জ্যানেট গেনর | |
---|---|
Janet Gaynor | |
জন্ম | লরা অগাস্টা গেইনর ৬ অক্টোবর ১৯০৬ জার্মানটাউন, ফিলাডেলফিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র |
মৃত্যু | সেপ্টেম্বর ১৪, ১৯৮৪ পাম স্প্রিংস, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র | (বয়স ৭৭)
মৃত্যুর কারণ | সড়ক দুর্ঘটনায় আহত |
সমাধি | হলিউড ফরেভার সিমেট্রি |
শিক্ষা | সান ফ্রান্সিস্কো পলিটেকনিক হাই স্কুল |
পেশা | অভিনেত্রী |
কর্মজীবন | ১৯২৪–১৯৮২ |
দাম্পত্য সঙ্গী | জেসি লাইডেল পেক (বি. ১৯২৯; বিচ্ছেদ. ১৯৩৩) অ্যাড্রিয়ান (বি. ১৯৩৯; মৃ. ১৯৫৯) পল গ্রেগরি (বি. ১৯৬৪–১৯৮৪) |
সন্তান | ১ |
পুরস্কার | একাডেমি পুরস্কার |
জ্যানেট গেনর (ইংরেজি: Janet Gaynor; জন্ম: লরা অগাস্টা গেইনর; ৬ই অক্টোবর, ১৯০৬ - ১৪ই সেপ্টেম্বর, ১৯৮৪)[১] ছিলেন একজন মার্কিন অভিনেত্রী ও চিত্রশিল্পী। তিনি একাডেমি পুরস্কারের প্রথম আয়োজনে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে পুরস্কার লাভ করেন।
গেনর স্বল্পদৈর্ঘ্য ও নির্বাক চলচ্চিত্রে অতিরিক্ত শিল্পী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯২৬ সালে ফক্স ফিল্ম করপোরেশনের সাথে (পরবর্তীতে টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্স) চুক্তির পর তার খ্যাতি ছড়িয়ে পরে এবং তিনি সেই যুগের বক্স অফিসে অন্যতম তারকা হয়ে ওঠেন। ১৯২৯ সালে তিনি সেভেন্থ হেভেন, সানরাইজ: আ সং অব টু হিউম্যান্স ও স্ট্রিট অ্যাঞ্জেল ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন। সবাক চলচ্চিত্র যুগেও গেনর সফল ছিলেন এবং আ স্টার ইজ বর্ন ছবিতে অভিনয়ের জন্য তার দ্বিতীয় একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।
১৯৩৯ সালে অভিনয় থেকে অবসর গ্রহণের পর গেনর পোশাক পরিকল্পনাবিদ অ্যাড্রিয়েনকে বিয়ে করেন। তাদের এক পুত্র জন্মগ্রহণ করে। পরবর্তীতে ১৯৫০-এর দশকে তিনি কয়েকটি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন নাটকে কাজ করেন এবং নামকরা তৈল চিত্রশিল্পী হয়ে ওঠেন। ১৯৮০ সালে হ্যারল্ড অ্যান্ড মডি মঞ্চনাটক দিয়ে গেনরের ব্রডওয়েতে অভিষেক হয় এবং ১৯৮২ সালে অন গোল্ডেন পন্ড মঞ্চনাটক নিয়ে সফর করেন। ১৯৮২ সালে তিনি এক গাড়ি দুর্ঘটনায় আহত হন এবং এই আঘাতেই ভুগেই তিনি ১৯৮৪ সালের সেপ্টেম্বরে মারা যান।
গেনর ১৯০৬ সালের ৬ই অক্টোবর ফিলাডেলফিয়ার জার্মানটাউনে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম লরা অগাস্টা গেইনর (কিছু সূত্র মোতাবেক গেইনার)।[২] শৈশবে তার ডাকনাম ছিল "ললি"। তিনি তার পিতামাতার দুই কন্যার মধ্যে দ্বিতীয়। তার মাতা লরা (বুল) এবং পিতা ফ্র্যাঙ্ক ডি উইট গেইনর। ফ্র্যাঙ্ক গেইনর মঞ্চে রংশিল্পী ও কাগজ টাঙ্গানোর কাজ করতেন। যখন গেনর হাঠতে শিখছিলেন, তখন তার পিতা তাকে গান গাওয়া, নৃত্য ও অ্যাক্রোবেটিক্স শিখানো শুরু করেন।[৩] ফিলাডেলফিয়াতে থাকাকালীন শৈশবেই তিনি বিদ্যালয়ের নাটকে অভিনয় শুরু করেন। ১৯১৪ সালে তার পিতামাতার বিবাহবিচ্ছেদের পর গেনর, তার বোন ও তার মাতা শিকাগো শহরে চলে যান। কিছুদিন পর তার মাতা ইলেকট্রিশিয়ান হ্যারি সি. জোন্সকে বিয়ে করেন।[৪] পরবর্তীকালে তাদের পরিবার সান ফ্রান্সিস্কো শহরে চলে যান।[৫]
গেনর ১৯২৯ সালে চার্লস ফ্যারেলের সাথে ফ্রাংক বোরজেগি পরিচালিত সেভেন্থ হেভেন ও স্ট্রিট অ্যাঞ্জেল এবং এফ. ডব্লিউ. মুর্নো পরিচালিত সানরাইজ: আ সং অব টু হিউম্যান্স ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী বিভাগে একাডেমি পুরস্কার লাভ করেন।[১] গেনর এই বিভাগে পুরস্কার বিজয়ী প্রথম অভিনেত্রী। অধিকন্তু ১৯৮৬ সালে মার্লি ম্যাটলিন ২১ বছর বয়সে চিলড্রেন অব আ লেসার গড ছবির জন্য এই বিভাগে পুরস্কার লাভ করার পূর্ব পর্যন্ত ২২ বছর বয়সে এই পুরস্কার বিজয়ী গেনরই এই বিভাগে সর্বকনিষ্ঠ অভিনেত্রী ছিলেন।[৬]
টুয়েন্টিয়েথ সেঞ্চুরি ফক্সের নির্বাহীরা তার চুক্তি পুনর্বিবেচনা ও তাকে চরিত্রাভিনেত্রী হিসেবে পদ অবনতি করার প্রস্তাব দিলে তিনি এই স্টুডিও ত্যাগ করেন। কিন্তু ডেভিড ও. সেলৎসনিক তাকে তার কোম্পানি সেলৎসনিক ইন্টারন্যাশনাল পিকচার্সের প্রযোজিত নতুন চলচ্চিত্রে প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন। পর্দার বাইরেও গেনরের সাথে সেলৎসনিকের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। তিনি তাকে এই চরিত্রে কাজ করতে বলেন কারণ এটি তার বাস্তব ব্যক্তিত্বের কাছাকাছি। তিনি মনে করেন তার মধ্যে হাস্যরস, আকর্ষণীয়তা, ভঙ্গুরতা ও নিষ্পাপতার সমন্বয় রয়েছে, যা আ স্টার ইজ বর্ন (১৯৩৭) ছবিতে প্রতিশ্রুতিশীল অভিনেত্রী এস্থার ব্লজেট চরিত্রের জন্য প্রয়োজন।[৭] প্রণয়ধর্মী নাট্য ধারার ছবিটি টেকনিকালারে চিত্রায়িত হয় এবং এতে তার সহশিল্পী ছিলেন ফ্রেড্রিক মার্চ। ১৯৩৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি হিট তকমা লাভ করে এবং গেনর তার কাজের জন্য তার দ্বিতীয় একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন, কিন্তু দ্য গুড আর্থ ছবিতে অভিনয় করা লুইস রাইনারের কাছে পরাজিত হন।[৭]
আ স্টার ইজ বর্ন চলচ্চিত্রে সফলতার মধ্য দিয়ে তার কর্মজীবন পুনরুজ্জীবিত হয় এবং তিনি পলেট গডার্ডের সাথে স্কুবল হাস্যরসাত্মক দ্য ইয়ং ইন হার্ট (১৯৩৮) চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। চলচ্চিত্রটি মাঝারি মানের ব্যবসা করে, কিন্তু ততদিনে গেনর অবসরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি পরবর্তীকালে বলেন, "আমি বিরতিহীনভাবে দীর্ঘ ১৭ বছর কাজ করেছি, আমি কেবল জীবনে চলচ্চিত্রেই কাজ করতে শিখেছিলাম। আমি অন্য কিছু জানার সময় চেয়েছিলাম। সর্বোপরি, আমি প্রেমে পড়তে চেয়েছিলাম। বিয়ে করতে চেয়েছিলাম। বাচ্চা নিতে চেয়েছিলাম। এবং আমি জানতাম এইসবের জন্য সময় বের করা দরকার। তাই আমি চলচ্চিত্রে কাজ বন্ধ করে দেই। এরপর আমি যা চেয়েছিলাম তা দৈবাৎ ঘটে গেল।[১] চলচ্চিত্র শিল্পের শীর্ষে থাকা অবস্থায় তিনি ৩৩ বছর বয়সে অভিনয় থেকে অবসর নেন।