জৈমিনি বা জৈমিনী[১] ছিলেন একজন প্রাচীন ভারতীয় ঋষি। তিনি ঋষি শ্রীকৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাসের শিষ্য এবং ভারতীয় দর্শনের মীমাংসা শাখার এক মহান দার্শনিক।
জৈমিনির খ্যাতি প্রধানত তার পূর্ব মীমাংসা সূত্র গ্রন্থটির জন্য। এই গ্রন্থের অপর নাম কর্ম মীমাংসা। এই গ্রন্থে বৈদিক অনুশাসনগুলির প্রকৃতি আলোচনা করা হয়েছে। প্রাচীন ভারতীয় দর্শনের ষড় দর্শন বিভাগের পূর্ব মীমাংসা শাখাটির উদ্ভব এই গ্রন্থ থেকেই।
গ্রন্থটির রচনাকাল খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দী। এতে প্রায় ৩,০০০ সূত্র রয়েছে। এই বইতে কর্ম বা অনুষ্ঠান ও ধর্ম বা ধর্মীয় কর্তব্যের উপর ভিত্তি করে বেদ ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সঙ্গে প্রাচীন উপনিষদ্গুলির টীকাও রয়েছে। জৈমিনীর মীমাংসা তার সময়ে প্রচলিত অতীন্দ্রীয়বাদী বেদান্ত ধারার বিপরীতমুখী একটি অনুষ্ঠান-কেন্দ্রিক ভাবান্দোলন। খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দের কোনো এক সময়ে শবর পূর্ব মীমাংসার উপর একটি টীকাগ্রন্থ রচনা করেন।[২]
জৈমিনি ভারতীয় মহাকাব্য মহাভারত অবলম্বনে জৈমিনি-ভারত নামে একটি মহাকাব্য রচনা করেন। এই কাব্যের "অশ্বমেধ পর্ব"টি বিখ্যাত।[৩]
জৈমিনি সূত্র বা উপদেশ সূত্র "জৈমিনি জ্যোতিষ"-এর উৎস। এ বইটি আসলে বৃহৎ পরাশর হোর শাস্ত্র-এর টীকা।[৪]
ঋষি শ্রীকৃষ্ণদ্বৈপায়ন বেদব্যাস বেদকে চার ভাগে ভাগ করে তার চার শিষ্যের (পৈল, বৈশম্পায়ন, জৈমিনি ও সুমন্তু) এক এক জনকে এক একটি ভাগ শিক্ষা দেন। জৈমিনি সামবেদ শিক্ষা করেছিলেন।[৫]
মহাপুরাণ মার্কণ্ডেয় পুরাণ ঋষি জৈমিনি ও মার্কণ্ডেয়ের মধ্যে কথোপকথনের আকারে লিখিত।[৬]