জ্যাক দ্য রিপার | |
---|---|
জন্ম | পরিচয় অজ্ঞাত |
অন্যান্য নাম | "হোয়াইটচ্যাপেলের খুনি" "লেদার অ্যাপ্রন" |
বিস্তারিত | |
আক্রান্ত ব্যক্তি | অজ্ঞাত (৫টি প্রধান) |
তারিখ | ১৮৮৮-১৮৯১ (?) (১৮৮৮: ৫টি প্রধান) |
স্থান | হোয়াইটচ্যাপেল, লন্ডন, যুক্তরাজ্য |
জ্যাক দ্য রিপার (ইংরেজি: Jack the Ripper) হল এক অজ্ঞাত-পরিচয় ক্রমিক হত্যাকারীর সর্বাধিক পরিচিত নাম। সাধারণভাবে মনে করা হয়, ১৮৮৮ সালে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন শহরের হোয়াইটচ্যাপেল ডিস্ট্রিক্ট ও তৎসংলগ্ন এলাকায় এই খুনি সক্রিয় ছিল। জনৈক ব্যক্তি একটি চিঠিতে নিজেকে হত্যাকারী বলে দাবি করেছিল। গণমাধ্যমে প্রচারিত এই চিঠিটিতেই "জ্যাক দ্য রিপার" নামটি প্রথম পাওয়া যায়। অধিকাংশের মতে, এই চিঠিটি ছিল ঠাট্টা মাত্র। খুনের ঘটনা সম্পর্কে জনগণের আগ্রহ এবং সংবাদপত্রের কাটতি বাড়াতে সাংবাদিকরাই এই চিঠিটি লিখেছিলেন। এই হত্যাকারীকে অপরাধ কেস ফাইলে "হোয়াইটচ্যাপেলের খুনি" ও "লেদার অ্যাপ্রন" নামেও অভিহিত করা হয়। এই নামদুটি সমকালীন সাংবাদিকদের লেখাতেও পাওয়া যায়।
জ্যাক দ্য রিপার কৃত যে হত্যাকাণ্ডগুলির কথা জানা যায়, সেগুলিতে সাধারণত ইস্ট এন্ড অফ লন্ডনের বস্তি এলাকার অধিবাসী ও সেই এলাকায় কর্মরত নারী যৌনকর্মীরা জড়িত ছিল। এদের গলার নলি কেটে হত্যা করার পর পেট চিরে ফেলা হয়েছিল। অন্তত তিন জনের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল শরীরের অভ্যন্তরের অন্ত্রগুলি কেটে বা দেওয়া হয়েছিল। এই দেখে অনুমান করা হয়, হত্যাকারীর শারীরতত্ত্ব বা শল্যচিকিৎসা-সংক্রান্ত কিছু জ্ঞান ছিল। ১৮৮৮ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে হত্যার গুজবগুলি ঘনীভূত হয়। এক বা একাধিক পত্রলেখক গণমাধ্যমে বা স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডে চিঠি দিয়ে নিজেকে বা নিজেদের হত্যাকারী বলে দাবি করতে থাকেন। হোয়াইটচ্যাপেল ভিজিলেন্স কমিটির জর্জ লাস্ক যে "ফ্রম হেল" চিঠিটি পেয়েছিলেন, তাতে দাবি করা হয়েছিল, পত্রলেখকের কাছে জনৈক নিহতের বৃক্কের অর্ধ্বাংশ সংরক্ষিত আছে। জনসাধারণ বিশ্বাস করতে শুরু করে, "জ্যাক দ্য রিপার" নামধারী কোনো একজন হত্যাকারী এই হত্যাকাণ্ডগুলি ঘটাচ্ছে। এই বিশ্বাসের কারণ ছিল, হত্যাকাণ্ডগুলির নৃশংস চরিত্র এবং সেই সম্পর্কে গণমাধ্যমের প্রতিক্রিয়া।
সংবাদপত্রে জ্যাক দ্য রিপারকে নিয়ে প্রচুর লেখালিখি হয়। রিপার আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করে এবং সেই সঙ্গে কিংবদন্তিটিও দৃঢ় ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৮৯১ সাল পর্যন্ত হোয়াইটচ্যাপেলের ১১টি নৃশংস হত্যাকাণ্ড নিয়ে পুলিশ তদন্ত করে। কিন্তু সেগুলির সঙ্গে ১৮৮৮ সালের হত্যাকাণ্ডগুলির কোনো যোগসূত্র খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়। পাঁচ জন নিহত—মেরি অ্যান নিকোলস, অ্যানি চ্যাপম্যান, এলিজাবেথ স্ট্রাইড, ক্যাথরিন এডোয়েস ও মেরি জেন কেলি—"প্রধান পাঁচ" ("ক্যাননিক্যাল ফাইভ") নামে পরিচিত। এরা খুন হয়েছিল ১৮৮৮ সালের ৩১ অগস্ট থেকে ৯ নভেম্বরের মধ্যে। সাধারণত মনে করা হয়, এই হত্যাকাণ্ডগুলি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। এই হত্যাকাণ্ডগুলির কোনো কিনারা হয়নি। এগুলিকে ঘিরে যে কিংবদন্তি প্রচলিত, তা গড়ে উঠেছে খাঁটি ঐতিহাসিক গবেষণা, লোককথা ও ছদ্ম-ইতিহাসের সংমিশ্রণে। রিপারের ঘটনাগুলি অধ্যয়ন ও বিশ্লেষণের জন্য "রিপারতত্ত্ব" ("রিপারোলজি") নামে একটি শব্দের প্রচলন ঘটে। বর্তমানে একশোরও বেশি তত্ত্ব আছে রিপারের পরিচয় সম্পর্কে। এই হত্যাকাণ্ডগুলিও কথাসাহিত্যে একাধিক রচনার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।
bvbnhdu