জোসেফ হেনরি

জোসেফ হেনরি
১ম সচিব স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিটিউশন
কাজের মেয়াদ
১৮৪৬ – ১৮৭৮
উত্তরসূরীস্পেন্সার ফুলারটন বেয়ার্ড
দ্বিতীয় জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমির সভাপতি
কাজের মেয়াদ
১৮৬৮ – ১৮৭৯
পূর্বসূরীআলেকজান্ডার ডালাস বাখ
উত্তরসূরীউইলিয়াম বার্টন রজার্স
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৭৯৭-১২-১৭)১৭ ডিসেম্বর ১৭৯৭
অলবানি, নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যুমে ১৩, ১৮৭৮(1878-05-13) (বয়স ৮০)
ওয়াশিংটন ডিসি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
জাতীয়তাআমেরিকান
দাম্পত্য সঙ্গীহ্যারিয়েট হেনরি আলেকজান্ডার
সন্তানউইলিয়াম আলেকজান্ডার (১৮৩২–১৮৬২)
মেরি অ্যানা (১৮৩৪–১৯০৩)
হেলেন লুইসা (১৮৩৬-১৮১২)
ক্যরোলাইন(১৮৩৯-১৯২০)
মাতৃশিক্ষায়তনঅলবানি একাডেমি
পরিচিতির কারণতড়িচ্চুম্বকীয় প্রবাহ-পরিবর্তন প্রতিহতকরণ বিষয়ে ধারণা প্রদান, বৈদ্যুতিক দোরঘণ্টার পূর্বসূরি আবিষ্কার ও বৈদ্যুতিক রিলে
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন
কর্মক্ষেত্রপদার্থবিজ্ঞান
প্রতিষ্ঠানসমূহঅলবানি একাডেমি
দি কলেজ অব নিউ জার্সি
স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউট
কলাম্বিয়ান কলেজ

জোসেফ হেনরি (১৭ ডিসেম্বর ১৭৯৭-১৩ মে ১৮৭৮) একজন মার্কিন বিজ্ঞানী ছিলেন, যিনি স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউটশনের প্রথম সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউটের পূর্বসূরি "ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর দ্য প্রমোশন অব সায়েন্স"-এর সচিব পদেও হেনরি দায়িত্ব পালন করেন। []জীবদ্দশায় হেনরি অত্যন্ত সমাদৃত হয়েছিলেন। তড়িচ্চুম্বক নির্মাণের সময় তিনি তড়িৎপরিবাহকের অভ্যন্তরে তড়িৎপ্রবাহের কোনরূপ পরিবর্তন প্রতিহতকরণ ধর্মের (Inductance বা ইনডাকটেন্স) তড়িচ্চুম্বকত্ব আবিষ্কার করেন। তিনি পারস্পরিক প্রবাহ-পরিবর্তন প্রতিহতকরণ ধর্ম (Mutual inductance) আবিষ্কার করেন (মাইকেল ফ্যারাডে-ও আলাদাভাবে এ ধর্ম আবিষ্কার করেন)। তবে ফ্যারাডে সর্বপ্রথম এ ধর্মের কথা প্রকাশ করায় তাকেই পারস্পরিক প্রবাহ-পরিবর্তন প্রতিহতকরণ ধর্মের জনকরূপে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। [][] হেনরি তড়িচ্চুম্বকের ব্যবহারিক কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখেন। তিনি ১৮৩১ বৈদ্যুতিক দোরঘণ্টার পূর্বসূরি যন্ত্র আবিষ্কার করেন, যেটি বৈদ্যুতিক তারের সাহায্যে দূর থেকে বাজানো হতো।[] এছাড়াও হেনরি ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দে বৈদ্যুতিক রিলে আবিষ্কার করেন। [] "ইনডাকটেন্স"-এর এসআই একক হেনরি তার সম্মানেই নামকরণ করা হয়েছে। স্যামুয়েল মোর্সস্যার চার্লস হুইটস্টোন তড়িচ্চুম্বকত্বের উপর করা হেনরির কাজের ভিত্তিতে বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ আবিষ্কারে ভূমিকা পালন করেন।

জীবনী

[সম্পাদনা]

নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের অলবানি শহরে স্কটিশ অভিবাসী অ্যান আলেকজান্ডার হেনরি ও উইলিয়াম হেনরির পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা শোচনীয় ছিল। হেনরির বয়স যখন অল্প, তখনই তার বাবা-মা মারা যান। বাবা মারা যাওয়ার পরে শৈশবের অবশিষ্ট সময় তিনি পিতামহীর সাথে নিউ ইয়র্কের গ্যালওয়ে শহরে বসবাস শুরু করেন। তিনি একটি বিদ্যালয়ে প্রাথমিক লেখাপড়া শুরু করেন, যার পরবর্তীতে নামকরণ করা হয় "জোসেফ হেনরি প্রাথমিক বিদ্যালয়।" বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম সমাপ্ত হওয়ার পর তিনি মুদি দোকানে কাজ করতেন। তেরো বছর বয়সে ঘড়িনির্মাতা ও রৌপ্যকার হিসেবে হেনরি কর্মজীবন শুরু করেন। রঙ্গমঞ্চ হেনরির প্রথম ভালোবাসা ছিল; আর তিনি পেশাগত জীবনে একজন অভিনেতা হওয়ার স্বপ্ন লালন করতেন। তবে ষোল বছর বয়সে "ব্যবহারিক দর্শনের উপর জনপ্রিয় ভাষণ" বইটি পড়ে তিনি বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহী হন। ১৮১৯ সালে তিনি অলবানি একাডেমিতে ভর্তি হন, যেখানে তিনি বিনামূল্যে শিক্ষা লাভ করেন। কিন্তু তিনি এতই দরিদ্র ছিলেন, গৃহশিক্ষকতা করে তাকে বেঁচে থাকার খরচ জোগাড় করতে হত। হাডসন নদীইয়ারি হ্রদ সংলগ্ন এলাকায় সেতু নির্মাণ প্রকল্পে তিনি সহকারী প্রকৌশলী নিযুক্ত হন। তিনি পুরকৌশল অথবা যন্ত্রকৌশল - যেকোনো একটি বিষয়ে কর্মজীবন গড়ার পরিকল্পনা করেছিলেন।

লেখাপড়ায় হেনরি অত্যন্ত ভালো ছিলেন। অনেক সময় তিনি তার শিক্ষকদেরও পড়াতে সাহায্য করতেন। ১৮২৬ সালে অলবানি একাডেমির অধ্যক্ষ টি.রোমেন বেক হেনরিকে গণিত ও প্রাকৃতিক দর্শনের অধ্যাপক পদে নিয়োগ দেন। [] তিনি লৌহমজ্জার চতুর্দিকে অন্তরক তার কুণ্ডলি পেঁচিয়ে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অধিকতর শক্তিশালী তড়িচ্চুম্বক নির্মাণ করেন। তিনি প্রমাণ করেন, দুইটি তড়িৎদ্বার ব্যাটারির সঙ্গে সংযুক্ত করে ও তারকুণ্ডলি সমান্তরালে আবদ্ধ করলেই উত্তম তড়িচ্চুম্বক নির্মাণ সম্ভব। ফ্যারাডে ও হেনরি উভয়ে বিষয়টি আবিষ্কার করলেও ফ্যারাডে সর্বপ্রথম এ বিষয়ে গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। []

১৮৩২ থেকে ১৮৪৬ সাল পর্যন্ত তিনি নিউ জার্সি কলেজের (বর্তমান প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়) প্রাকৃতিক ইতিহাস বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[][]

১৮৪৬ সালে হেনরি স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। ১৮৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি উক্ত পদে দায়িত্ব পালন করেন।

১৮৭৮ সালের ১৩ মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ওয়াশিংটন ডিসির উত্তর-পশ্চিমে জর্জটাউনে ওক হিল কবরস্থানে তিনি চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "The National Institute"web.archive.org। ৩ আগস্ট ২০০৯। Archived from the original on ৩ আগস্ট ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০২০ 
  2. http://web.hep.uiuc.edu/home/serrede/P435/Lecture_Notes/A_Brief_History_of_Electromagnetism.pdf
  3. "Joseph Henry"web.archive.org। ৯ ডিসেম্বর ২০০৬। Archived from the original on ৯ ডিসেম্বর ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ১১ অক্টোবর ২০২০ 
  4. Henry, Joseph (১১ অক্টোবর ১৮৮৬)। "Scientific Writings of Joseph Henry"। Smithsonian institution – Google Books-এর মাধ্যমে। 
  5. "Electromechanical Relay - History of The Electromechanical Relay"history-computer.com 
  6. "Henry, Joseph" – Wikisource-এর মাধ্যমে। 
  7. Marion, Jerry (২ ডিসেম্বর ২০১২)। "Classical Electromagnetic Radiation"। Elsevier – Google Books-এর মাধ্যমে। 
  8. Grummitt, Julia। "Joseph Henry and Sam Parker"slavery.princeton.edu 
  9. "Princeton and Slavery: The Scientist's Assistant"Princeton Alumni Weekly। ৫ নভেম্বর ২০১৭।