জ্ঞান মুখোপাধ্যায়

জ্ঞান মুখোপাধ্যায়
জন্ম(১৯০৯-০৯-৩০)৩০ সেপ্টেম্বর ১৯০৯
মৃত্যু১৩ নভেম্বর ১৯৫৬(1956-11-13) (বয়স ৪৭)
পেশাচলচ্চিত্র পরিচালক এবং চিত্রনাট্যকার
কর্মজীবন১৯৩০–১৯৫৬

জ্ঞান মুখোপাধ্যায় (৩০শে সেপ্টেম্বর ১৯০৯ - ১৩ই নভেম্বর ১৯৫৬) ছিলেন একজন বাঙালি ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক এবং চিত্রনাট্যকার। তিনি বলিউডে কাজ করেছিলেন। ঝুলা (১৯৪১) এবং কিসমতের (১৯৪৩) মত ব্যবসা সফল ছবি তৈরী করেছিলেন।

প্রাথমিক জীবন

[সম্পাদনা]

মুখার্জি ৩০শে সেপ্টেম্বর ১৯০৯ সালে ব্রিটিশ ভারতের সংযুক্ত প্রদেশের (এখন উত্তরপ্রদেশ), বেনারস (এখন বারাণসী) শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি বিজ্ঞানে ডিগ্রি নিয়ে স্নাতকধারী হন।[]

কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

প্রাথমিক কর্মজীবন

[সম্পাদনা]

মুখার্জি বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (এখন পশ্চিমবঙ্গ) কলকাতায় নিউ থিয়েটার স্টুডিওতে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি বোম্বে টকিজের তত্ত্বাবধায়ক প্রযুক্তিবিদ হিসাবে যোগদান করেছিলেন। শীঘ্রই তিনি "ফর্মুলা ছায়াছবি"র একজন পথ নির্দেশক হয়ে ওঠেন। তাঁর প্রথম পরিচালনা ছিল গীতা (১৯৪০), যেটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরী হয়েছিল। "ক্রাইম-ডাজন্ট-পে", "বয় মীটস গার্ল"-এর বিষয় নিয়ে তৈরী হয়েছিল ঝুলা (১৯৪১)।[]

১৯৪৩—১৯৫৬

[সম্পাদনা]

১৯৪৩ সালে, তিনি তাঁর নির্দেশক জীবনের বৃহত্তম সাফল্যমন্ডিত ছবি কিসমত (১৯৪৩) পরিচালনার জন্য গীতা ছবির সূত্রটি পুনরায় ব্যবহার করেছিলেন, যা "হারিয়ে যাওয়া এবং খুঁজে পাওয়া" র ওপর ভিত্তি করে তৈরী, যা হিন্দি ছবিতে কয়েক দশক ধরে জনপ্রিয় ছিল।[] ছবিতে অশোক কুমার অভিনয় করেছিলেন, যিনি ছিলেন সেই যুগের শীর্ষস্থানীয় তারকা, এখানে তিনি একটি খলনায়ক চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন এবং দ্বৈত ভূমিকাতেও উপস্থিত ছিলেন। ছবিটিতে একটি শক্তিশালী ব্রিটিশ-বিরোধী অনুভূতি ছিল এবং কবি প্রদীপের লেখা প্রখ্যাত দেশাত্মবোধক গানটি "দূর হটো ও দুনিয়া ওয়ালোঁ, হিন্দুস্তান হামারা হ্যায়" (বিশ্বের মানুষ চলে যাও, ভারত আমাদের) প্রদর্শিত হয়েছিল।[][] এবং ছবিটি কলকাতার রক্সি প্রেক্ষাগৃহে ৩ বছর ৮ মাস ধরে চলেছিল।[][][] সুভাষ কে. ঝা কিসমতকে ভারতের চলচ্চিত্রে সর্বকালের অন্যতম প্রভাবশালী চলচ্চিত্র হিসাবে অভিহিত করেছেন।[]

১৯৪০ সালে বোম্বে টকিজ স্টুডিওর প্রতিষ্ঠাতা হিমাংশু রায়ের মৃত্যুর পরে, প্রযোজক শশধর মুখার্জীর নেতৃত্বে প্রযোজনা নিয়ন্ত্রক রায় বাহাদুর চুনিলাল ও অভিনেতা অশোক কুমার এবং মুখার্জিকে নিয়ে একটি দল,[] বেরিয়ে এসে, ১৯৪৩ সালের মার্চ মাসে মুম্বাইয়ের গোরেগাঁওতে পুরানো শারদা মুভিটোন স্টুডিওর প্রাঙ্গণে ফিল্মিস্তান স্টুডিও প্রতিষ্ঠা করেন।[১০][১১] তিনি তাঁর সংগ্রাম (১৯৫০) ছবিতে 'অ্যান্টি-হিরো' ধারণাটি আবার এনেছিলেন, আজ তাঁর নির্মিত ছবিগুলি ভারতীয় সিনেমায় দুষ্কৃতকারীদের জগৎ (আন্ডারওয়ার্ল্ড) এবং অ্যান্টি-হিরোর প্রাথমিক চিত্র হিসাবে দেখা হয়।[]

বোম্বাই টকিজে কাজ করার সময়, লেখক নির্দেশক গুরু দত্ত তাঁর অধীনে প্রশিক্ষণ নেন, যদিও তিনি অমিয় চক্রবর্তীকে সহায়তা করেছেন, দত্ত মুখোপাধ্যায়ের সূত্রভিত্তিক চলচ্চিত্র শৈলী তাঁর প্রাথমিক চলচ্চিত্রগুলিতে অনুকরণ করেছিলেন এবং অবশেষে তাঁর সর্বোত্তম ছবি, প্যাসা (১৯৫৭) মুখার্জিকে উৎসর্গ করেছিলেন।[][] বোম্বে টকিজ-এ তাঁকে সহায়তাকারী আরও একজন প্রখ্যাত পরিচালক ছিলেন শক্তি সামন্ত, যিনি পরবর্তীতে আরাধনা (১৯৬৯) এবং অমর প্রেম (১৯৭২) তৈরী করেছিলেন।[১২]

মৃত্যু

[সম্পাদনা]

১৯৫৬ সালের ১৩ই নভেম্বর জ্ঞান মুখোপাধ্যায় ৪৭ বছর বয়সে কলকাতায় মারা যান। গুরু দত্তের কাগজ কে ফুল (১৯৫৯) মুখার্জির প্রতি শ্রদ্ধা হিসাবে বিবেচিত হয়।[১৩]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Gyan Mukherjee early life"। India Cine। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৩ 
  2. Ashoka Da Ranade (১ জানুয়ারি ২০০৬)। Hindi Film Song: Music Beyond Boundaries। Bibliophile South Asia। পৃষ্ঠা 95–। আইএসবিএন 978-81-85002-64-4। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৩ 
  3. Priya Jaikumar (৩ মে ২০০৬)। Cinema at the End of Empire: A Politics of Transition in Britain and India। Duke University Press। পৃষ্ঠা 236–। আইএসবিএন 978-0-8223-3793-5। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৩ 
  4. "Blast From The Past: Kismet (1943)"The Hindu। ২০ অক্টোবর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০১৩ 
  5. S. B. Bhattacherje (১ মে ২০০৯)। Encyclopaedia of Indian Events & Dates। Sterling Publishers Pvt. Ltd। পৃষ্ঠা 1–। আইএসবিএন 978-81-207-4074-7। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০১৩ 
  6. Gulzar, p. 5
  7. Santhya Saran; Abrar Alvi (২০০৮)। Ten Years With Guru Dutt: Abrar Alvi's Journey। Penguin Books India। পৃষ্ঠা 37। আইএসবিএন 978-0-670-08221-6। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৩ 
  8. Subhash K. Jha (২০ এপ্রিল ২০০৫)। "The ones who dared"। Sify.com, Movies। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০১৩ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  9. Father of music composer Madan Mohan.
  10. Gulzar, p. 593
  11. Kabir, p. 29
  12. "Veteran film-maker S Samanta passes away"The Times of India। ১০ এপ্রিল ২০০৯। ২৩ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০১৩ 
  13. Helio San Miguel (২০১২)। World Film Locations: Mumbai। Intellect Books। পৃষ্ঠা 22। আইএসবিএন 978-1-84150-632-6 

গ্রন্থপঞ্জী

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]