — | — | — | ৪ | ৩ | ||||
মোট | ৩৭ | ২৭ | ০ | ০ | ০ | ০ | ৪ | ২ | ৪১ | ২৯ | ||
ফ্লীটউড টাউন | ২০১১-১২[৩৪] | কনফারেন্স প্রিমিয়ার | ৩৬ | ৩১ | ৬ | ৩ | — | ০ | ০ | ৪২ | ৩৪ | |
লিচেস্টার সিটি | ২০১২-১৩[৩৫] | ফুটবল লিগ চ্যাম্পিয়নশিপ | ২৬ | ৪ | ২ | ০ | ১ | ১ | ০ | ০ | ২৯ | ৫ |
২০১৩-১৪[৩৬] | ৩৭ | ১৬ | ১ | ০ | ৩ | ০ | — | ৪১ | ১৬ | |||
২০১৪-১৫[৩৭] | প্রিমিয়ার লিগ | ৩৪ | ৫ | ২ | ০ | ০ | ০ | — | ৩৬ | ৫ | ||
২০১৫-১৬[৩৮] | ১৫ | ১৪ | ০ | ০ | ১ | ০ | — | ১৬ | ১৪ | |||
মোট | ১১২ | ৩৯ | ৫ | ০ | ৫ | ১ | ০ | ০ | ১২২ | ৪০ | ||
ক্যারিয়ার সর্বমোট | ১৮৫ | ৯৭ | ১১ | ৩ | ৫ | ১ | ৪ | ২ | ২০৯ | ১০৩ |
জাতীয় দল | সাল | ম্যাচ | গোল |
---|---|---|---|
ইংল্যান্ড | ২০১৫ | ৪ | ০ |
মোট | ৪ | ০ |