জোয়ান ফুস্টার | |
---|---|
জোয়ান ফুস্টার ই ওরটেল্স | |
জন্ম | |
মৃত্যু | ২১ জুন ১৯৯২ সিউকা | (বয়স ৬৯)
পেশা | লেখক |
উল্লেখযোগ্য কর্ম | নোসালত্রেস, এলস ভ্যালেন্সিয়ানস |
জোয়ান ফুস্টার ই ওরটেল্স (ভ্যালেন্সিয়া উচ্চারণ: [ʒuˈam fusˈteɾ j oɾˈteʎs]) (সিউকা, ২৩শে নভেম্বর, ১৯২২ –সিউকা, ২১শে জুন, ১৯৯২) একজন স্প্যানিশ লেখক ছিলেন, যিনি বস্তুত কাতালান ভাষায়ই নানা লেখা লিখেছিলেন।
তিনি ভ্যালেন্সিয়ার নিকট সিউকা গ্রামে একটি সচ্ছল মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতামাতা উভয়েই ছিলেন ধর্মনিষ্ঠ রোমান ক্যাথলিক ও কার্লবাদী ছিলেন। তার পিতা ছিলেন বিখ্যাত স্থানীয় ভাস্কর্যশিল্পী এবং তিনি মূলত ধর্মীয় মূর্তিই নির্মাণ করতেন। ১৯৪১ সালে তিনি ফ্যাসিবাদী সংস্থা ফ্যালাঞ্জে যোগদান করেন তবে পরে তিনি এই অন্তর্ভুক্তি ত্যাগ করেন।[১] ১৯৪৭ সাল ফুস্টার আইনবিভাগ হতে ডিগ্রীলাভ করেন এবং কাতালান দর্শনের ওপর ডক্টরেট ডিগ্রীলাভ করেন (১৯৮৫)। ১৯৪৬ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি জোস আলবির সাথে ভার্ব ম্যাগাজিনের উপ-সম্পাদক ছিলেন। তার প্রথম বই, যা কবিতার বই ছিল, হল এসক্রিৎ পার আল সাইলেন্সিয়া ("নিরবতার জন্য লেখা") (১৯৫৪) দাঁড়িয়ে যায়। ১৯৫২ সালে তিনি ভ্যালেন্সিয়ার লিভান্তেতে একটি প্রেসের সাথে কাজ শুরু করেন। সম্ভবত এটি তার বিশিষ্ট মতের মধ্যে একটি ছিল। তিনি ডেস্টিনোতেও এর সাথেই চালিয়ে যান এবং লাঁ ভ্যাংগুয়ার্ডিয়াতেও।
এল ডেসক্রেডিট দ্য লাঁ রিয়ালিতাত ("বাস্তবতার খারাপ দিক") (১৯৫৫) এর মাধ্যমে রচনাবিদ হিসেবে তার বিখ্যাত কর্মজীবন শুরু করেন। তবে তিনি বিশাল বিষয়ভিত্তিক কাজের ফলেই বিখ্যাত হন, যার ব্যঙ্গকারী শৈলী বিশেষণ তার সুনির্দিষ্ট ব্যবহারের জন্য ছিল সুপরিচিত।[২][৩] তার কাজের আরেক দিক হল তার পাণ্ডিত্য এবং গল্পবলার নৈপুণ্য এবং তিনি তার সাহিত্যিক অবদান বজায় রাখেন এবং সংহিতা রচনায় আরো এগিয়ে যান। ১৯৬২ সালে তার নোসালত্রেস এলস ভ্যালেন্সিয়ানস ("আমরা, ভ্যালেন্সীয়রা")র প্রকাশ ভ্যালেন্সিয় বিষয়বস্তুর প্রতি তার ভালবাসাকে আরো সুচারুভাবে চিত্রিত করে। এই বইটি ও কোয়েস্তিও দ্য নোমস ("নাম বিষয়ক") এবং এল পাইস ভ্যালেন্সিয়ানো ("ভ্যালেন্সিয়ান দেশ") ছিল ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং জাতীয় পরিচয়ের সমস্যা বিষয়ক। এই সবকিছুই দেখা হয়েছিল ভ্যালেন্সিয় দৃষ্টিভঙ্গি থেকে।
রাইমন (১৯৬৪), কমবাস্টিবল পার আ ফলেস ("ফলেসের জন্য দাহ্য") (১৯৬৭) এবং আরা ও মাই ("এখন কিংবা কখনও না") (১৯৮১) বইগুলোর মাধ্যমে এই বিষয়কে আরো এগিয়ে নিয়ে যান। এছাড়াও তিনি আরো প্রচুর পড়াশোনা করেন এবং জ্ঞানমূলক ঐতিহাসিক ও আত্মজীবনীমূলক নিবন্ধ রচনা করেন। তার এ সমস্ত কাজ ওব্রেস কমপ্লিট্স ("সম্পূর্ণ কাজ") নামের প্রথম ও তৃতীয় ভলিউমে স্থান পেয়েছে। এর দ্বিতীয় ভলিউমে রয়েছে তার রচনা ডায়েরী ("দৈনন্দিন কাজ") (১৯৫২-১৯৬০),
রচনা লেখার মধ্যেই তিনি ফিগুয়েরিস দেল টেম্পস ("সময়ের ব্যক্তিত্ব"), জার্ট অ্যাওয়ার্ড (১৯৫৭), জুডিসিস ফাইনালস ("শেষ বিচার") (১৯৬০), ডিকশনারি পার আ অসিওসস ("অলসদের জন্য অভিধান") (১৯৬৪), কজার-সে ডি'এসপেরার ("একজনকে অপেক্ষা করায়") (১৯৬৫), এল'হোম, মেজুরা দ্য তোতেস লেস কোসেস ("মানুষ, সবকিছুরই গণনা") (১৯৬৭) এবং অন্যান্য-সর্বদাই প্রাচীন মানবতার নৈতিক বার্তাবহন করে এবং পাঠককে নৈতিকতার ও ফরাসি পুনর্গঠনকারীর কাছে নিয়ে আসে। ইতিহাস, সমালোচনা এবং সাহিত্যিক উৎপাদন ছাড়াও তিনি লাঁ পোয়েসিয়া কাতালানা ("কাতালান কাব্য") (১৯৫৬), পোয়েতস, মরিসকস ই ক্যাপেলানস ("কবি, নিষ্ফল এবং আরোগ্য") (১৯৬২), হেরেটিজিস, রিভোল্টেস ই সারমোনস ("বৈধর্ম্য, বিদ্রোহ এবং ধর্মানুশাসন") (১৯৬৮) এবং লিটারেচারা কাতালানা কনটেমপোরানিয়া ("সমসাময়িক কাতালান সাহিত্য") (১৯৭২) রচনা করেন। জোয়ান সালভাত-পাপাসেইট (১৯৬২), সালভাদর এসপ্রিউ (১৯৬৩) এবং জোসেপ প্লা (১৯৬৬) - এদের কাজের জন্য তিনটি ব্যায়বহুল প্রস্তাবনা একত্রে কোনত্রা এল নৌসেন্টিজম ("নৌসেন্টিজমের বিরুদ্ধে") (১৯৭৮) হিসেবে প্রকাশ পায়।
১৯৮৭ সালে তিনি তার কবিতাকে সংগ্রহউত্তর সেট লিব্রেস স্য ভার্সোস ("কাব্যের সাতটি বই") হিসেবে প্রকাশ করেন। তার সমস্ত পাঠ একত্রে লিব্রেস ই প্রবলেমস দেল রেনেজান্টিজম ("পুনর্জাগরণের বই ও ঝামেলা") (১৯৮৯) হিসেবে প্রকাশিত হয়। এগুলো ছিলে তার শেষ কয়েকবছরের গবেষণালব্ধ কাজের ফলাফল। ১৯৯৪ সালে তার ফুস্টার ইনএডিট ("অপ্রকাশিত ফুস্টার") এবং ফুস্টার সাবাটিক ("ফুস্টারের বিশ্রাম") কাজগুলো সম্পাদিত হয়।
নানা ধরনের ফিকশনমূলক কাহিনী লিখলেও তিনি মূলত তার রচনা, বিশেষত রাজনৈতিক লেখার জন্যই বিখ্যাত। তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল নোসালত্রেস এলস ভ্যালেন্সিয়ানস ("আমরা, ভ্যালেন্সিয়ানেরা") (১৯৬২) বইটি। অন্যান্য বিখ্যাত কাজগুলো হলঃ কোয়েস্তিও দ্য নোমস ("নাম বিষয়ক") এবং ডিকশনারি পার আ অসিওস ("অলসদের জন্য অভিধান") (১৯৬৩)। এগুলো কাতালান জাতীয়তাবাদমূলক বিখ্যাত লেখা। বিংশ শতকের শেষদিকে তিনি ভ্যালেন্সীয় জাতীয়তাবাদের বুদ্ধিজীবিপ্রধান হয়ে ওঠেন এবং পাইসোস কাতালানস উত্থাপনে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে যা কাতালান জাতীয়তাবাদী কর্তৃক প্রস্তাবিত কাতালান সাহিত্যের ঐক্যের কথা বলে। এইসব বইয়ে ফুস্টার দাবি করেন যে অন্যান্য কাতালান ভাষাভাষী অঞ্চলদের সাথে ভ্যালেন্সিয়ার সম্পর্ক উন্নতির কোন প্রয়োজন নেই যদি সেখানে ভ্যালেন্সিয়ার স্বায়ত্তশাসনতান্ত্রিক সংস্কৃতি পরিবর্তিত হয়। এভাবে তিনি কাতালান-ভিত্তিক সম্প্রদায়কে অস্তিত্বদান করেন।
এভাবেই ফুস্টার স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধ পরবর্তী কাতালান প্রজন্মের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক রচনাবিদ হয়ে উঠেছিলেন।[২]
তিনি প্রেমি ডি' অনর দ্য লেস লিয়েত্রেস কাতালানস রাইটার ("কাতালান সাহিত্যিক অ্যাওয়ার্ড") (১৯৭৫) লাভ করেন এবং ১৯৮৩ সালে মেদালা ডি'ওর দ্য লাঁ জেনারালিতাত দ্য কাতালুনিয়া ("কাতালোনিয়ার সাধারণের স্বর্ণপদক") পান। ১৯৮৪ সালে বার্সেলোনা বিশ্ববিদ্যালয় ও বার্সেলোনার স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডক্টর অনরিস কসা উপাধীতে ভূষিত করে। ১৯৮৬ সালে তিনি ভ্যালেন্সিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাহিত্যবিষয়ক অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন।
১১ই সেপ্টেম্বর, ১৯৮১ সালে তার বাড়িতে পরপর দুটি বোমা ফাটে[৪] যা তার পাঠাগার এবং সংগ্রহশালার মারাত্মক ক্ষতি করে। কাউকেই শাস্তি দেয়া যায়নি।[৫] তবে সকলেই বিশ্বাস করে যে ফুস্টারের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্থানের বিরুদ্ধে কাতালান-বিরোধীদেরই একটি অপপ্রচেষ্টা ছিল এটি।[৬][৭]