ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
জন্ম | পিটারমারিৎজবার্গ, দক্ষিণ আফ্রিকা | ১১ মার্চ ১৯২৯|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ৮ জুন ১৯৯৮ প্রিটোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা | (বয়স ৬৯)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | লেগ ব্রেক গুগলি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ |
ডেরিক জন জ্যাকি ম্যাকগ্লিউ (ইংরেজি: Jackie McGlew; জন্ম: ১১ মার্চ, ১৯২৯ - মৃত্যু: ৮ জুন, ১৯৯৮) পিটারমারিৎজবার্গে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট তারকা ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫১ থেকে ১৯৬২ সময়কালে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে নাটালের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ডানহাতি উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতেন। এছাড়াও, লেগ ব্রেক গুগলি বোলিংয়ে সবিশেষ পারদর্শী দেখিয়েছেন জ্যাকি ম্যাকগ্লিউ।
মার্চিস্টন প্রিপারেটরি স্কুল ও মারিৎজবার্গ কলেজে অধ্যয়ন করেছেন তিনি। সেখানে তিনি হেড ডেবয় প্রিফেক্ট ছিলেন। ১৯৪৮ সালে ক্রিকেট ও রাগবি খেলার উভয়টিতেই অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন জ্যাকি ম্যাকগ্লিউ।
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে নাটালের পক্ষে খেলেছেন তিনি। ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় ট্রান্সভালের বিপক্ষে উভয় ইনিংস মিলিয়ে হ্যাট্রিক সম্পন্ন করেছিলেন। এক ইনিংসে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েছেন ২/৪। মাঝেমধ্যে আট কিংবা নয় নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামতেন ও কিছু কার্যকরী ইনিংস খেলেছেন। ১৯৬৬-৬৭ মৌসুমের কারি কাপে নাটালের বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেন প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ৩৪ টেস্টে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছেন জ্যাকি ম্যাকগ্লিউ। ৭ জুন, ১৯৫১ তারিখে টেস্ট অভিষেক ঘটে তার। ১৯৫১ সালে ইংল্যান্ড সফরের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা দলের অন্যতম সদস্যরূপে মনোনীত হন। ১২-জনের গড়া দলের খেলায় সেঞ্চুরি করে সবিশেষ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। তবে, দুই টেস্টে তেমন সফলতা পাননি। কিন্তু, ১৮ মাসের ব্যবধানে টেস্ট দলের নিয়মিত সদস্যের মর্যাদা লাভ করেন। পাশাপাশি, ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে সহঃ অধিনায়কের দায়িত্ব নিয়ে সিরিজ ড্র রাখতে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। একই মৌসুমে নিউজিল্যান্ড সফরে যায় তার দল। ওয়েলিংটনে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত ২৫৫ রানের ইনিংস খেলেন। ঐ ইনিংসটি দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে তৎকালীন সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস ছিল।
১৯৫৫ সালে ইংল্যান্ডে দ্বিতীয়বারের মতো সফর করেন। ঐ সফরে দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বাধিক সফলতা পান। ওল্ড ট্রাফোর্ড ও হেডিংলিতে সেঞ্চুরি করেন। নিয়মিত অধিনায়ক জ্যাক চিদামের আঘাতপ্রাপ্তিতে দুই টেস্টে অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। উভয় খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকা দল জয়লাভে সমর্থ হয়। চিদাম সুস্থ হবার পর পঞ্চম টেস্টেও তাকে অধিনায়কের দায়িত্বে রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, দল নির্বাচকমণ্ডলীর অন্যান্য সদস্য এতে বাঁধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৫৬ সালের ঐ সফরে অনবদ্য ও প্রশংসনীয় ভূমিকা গ্রহণের কারণে উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটারের সম্মাননায় ভূষিত করে। দূর্দান্ত ব্যাটিংশৈলীর পাশাপাশি কভার অঞ্চলে ফিল্ডিং করে সজীবতার পরিচয় দেন জ্যাকি ম্যাকগ্লিউ।[১]
১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজেদের মাটিতে অনুষ্ঠিত সিরিজে নেতিবাচক ব্যাটিংশৈলী উপহার দেন। ডারবান টেস্টে ৩১৩ মিনিটে ৫০ ও ৫৪৫ মিনিটে শতরান পূর্ণ করে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ধীরগতির সেঞ্চুরি করার নতুন রেকর্ড গড়েন। সবমিলিয়ে ৫৭৫ ব্যাটিং করে ১০৫ রানে আউট হন। কিন্তু, সময়ের অভাবে দক্ষিণ আফ্রিকা দল জয় পায়নি। উইজডেন তার এ ইনিংসটিকে ধৈর্য ও সহনশীলতার অপূর্ব মিশ্রণের কথা তুলে ধরে। পাশাপাশি, এর মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকা কি সুবিধা পেয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে।[২]
১৯৬০ সালে তৃতীয়বার ইংল্যান্ড গমন করেন। এবার তিনি দলের পূর্ণাঙ্গ অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। ব্যক্তিগতভাবে এ সিরিজে তেমন সুবিধে করতে পারেননি তিনি। ফাস্ট বোলার জিওফ গ্রিফিনের বোলিং ভঙ্গীমায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়। লর্ডসে বল নিক্ষেপের দায়ে নো-বল ডাকা হয়। ১৯৬১-৬২ মৌসুমে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের পর অবসর গ্রহণ করেন। ঐ সিরিজে নিজস্ব সপ্তম ও চূড়ান্ত টেস্ট সেঞ্চুরি সম্পন্ন করেন। সর্বমোট ১৩ টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়কত্ব করে চারটিতে জয় ও পাঁচটিতে পরাজিত হয় তার দল। এছাড়াও, বাদবাকী চার টেস্ট ড্রয়ে পরিণত হয়েছিল। ৪২-এর অধিক গড়ে ২,৪৪০ রান তুলেছেন তিনি।
অধিনায়ক হিসেবে বেশ চমৎকার কৌশল গ্রহণ করেছেন। খেলার প্রতি বেশ উষ্ণহৃদয়ের অধিকারী ও একনিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজকে ঘিরে ‘ক্রিকেট ক্রাইসিস’ ও ১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ নিয়ে ‘সিক্স ফর গ্লোরি’ শিরোনামীয় গ্রন্থ রচনা করেছেন।
উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে নিজ নামের সাথে বেশ মানানসই ছিল তার দৃঢ়তাপূর্ণ শক্তিমত্তার অপূর্ব মিলন। ১৯৫০-এর দশকে অত্যন্ত ধীরগতিতে রান তুলে বেশ কিছুসংখ্যক রেকর্ড নিজের করে নিয়েছিলেন। উইজডেনসহ ক্রিকেটবোদ্ধাদের কাছ থেকে ক্রমাগত সমালোচনায় মুখরিত হলেও ১৯৫০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলকে শক্তিশালী ভিত্তি এনে দিতে অপরিহার্য ভূমিকা রাখেন।
মধ্যাহ্নভোজন কিংবা বৈকালিক চাবিরতির পূর্বে বোলার হিসেবে সফলতা পেয়েছেন। তবে, লেগ ব্রেক বোলার হিসেবে টেস্টে কোন উইকেট লাভে সক্ষমতা দেখাতে পারেননি জ্যাকি ম্যাকগ্লিউ।
ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর নেয়ার পর স্বল্পকালের জন্য বর্ণবৈষম্যবাদ-পূর্ব রাজনীতিতে সোচ্চার ছিলেন। এক পর্যায়ে শাসকগোষ্ঠীর ন্যাশনাল পার্টির প্রার্থী হিসেবে জড়িয়ে পড়েন। এরপর ব্যবসায়ের দিকে ধাবিত হন। ১৯৯১-৯২ মৌসুমে বর্ণবৈষম্যবাদ পরবর্তী সময়ে বিশ্ব ক্রিকেটে পুণঃপ্রবেশ ঘটলে দক্ষিণ আফ্রিকার অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে সাথে নিয়ে প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যান।
৮ জুন, ১৯৯৮ তারিখে প্রিটোরিয়ায় ৬৯ বছর বয়সে জ্যাকি ম্যাকগ্লিউ’র দেহাবসান ঘটে।
পূর্বসূরী ক্লাইভ ভন রাইনেভেল্ড |
দক্ষিণ আফ্রিকান টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক ১৯৬০ – ১৯৬১/৬২ |
উত্তরসূরী ট্রেভর গডার্ড |